মিটফোর্ডের হত্যাকাণ্ডে বিএনপির নামে রংচং দেওয়ার চেষ্টা করছে কিছু রাজনৈতিক দল: রিজভী

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, মিটফোর্ড এলাকায় পাথর মেরে মানুষ হত্যার ঘটনায় কিছু রাজনৈতিক দল এটিকে বিএনপির সঙ্গে জড়াতে, রংচং দিতে চেষ্টা করছে। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, "ওই ঘটনার সঙ্গে বিএনপি জড়িত কোথায়?"
শনিবার (১২ জুলাই) ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির 'ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প' কর্মসূচিতে এসব কথা বলেন তিনি।
রিজভী বলেন, "মিটফোর্ডের ঘটনায় বিএনপি বা বিএনপির অঙ্গসংগঠনের যেসব নেতাকর্মীর নাম এসেছে, তাদেরকে রাতেই আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপি একটি বৃহৎ পরিবার। কোন ছিদ্রপথে দুই-একজন দুষ্কৃতিকারী ঢুকে পড়লে সেটা সবসময় হয়তো খেয়াল রাখা যায় না। কিন্তু কাউকে দুষ্কৃতিকারী হিসেবে চিহ্নিত করা গেলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দল কখনোই দেরি করে না।"
তিনি আরও বলেন, "সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হলে সমাজে কিংবা দলের ভেতর কোনো দুষ্কৃতিকারী থাকলে, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এভাবেই বিএনপিকে গড়ে তুলেছিলেন। তিনি অপরাধীর রাজনৈতিক পরিচয় বিবেচনা করেননি—অপরাধ করলেই তার বিচার হয়েছে, তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এটাই তো জিয়াউর রহমানের আইনের শাসন।"
দলটির মুখপাত্র বলেন, "দল থেকে বলা হয়েছে—ওরা (বহিষ্কৃতরা) সন্ত্রাস করেছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা দিন, গ্রেপ্তার করুন। প্রশাসন যদি নিশ্চুপ থাকে, তাহলে সমাজে আরও বিশৃঙ্খলা, নৈরাজ্য এবং সন্ত্রাস তৈরি হবে। সন্ত্রাসীর কোনো রাজনৈতিক পরিচয় থাকে না। সে নিজের স্বার্থে বাড়ি দখল করে, জমি দখল করে, গোয়ালঘর থেকে গরু নিয়ে যায়, পুকুর থেকে মাছ ধরে নিয়ে যায়—এটাই সন্ত্রাসীদের কাজ।"
তিনি বলেন, "কোনো ধরনের অপকর্ম, সংঘাত, রক্ত ঝরানো বা মানুষ হত্যার সঙ্গে জড়িতদের বিএনপিতে ঠাঁই নেই। যেখানেই এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে, সেখানে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে এবং প্রতিদিনই হচ্ছে। একটি-দুটি রাজনৈতিক দল মিছিল করে এসব ঘটনা বিএনপির ওপর চাপাতে চাইছে। নিজেদের ফায়দা লুটতে মিছিল করছে। কিন্তু আপনাদের অতীত ভুলে যাইনি আমরা। এতে কোনো লাভ হবে না। বিএনপি সে দল নয়—বিএনপি হচ্ছে সেই দল, যারা দেশের মানুষকে শান্তিতে রাখার নিশ্চয়তা দিতে চায়। বাংলাদেশে এমন কোনো জায়গা নেই, যেখানে বিএনপির সেই নীতি কাজ করছে না।"
নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে রিজভী বলেন, "অপরাধী যেন দলের মধ্যে ঢুকে মাথা চাড়া দিতে না পারে। আমি প্রশাসনকে ফোন করে বলেছি—অপরাধী যত শক্তিশালীই হোক, তার বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার করুন। বিএনপি তার পক্ষে কথা বলবে না। কিন্তু আপনারা তা করছেন না কেন? ঢাকার পুলিশ কমিশনার কী করছেন? নাকি আপনারা চান—এ ধরনের ঘটনা বাড়তেই থাকুক, আর দোষ চাপুক বিএনপির ঘাড়ে?"