Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Monday
June 02, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
MONDAY, JUNE 02, 2025
স্ট্যান্ড-আপ কমেডি কি শুধু কৌতুক, নাকি জীবনেরও গল্প? 

ফিচার

রাফিয়া মাহমুদ প্রাত
27 June, 2022, 01:15 pm
Last modified: 27 June, 2022, 06:28 pm

Related News

  • বিশ্বের সবচেয়ে ধনী কমেডিয়ান; নেই কোনো হিট সিনেমা; তবু টম ক্রুজ, ব্র্যাড পিটের চেয়ে বেশি আয়
  • বিগ বসজয়ী মুনাওয়ার ফারুকি: স্ট্যান্ড-আপ কমেডিয়ানের জেলখানা থেকে রিয়েলিটি তারকা হওয়ার যাত্রা
  • ‘দ্য ডেইলি শো’ ছাড়ার ঘোষণা দিলেন ট্রেভর নোয়া

স্ট্যান্ড-আপ কমেডি কি শুধু কৌতুক, নাকি জীবনেরও গল্প? 

‘এমনও হইসে এক লোক এসে আমাকে বলসে, তার বউ তারে পিটায়। এ ধরনের অনেক ব্যক্তিগত গল্পও মানুষ বলে ফেলে। তখন একটু প্যারাই লাগে।’  
রাফিয়া মাহমুদ প্রাত
27 June, 2022, 01:15 pm
Last modified: 27 June, 2022, 06:28 pm

নিজেকে একজন 'আকাইম্মা, কিছু পারিনা' গোত্রের মানুষ হিসেবে পরিচয় দিতে পছন্দ করেন আনন্দ মজুমদার। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ড্রপ আউট হওয়ার পর আনন্দ মজুমদার এমন একটা কিছু করতে চাইতেন, যেখানে কোনো অভিজ্ঞতা বা সার্টিফিকেটের দরকার পড়বে না। তাই ড্রপ আউটের পর শুরু করলেন স্ট্যান্ড-আপ কমেডি করা। 

স্ট্যান্ড আপ কমেডি কি খুব কঠিন জিনিস? আনন্দ কিন্তু একেবারেই তা মনে করেন না। তার কাছে স্ট্যান্ড-আপ কমেডি অনেক চর্চা, স্ক্রিপ্ট বা সেট তৈরির বিষয় নয়। তিনি শুধু মঞ্চে ওঠেন, নিজের মতো নিজের প্রতিদিনের গল্পগুলো বলে যেতে থাকেন। দর্শক তাতেই হেসে কুটিকুটি।  

তবে স্টেজে উঠে ভয় কিন্তু তিনিও পেয়েছেন। প্রথমদিনের অভিজ্ঞতা থেকে তিনি বলেন, 'আমি প্রচন্ড নার্ভাস ছিলাম, প্রচন্ড মানে প্রচন্ড। আমি এত গুছিয়ে কথাও বলতে পারিনা। তাই এতশত না ভেবে নিজের সাথে ঘটে যাওয়া কাহিনীগুলোই গল্পের মতো বলা শুরু করি। দর্শক তাতেই মজা পেয়েছিল।'

'এ-ই তো সম্প্রতি ঘটে যাওয়া টিপ ইস্যুতে প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে আমি একটা মেয়ের কপালে টিপ পরিয়ে দিলাম। এখন আমি তো হিন্দু, মানুষ ভাবসে আমি মেয়েটাকে বিয়েই করে ফেললাম।'

সেদিন এই কথা শুনে হলভর্তি মানুষ হেসে উঠলো। এভাবেই আনন্দ তার দর্শকদের আনন্দ দেন। তিনি নিজেকে একজন কমেডিয়ানের চেয়ে অনেক বেশি একজন গল্প-কথক(স্টোরি টেলার) মনে করেন। কারণ তিনি তো কোনো কৌতুক নয়, বরং প্রতিদিনের গল্পগুলোই  বলে যান!   

আনন্দ মজুমদার। ছবি: সংগৃহীত

কনিষ্ঠ কমেডিয়ান 

আনন্দর এই স্বভাবজাত দিকটি খুব অনুপ্রেরণা দেয় আমরিন জায়মাকে। তিনি বলেন, 'আমি আনন্দ ভাইয়াকে ফলো করি। লাইফের কমিক ট্রাজেডিগুলোক একটু রসিয়ে তুলে ধরতে চেষ্টা করি।'  

নাভিদ কমেডি ক্লাবের সবচেয়ে ছোট সদস্য আমরিন জায়মা। কেবল ইন্টারমিডিয়েট দ্বিতীয় বর্ষে পড়েন। পাশাপাশি টেন মিনিট স্কুলে পার্ট টাইম কাজ করছেন। স্ট্যান্ড আপ কমেডির সঙ্গে জায়মার পরিচয় দুই বছর ছয় মাস। জায়মা মূলত ইন্সটাগ্রাম কন্টেন্ট ক্রিয়েটর। ছোটবেলা থেকেই কথা বলতে আর মানুষকে হাসাতে ভালোবাসেন তিনি। তাই লকডাউনে্র মধ্যে ইন্সটাগ্রামে বিভিন্ন কৌতুকপূর্ণ ভিডিও বানাতে শুরু করেছিলেন। 

কিন্তু মানুষকে হাসানো যে কতটা কঠিন তা বুঝতে পারলেন প্রথম যেদিন মঞ্চে স্ট্যান্ড-আপ কমেডির জন্য দাঁড়ালেন।  

'আমার স্টেজ পারফরমেন্স নিয়ে কোনো ভয় নেই, আমার সেন্স অব হিউমারও ভালো। কিন্তু প্রথমদিন আমার শুধু মনে হচ্ছিল, আমি কি আমি মানুষকে হাসাতে পারবো?'

কিন্তু প্রথম শো'তে সাড়ে তিন মিনিট আমরিন যেভাবে বন্ধুদের সঙ্গে গল্প করে , আড্ডা দেয়, সেভাবেই পুরোটা সময় মাতিয়ে রেখেছিলেন দর্শকদের।  

তবে জায়মার যে সমস্যাটি হতো, তা হলো মঞ্চে উঠে জোক ভুলে যাওয়া। তাই জায়মা হাতে লিখে নিতেন পয়েন্টগুলো। অনেকে ফোনে লিখে নিলেও, জায়মা মনে করেন, তাতে দর্শকের মনোযোগে ব্যঘাত ঘটে। হাতে লিখে নিলে তা আর হয়না। 

জায়মারা তিন বোন।  যত দেরি হোক, ঠিকই গাড়ি পাঠিয়ে দিয়ে মেয়ের আগ্রহকে সমর্থন দিয়ে যান জায়মার মা। কখনো কখনো নিজেও দর্শক হয়ে আসেন, মেয়ের শো দেখতে। 

এই পর্যন্ত ৩০টার মতো শো করেছেন আমরিন। 

আমরিন জায়মা, ছবি: সংগৃহীত

তবে জায়মা জানান, একজন মেয়ে কমেডিয়ান হওয়ায় অনেকেই বাঁকা চোখে দেখে। কারণ মেয়েরা তো হবে শান্ত-শিষ্ট, তাদের গলার স্বর কেন জোরে হবে? একবার নাকি এক ডেটে গিয়েও এমন অভিজ্ঞতা হয়েছে তার। কমেডি করলে আর ডেট করবে না এমন অভিজ্ঞতা আছে তার ঝুলিতে। কিন্তু পরিবার, সিনিয়ররা তাকে সবসময় সাহস যুগিয়ে আসছে শুরু থেকে। 

কমেডির জন্য মন ভালো থাকাটা খুব জরুরি 

'ক্লাসে কিছু স্টুডেন্ট থাকে, যাকে সবাই ক্লাউন বা জোকার বলে। আমি তেমনি একজন। তাই আমার বন্ধুরা আমাকে বলত, এমন কিছুই করা উচিত আমার।' কথাগুলো বলছিলেন ইমু। জায়মার সঙ্গে টেন মিনিটে কাজ করছেন আশরাফুল হক ইমু। একপ্রকার জায়মার জোরাজুরিতেই চলতি বছরের জানুয়ারিতে এনসিসিতে আসা ইমুর। 

যেহেতু আগে থেকেই বিভিন্ন অনুষ্ঠানে শো হোস্ট করার অভিজ্ঞতা রয়েছে তাই, প্রথমদিন স্টেজে উঠে জড়তা কাজ করেনি কোনো। তবে সেদিন তার নাম নিয়েই দর্শকদের কাছ থেকে পাল্টা ক্রাউড ওয়ার্ক( কমেডিয়ান যখন দর্শকের সঙ্গে সরাসরি কথা বলে) এসেছিল। যেমন,  

-তোমার নাম কী?
-ইমু
-তাহলে তোমার বোনের নাম কি হোয়াটসঅ্যাপ?  
এভাবে দর্শকের সামনে নিজেকেও ফাঁসতে হয়েছে ইমুর।

স্ট্যান্ড-আপ ঢাকার সঙ্গেও মাঝে মাঝে কাজ করেন ইমু। তবে নিয়মিত এবং বেশিরভাগ কাজ এনসিসির সঙ্গেই।  গল্প সত্য হোক আর মিথ্যা হোক, হতে হবে মজার। 'ইউ নিড টু হ্যাভ আ গুড স্টোরি। যখনি আমার সঙ্গে ফানি কিছু ঘটে থাকে, তখনি ওটা আমি কোথাও লিখে রাখি। মাঝে মাঝে ভয়েস নোট করে রাখি।' জানান ইমু।

তবে, পরিবার, বন্ধুবান্ধব থেকে কখনো বিরূপ কোনো মন্তব্য না পেলেও বাহিরের মানুষের হাত থেকে রেহাই পান না ইমু। 

একবার ব্যাটম্যান নিয়ে এক ভিডিও আপলোড করে বেশ অন্যরকম অভিজ্ঞতা হয়েছিল তার। ভিডিওটি আপলোডের পর সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখতে পেলেন, ফেসবুকে তাকে  নিয়ে মিম বানিয়ে ভরিয়ে ফেলা হয়েছে নিউজফিড। বিশেষত, যারা ব্যাটম্যানভক্ত। একটু অস্বস্তিবোধ হলেও, বেশ আনন্দও পেয়েছিলেন। তার মানে তার কথাগুলো মানুষ গুরুত্ব দিচ্ছে! 

আশরাফুল হক ইমু, ছবি: সংগৃহীত

টেন মিনিট স্কুলের ডেপুটি ম্যানেজার ইমু মনে বলেন, 'সেই সময়টা সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি যখন আমি দেখি আমার কথা শুনে দর্শক হাসি থামাতে পারছে না, অল্প অল্প করে হেসেই চলছে।' তবে কমেডির জন্য মন ভালো থাকাটা খুব জরুরি মনে করেন তিনি। নিজের মনই ভালো না থাকলে অন্যের মন কী করে ভালো করবো?   

প্রথমদিন পা কাঁপার মতো অবস্থা হয়েছিল শামসের

গত পাঁচ বছর ধরে রেডিও ফুর্তিতে চাকরি করছেন শারার শামস সায়র। পাশাপাশি তিনি  একজন মিউজিশিয়ান। স্ট্যান্ড-আপ কমেডির সঙ্গে তিনি আছেন এ বছরের জানুয়ারি থেকে।

গান গাইলেও, স্টেজে ওঠার ভয় ছিল প্রবল। শামস বলেন, 'স্ট্যান্ড আপ কমেডি একদমই আলাদা। ব্যান্ডের সঙ্গে পারফর্ম করলে স্টেজে আরও মানুষ থাকে। তাই ভুল হলেও কাভার-আপ করা যায়। কিন্তু কমেডির ক্ষেত্রে এটা খুব কঠিন, খুব বেশি ভিজিবল।' 

মঞ্চে ওঠার অভ্যাস থাকার পরও প্রথমদিন শামসের পা কাঁপছিল। কিন্তু দর্শকের কাছ থেকে প্রথম হাসিটাই সব ভয় মুছে ফেলেছিল। ভয় দিয়ে শুরু হলেও, এভাবে ধীরে ধীরে আনন্দ পেতে আরম্ভ করেন শামস। 

শামসের মতে, 'এটা এমন একটা আর্ট ফর্ম, যেখানে প্রতিনিয়ত জীবনকে পর্যবেক্ষণ করতে হয়। সেগুলো লিখে রাখতে হয়।' 

জানুয়ারি  থেকে ২৫টার মতো শো করেছেন শামস। আর এব্যাপারে সবচেয়ে বেশি সমর্থন পেয়েছেন মায়ের কাছ থেকে।   

আগে খুব দুশ্চিন্তায় ভুগতেন শামস। এজন্য থেরাপিও নিতেন তিনি। স্ট্যান্ড-আপ কমেডি করার ইচ্ছে ছিল তার প্রবল। নিজের থেরাপিস্টকেও তিনি একথা জানিয়েছিলেন। অন্যকে হাসাতে গিয়ে নিজেও এখন হাসিখুশি থাকেন। স্ট্যান্ড আপ কমেডি করে নিজের মধ্যেও অনেক ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে বলে জানান শামস।   

বাম থেকে শারার শামস শায়র ও আনন্দ মজুমদার, ছবি সংগৃহীত

দর্শকের হাসিই বৃষ্টির শক্তি

পরিবারকে খুব একটা পাশে না পেলেও চ্যালেঞ্জ নিতে খুব পছন্দ করে জাহান বৃষ্টি। ২০১৮ সালে এক সিনিয়রের মাধ্যমে বৃষ্টি জানতে পারে বাংলাদেশের স্ট্যান্ড-আপ কমেডির কথা। তার পরামর্শেই ২০১৯ থেকে এনসিসি (নাভিদ'স কমেডি ক্লাব) এর সঙ্গে তার যাত্রা শুরু। এপর্যন্ত ২৮টির মতো শো করেছেন বৃষ্টি। বর্তমানে এআইইউবি (আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি-বাংলাদেশ) তে পড়াশোনা করছেন। 

অন্যদের মতো বৃষ্টিরও ভালো লাগার জায়গা এই এনসিসি। কিন্তু যখন গং করা হয় (কমেডির ভাষায় গং মানে খারাপ করা) তখন খুব ভেঙ্গে পড়েন বৃষ্টি। স্টেজ থেকে নেমে যাবার পর থেকে বাসায় ফেরার পুরোটা সময় এই খারাপ লাগা কাজ করে। তিনি বলেন, 'আমার তখন মনে হতে থাকে, আমি কী করছি, কেন করছি। আমাকে দিয়ে হবে না।'

তবে তিনি আবেগী হলেও, চ্যালেঞ্জ নিতে ভালোবাসেন খুব। একে তো বাসায় জানানো হয়নি স্ট্যান্ড-আপ কমেডির বিষয়ে, তার ওপর ফিরতে রাত হওয়ার কারণে বেশ ঝামেলাতেই পড়তে হয় তাকে। তবে তিনি দমে যান না। এই জায়গাটিকেই চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে থাকেন।  

জাহান বৃষ্টি, ছবি: সংগৃহীত

এখানে দর্শকের সাথে যোগাযোগটা খুব সরাসরি হয়। তাই স্টেজে উঠে জড়তা কাজ করলেও, দর্শক যখন হাসে বা মজা পায় সেই দৃশ্যটি বৃষ্টিকে এক নতুন প্রেরণা যোগায়। দর্শকের হাসিই তখন তার শক্তি।

কমেডিয়ান হিসেবে বাংলাদেশেই বেড়ে ওঠা, বাংলাদেশেই মৃত্যু 

অন্য দুজন হলেন আহমেদ আশিক এবং আমিন হান্নান চৌধুরী। বর্তমানে বাংলাদেশে স্ট্যান্ড-আপ কমেডির দুই উজ্জ্বল নাম হলো তারা। দুজনেই চট্টগ্রামের ছেলে। আশিক লন্ডন ইউনিভার্সিটিতে আইন বিষয়ে পড়ালেখা শেষ করে এখন কানাডায় চাকরি করছেন। আর আমিন দেশেরই একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক শেষ করে বর্তমানে চাকরি করছেন। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ালেখা শেষ করে আমিন ছিলেন বেকার। আর সে সময়টা পুরোটা দিয়েছেন এই স্ট্যান্ড-আপ কমেডিতে। সাথে শ্রম এবং অর্থ দুটোই। 

'প্রথম প্রথম কেউ আসতো না। এমনও দিন গেছে, আমরা নিজেরা গিয়ে লাইট অন করসি, টেবিল মুছছি। প্রচণ্ড ভালোলাগা এবং ইচ্ছাশক্তি না থাকলে এই স্ট্যান্ড-আপ কমেডির পেছনে লেগে থাকা সম্ভব নয়। কারণ একে তো এখানে আয়ের কোনো সুযোগই নেই। দ্বিতীয়ত নিজের পকেট থেকেই উলটো টাকা দিতে হয়েছে এখানে।'

এখন অবশ্য ফিচারড শো গুলোতে টিকিট এবং দর্শকের ওপর নির্ভর করে একটু আধটু টাকা আসে পকেটে। তবে তা যাতায়াত ভাড়াতেই চলে যায় বলে জানান তিনি। 

ক্লাস ফোরে থাকার সময় একবার এক প্রতিবেশিকে টিভিতে স্ট্যান্ড-আপ কমেডি দেখতে দেখেছিলেন আমিন হান্নান। কিন্তু  স্ট্যান্ড-আপ কমেডি করার কোনো পরিকল্পনা কখনো ছিল না তার। আমিন শুরু করেছিলেন ২০১৭ এর দিকে। কিন্তু তার রক্ষণশীল পরিবার এখনও বিষয়টি জানেন না।  

ঠিক একই অবস্থা আহমেদ আশিকের ক্ষেত্রে। তার মতে, তার পরিবার তাকে উচ্ছন্নে যাওয়া, 'কিছু হবে না' ধরনের ছেলে হিসেবেই মনে করে। আশিক এবং আমিন দুজনেই ঢাকার বাইরে মোট চারটি শহরে এই স্ট্যান্ড-আপ কমেডি শোর আয়োজন করেছিল। পাশাপাশি তাদের আমিন+আশিক নামে একটি ফেসবুক পেজও আছে। 

বাম থেকে আহমেদ আশিক ও আমিন হান্নান চৌধুরী, ছবি সংগৃহীত

দুজনের বন্ধুত্ব এই কমেডিকে ঘিরেই। দুজনের একসঙ্গে একটি ইউটিউব চ্যানেলও আছে। যেহেতু অনলাইনে এবং অফলাইনে একসঙ্গেই কাজ করেন, তাই অনেক সময় দর্শকও তাদের নাম এবং চেহারা গুলিয়ে ফেলে।  

দেশের গন্ডি পেরিয়েও আমেরিকা, মালোয়শিয়া, সিংগাপুরের মতো দেশে  স্ট্যান্ড-আপ কমেডি করেছেন আশিক। মূলত তার কমেডিয়ান জীবনের শুরু লন্ডনেই। তবে প্রাণ পেয়েছেন বাংলাদেশে কমেডি করেই। তার দাবি, বাংলাদেশের মানুষ কমেডি শোয়ের দর্শক হিসেবে সেরা। তবে আশিক মনে করেন, লন্ডনে তার জন্ম হলেও, বেড়ে ওঠা এবং মৃত্যু দুটোই হবে বাংলাদেশে।  কিন্তু মৃত্যু কেন? আশিক জানান, 'এটা আপনি বুঝে নিন'  

আশিক মনে করেন, কমেডিতে সব বলা যায়, কিন্তু সব পোস্ট করা যায় না। আর আমিন মনে করেন, কমেডি হ্যাজ নো বাউন্ড। কিন্তু অফলাইন এবং অনলাইন দু জায়গাতেই অনেকবার তোপের মুখে পড়তে হয়েছে তাদের। প্রথম প্রথম রক্ত গরম থাকায় এসব নিয়ে বেশ তর্ক-বিতর্ক করলেও, এখন বিষয়গুলোকে ঠান্ডা মাথাতেই সামলে নেন তারা। এ পর্যন্ত আমিন এবং আশিকের ৫-৬ টি যৌথ ভিডিও অনলাইন থেকে সরিয়ে ফেলতে হয়েছিল।  

তাদের কথাগুলোকে গুরুত্ব সহকারে নিলেও কমেডি করার কারণে ব্যক্তি হিসেবে তাদের হালকাভাবেই নেয় মানুষ। এ ব্যাপারে কিছুটা আফসোস করে আমিন বলেন, 'তাদের ধারণা স্টেজে যেভাবে কথা বলি, বাস্তবেও তেমনি করে কথা বলি। আমাদেরও যে মন খারাপ বা সিরিয়াস মুড থাকতে পারে, সেটা মানুষ বোঝে না'   

তবে ভালো লাগা তো আছেই। একবার নাকি শো শেষে একজন এসে আমিনকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেছিল, দীর্ঘ ছয়মাস পর আজ শো দেখে সে প্রথম হাসতে পেরেছে। পরিবারের সদস্য, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া এরকম নানা বিষয় নিয়ে বিষন্ন মানুষগুলো এসে যখন আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানায় বা মেসেজ করে তখন খুব ভালো লাগে আমিনের।  

তবে খ্যাতির বিড়বম্বনাও রয়েছে অনেক। অনেকেই নাকি এতই বেশি সহজ হয়ে যায় তাদের কাছে যে, নিজেদের পারিবারিক অশান্তি নিয়েও কথা বলতে শুরু করে দেয়। যা হয়তো শোনার ইচ্ছে থাকে না। আমিন বলেন, 'এমনও হইসে এক লোক এসে আমাকে বলসে, তার বউ তারে পিটায়। এ ধরনের অনেক ব্যক্তিগত গল্পও মানুষ বলে ফেলে। তখন একটু প্যারাই লাগে।'  

'আবার এমনও হয়েছে কেউ কেউ হয়তো খুব কষ্টের সময়গুলোতে ফোন দিয়ে বা মেসজে জানান, যেন তাদেরকে হাসাই। আমরা তখন বলে দিই, টাকা ছাড়া হাসাই না। মানুষ আমাদেরকে অনেক সময় থেরাপিস্টও মনে করে বসে আসলে', আশিক যোগ করেন। 
 
এখন পরিস্থিতি অনেকটাই বদলেছে। নতুন কমেডিয়ান এসেছে, প্রতি সপ্তাহে শো থাকছে। মানুষ আগ্রহ দেখাচ্ছে। কিন্তু আমিন মনে করেন, এ কেবল শুরু। আরও অনেকটা পথ বাকি। বলতে গেলে পুরোটাই। 

আমিন এবং আশিক দুজনেই মনে করেন, কমেডি মানে শুধু আনন্দ দেওয়া। যে কোনো বিষয়কে কেন্দ্র করে মানুষকে হাসানো, নিজেকে ভালো রাখা। আর কিছু না। 

মজার ছলে দর্শকের মাঝে বার্তা পৌঁছে দেন নীলিমা 

কিন্তু শুধু আনন্দ দিতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন না নীলিমা রাফি। তিনি মনে করেন এটি তার একটি সুযোগ যেখানে মজার ছলে দর্শকের মাঝে কোনো বার্তা পৌঁছে দেওয়ার। 

বর্তমানে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালে (বিউপিতে)  অ্যাকাউন্টিং নিয়ে পড়ছেন নীলিমা। এক বছর হলো স্ট্যান্ড-আপ কমেডির সঙ্গে আছেন। বন্ধুদের সঙ্গে প্রায়ই ওপেন মাইক শো দেখতে যেতেন নীলিমা। 

খুব ছোট বেলায় ডিজলেক্সিয়ায় আক্রান্ত ছিলেন নীলিমা। তাই ডাক্তার তাকে বলেছিলেন, বাংলা ভাষার বাইরে অন্য কোনো ভাষায় কথা বলতে। এতে তিনি কী বলছে তার চেয়ে বেশি গুরুত্ব পাবে কিভাবে বলছে সে ব্যাপারটি। এজন্য ছোটোবেলা থেকে বিভিন্ন পাব্লিক স্পিকিং বা বিতর্কের মতো কর্মসূচিতে অংশ নিতেন। 

'প্রেজেন্স অব মাইন্ড' স্ট্যান্ড আপ কমেডিতে খুব দরকার। যখন কেউ হাসছে না, তখন ওটাকেও এড্রেস করে জোক করতে হবে।' এরকম প্রেজেন্স অব মাইন্ড জরুরি বলে মনে করেন নীলিমা। 

নীলিমা রাফি, ছবি সংগৃহীত

এ পর্যন্ত চারটা শোতে  হেডলাইনার (সবচেয়ে বেশি সময় নিয়ে বলতে দেওয়া হয় যাকে)  হিসেবে কাজ করেছে নীলিমা। অন্যদের থেকে তার শোয়ের কিছু পার্থক্য আছে।

নীলিমা কেবল নিছক আনন্দ দেওয়ার জন্যই স্ট্যান্ড-আপ কমেডি করেন না। মজার ছলে সমাজের বিদ্যমান নানা অসঙ্গতির কথা তুলে ধরে তিনি দর্শকদের মাঝে এক ধরনের ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে চান। যেমন তিনি নারীর পণ্যায়ন, বয়ঃসন্ধিকালের ট্যাবু বা সমস্যাগুলো, ভুল প্যারেন্টিং নিয়ে কথা বলেন। এছাড়া যেহেতু বিদেশি অনেক দর্শক থাকেন, তাই চেষ্টা করেন ইসলাম ফোবিয়াগুলো নিয়েও কথা বলতে। তিনি মনে করেন, যা অন্য কোথাও বলা যায়না, তা কেবল কমেডিতেই বলা যায়।

তবে হিজাব এবং কমেডি দুটো একইসাথে করার কারণে অনেকেই বাঁকা চোখে দেখে তাকে। তাছাড়া তিনি মনে করেন, বিভিন্ন সামাজিক 'ট্যাবু' বা ১৮+ বিষয়গুলো নিয়ে কোনো মেয়ে কমেডিয়ান কথা বললে তা নারী-পুরুষ উভয় দর্শকই মেনে নিতে পারে না। আর রাত করে বাড়ি ফেরার মতো ঝামেলাগুলো তো আছেই। 

তাই কমেডিয়ান হিসেবে নারীরা পিছিয়ে না থাকলেও এ ধরনের জটিলতাগুলো রয়েছে বলে নারীদের সংখ্যা কম বলে তিনি মনে করেন। 

২০০৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের লাস ভেগাস কমেডি ফেস্টিভ্যালে সেরা পুরুষ কমেডিয়ানের স্বীকৃতি পেয়েছিলেন বাংলাদেশের নাভিদ মাহবুব। দেশে ফিরে বেশ কয়েক বছর ধরেই তিনি স্ট্যান্ড-আপ কমেডি নিয়ে কাজ করছেন। গড়ে তুলেছেন নাভিদ'স কমেডি ক্লাব।  এখানের প্রতিটি কমেডিয়ানের কাছে এনসিসি মানেই একটা আড্ডার জায়গা, মন খুলে হাসার জায়গা। এখানে কেউ অর্থ বা টাকা কড়ির জন্য আসেনা। কেউ এটাকে পেশা হিসেবেও বেছে নিতে চায় না। কারণ সবকিছুই যদি টাকার বিনিময়ে হয়ে যায়, তখন তো আর মৌলিক বিষয়টি আর থাকে না। তারচেয়েও বড় বিষয় হলো, এখানে আসলে পাওয়ার চেয়ে দিতেই হয় বেশি। 

এ ব্যাপারে আমিন বলেছিলেন, 'আসলে অনেক প্যাশন লাগে। প্রতিমাসে প্রতি কমেডিয়ানের অন্তত দুই- আড়াই হাজার টাকা যায় শুধু ট্রান্সপোর্টের জন্য। নাভিদ ভাই অনেক টাকা দিয়ে সাহায্য করেছেন। এমন এমন অনেক শো গেছে যেখানে টাকা কী পাবো, পানির মতো উলটো টাকা ঢালতে হয়েছে।' 

তবে এই চিত্র এখন কিছুটা হলেও পাল্টেছে। দর্শক এবং টিকিটের উপর নির্ভর করে টুকটাক কিছু একটা হাতে আসছে। তবে সেটা যেমন ১০০ টাকাও হয়ে থাকে, তেমন ১ হাজারের বেশিও হয়ে থাকে। কিন্তু যারা কমেডি করতে আসে, তাদের এই বিষয়টি নিয়ে আসলে কোনো মাথা ব্যথার কারণ নেই। 

একদল তরুণ-তরুণী এখানে আসে, আড্ডা দেয়, হাসায়, নিজেদের ভুলগুলো নিয়ে আলোচনা করে। কারও দুঃসময়ে একজন অপরজনের পাশে থাকে। 

Related Topics

টপ নিউজ

স্ট্যান্ড-আপ কমেডি

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • কাল থেকে পাওয়া যাবে নতুন টাকা, সংগ্রহ করবেন যেভাবে
  • ‘মবের নামে আগুন, ভাঙচুরের সুযোগ নেই’: সারজিসকে সেনা কর্মকর্তা
  • দেশের প্রথম মনোরেলের মাধ্যমে চট্টগ্রাম হবে দক্ষিণ এশিয়ার গেটওয়ে: মেয়র শাহাদাত
  • থার্ড টার্মিনাল চালু: সরকারের টার্গেট ডিসেম্বর, জাপানি কনসোর্টিয়াম চায় আরও ২ মাস
  • আগামী বছর থেকে অনলাইনে ট্যাক্স রিটার্ন জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক হচ্ছে
  • জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে ৫০০ কোটি টাকা লোকসান আইএফআইসি ব্যাংকের

Related News

  • বিশ্বের সবচেয়ে ধনী কমেডিয়ান; নেই কোনো হিট সিনেমা; তবু টম ক্রুজ, ব্র্যাড পিটের চেয়ে বেশি আয়
  • বিগ বসজয়ী মুনাওয়ার ফারুকি: স্ট্যান্ড-আপ কমেডিয়ানের জেলখানা থেকে রিয়েলিটি তারকা হওয়ার যাত্রা
  • ‘দ্য ডেইলি শো’ ছাড়ার ঘোষণা দিলেন ট্রেভর নোয়া

Most Read

1
অর্থনীতি

কাল থেকে পাওয়া যাবে নতুন টাকা, সংগ্রহ করবেন যেভাবে

2
বাংলাদেশ

‘মবের নামে আগুন, ভাঙচুরের সুযোগ নেই’: সারজিসকে সেনা কর্মকর্তা

3
বাংলাদেশ

দেশের প্রথম মনোরেলের মাধ্যমে চট্টগ্রাম হবে দক্ষিণ এশিয়ার গেটওয়ে: মেয়র শাহাদাত

4
বাংলাদেশ

থার্ড টার্মিনাল চালু: সরকারের টার্গেট ডিসেম্বর, জাপানি কনসোর্টিয়াম চায় আরও ২ মাস

5
অর্থনীতি

আগামী বছর থেকে অনলাইনে ট্যাক্স রিটার্ন জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক হচ্ছে

6
অর্থনীতি

জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে ৫০০ কোটি টাকা লোকসান আইএফআইসি ব্যাংকের

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net