ইসির সংলাপ: নির্বাচনে অনিয়ম ঠেকাতে ‘সামাজিক কমিটি’ গঠনের পরামর্শ সাংবাদিক প্রতিনিধিদের

আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অনিয়ম ঠেকাতে 'সামাজিক কমিটি' গঠন করে তার মাধ্যমে পরিস্থিতি নজরদারি, নির্বাচনের আগে টাকার খেলা কঠোরভাবে বন্ধ, সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জন করাসহ বিভিন্ন পরামর্শ দিয়েছেন প্রিন্ট মিডিয়ার সম্পাদক, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিক প্রতিনিধিরা।
সোমবার (৬ অক্টোবর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ের সাংবাদিকদের সঙ্গে আয়োজিত সংলাপে এই আহ্বান জানান তারা।
সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন। এ সময় চার নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিবালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং দেশের বিভিন্ন প্রিন্ট মিডিয়ার সম্পাদক ও প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচন প্রক্রিয়াকে স্বচ্ছ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে অর্থের প্রভাব নির্মূলের ওপর জোর দিয়েছেন বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক, বিশিষ্ট কবি ও সাহিত্যিক মাহবুব মোর্শেদ।
তিনি বলেন, 'নির্বাচনের আগে টাকার খেলা কঠোরভাবে বন্ধ করতে হবে। ভোট কেনা-বেচা, মনোনয়ন কেনা, প্রশাসনকে প্রভাবিত করার জন্য অর্থের ব্যবহার-এসব রোধ করতে পারলেই একটি প্রকৃত জনগণের সংসদ পাওয়া সম্ভব হবে।'
মাহবুব মোর্শেদ বলেন, 'আমরা আশা করব নির্বাচনের আগে যে অর্থের খেলা শুরু হয়, মনোনয়ন বাণিজ্য, ভোট কেনা, এমনকি কর্মকর্তাদের প্রভাবিত করার মতো কর্মকাণ্ড-এসব কঠোরভাবে বন্ধ করতে হবে। যারা এখন থেকেই ভাবছেন মনোনয়ন কিনবেন, ভোট কিনবেন, কিংবা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের কিনে ফেলবেন, তাদের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনকে তফসিল পর থেকেই আইন প্রয়োগ করতে হবে। তাহলেই আমরা অন্তত একটি অর্থবহ সংসদ পাব।'
তিনি বলেন, 'নির্বাচন যেন একদিনের ইভেন্ট না হয়, বরং একটি দীর্ঘমেয়াদী গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার অংশ হোক, এই প্রত্যাশা আমাদের সবার। আমরা চাই না নির্বাচনের দিন ভোটের পরিবেশ ঠিক থাকলেও আগের রাতে অর্থের প্রভাবে জনমত বিকৃত হয়ে যাক। নির্বাচন কমিশন চাইলে এ জায়গায় দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারে।'
মাহবুব মোর্শেদ বলেন, 'বাংলাদেশ এখন এক পরিবর্তনের যুগে প্রবেশ করেছে। দেশে একটি ফ্যাসিবাদী ও কর্তৃত্ববাদী সরকার উৎখাত হয়েছে। তারা শুধু ভোট কারচুপি করেনি, বরং সংসদকে জনগণের নিয়ন্ত্রণের বাইরে নিয়ে গিয়েছিল। ব্যবসায়ী, ঠিকাদার ও স্বার্থান্বেষী মহল সংসদে প্রবেশ করে আইন প্রণয়ন প্রক্রিয়াকে বিকৃত করেছে। তাদের অনেকে আইনপ্রণেতা ছিলেন না, বরং নিজেদের ব্যবসায়িক স্বার্থে সংসদ ব্যবহার করেছেন। ফলে সংসদ কার্যত অকার্যকর হয়ে পড়েছিল।'
তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, একদলীয় বা একতরফা নির্বাচনে যে সংসদ গঠিত হয়েছিল, সেসব সংসদে অনেক সদস্য ঘুমিয়ে সময় কাটিয়েছেন। আইন প্রণয়নে তাদের কোনো সক্রিয়তা ছিল না। দল যা বলেছে, সেটাই তারা 'হ্যাঁ' বা 'না' বলে সমর্থন করেছেন। ফলে জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন সংসদে অনুপস্থিত ছিল।
মাহবুব মোর্শেদ বলেন, 'আমরা চাই এমন একটি নির্বাচন, যেখানে প্রার্থীরা জনগণের আস্থা অর্জন করে নির্বাচিত হবেন। প্রার্থী কে হবেন, তিনি উচ্চশিক্ষিত কি না বা আইন বিষয়ে অভিজ্ঞ কি না-এই বিষয়ে কমিশনের ক্ষমতা সীমিত। কিন্তু কমিশন চাইলে এমন এক নির্বাচনি প্রক্রিয়া তৈরি করতে পারে যেখানে অর্থ বা ক্ষমতার প্রভাবের জায়গা থাকবে না। জনগণ তাদের প্রতিনিধি বেছে নেওয়ার সুযোগ পাবে স্বাধীনভাবে।'
তিনি আরও বলেন, 'নির্বাচন কমিশন এখন পর্যন্ত যে নিরপেক্ষতা বজায় রেখেছে, তা প্রশংসনীয়। এই কমিশন নিয়ে এখনও বড় ধরনের বিতর্ক সৃষ্টি হয়নি। জনগণের এই আস্থা রক্ষা করা এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। নির্বাচন কমিশন যদি এই আস্থা ধরে রেখে স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু নির্বাচন পরিচালনা করতে পারে, তাহলে জনগণ আবারও গণতন্ত্রের প্রতি বিশ্বাস ফিরিয়ে আনবে।'
সভায় উপস্থিত সাংবাদিকরা নির্বাচনি ব্যয়সীমা নির্ধারণ, মনোনয়ন প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা, ভোটার তালিকার হালনাগাদ, আচরণবিধি লঙ্ঘনের শাস্তি এবং সংবাদমাধ্যমের স্বাধীন ভূমিকা নিয়ে নানা প্রস্তাব ও মতামত তুলে ধরেন।
সিইসি নাসির উদ্দিন সাংবাদিকদের মতামতকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, 'ইসি নির্বাচনের আগে থেকেই ব্যয় নিয়ন্ত্রণ ও আচরণবিধি প্রতিপালনে কঠোর অবস্থান নেবে।'
তিনি প্রতিশ্রুতি দেন, কোনো প্রভাবশালী ব্যক্তি বা দল নির্বাচনি প্রক্রিয়া বিকৃত করতে পারবে না।
মাহবুব মোর্শেদ বলেন, 'নির্বাচন শুধু ভোটের দিন নয়, ভোটের আগে থেকেই গণতন্ত্রের অনুশীলন শুরু হয়। সাংবাদিকদের ভূমিকা এখানে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গণমাধ্যমের উচিত জনগণের চোখ-কান হয়ে অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকা। কারণ, আমরা সবাই চাই বাংলাদেশে এমন একটি সংসদ গঠিত হোক, যেখানে প্রকৃত জনগণের কণ্ঠস্বর প্রতিফলিত হবে।'
কালের কণ্ঠের সম্পাদক ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি হাসান হাফিজ ইসির উদ্দেশে বলেন, 'প্রত্যাশা থাকবে আপনারা মেরুদণ্ডসম্পন্ন ব্যক্তিত্ব হিসেবে জাতির কাছে পৌঁছাবেন। পুলসিরাতের মধ্যে আপনারা আছেন। আমরা চাই ইসি সেই রকম দৃঢ়তার পরিচয় দেবে।'
হাসান হাফিজ বলেন, 'আর আগের নির্বাচনগুলো যারা পরিচালনা করেছেন তারা এখন কাঠগড়ায় দাড়াচ্ছেন। আপনাদের সামনেও কিন্তু সেই আশঙ্কা আছে। সুতরাং আপনারা ডু অর ডাই। যেরকম ছাত্র-জনতার যে সর্বপ্লাবী যে অভ্যুত্থান হয়েছে তাদের রক্তের সঙ্গে আমরা যেনো বেঈমানি না করি।'
তিনি বলেন, 'আপনাদের ছাড়া দেশে স্থিতি আসবে না। গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা সফল হবে না। গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির চর্চার লালন, বিকাশ কিছুই হবে না। এইরকম যে আমরা সুযোগ পেয়েছি একটা দেশকে নতুন করে গড়ার এইটা হয়তো পঞ্চাশ বছর, একশো' বছরে আসবে না। হয়তো ভবিষ্যতে এর থেকেও ভয়ঙ্কর স্বৈরাচার আমাদের কাঁধে চেপে বসতে পারে। সুতরাং এখনই সময় সেই রকম দৃঢ়তার পরিচয় দেওয়া।'
হাসান হাফিজ বলেন, 'ষড়যন্ত্র আছে, নির্বাচন নস্যাৎ করার জন্য দেশের ভিতরে আছে, দেশের বাইরেও আছে। আপনাদের এটা [নির্বাচন] গ্রহণযোগ্য করার জন্য কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ব্যাপারে আপনাদের বক্তব্য আমরা জানতে চাই। না হলে তো নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না।'
তিনি বলেন, 'আওয়ামী লীগের ভোটারদের তো আপনি বাদ দিতে পারবেন না। তারা তো দেশের নাগরিক। তারা যদিও অনুশোচনা করেনি, এখনও পর্যন্ত প্রায়শ্চিত্ত করেনি, অনুতপ্ত হয়নি। কিন্তু তারপরেও তাদের বাদ দিয়ে তো নির্বাচন হতে পারে না। তো সেই ব্যাপারে আপনাদের সুস্পষ্ট অবস্থান জাতির কাছে পরিস্কার করবেন, আন্তর্জাতিক সমাজের কাছে পরিস্কার করবেন।
হাসান হাফিজ বলেন, 'এত বড় নির্বাচন, এটা কিন্তু শুধু সেনাবাহিনী, শুধু নির্বাচন কমিশন, শুধু আমলাতন্ত্র, পুলিশ, আনসার, র্যাব তাদের পক্ষে করা সম্ভব নয়।'
তিনি বলেন, 'আমি সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব করতে চাই প্রত্যেক নির্বাচনি এলাকায় আমরা যদি একটা কমিটি করি, একদম ফলাফল ঘোষণা পর্যন্ত। পেশাজীবী, ব্যবসায়ী ও তরুণদের নিয়ে আমরা যদি একটি কমিটি করি। সেই কমিটি নজরদারি করবে এবং সবকিছুর নজরদারি করবে। আপনারা যদি তাদের যুক্ত করেন, সম্পৃক্ত করেন, তাহলে তাদের দায়িত্ববোধ বাড়বে এবং আপনাদের কাজটাও অনেকাংশে হালকা হয়ে আসবে। এবং সবাইকে যদি এটার সঙ্গে যুক্ত করতে পারেন তাহলে এটা একটা বড় জিনিস হতে পারে।'
হাসান হাফিজ বলেন, 'এছাড়া আপনাদের সাইবার নজরদারি বাড়াতে হবে। কারণ, এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এআই দিয়ে নানারকম প্রোপাগান্ডা হচ্ছে। আপনারা আগেই বলেছেন যে এআই একটা বড় চ্যালেঞ্জ হবে। তো সেটার নজরদারিটা বাড়াতে হবে, সক্ষমতা বাড়াতে হবে।'
তিনি বলেন, 'এ ব্যাপারে আপনারা কিন্তু বিদেশি সহায়তাও পাবেন। ইতোমধ্যে কিছু পেয়েছেন। আপনাদের সক্ষমতা আছে।
আমি ব্যাক্তিগতভাবে মনে করি প্রবাসীরা আমাদের চেয়ে বেশি দেশপ্রেমিক। তাদের রক্তে, ঘামে, শ্রমে কিন্তু বাংলাদেশ একটা দুর্ভিক্ষের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে। সুতরাং তাদেরকে আমরা যেন যথাযথ সম্মান করি এবং আমি নির্বাচন কমিশন সংস্কার প্রস্তাবনায় বলেছিলাম যে, তাদের প্রতিনিধিত্ব যেন সরকারে থাকে।'
প্রথম আলোর নির্বাহী সম্পাদক সাজ্জাদ শরিফ বলেন, 'অনেক কথা শোনা যাচ্ছে, নানা রকমের শঙ্কা, আশঙ্কা, কী হবে কী হবে না-এগুলো নিয়ে অনেক রকম কথা আছে, গুজব আছে, অপতথ্য আছে। তবে আমাদের সরকার প্রধান বলেছেন এবং সিইসি বলেছেন, নির্বাচন হবে এবং ভাল নির্বাচন হবে।'
তিনি বলেন, 'এত রক্তের বিনিময়ে মানুষ একটি স্বচ্ছ, অবাধ, স্বতঃস্পূর্ত ও আনন্দময় নির্বাচনের জন্য অপেক্ষা করছে। নির্বাচন হচ্ছে গণতন্ত্রের প্রবেশপথ এটা সত্য এবং গত ১৫ বছরে সেটির মধ্য দিয়েই জাতি যেতে পারেনি। এটাই বাস্তবতা।'
সাজ্জাদ শরিফ বলেন, 'এগুলো অন্তরালে হয়, কিন্তু নির্বাচনকে গভীরভাবে প্রভাবিত করে। এবারের নির্বাচনে বোঝা যাচ্ছে, অর্থ ও বলপ্রয়োগ অনেক হবে। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি, প্রতিষ্ঠানগুলো খুব দুর্বল, প্রশাসনের অবস্থা দুর্বল। এই অবস্থায় কতটুকু কী পরিমাণে হবে এ নিয়ে আশঙ্কা রয়ে গেছে। আমাদের আশঙ্কা ইতোমধ্যেই একটি রাজনৈতিক দল দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এগুলো করছে।'
তিনি বলেন, 'এই যে প্রার্থীতা আন্ডারহ্যান্ডলিং, কেনা-বেচা, এগুলোর ব্যাপারে নির্বাচন কমিশন কী করতে পারবে,কীভাবে সামাল দেবে-এগুলো গুরুত্বপূর্ণ। নির্বাচনে প্রার্থীদের হলফনামা জমে পড়ে, অথচ তা চেক করা হয় না। এটা ইসির বড় দায়িত্ব বলে মনে করি।'
সাজ্জাদ শরিফ বলেন, 'ডিজিটাল স্পেসে কীভাবে অর্থ প্রয়োগ করে জনমত তৈরি করা যায়, এটা দেখা দরকার। আওয়ামী লীগ সরকার তার যে ক্ষমতা কুক্ষিগত করেছে এবং এতদিন শাসন করেছে, তারা একটি বিরাট ডিজিটাল বাহিনী গড়ে তুলেছিলেন এবং সেখানে তারা বিপুল অর্থ ব্যয় করতেন। আমার মনে হয়, এবারের নির্বাচনে এটা ব্যাপক আকারে হবে।'
নির্বাচনি ব্যয়ও দেখা উচিত বলে মনে করেন সাজ্জাদ শরিফ।
তিনি বলেন, 'হলফনামায় ব্যয়, নির্বাচনি ব্যয় দেখানোর বিষয়টি আরপিও-তে আছে। এই কমিশন হয়তো অনেক কিছুই করার চেষ্টা করবে। কিন্তু, নির্বাচন কমিশনের মেরুদণ্ড বা নৈতিক শক্তি কতটুকু সেটা এবার মানুষ দেখতে চাইবে। এর জন্য আপনারা যা কিছু করতে চান তা দৃশ্যমান করেন, দুয়েকটি ক্ষেত্রে নজির স্থাপন করেন।'
ভোটকেন্দ্রে সাংবাদিকদের অবাধ প্রবেশের দাবি জানিয়ে দ্য ডেইলি স্টারের হেড অব নিউজ জিয়াউল হক বলেন, 'ভোটকেন্দ্র ঢুকতে গিয়ে সাংবাদিকরা যেন কোনো বাধা ও হয়রানির শিকার না হন এবং তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয় কমিশনের কাছে এই দাবি জানাই।'
আজকের পত্রিকার সম্পাদক কামরুল হাসান বলেন, 'নির্বাচনে প্রার্থীদের হলফনামা দেয়, পরে এগুলো আপলোড করা হয়। তখন ওই প্রার্থী নিয়ে প্রায় কোনো কিছু বলার থাকে না। এটা খুবই ইচ্ছাকৃত ও পরিকল্পিত। আমার সুপারিশ হলো প্রার্থীর হলফনামা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে যেন এটা ওয়েবসাইট আপলোড করা হয়। এতে তার ভোটার এবং পুরো দেশের মানুষ ওই প্রার্থী সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য জানতে পারে। এই ব্যবস্থাটা উন্মুক্ত করা নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব।'
তিনি বলেন, 'আরেকটা বিষয়, নির্বাচন কমিশন এক ধরনের নির্দেশ দেয় সাংবাদিকদের সামনে, প্রকাশ্যে বা গণমাধ্যমের সামনে বা টেলিভিশনের সামনে। কিন্তু কেন্দ্রের ভিতরে বা অন্য বিভিন্ন জায়গায় অনেক গোপন নির্দেশ থাকে। এই কমিশন যেহেতু একটা স্বচ্ছ নির্বাচন করার প্রতিশ্রুতি নিয়ে আসছে, কমিশনের কাছে আমাদের অনুরোধ থাকবে কোনো ধরনের কোন গোপন নির্দেশনা না দেওয়া হয়।'
নিউজ২৪এর হেড অব নিউজ শরিফুল ইসলাম খান বলেন, 'সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জন করতে হবে। ভোট মানেই এক সময় ফেস্টিভ মুড ছিল। ধীরে ধীরে এটা রক্তক্ষয়ী অবস্থায় চলে এসেছে। শুধু কাগজ দিয়ে, আইন দিয়ে মানুষের আস্থা অর্জন করতে পারবেন না। অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য বৃত্তের বাইরে গিয়ে চিন্তা করতে হবে। অন্যথায় সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জন করতে পারবেন না।'
তিনি বলেন, 'সুষ্ঠু নির্বাচনের সহায়ক হবে গণমাধ্যমের এমন স্বাধীনতা দিতে হবে। এতে ইসিরও লক্ষ্য পূরণ সহজ হবে।'
ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভির প্রধান বার্তা সম্পাদক মোস্তফা আকমল বলেন, 'নির্বাচনে সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা হবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচার। এক মিনিটেই ভুয়া ছবি তৈরি করা যায়, প্রার্থীদের ভাবমূর্তি নষ্ট করা সম্ভব।'
তিনি ভোটার তালিকা হালনাগাদে ত্রুটি দূর করা ও ফলাফল দ্রুত প্রকাশের আহ্বান জানান।