‘আমাদের ভবিষ্যত অতটা খারাপ নয়, যতটা ভেবেছিলাম’

পয়মন্ত ভেন্যু চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধরী স্টেডিয়ামে প্রিয় ফরম্যাটে খেলা। প্রতিপক্ষ আফগানিস্তানকে আটকে দেওয়া সম্ভব হয় ২১৫ রানেই। প্রথম ওয়ানডেতে সহজ জয় তুলে নেওয়ার লক্ষ্যেই ব্যাটিং শুরু করে বাংলাদেশ। কিন্তু মুহূর্তেই সব এলোমেলো, ছোট লক্ষ্যই তখন অনেক দূরের পথ। ৪৫ রানেই ৬ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ তখন দিকহারা।
জহুর আহমেদের বিবর্ণ গ্যালারির মতো শুনশান নিরবতা নেমে আসে প্রেসিডেন্টস বক্সেও। যেখানে পরিচালকদের নিয়ে খেলা দেখছিলেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। আর সবার মতো তিনিও হয়তো শেষ পরিণতি দেখতে পাচ্ছিলেন। কিন্তু অবিশাস্য ব্যাটিংয়ে চিত্রনাট্য পাল্টে জয় ছিনিয়ে আনেন আফিফ হোসেন ধ্রুব ও ম্যাচসেরা মেহেদী হাসান মিরাজ।
সবার মতো হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছেন বিসিবি সভাপতিও। দুই নায়ক আফিফ-মিরাজকে নিয়ে প্রশংসার লহর বইয়ে দেন তিনি। নাজমুল হাসানের ভাষায়, 'দুজন যেভাবে স্বাচ্ছন্দ্যে খেলে গেল, কোনো ঝুঁকি না নিয়ে। আত্মবিশ্বাসে ভরপুর, ওদের দেখে মনে হয়নি নার্ভাস। যেসব শট খেলছিল, সত্যিই ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। তবে যতো সময় যাচ্ছিল, বিশ্বাসটা জোরালো হচ্ছিল, ওরা থাকলে জেতা যাবে। অসাধারণ ইনিংস খেলেছে আফিফ-মেহেদী।'
এই ম্যাচে জয় আসবে, এমনটি ভাবেননি নাজমুল হাসান। উইকেট বৃষ্টি দেখে ঘাবড়ে গিয়েছিলেন তিনি, 'সত্যিকার অর্থে আত্মবিশ্বাসী ছিলাম না। আমরা সবাই বলছিলাম, যদি ৫০ ওভার খেলতে পারি, তাহলে জিতব। এরপর আমি বললাম, এ দুজন (আফিফ-মিরাজ) যদি খেলে যেতে পারে, তাহলে জেতার সম্ভাবনা আছে। কিন্তু মনে হচ্ছিল, এটাও প্রায় অসম্ভব। কারণ, যেভাবে আমাদের প্রথম ৬টা উইকেট গেল, মনে হচ্ছিল, ওদের বল খেলা সম্ভবই না। খেলার অযোগ্য।'
খাদের কিনারে চলে যাওয়া দলকে পথ দেখিয়ে তরুণ দুই ক্রিকেটার যেভাবে জয়ের মালা গাঁথলেন, তাতে বাংলাদেশের ভবিষ্যত ভালোই দেখছেন বিসিবি সভাপতি। তিনি বলেন, 'যে পরিস্থিতিতে আমরা পড়েছিলাম, এটা সামাল দেওয়ার মতো সাহস ও জয়ের দৃঢ়তা আমাদের দুই ইয়াং স্টার যেভাবে দেখিয়েছে, তা অসাধারণ। তাই আমি মনে করি, আমাদের নতুন প্রজন্মের যেসব খেলোয়াড় আছে, তাদের জন্য ভালো খবর। আমাদের ভবিষ্যৎ অতটা খারাপ নয়, যতটা ভেবেছিলাম।'
সিরিজের বাকি ম্যাচগুলোয় ঠান্ডা মাথায় খেলোর পরামর্শ দিয়ে নাজমুল হাসান আরও বলেন, 'আমি বারবার একটা কথা বলেছি, যত দিক দিয়ে বিচার করেন না কেন, আমাদের দলটা বেশি ভালো। আমাদের খেলোয়াড়েরা র্যাঙ্কিং, অভিজ্ঞতা, সব দিক দিয়ে এগিয়ে। আমাদের দেশের মাটিতে আমরা যদি ওদের সঙ্গে সাহস করে না খেলি, বেশি চিন্তা করি, তাহলে ঝামেলা। তাই খেলোয়াড়রা যদি ঠান্ডা মাথায় খেলে, তাহলে সহজেই আমরা সিরিজ জিততে পারি।'