এসএমই খাতের জন্য বৈদেশিক লেনদেন সহজ হলো, কার্ডে বছরে পাঠানো যাবে সর্বোচ্চ ৩ হাজার ডলার

দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) খাতের জন্য বৈদেশিক মুদ্রায় লেনদেন আরও সহজ করলো বাংলাদেশ ব্যাংক। নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, এখন থেকে এসএমই প্রতিষ্ঠানগুলো আন্তর্জাতিক কার্ড ব্যবহার করে বছরে ৩ হাজার ডলার পর্যন্ত বিদেশে পাঠাতে পারবে। বিদেশ থেকে পণ্য আমদানির বিল পরিশোধসহ বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রয়োজন মেটাতে এই সুবিধা ব্যবহার করা যাবে।
রোববার (৫ অক্টোবর) বাংলাদেশ ব্যাংক এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা জারি করেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, এসএমই খাত দেশের অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। এই খাতের প্রসারে প্রচলিত ব্যাংকিং চ্যানেলের পাশাপাশি কার্ডের মাধ্যমে বৈদেশিক লেনদেন প্রক্রিয়া সহজ করার লক্ষ্যেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
সার্কুলারে বলা হয়েছে, নিবন্ধিত এসএমই প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের আন্তর্জাতিক ক্রেডিট, ডেবিট বা প্রিপেইড কার্ড ব্যবহার করে এই সুবিধা গ্রহণ করতে পারবে।
উদ্যোগের অংশ হিসেবে প্রতিটি প্রতিষ্ঠান তাদের মনোনীত কর্মকর্তার নামে রিফিলযোগ্য আন্তর্জাতিক কার্ড বা 'এসএমই কার্ড' নিতে পারবে।
এই কার্ডে প্রাথমিকভাবে সর্বোচ্চ ৬০০ মার্কিন ডলার লোড করা যাবে, যা মূলত বৈধ অনলাইন খরচ পরিশোধের কাজে ব্যবহার করা যাবে।
তবে কার্ড লেনদেন ও সরাসরি রেমিট্যান্স—দুই ক্ষেত্র মিলিয়ে একটি এসএমই প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক বৈদেশিক লেনদেনের সীমা সর্বোচ্চ ৩ হাজার ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। এই অর্থ আন্তর্জাতিক সেমিনার, সম্মেলন, প্রযুক্তিগত সহায়তা ফি এবং ফ্র্যাঞ্চাইজি ফি-এর মতো ব্যবসায়িক খরচ মেটানোর কাজে ব্যবহার করা যাবে।
নির্দেশনা অনুযায়ী, প্রতিটি এসএমই প্রতিষ্ঠান কেবল একটি অনুমোদিত ডিলার (এডি) ব্যাংকের মাধ্যমেই এই সুবিধা নিতে পারবে। যদি কোনো প্রতিষ্ঠান শাখা পরিবর্তন করতে চায়, তবে লিখিত আবেদনের মাধ্যমে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের অনুমোদন নিতে হবে।
লেনদেনের ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোকে প্রচলিত নিয়ম কঠোরভাবে মেনে চলতে বলা হয়েছে। উৎসে কর, ভ্যাট ও অন্যান্য শুল্ক আদায়ের পাশাপাশি গ্রাহকের তথ্য যাচাই (কেওয়াইসি), মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ (এএমএল/সিএফটি) এবং বৈদেশিক মুদ্রা প্রেরণ সংক্রান্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের সব নীতিমালা ও রিপোর্টিং পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক দেশের সব অনুমোদিত ডিলার ব্যাংককে তাদের এসএমই গ্রাহকদের এই নতুন সুবিধা সম্পর্কে অবিলম্বে অবহিত করতে এবং নির্দেশনাগুলো কার্যকরভাবে অনুসরণ করার নির্দেশ দিয়েছে। আশা করা হচ্ছে, এই উদ্যোগের ফলে দেশের এসএমই খাত বিশ্ববাজারের সঙ্গে আরও সহজে যুক্ত হওয়ার সুযোগ পাবে।