Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Friday
June 06, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
FRIDAY, JUNE 06, 2025
বাবাকে ভুল প্রমাণ করে ছুটে চলেছেন সুমন

খেলা

শান্ত মাহমুদ
27 October, 2020, 11:00 am
Last modified: 26 April, 2025, 07:02 pm

Related News

  • ভারতের এই শিশুটিকে যেভাবে অনলাইনে ক্রিকেট তারকা বানালেন শচীন টেন্ডুলকার
  • হ্যাটট্রিকসহ সুমনের ৭ উইকেট, সর্বনিম্ন রানে অলআউট রাজশাহী
  • সাকিব আল হাসানের দেশে আসতে কোনো আইনি বাধা নেই: ক্রীড়া উপদেষ্টা
  • সরকার পদত্যাগের পর যা বলছেন ক্রিকেটাররা
  • শিক্ষার্থীদের বিপথগামী না করার অনুরোধ সোহানের

বাবাকে ভুল প্রমাণ করে ছুটে চলেছেন সুমন

বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণে বইয়ের সঙ্গে সখ্য গড়ে তুলেছিলেন সুমন খান। মাধ্যমিকে ৪.৫৮ পাওয়া সুমন উচ্চ মাধ্যমিকে জিপিএ ৫ তুলে ভর্তি হন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে। বিবিএ’র চারটি সেমিস্টারও শেষ তখন। এমন সময়ে ছোটবেলার স্বপ্ন মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে।
শান্ত মাহমুদ
27 October, 2020, 11:00 am
Last modified: 26 April, 2025, 07:02 pm

'ছোট বেলা থেকেই স্বপ্ন দেখি দেশের জার্সি গায়ে খেলব। এটা স্বপ্ন। কিন্তু এর চেয়েও বড় স্বপ্ন আছে, যেটা আমি বলতে চাই না। করে দেখাতে চাই।' কথাগুলো বলছিলেন বিসিবি প্রেসিডেন্টস কাপের ফাইনালে ৫ উইকেট নিয়ে পাদপ্রদীপের আলোয় চলে আসা সুমন খান। অথচ ক্রিকেটারই হওয়ার কথা ছিল না ডানহাতি তরুণ এই পেসারের! 

বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণে বইয়ের সঙ্গে গড়ে তুলেছিলেন সখ্য। মাধ্যমিকে ৪.৫৮ পাওয়া সুমন উচ্চ মাধ্যমিকে জিপিএ ৫ তুলে ভর্তি হন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে। বিবিএ'র চারটি সেমিস্টারও শেষ তখন। এমন সময়ে ছোটবেলার স্বপ্ন মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। বিকেএসপিতে ডিগ্রিতে ভর্তি হতে সুমন বোঝাতে শুরু করেন তার বাবা সুলতান আলী খানকে। 

তিন বছর সময় চান সুমন। ছেলেকে বড় চাকুরিজীবি বানানোর স্বপ্ন দেখলেও সুলতান আলী বাধা দেননি। বলেছিলেন, 'তিন বছর পর তুমি ভুল, এটা যেন প্রমাণ না হয়। আমি ভুল, এটা আমাকে প্রমাণ করে দিও।' তিন বছর পর নিজে ভুল প্রমাণিত হয়েও খুশি সুলতান আলী। ২২ গজে ছেলের একেকটি সাফল্যে খুশিতে কেঁদে ফেলেন তিনি। 

প্রথম বিভাগ, প্রিমিয়ার লিগ, প্রথম শ্রেণি ও এইচপি হয়ে সুমন এখন বিসিবির রাডারে। দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের সঙ্গে দীর্ঘ আলাপচারিতায় ক্রিকেটে আসার গল্প, পেসার হান্ট থেকে ছিটকে যাওয়া, ১৮-১৯ বছর বিকেএসপিতে নাম লেখানো, ফিটনেস নিয়ে কঠোর সাধনা করাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন প্রেসিডেন্টস কাপের তিন ম্যাচে ৯ উইকেট নেওয়া ডানহাতি এই পেসার।

টিবিএস: দারুণ একটা টুর্নামেন্ট গেল। কেমন লাগছে?

সুমন খান: আসলে অনুভুতিটা অনেক ভালো। এতো সুন্দর একটা টুর্নামেন্ট শেষ করার পর ভালো লাগাটাই স্বাভাবিক। আবার বেশি উচ্ছ্বসিতও না, এটা তো কেবল শুরু। তাই বেশি উচ্ছ্বসিত না আবার কমও না। মাত্র তো শুরু, এখন যদি সব উদযাপন করে ফেলি, সামনে কী করব।

টিবিএস: আগে সুমন খান নামটা ক্রীড়া সাংবাদিকরা জানতেন, এখন পুরো দেশের মানুষ জানে। একটি টুর্নামেন্ট নিয়ে এভাবে সবার মুখে মুখে চলে আসাটা কতোটা উপভোগ করছেন?

সুমন খান: এটা তো দারুণ অনুভূতি। কারণ, একটা টুর্নামেন্ট দিয়ে উঠে আসা। সত্যি কথা বলতে, মাঝখানে যে খেলা বন্ধ ছিল ৫-৬ মাস, ওই সময়টার পরিশ্রমেরই ফসল এটা। কোয়ারেন্টিনের ওই সময়টায় একদিনও হেলায় কাটাইনি। ওই সময়ে যতটা পেরেছি নিজেকে প্রস্তুত করেছি। কারণ খেলা তো শুরু হবে। লক্ষ্য ছিল খেলা শুরু হলেই যেন ক্লিক করতে পারি। যতদিন খেলা বন্ধ ছিল, এরপর যদি নিজেকে মানিয়ে নিতে না পারি, তাহলে খুব কষ্ট হবে। তো অনেক কষ্ট করেছি, আল্লাহ সেটার ফল দিয়েছেন। এর জন্য সত্যিই অনেক আনন্দিত।

টিবিএস: স্ট্যান্ডবাই হিসেবে অন্য দলে ছিলেন। সেখান থেকে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দলে। সুযোগ পেয়ে কী লক্ষ্য স্থির করেছিলেন?

সুমন খান: টুর্নামেন্টের প্রথমে স্ট্যান্ডবাই ছিলাম আমি। যে কারণে আমার কাছে খুব কষ্ট লেগেছে। কারণ অনেক দিন পর খেলা শুরু হচ্ছে, ইচ্ছা তো থাকেই খেলার। তো ওই সময়ে আশায় ছিলাম সুযোগ আসতে পারে। সুযোগ পরদিনই চলে আসে, অন্য একটা টিমের পেস বোলার ইনজুরি হওয়ায় ওই টিমে আমাকে দিয়ে দেয়। তখনই নিজেকে নিজে বুঝাই সুযোগ তো আল্লাহ দিয়েছেন। তো নিশ্চিত এখানে ভালো কিছু হবে। যেখানে খেলারই কথা ছিল না, সেখানে সুযোগটা আমি নষ্ট করতে চাই না। তো তখনই লক্ষ্য ঠিক করলাম একটা বা দুইটা ম্যাচে খেলার সুযোগই আসে না কেন, নিজের সেরাটা দেয়ার চেষ্টা করব। কারণ এখানে ভালো করতে পারলে অনেক এগিয়ে যেতে পারব। আর যদি ভালো না করতে পারি এখানে শেষের কিছু নাই। ভালো করতে পারলে অনেক কিছুই হবে।

টিবিএস: এতোটা ভালো প্রত্যাশায় ছিল?

সুমন খান: যখন শুনলাম টুর্নামেন্ট হবে, তখনই চিন্তা করলাম সুযোগ পেলে ভালো কিছু করব। ভালো করার বিকল্প নেই। ফাইনাল নিয়ে আশা ছিল ভালো কিছু করার। আপনারা দেখেছেনই, টুর্নামেন্ট শুরুর পর থেকে পেস বোলাররা সবাই সবার জায়গা থেকে সেরাটাই দিয়েছেন। সব পেস বোলারই ভালো করেছেন। ফাইনাল খেলার আগে যে জিনিসটা ভাবলাম, সবাই উইকেট পাচ্ছে। এখানে দুই বা তিন উইকেট নিলে নিজেকে প্রমাণের কিছু থাকবে না। সবাই ফোকাসড এখানে। তো এমন কিছু করতে হবে, যা করলে সবাইকে দেখাতে পারব। তো ফাইনালের আগে ভাবলাম, যেহেতু সুযোগ পেয়েছি তেমন কিছুই করতে হবে। আল্লাহ্র কাছে লাখো শুকরিয়া, সুযোগ পেয়েছি এবং ভালো কিছু করতে পেরেছি।

টিবিএস: আপনি এইচপির ক্যাম্পে আছেন। ২৭ অক্টোবর থেকে ক্যাম্প শুরু। ক্যাম্পেই তো অনুশীলন করবেন?

সুমন খান: হ্যাঁ, একাডেমিতে চলে এসেছি। এখানেই থাকব। আমাদের ক্যাম্প আগামী ১২ নভেম্বর পর্যন্ত।

টিবিএস: বিসিবি প্রেসিডেন্ট কাপে তিন দলে অভিজ্ঞ অনেক পেসার ছিলেন। অনেকেই ভালো করেছেন। এতো পেসারের মাঝেও আলো ছড়ানো কতটা চ্যালেঞ্জিং ছিল?

সুমন খান: চ্যালেঞ্জ ওখান থেকেই নিয়েছি। যখন দেখবেন সামনে কেউ ভালো করছে, তখন পেছনে যারা থাকে তারা অনুপ্রাণিত হবে। আমার সামনে বড় ভাইয়েরা যেমন তাসকিন ভাই অনেক দিন পর এসে ভালো করছেন। আমার দলে রুবেল ভাইও অনেক ভালো করছেন। জাতীয় দলের সবাই যখন ভালো করছে, তখন নিজে থেকেই অনুপ্রাণিত হয়েছি। তারা তো পরীক্ষিত, এখানে ভালো করতে পারলে এটা নিজেকে প্রমাণের ভালো একটা প্ল্যাটফর্ম তৈরি হবে। অনেক দিন পর খেলার সুযোগ এসেছে, সেটা কাজে লাগানোর চেষ্টা থেকেই ভালো কিছু করা। 

টিবিএস: জাতীয় দলের অনেক ক্রিকেটার খেলেছেন এই টুর্নামেন্টে। তাদের সঙ্গে খেলে কী শিখলেন, কতটা শিখলেন?

সুমন খান: শেখার তো শেষ নেই। এটা তো শুরু মাত্র। টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচের আগে মিটিং হয়েছিল? তখন আমাদের অধিনায়ক রিয়াদ ভাই বলছিলেন, এই টুর্নামেন্টটা তরুণদের জন্য অনেক বড় প্ল্যাটফর্ম। কারণ, অনেক দিন পর খেলা হচ্ছে, সবার ফোকাস এদিক থাকবে। দ্বিতীয়ত অল্প দিনের একটা টুর্নামেন্ট। তো টা নিজেকে প্রমাণ করার জায়গা। যেখানে কোচ, নির্বাচক, জাতীয় দেলের খেলোয়াড়রা সবাই এখানে থাকবে। অন্য ব্যাপার, এখানে সবাই সবার জায়গা থেকে ভালো করার চেষ্টা করবে। তো যখনই এই টুর্নামেন্টটা শুরু হয়, তখনই এই কথাটা মাথায় ঢুকে গেছে যে, এটা একটা প্লাটফর্ম। কিছুদিনের জন্য একটা মার্কেট বা শপিং কমপ্লেক্স খোলা হয়েছে বা একটা উইন্ডো খোলা হয়েছে ৭ দিনের জন্য। আর এই সময়ের মধ্যেই সব করে নিতে হবে। 

টিবিএস: ছোট বেলা থেকেই ক্রিকেটার হতে চেয়েছেন? কখন মনে হলো যে ক্রিকেটার হবেন? ক্রিকেটে আসার গল্পটা শোনাবেন…

সুমন খান: সত্যি বলতে ছোট থেকে স্বপ্ন ছিল ক্রিকেটার হওয়ারই। কিন্তু ক্রিকেটের স্টেজগুলা যে এতো কঠিন, এতো কঠিন পথ পাড়ি দিতে হয়, এটা আমার জানা ছিল না। এটা আমার ভাবনায়ই ছিল না যে একজন ক্রিকেটার হতে হলে কতটা কষ্ট করতে হয়। কতোটা পরিশ্রম করতে হয়, কতো চরাই-উতরাই পার করতে হয়। এটা আসলে কখনও ভাবিনি। ভাবতাম যারা জাতীয় দলে খেলেন, তারা হয়তো খেলতে খেলতে হয়ে যান। এতো কঠিন ছিল ভাবিনি। ছোট থেকেই স্বপ্ন দেখতাম যে খেলোয়াড় হব, কিন্তু বাসা থেকে কখনও পুরোপুরি সমর্থনটা পেতাম না। কারণ পড়াশোনাতে ভালো ছিলাম, বাসা থেকে এই চাপটাই দিত যে পড়াশোনা কর। এভাবেই করতে থাকি। এসএসসিতে ৪.৫৮ এবং এইচএসসিতে জিপিএ ৫ পেয়ে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হই। তো ওই সময় খেলাধুলায় একটু পিছিয়ে পড়ি। 

টিবিএস: কোন পর্যায়ে খেলতেন তখন?

সুমন খান: ওইভাবে খেলাধুলা বলতে আমি কখনও ক্রিকেট বলে খেলিনি। টেপ টেনিস বা এখানে-ওখানে খেলতাম। বড় ভাইরা নিয়ে যেতেন খ্যাপ খেলতে। তো যেখানেই খেলতাম, ভালো হতো। মানিকগঞ্জে আমার খুব নাম আছে, সবাই চেনে জানে। টেপ টেনিসের খ্যাপ খেলতাম। আমি জানতাম এভাবে খেলতে খেলতেই ক্রিকেট বলে খেলা যাবে। পরবর্তীতে ২০১৬ সালে রবি পেসার হান্ট হয়। যেটায় এবাদত ভাই প্রথম হন। সেখানে আমি প্রথম ২০ জনের মধ্যে এসেছিলাম। 

সে সময় বুঝতে পারি, আমার মধ্যে কিছু আছে না হলে তো এখানে আসতাম না। সারা বাংলাদেশে এতো বোলার থাকতে ২০জনের মধ্যে তো আমি আসতে পেরেছি। তখন নিজেই উপলদ্ধি করি যে এই রাস্তা থেকে নিজেকে নতুনভাবে তৈরি করতে পারি। কিন্তু সেখানে আমি বাদ পড়ে যাই। তখন ফিজিও স্যার (শাওন ভাই) উনি বলেছিলেন 'দেখো সুমন, তোমার মধ্যে ট্যালেন্ট আছে কিন্তু এটাকে কাজে লাগাতে হলে তোমাকে ফিটনেসে অনেক উন্নতি করতে হবে।' সে সময় বিপ টেস্টে আমি ৮.৯ তুলেছিলাম। একাডেমি ক্যাম্প থেকেই বাদ পরে যাই। 

তখন তাড়না আসে যে আমার কিছু একটা করতে হবে, চেষ্টা করতে হবে। সেখান থেকে সিদ্ধান্ত নেয়া যে আমি সম্পূর্ণ চেষ্টা করব, খেলাধুলা করব। সে সময় আমি নর্থ সাউথে বিবিএ পড়াশোনা করছি। ৪ সেমিস্টার শেষ। সে সময় পরিবার চায়নি পড়াশোনা বাদ দিয়ে বিকেএসপিতে চলে যাই। কারণ পড়াশোনা শেষ করলে একটা নিশ্চিত ক্যারিয়ার ছিল, ছোট হোক বড় হোক, একটা চাকরি করব। নিশ্চিত ভবিষ্যৎ। এখানে তো অনেকটা অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ। 

পরিবার শুরুতে সমর্থন দিচ্ছিল না। তখন বাবাকে মানানোর চেষ্টা করলাম যে আমি খেলাধুলা করতে চাই। উনাকে বললাম যে আমি ৩টা বছর আমার মত করে চলি। সেখান থেকেই মূলত বিকেসপিতে চলে আসা। সেখান থেকে প্রথম বিভাগে খেলার পর একটা প্ল্যাটফর্ম পাই, এরপর প্রিমিয়ার লিগ এরপর গত বছর হাই পারফর্মম্যান্সে এলাম। বিপিএলেও খেললাম।

টিবিএস: ভালো রেজাল্ট করে ভালো একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছিলেন। সেটা বন্ধ করে ক্রিকেটার হতে চেয়েছেন। যেখানে কোনো নিশ্চয়তা ছিল না যে ক্রিকেটার হতে পারবেন। এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া কতটা কঠিন ছিল?

সুমন খান: আসলে আপনি যখন সিদ্ধান্ত নেবেন, তখন যদি পাশে কেউ থাকে এবং বলে যে আচ্ছা এটা কর, আমি আছি। তাহলে সাহ পাওয়া যায়। কিন্তু আমি যখন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, তখন আমি একাই ছিলাম। বাবা-মা তাদের দিক থেকে ঠিক ছিলেন, কারণ তারাও চাইবেন না যে আমার একটা অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ হোক। পড়াশোনা শেষ করে একটা ভালো চাকরি করি। তো ওইখান থেকে সিদ্ধান্তটা নেয়া অনেক চ্যালেঞ্জিং ছিল, নিজের সঙ্গেই জেদ ধরে এগোনো আরকি। আমি কিছু করব এমন একটা জেদ ছিল। আল্লাহর রহমতে এখন এগোচ্ছি।  

টিবিএস: আপনার বাবাকে মানানো কতটা কঠিন ছিল?

সুমন খান: বাবাকে মানানো অনেক কঠিন ছিল। বাবা আমাকে একটা কথা বলেছিল, সেটা আমি এখনও মাথায় রাখি। তখন বলেছি তিন বছরের জন্য বিকেএসপিতে যাব ডিগ্রি পড়তে, তখন আব্বু বলেছিল, 'তোমার জীবন, তুমি সিদ্ধান্ত নিয়েছো খুব ভালো। এটা মনে রাখবে, তিন বছর পর তুমি ভুল, এটা যেন প্রমাণ না হয়। আমি ভুল, এটা আমাকে প্রমাণ করে দিও।' এই কথাটাই বুস্ট আপ হওয়ার প্রধান কারণ। এই কথাটাই সব সময় আমাকে অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে। তিন বছর পর আমি না আব্বু ভুল, এটা প্রমাণ করাই মূল চ্যালেঞ্জ ছিল আমার জীবনে।

টিবিএস: আপনার বাবার স্বপ্ন পূরণ না করে অন্য পথে হেঁটেছেন। এখন তিনি কী বলেন?

সুমন খান: এখন তো সবাই খুশি। বাবা খুশি, মা খুশি, তারা এখন আসলে কিছু বলে না। তাদের মুখের হাসিটাই অনেক কিছু বলে দেয়। তাদের হাসিতেই বোঝা যায়, ভুল প্রমাণের কিছু নেই। এই হাসিটাই বলে দেয় আমি ঠিক রাস্তায় আছি। কাল রাতেই কথা হয়েছে। রাত দুইটায় কথা বললাম আব্বু-আম্মুর সঙ্গে, সবাই খুশি। তারা খুশিতে কান্নাই করে দিয়েছে। 

আব্বু সরকারি চাকরি করতো, বিজিবিতে ছিলেন। আম্মুর সাথে আমি খুব ক্লোজ। সরকারি চাকরির সুবাদে আব্বু হয়তো বছরে আসতো একবার। আব্বুর সঙ্গে সম্পর্কটা একটু ভিন্ন ছিল। আব্বুকে সব সময় আপনি করে কথা বলতাম। কিছু বলতে ভয় পেতাম, এমন একটা সম্পর্ক ছিল। এখন আব্বু যখন আমাকে আব্বু বলে ডাক দেয়, তুমি করে কথা বলে, তখন প্রাপ্তির জায়গাটা থেকে সবচেয়ে ভালো লাগে। এখন বন্ধুসুলভ সম্পর্ক হয়ে গেছে। এখন ফোনটা ধরেই বলে আব্বু কেমন আছো। 

টিবিএস: বিকেএসপিতে যাওয়ার পর কি মনে হচ্ছিল ঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছেন?

সুমন খান: বিকেএসপিতে প্রথম দুই-তিন মাস আসলে মনে হয়েছিল স্কুল লেভেল অন্য রকম। ডিগ্রি লেভেল থেকে এখান থেকে উঠে আসাটা অনেক কঠিন। যারা বিকেএসপিতে ডিগ্রিতে ভর্তি হয়, বেশিরভাগের বয়স ১৮-২০ বছরের হয়। এই বয়সে গিয়ে বিকেএসপির যে সংস্কৃতির সঙ্গে মানাতে অনেক কষ্ট হয়। প্রথম দুইমাস আমার কাছে এটাই মনে হয়েছে। 

ডিগ্রিতে ওই মানের খেলোয়াড় ভর্তি হয় না, স্কুলে যে মানের খেলোয়াড় ভর্তি হয়। এখান থেকে একটু চ্যালেঞ্জিং ছিল। পরবর্তীতে আমি চিন্তা করলাম, আমি যে কাজে এসেছি, সেটাই করি। অন্য কিছুর দিকে চিন্তা করতে হবে না। নিজেকে নিয়েই চিন্তা করেছি, নিজের যেটা দরকার, সেটা নিজেই কাজ করেছি। বাড়তি কাজও করতাম ওই সময়। পরবর্তীতে কোচদের নজরে আসি। তখন প্রথম বিভাগে আমাকে সুযোগ দেওয়া হয়। ওইখান থেকেই ভালো করা। তারপর রাস্তা পেয়ে যাই।

টিবিএস: সাধারণত সবাই কম বয়সে বিকেএসপিতে ভর্তি হয়। এরপর একটা প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে বেড়ে ওঠে। এ সময়ে কোচদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে। আপনার বেলায় ভিন্ন। আপনি কেমন পরিবেশ পেয়েছেন?

সুমন খান: যারা ক্লাস সেভেন বা এইটে বিকেএসপিতে যায়, তাদের জন্য দুই-এক বছরে জায়গাটা চেনা হয়ে যায়। পছন্দের জায়গা হয়ে ওঠে, মানিয়ে নেয়। কোচদের সঙ্গে একটা সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তাদের সম্পর্কে কোচরা ভালো ধারণা পেয়ে যান। কিন্তু ডিগ্রিতে আপনার সময় তিন বছর। এ সময়ে খেলবেন কবে আর কোচদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলবেন কবে। কোচদের সঙ্গে একটা দূরত্ব থাকে। কিন্তু আমার ক্ষেত্রে ব্যাপারটা আলাদা। 

যাওয়ার পর প্রথম দুই-তিন মাস কঠিন সময় পার করেছি। এরপর অনুশীলন ম্যাচে ভালো কেরার পর বিকেএসপির সিনিয়র গ্রুপে অ্যাড করে নেন। অনূর্ধ্ব-১৯ বা এর কাছাকাছি বয়সের ক্রিকেটারদের নিয়ে বিকেএসপিতে একটা দল থাকে, ওখানে আমাকে অ্যাড করে দেন। এরপর আস্তে আস্তে কোচদের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হয়। কোচরা পছন্দ করা শুরু করেন। সেক্ষেত্রে আমার জন্য পরিবেশটা ভালোই ছিল। 

টিবিএস: পেসার হান্ট থেকে বাদ পড়ার কারণ কী ছিল?

সুমন খান: পেসার হান্ট থেকে বাদ পড়েছিলাম মূলত ফিটনেসের কারণে। ফিটনেসের ওপর বেশ কিছু পরীক্ষা হয়েছিল। বিপ টেস্ট, রানিংসহ আরও কিছু ছিল। এসব করতে গিয়ে সাইড স্ট্রেইনে চোট পাই আমি। যদিও আমি সেটা বুঝিনি। কারণ ইনজুরি কী জিনিস, তখনও আমি বুঝিনি। আমি ভাবছিলাম হয়তো এমনি কোনো ব্যথা হয়েছে, ব্যাপার না। প্রাথমিক পর্যায়ে ১৩২ কি.মি তুলেছি। পরের ধাপে প্রথম বল করার সময় ব্যথার স্থানে এমন ব্যথা লাগে যে গতি কমে যায়, ১২৯ কি.মি বেগে করি প্রথম বলটা। 

ব্যথার কারণে দ্বিতীয় বলটা জোরেই করতে পারলাম না। এবার আরও গতি কমলো, ১২৭ কি.মি.। এর পরেরটা করলাম ১২৬ কি.মি.। তিন-চারটা করার পর বোলিংই করতে পারছিলাম না। দম বন্ধ হয়ে আসছিল। কিন্তু এটা ইনজুরি না কী, সে সম্পর্কে আমার কোনো ধারণাই ছিল না। ওখানে ফিজিও ছিল, উনি আমাকে মেডিকেল রুমে নিয়ে যান। উনি দেখে বলেন, তোমার সাইড স্ট্রেইনে টান লেগেছে। এটা বড় ইনজুরি। উনি বলেন, 'তোমার ফিটনেসের ঘাটতির কারণে এটা হয়েছে এবং তুমি গতি তুলতে পারোনি।' ফিটনেসে পিছিয়ে পড়ি। ওখান থেকেই জেদ তৈরি হয়। মনে হচ্ছিল যেটার কারণে বাদ পড়েছি, সেটাই ঠিক করব আগে। 

টিবিএস: বিকেএসপিতে তাহলে নিশ্চয়ই ফিটনেস নিয়ে অনেক কাজ করেছেন শুরুতে?

সুমন খান: শুধু বিকেএসপিতে নয়, এই লকডাউনের সময় মানিকগঞ্জে সপ্তাহে ৫দিন রানিং করেছি। রানিং করতে করতে নেশা হয়ে গিয়েছিল, একদিন রানিং না করতে পারলে ভালো লাগতো না। অভ্যাসে পরিণত করে ফেলেছিলাম। বিকেএসপিতে যাওয়ার পর ফিটনেস নিয়ে এক একাই যে কাজ শুরু করেছিলাম, ওখান থেকে অভ্যাস হয়ে গেছে। রানিং করতে খুব ভালো লাগে। রানিং না করলে মনে হয় পুরো অনুশীলন হয়নি। অনুশীলনের পরও আমি রানিং করেছি। 

টিবিএস: এখন বিপ টেস্টে কতো তুলতে পারেন?

সুমন খান: এখন আমি ১২.৯ বা ১২.১০ তুলি। 

টিবিএস: প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলতে ক্রিকেটার নাদিফ চৌধুরী আপনাকে সাহায্য করেছিলেন। এতটা কতটা কাজে লেগেছে আপনার পথচলায়?

সুমন খান: প্রথম বিভাগের পরই নাদিফ ভাই আমাকে অনুশীলনে ডাকেন। অনুশীলন বলতে নেটে বোলিং করার জন্য ডাকেন। নেটে বেশ ভালো বোলিং করি। ওখানে নজরে পড়ি। ওয়ায়েদ স্যার তখন ঢাকা বিভাগের কোচ ছিলেন, মোর্তুজা স্যার ছিলেন। উনাদের চোখে পড়েছিলাম। হঠাৎ করে চার নম্বর ম্যাচে আমাকে খেলার জন্য ডাকা হয় বগুড়াতে। তো এই যে শুরুটা, এটা আমার ক্যারিয়ারে একটি টার্নিং পয়েন্ট। 

টিবিএস: পুরনো ক্যাম্পাস নর্থ সাউথে যাওয়া হয়?

সুমন খান: না, যাওয়া হয় না। ওই অংশ তো আমি বন্ধ করে রেখেছি। এখানে আমার ডিগ্রি শেষ। মাস্টার্স আমি নর্থ সাউথে করব। করোনার কারণে ভর্তি হতে পারিনি। ভর্তি হয়ে যাবো। ইচ্ছা আছে নর্থ সাউথে পড়ার, না হলে এআইউবিতে ভর্তি হবো। 

টিবিএস: পেসার হিসেবে কাকে অনুসরণ করেন? আপনার আদর্শ কে?

সুমন খান: আমার পছন্দের মানুষ মাশরাফি ভাই। আর বোলিং আইডল জিমি অ্যান্ডারসন। সুইংয়ের কারণে অ্যান্ডারসনকে ভালো লাগে। কারণ আমার বোলিংয়ে প্রকৃতিগতভাবেই সুইং আছে। ছোট বেলায় ব্রেট লিকেও ভালো লাগতো। কিন্তু আস্তে আস্তে অ্যান্ডারসন আমার আদর্শে পরিণত হয়েছেন। ক্রিকেট বোঝার পর মূলত তাকে অনুসরণ করি।

টিবিএস: আগামী মাসে টি-টোয়েন্টি লিগ আছে। এই আসরে কী লক্ষ্য থাকবে?

সুমন খান: প্রথম লক্ষ্য ধারাবাহিকতা ধরে রাখা। এই টুর্নামেন্টে ভালো করেছি বলে এখানে থামতে হবে এমন নয়। কষ্ট করে যাচ্ছি, ইচ্ছা আছে ধারাবাহিকভাবে পারফর্ম করার। এই টুর্নামেন্টের ভুল, যা শিখলাম; এসব নিয়ে কাজ করব। আরেকটি প্ল্যাটফর্ম হবে ওটা, ওখানেও নিজেকে প্রমাণ করার চেষ্টা থাকবে। 

টিবিএস: সবচেয়ে বড় স্বপ্ন কী, কতদূর পাড়ি দিতে চান?

সুমন খান: স্বপ্ন সব সময় বড়ই দেখতে হয়। ছোট বেলা থেকেই বড় স্বপ্ন দেখি যে দেশের জার্সি গায়ে খেলব। এটা স্বপ্ন। কিন্তু এর চেয়েও বড় স্বপ্ন আছে, যেটা আমি বলতে চাই না। সেটা আমি করে দেখাতে চাই। 

Related Topics

টপ নিউজ

সুমন খান / ক্রিকেটার / বিসিবি প্রেসিডেন্টস কাপ

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • ‘মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল আইন’ থেকে বাতিল হল মুজিব বাহিনী, মুজাহিদ বাহিনীর নাম
  • তিক্ত লড়াইয়ে ট্রাম্প-মাস্ক: দুই ক্ষমতাধরের ‘ব্রোম্যান্স’ এখন অতীত, টালমাটাল ওয়াশিংটন
  • বিদেশি গণমাধ্যমে বাংলাদেশবিরোধী অপপ্রচার রোধে সহায়তার প্রস্তাব চীনের
  • মাস্ক ‘বদ্ধ উন্মাদ' হয়ে গেছেন: ট্রাম্প; 'আমাকে ছাড়া ট্রাম্প জিততে পারতেন না': মাস্ক
  • জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনে আমন্ত্রণ পাননি মোদি, ভারত-কানাডা সম্পর্কের টানাপোড়েনের প্রতিফলন
  • পৃথিবীর ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বন্যার ফলে যেভাবে সৃষ্টি হয়েছিল ভূমধ্যসাগর

Related News

  • ভারতের এই শিশুটিকে যেভাবে অনলাইনে ক্রিকেট তারকা বানালেন শচীন টেন্ডুলকার
  • হ্যাটট্রিকসহ সুমনের ৭ উইকেট, সর্বনিম্ন রানে অলআউট রাজশাহী
  • সাকিব আল হাসানের দেশে আসতে কোনো আইনি বাধা নেই: ক্রীড়া উপদেষ্টা
  • সরকার পদত্যাগের পর যা বলছেন ক্রিকেটাররা
  • শিক্ষার্থীদের বিপথগামী না করার অনুরোধ সোহানের

Most Read

1
বাংলাদেশ

‘মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল আইন’ থেকে বাতিল হল মুজিব বাহিনী, মুজাহিদ বাহিনীর নাম

2
আন্তর্জাতিক

তিক্ত লড়াইয়ে ট্রাম্প-মাস্ক: দুই ক্ষমতাধরের ‘ব্রোম্যান্স’ এখন অতীত, টালমাটাল ওয়াশিংটন

3
বাংলাদেশ

বিদেশি গণমাধ্যমে বাংলাদেশবিরোধী অপপ্রচার রোধে সহায়তার প্রস্তাব চীনের

4
আন্তর্জাতিক

মাস্ক ‘বদ্ধ উন্মাদ' হয়ে গেছেন: ট্রাম্প; 'আমাকে ছাড়া ট্রাম্প জিততে পারতেন না': মাস্ক

5
আন্তর্জাতিক

জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনে আমন্ত্রণ পাননি মোদি, ভারত-কানাডা সম্পর্কের টানাপোড়েনের প্রতিফলন

6
আন্তর্জাতিক

পৃথিবীর ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বন্যার ফলে যেভাবে সৃষ্টি হয়েছিল ভূমধ্যসাগর

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net