কমলাপুর স্টেশনে ধূমপান করায় যুবককে জেলে পাঠানোর নির্দেশ পুলিশ সুপারের, ভিডিও ভাইরাল
কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে বসে ধূমপান করায় এক যুবককে আটক করে থানার মাধ্যমে আদালতে পাঠানোর নির্দেশ দেন রেলওয়ে পুলিশের এক পুলিশ সুপার। এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
ভিডিওতে থাকা ওই পুলিশ কর্মকর্তার নাম আনোয়ার হোসাইন, তিনি বিসিএস পুলিশ ক্যাডারের ২৭তম ব্যাচের কর্মকর্তা। সূত্র জানায়, তিনি এর আগে নিজেকে পলাতক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামানের আত্মীয় বলে পরিচয় দিতেন।
গত ১১ অক্টোবর 'ল মিমস' নামে একটি ফেসবুক পেজ থেকে শেয়ার দেওয়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, কমলাপুর রেলওয়ে পুলিশের পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন এক পুলিশ সদস্যকে নির্দেশ দিচ্ছেন- প্ল্যাটফর্মে ধূমপানরত এক যুবককে আটক করতে।
ভিডিওতে শোনা যায়, আনোয়ার হোসেন ওই যুবককে উদ্দেশ করে বলেন, 'পাবলিক প্লেসে আপনি বিড়ি খাচ্ছেন কেন?' এরপর তিনি নির্দেশ দেন,'ওরে থানায় নিয়ে রাখো। প্রসিকিউশন দিয়ে দিবা, যাও। থানায় নিয়া যাও। জয়নাল, ওরে থানায় নিয়া যাও। কালকে কোর্টে পাঠায় দিবা। বিড়ি খাইতেছে, প্রসিকিউশন দিয়া সাবমিশন দিয়া সাব-ইন্সপেক্টর দিয়া পাঠাই দাও।'
ভিডিওতে দেখা যায়, ওই যুবক বিভ্রান্ত ও আতঙ্কিত অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছেন।
এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক এ এইচ এম শাহাদাত হোসাইন এবং রেলওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক জিল্লুর রহমান কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি।
তবে ভিডিওটি কে ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়েছে- তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড-এর ডিজিটাল অনুসন্ধানে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে ভিডিওটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) দিয়ে তৈরি বা সম্পাদিত নয়, অর্থাৎ এটি আসল ভিডিও।
এ বিষয়ে মতামত দিতে গিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধ বিশ্লেষক অধ্যাপক তৌহিদুল হক বলেন, 'বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে জনবহুল স্থানে ধূমপানের জন্য জরিমানার পরিমাণ ৩০০ টাকা। কেউ একাধিকবার আইন ভঙ্গ করলে জরিমানা বাড়ানো যেতে পারে। তবে কাউকে এভাবে জনসম্মুখে হেনস্তা করে জেলে পাঠানোর কোনো বিধান আইনে নেই।'
তিনি আরও বলেন, 'মূলত কিছু পুলিশ সদস্য জনপ্রিয়তা বা সামাজিক স্বীকৃতি পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা থেকে এমন কাজ করে থাকেন। কিন্তু এতে উল্টোভাবে পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়।'
