Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Tuesday
July 08, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
TUESDAY, JULY 08, 2025
‘ম্যাডম্যান থিওরি’ ব্যবহার করে ট্রাম্প যেভাবে বিশ্বকে বদলে দেওয়ার চেষ্টা করছেন

আন্তর্জাতিক

বিবিসি
08 July, 2025, 12:20 pm
Last modified: 08 July, 2025, 12:21 pm

Related News

  • নতুন শুল্কসহ যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি পণ্যে শুল্ক ৫০% ছাড়াতে পারে
  • বাংলাদেশের প্রধান বিবেচ্য স্বার্থ সংরক্ষণ, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বিদ্যমান বাণিজ্যকে রক্ষা: বাণিজ্যসচিব
  • নওগাঁয় ৪ হাজার কোটি টাকার আম বাণিজ্যের সম্ভাবনা, দিনাজপুরের আম যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে
  • যুক্তরাষ্ট্র সামরিক সরঞ্জাম, এলএনজি, গম, তুলা আমদানি সহজ করার কথা বলেছে: বাণিজ্যসচিব
  • যুক্তরাষ্ট্রের সাথে শুল্ক আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে ঢাকা, ৯ জুলাই ওয়াশিংটনে বৈঠক: প্রেস সচিব

‘ম্যাডম্যান থিওরি’ ব্যবহার করে ট্রাম্প যেভাবে বিশ্বকে বদলে দেওয়ার চেষ্টা করছেন

‘ম্যাডম্যান থিওরি’ হলো এমন এক কৌশল যেখানে নেতা নিজেকে এমনভাবে উপস্থাপন করেন, যেন তিনি যেকোনো সময়, যেকোনো কিছু করতে পারেন। এতে প্রতিপক্ষকে ভয় দেখিয়ে তাদের থেকে ছাড় নেওয়া যায়। যেমনটা ঠিক সবাই ভয় পান ট্রাম্পের অপ্রত্যাশিত আচরণকে।
বিবিসি
08 July, 2025, 12:20 pm
Last modified: 08 July, 2025, 12:21 pm
ছবি: বিবিসি

ইরানে হামলার বিষয়ে ইসরায়েলের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রও কি যোগ দেবে কিনা—এই প্রশ্নে গত মাসে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন, 'আমি করতেও পারি। আবার নাও বা করতে পারি। আমি কী করব তা কেউই জানে না। '

এরপর তিনি গোটা বিশ্বকে বোঝাতে চাইলেন, ইরানকে আবার আলোচনায় ফিরতে দেওয়ার জন্য তিনি দুই সপ্তাহের বিরতির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কিন্তু এরপরই তিনি ইরানে বোমা হামলা চালান।

ঘটনার এই পুনরাবৃত্তিতে একটি চিত্র স্পষ্ট—ট্রাম্পের সবচেয়ে পূর্বানুমেয় বৈশিষ্ট্য হলো তার অপ্রত্যাশিত আচরণ। তিনি সিদ্ধান্ত বদলান, নিজেকেই অস্বীকার করেন, এবং নীতিগত অবস্থানে স্থির থাকেন না।

লন্ডন স্কুল অব ইকনমিকসের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক পিটার ট্রুবোভিৎজ বলেন, 'ট্রাম্প এমন এক কেন্দ্রীভূত নীতিনির্ধারণী কাঠামো গড়ে তুলেছেন—অন্তত পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে, যা রিচার্ড নিক্সনের পর সবচেয়ে বেশি কেন্দ্রীভূত বলা যায়।'

তিনি যোগ করেন, 'ফলে এখন নীতিগত সিদ্ধান্ত অনেকটাই নির্ভর করছে ট্রাম্পের ব্যক্তিত্ব, রুচি ও মেজাজের ওপর।'

ছবি: রয়টার্স

ট্রাম্প এই অপ্রত্যাশিত আচরণই এখন তার একধরনের কৌশলগত ও রাজনৈতিক সম্পদে পরিণত হয়েছে।

হোয়াইট হাউসে আসার পর থেকে তিনি এটিকে শুধু ব্যক্তিগত বৈশিষ্ট্য হিসেবে রাখেননি, বরং একে নীতির পর্যায়ে উন্নীত করেছেন। এখন তার এই বৈশিষ্ট্যই চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র ও নিরাপত্তানীতি। এর প্রভাব পড়ছে বৈশ্বিক রাজনীতির গতিপথেও।

রাজনৈতিক তত্ত্বে, এটিই 'ম্যাডম্যান থিওরি'। এর মূল ধারণা হলো—নেতা এমনভাবে নিজেকে উপস্থাপন করবেন যেন তিনি যেকোনো সময়, যেকোনো কিছু করে বসতে পারেন। প্রতিপক্ষকে ভয় দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে ছাড় নেওয়ার কৌশল এটি। 

সঠিকভাবে প্রয়োগ করতে পারলে এটি এক ধরনের চাপ তৈরির কৌশল এবং ট্রাম্প মনে করেন, এতে তিনি লাভবান হচ্ছেন। মিত্রদের কাছ থেকে পছন্দসই আচরণ আদায় করতে পারছেন।

তবে প্রশ্ন হলো, এই কৌশল কি শত্রুদের বিরুদ্ধেও কাজ করবে? এবং এর সবচেয়ে বড় দুর্বলতা কি এই নয় যে, এটি আদতে কোনো অভিনয় নয়—বরং ট্রাম্পের বহুদিনের, পরিচিত ও নথিবদ্ধ স্বভাবেরই প্রতিফলন? 

ফলে, যতই 'অপ্রত্যাশিত' দেখানোর চেষ্টা করা হোক না কেন, তার আচরণই শেষ পর্যন্ত আগেভাগেই আরও সহজেই অনুমানযোগ্য হয়ে উঠছে না?

আক্রমণ, অপমান ও আলিঙ্গন

দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিয়েই যুক্তরাষ্ট্রের মিত্রদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন ডোনাল্ড ট্রাম্প, ঘনিষ্ঠতা বাড়ান প্রতিপক্ষদের সঙ্গে। একদিকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে আলিঙ্গন করেন, অথচ পশ্চিমা মিত্রদের প্রতি চালান একের পর এক কটাক্ষ।

কানাডাকে তিনি প্রকাশ্যে অপমান করে বলেন, দেশটি যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম অঙ্গরাজ্য হওয়া উচিত। একইসঙ্গে জানান, ডেনমার্কের স্ব-শাসিত অঞ্চল গ্রিনল্যান্ড দখলে নিতে সামরিক শক্তি ব্যবহারের কথাও বিবেচনায় রয়েছে তার। পাশাপাশি বলেন, পানামা খাল ফের যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে নেওয়া উচিত। 

ন্যাটো চুক্তির ৫ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, কোনও সদস্যরাষ্ট্র আক্রান্ত হলে বাকি রাষ্ট্রগুলো তার পক্ষে দাঁড়াবে—এই প্রতিশ্রুতিতেও প্রশ্ন তোলেন ট্রাম্পন। যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেন ওয়ালেস বলেন, 'আমার মনে হয়, আর্টিকেল ৫ এখন লাইফ সাপোর্টে আছে।'

ব্রিটেনের কনজারভেটিভ পার্টির অ্যাটর্নি জেনারেল ডমিনিক গ্রিভও বললেন, 'এই মুহূর্তে ট্রান্স-আটলান্টিক জোট বলতে কিছু নেই।' 

এরই মধ্যে ফাঁস হওয়া কিছু টেক্সট বার্তায় ট্রাম্প প্রশাসনের ভেতরে ইউরোপীয় মিত্রদের প্রতি কতটা ঘৃণার সংস্কৃতি বিরাজ করছিল তা বের হয়ে আসে। সেখানে এক বার্তায় মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ লিখেন, 'ইউরোপের ফ্রিলোডারদের প্রতি তোমার ঘৃণা আমি পুরোপুরি বুঝতে পারি' শেষে যোগ করেন, 'প্যাথেটিক!'

পিট হেগসেথ (ডানদিকে) ফাঁস হওয়া বার্তায় ইউরোপীয় নেতাদের ‘ফ্রিলোডার’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন, আর জেডি ভ্যান্স (বামদিকে) জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র আর ইউরোপীয় নিরাপত্তার গ্যারান্টি দেবে না | ছবি: এপি

এ বছরের শুরুর দিকে মিউনিখে এক সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সহকারী ও ভাইস-প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স স্পষ্টভাবে জানান, যুক্তরাষ্ট্র আর ইউরোপের নিরাপত্তার গ্যারান্টি দেবে না।

এই ঘোষণাটি কার্যত আট দশকের ট্রান্স-আটলান্টিক সংহতির একটি অধ্যায়ের ইতি টানল। লন্ডন স্কুল অব ইকনমিকসের অধ্যাপক পিটার ট্রুবোভিৎজ বলেন, 'ট্রাম্প এমন এক পরিস্থিতি তৈরি করেছেন, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতির বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েই এখন গভীর সন্দেহ ও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।'

তিনি বলেন, 'ইউরোপীয় দেশগুলো নিরাপত্তা, অর্থনীতি কিংবা অন্য যেকোনও বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যে বোঝাপড়াতেই থাকুক না কেন এখন সেগুলো মুহূর্তেই নতুন করে আলোচনার টেবিলে ওঠে আসতে পারে।'

ট্রুবোভিৎজের ব্যাখ্যায়, ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মহলের অধিকাংশের ধারণা, অনিশ্চয়তা বা অপ্রত্যাশিত আচরণ একটি কৌশলগত সুবিধা। এতে করে ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবকে সর্বোচ্চভাবে কাজে লাগাতে পারেন।

ট্রুবোভিৎজ বলেন,'ব্যবসা ও রিয়েল এস্টেটের জগতে যেভাবে ট্রাম্প চুক্তি করতেন, সেখান থেকেই এ কৌশলটি শেখেন তিনি।'

ট্রাম্পের এই কৌশল কার্যকরও হয়েছে। মাত্র চার মাস আগে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ের স্টারমার ঘোষণা দেন—যুক্তরাজ্য প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা খাতে ব্যয় বাড়িয়ে জিডিপির ২ দশমিক ৩ শতাংশ থেকে ২ দশমিক ৫ শতাংশে উন্নীত করবে।

কিন্তু গত মাসে ন্যাটো সম্মেলনে সেই লক্ষ্যমাত্রা বেড়ে দাঁড়ায় ৫ শতাংশে। শুধু যুক্তরাজ্য নয়, ন্যাটোর প্রতিটি সদস্য রাষ্ট্রই এখন একই হারে ব্যয় করছে।

অপ্রত্যাশিত আচরণের পূর্বানুমান

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্পই প্রথম নন, যিনি 'অপ্রত্যাশিত আচরণ'কে কৌশল হিসেবে নিয়েছেন। ১৯৬৮ সালে, ভিয়েতনাম যুদ্ধের শেষ দিকে, যখন উত্তর ভিয়েতনামের সঙ্গে আলোচনায় অগ্রগতি আসছিল না, তখন সাবেক প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সনও একই কৌশল প্রয়োগ করেছিলেন।

নটর ডেম বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক মাইকেল ডেশ বলেন, 'একপর্যায়ে নিক্সন তার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হেনরি কিসিঞ্জারকে বলেন, 'উত্তর ভিয়েতনামের প্রতিনিধিদের বলো, নিক্সন পাগল—তুমি জানো না সে কী করতে পারে, তাই তার আগেই চুক্তিতে আসো, না হলে যা ঘটবে, তা অনেক বেশি খারাপ হবে।'

'এই কৌশলটিই হলো ম্যাডম্যান থিওরি,' বলেন অধ্যাপক ডেশ। 

সাবেক প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন | ছবি : এপি

ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক জুলি নরম্যানও স্বীকার করেন যে, বর্তমানে এক ধরণের 'অপ্রত্যাশিত নীতি' কার্যকর রয়েছে।

তিনি বলেন, 'ট্রাম্পের নীতি এমন যে প্রতিদিন কী হবে তা অনুমান করা প্রায় অসম্ভব। এটিই ট্রাম্পের মূল কৌশল।'

ট্রাম্প তার অপ্রত্যাশিত আচরণ কাজে লাগিয়ে ট্রান্স-আটলান্টিক প্রতিরক্ষা সম্পর্কের গতিপথই বদলে দিয়েছেন। আর তাকে পাশে রাখতে ইউরোপীয় কিছু শীর্ষ নেতাই তার প্রশংসায় মেতেছেন। 

গত মাসে নেদারল্যান্ডসের হেগ শহরে ন্যাটো সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে ন্যাটো সাধারণ সম্পাদক মার্ক রুটে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে (অথবা 'প্রিয় ডোনাল্ড'-কে) একটি টেক্সট মেসেজ পাঠান, যা ট্রাম্প নিজেই ফাঁস করে দেন।

সেখানে তিনি লিখেছিলেন, 'ইরানে আপনার সাহসী পদক্ষেপের জন্য অভিনন্দন ও ধন্যবাদ, এটি সত্যিই অসাধারণ ছিল।' তিনি আরও লেখেন,'আপনি এমন সাফল্য অর্জন করবেন যা গত কয়েক দশকে কোনো প্রেসিডেন্ট করতে পারেনি।'

ন্যাটো মহাসচিব মার্ক রুটে শীর্ষ সম্মেলনের আগে ট্রাম্পকে একটি অভিনন্দনবার্তা পাঠান। ছবি: রয়টার্স

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে তার কমিউনিকেশনস ডিরেক্টর হিসেবে কাজ করা অ্যান্থনি স্কারামুচি বলেন, 'স্যার মার্ক রুটে, ট্রাম্প আপনাকে বিব্রত করার চেষ্টা করছেন। তিনি রীতিমত এয়ার ফোর্স ওয়ানে বসে হাসছেন আপনার উপর!' 

এবং হয়তো এটিই ট্রাম্পের 'অপ্রত্যাশিত নীতি'র অন্যতম দুর্বলতা যে—ট্রাম্প প্রশংসা পছন্দ করেন এবং স্বল্পমেয়াদী সাফল্যের জন্য দীর্ঘমেয়াদী, জটিল প্রক্রিয়া এড়িয়ে যান। তবে যদি এটি সত্যি হয়, তাহলে তার প্রতিপক্ষদের বিভ্রান্ত করার কৌশল সীমিত হয়ে পড়ার সম্ভাবনাই বেশি, যেহেতু তার আচরণ ও ব্যক্তিত্ব ইতোমধ্যেই ভালোভাবে পরিচিত।

অপরদিকে আরেকটি প্রশ্ন হলো, এই 'অপ্রত্যাশিত নীতি' বা 'ম্যাডম্যান থিওরি' কি শত্রুদের ওপর কাজ করে?

হুমকিতে অপ্রভবিত প্রতিপক্ষরা

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি, যিনি পূর্বে ট্রাম্পের ওভাল অফিসে ট্রাম্প ও ভাইস প্রেসিডেন্ট ভ্যান্সের কঠোর সমালোচনার মুখোমুখি হয়েছিলেন, পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্রকে ইউক্রেনের মূল্যবান খনিজ সম্পদ ব্যবহারের সুযোগ দিয়েছেন।

অপরদিকে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ট্রাম্পের চাপ ও হুমকির কোনো প্রভাব ফেলতে পারেননি। বৃহস্পতিবার এক ফোনালাপের পর ট্রাম্প জানান, তিনি 'নিরাশ' কারণ পুতিন এখনও ইউক্রেন যুদ্ধে সমাধানের পথে আসেননি।

ওভাল অফিসে জেলেনস্কিকে তিরস্কার করা হলেও পরে তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ ব্যবহারের অধিকার দেওয়ার বিষয়ে সম্মতি দেন। ছবি: রয়টার্স

আর ইরান? মধ্যপ্রাচ্যের তথাকথিত 'চিরস্থায়ী যুদ্ধ' থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েই ট্রাম্প তার সমর্থকদের মন জয় করেছিলেন। কিন্তু দ্বিতীয় মেয়াদে এসে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার সিদ্ধান্ত ছিল তার সবচেয়ে অপ্রত্যাশিত পদক্ষেপগুলোর একটি। প্রশ্ন হলো—এই হামলা কি আসলেই কাঙ্ক্ষিত কোনও ফল দেবে?

ব্রিটেনের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী উইলিয়াম হেগের মতে, এর ফল হবে সম্পূর্ণ উল্টো—এই হামলা ইরানকে পরমাণু অস্ত্র অর্জনের পথে আরও আগ্রহী করে তুলবে।

নটর ডেম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মাইকেল ডেশও এ ব্যাপারে একমত। তিনি বলেন, 'আমার মনে হয়, এখন ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়ার সম্ভাবনা খুবই বেশি। তাই তারা আপাতত চুপচাপ থেকে একটি পারমাণবিক পরীক্ষা চালানোর জন্য পুরো ফুয়েল সাইকেল সম্পন্ন করার চেষ্টা করলে আমি অবাক হব না।' 

তিনি আরও বলেন, 'সাদ্দাম হোসেইন ও মুয়াম্মার গাদ্দাফির পরিণতি ইরানের নীতিনির্ধারকদের অজানা নয়—যে কোনো স্বৈরাচারী সরকার যুক্তরাষ্ট্রের চাপের মুখে পড়লে কী হয়, তা তারা জানে। সে কারণে ইরান 'চূড়ান্ত প্রতিরোধক্ষমতা' অর্জনের জন্য মরিয়া হয়ে উঠবে। ইরানিরা সাদ্দাম ও গাদ্দাফিকে দেখবে ব্যর্থতার উদাহরণ হিসেবে, আর উত্তর কোরিয়ার কিম জং উনকে দেখবে সাফল্যের প্রতীক হিসেবে।'

অনেকে মনে করছেন, যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর এখন ইরান পরমাণু অস্ত্র অর্জনের পথে আরও এগিয়ে যেতে পারে। ছবি: রয়টার্স

ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক দ্বন্দ্ব নিয়ে লেখা বইয়ের লেখক ও সাউথ ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক মহসেন মিলানির মতে, সম্ভাব্য পরিণতিগুলোর একটি হলো—ইসলামী প্রজাতন্ত্রের আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠা।

তিনি বলেন, '১৯৮০ সালে সাদ্দাম হোসেইন যখন ইরানে হামলা চালিয়েছিলেন, তার উদ্দেশ্য ছিল ইসলামী প্রজাতন্ত্রের পতন। কিন্তু বাস্তবে ঠিক উল্টোটা ঘটেছিল।'

'এটাই ছিল ইসরায়েল ও আমেরিকার ধারণাও—যদি শীর্ষ নেতৃত্বকে সরিয়ে ফেলা যায়, তাহলে ইরান আত্মসমর্পণ করবে কিংবা গোটা ব্যবস্থাই ভেঙে পড়বে।'

আলোচনায় আস্থাহীনতা: যুক্তরাষ্ট্রকে কি আর বিশ্বাস করা যাবে?

ভবিষ্যতের দিক বিবেচনায়, ট্রাম্পের 'অপ্রত্যাশিত নীতি' শত্রুদের ক্ষেত্রে কার্যকর নাও হতে পারে। আর আর মিত্রদের মধ্যে সাম্প্রতিক যে পরিবর্তন দেখা গেছে, তা দীর্ঘমেয়াদে কতটা স্থায়ী হবে, সেটিও স্পষ্ট নয়।

এই পুরো কৌশল মূলত তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত ও আবেগনির্ভর প্রবণতার ওপর দাঁড়িয়ে আছে। ফলে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে—যুক্তরাষ্ট্রকে কি আদৌ একজন বিশ্বাসযোগ্য অংশীদার বা মধ্যস্থতাকারী হিসেবে দেখা যাবে?

ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক জুলি নরম্যান বলেন, 'যদি যুক্তরাষ্ট্রের ওপর আলোচনায় আস্থা না থাকে, যদি প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা ইস্যুতে তারা পাশে থাকবে কি না—তা নিয়ে সংশয় থাকে, তাহলে কেউই আর যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তি করতে চাইবে না।'

ইতোমধ্যে জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মার্জ স্পষ্ট করে বলেছেন, ইউরোপের এখন যুক্তরাষ্ট্রের ওপর থেকে কার্যকরভাবে নির্ভরতা কমাতে হবে।

অধ্যাপক পিটার ট্রুবোভিৎজ বলেন,'চ্যান্সেলরের এই বক্তব্য খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। এটি দেখায় যে, ইউরোপ বুঝে গেছে—যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত অগ্রাধিকার এখন বদলাচ্ছে। ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার আগে যা ছিল, সেখানেই আর ফিরে যাওয়া সম্ভব নয়।'

তিনি বলেন,'তাই হ্যাঁ, ইউরোপকে এখন আরও স্বাধীনভাবে নিজেদের কৌশল নিয়ে ভাবতে হবে।' 

তবে যদি ইউরোপ সত্যিই যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভরতা কমাতে চায়, তাহলে সেটি হবে একটি দীর্ঘ, ব্যয়বহুল এবং কৌশলগতভাবে জটিল প্রক্রিয়া।

নটর ডেম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মাইকেল ডেশ বলেন, ইউরোপীয় দেশগুলোকে নিজেদের প্রতিরক্ষা শিল্প অনেক বড় পরিসরে গড়ে তুলতে হবে। এমন সামরিক সরঞ্জাম ও সক্ষমতা অর্জন করতে হবে, যা বর্তমানে কেবল যুক্তরাষ্ট্রেরই আছে।

'ইউরোপের কিছু উন্নত গোয়েন্দা সক্ষমতা থাকলেও, তার বড় একটি অংশ এখনো যুক্তরাষ্ট্র সরবরাহ করে,' বলেন ডেশ।

তিনি আরও বলেন, 'যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া চলতে হলে ইউরোপকে স্বতন্ত্রভাবে অস্ত্র উৎপাদনের ক্ষমতা অনেক বাড়াতে হবে। জনশক্তিও একটি বড় চ্যালেঞ্জ। পশ্চিম ইউরোপকে তখন পোল্যান্ডের মতো দেশের দিকে তাকাতে হবে, যেখানে প্রয়োজনীয় সংখ্যক সৈন্য গড়ে তোলা সম্ভব হতে পারে।'

কিন্তু এসব প্রস্তুতি নিতে সময় লেগে যেতে পারে কয়েক বছর, এমনকি এক দশকের বেশি।

জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মার্জ বলেছেন, ইউরোপের এখন যুক্তরাষ্ট্রের ওপর থেকে কার্যকরভাবে স্বাধীন হয়ে ওঠা প্রয়োজন। ছবি: এএফপি

তাহলে কি ট্রাম্পের অপ্রত্যাশিত আচরণই ইউরোপকে ঠেলে দিয়েছে স্নায়ুযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ের সবচেয়ে বড় নিরাপত্তাগত রূপান্তরের দিকে?

লন্ডন স্কুল অব ইকনমিকসের অধ্যাপক পিটার ট্রুবোভিৎজ বলেন, 'অবশ্যই ট্রাম্পের একটি ভূমিকা আছে কিন্তু ব্যাপারটা শুধু ট্রাম্পকে ঘিরে নয়। তিনি একধরনের পথ খুলে দিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতি বদলে গেছে, অগ্রাধানিকায় পরিবর্তন এসেছে।' 

'মেক আমেরিকা গ্রেট অ্যাগেইন জোটের কাছে এখন চীন রাশিয়ার চেয়েও বড় হুমকি—যা ইউরোপীয়দের দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে একেবারে মেলে না', বলেন তিনি।

অন্যদিকে সাউথ ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও ইরান–যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক বিষয়ক গবেষক মহসেন মিলানি মনে করেন, ট্রাম্পের লক্ষ্য হলো বৈশ্বিক ব্যবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতা আরও দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠা করা।

সাউথ ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মহসেন মিলানি বলেন, 'ট্রাম্প দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী যে বিশ্বব্যবস্থা গড়ে উঠেছে, তা পাল্টে দেবেন—এমন সম্ভাবনা খুবই কম। সেই ব্যবস্থার মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান আরও দৃঢ় করা হোক। কারণ এখন সেই কাঠামোর ভেতর থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বকে চ্যালেঞ্জ করছে চীন।'

কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের অগ্রাধিকার এখন আলাদা পথে এগোচ্ছে।

অনেক ইউরোপীয় মিত্ররা হয়তো মনে করছে, প্রশংসা ও কিছু নীতিগত সমঝোতার মাধ্যমে তারা ট্রাম্পকে পাশে রাখতে পেরেছেন।

কিন্তু ট্রাম্পের এই অপ্রত্যাশিত আচরণ, এই অনিশ্চয়তা—যেকোনো সময় দৃশ্যপট পাল্টে দিতে পারে। আর ইউরোপ ধীরে ধীরে যেন সেটিই মেনে নিচ্ছে—তারা আর আগের মতো আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা অঙ্গীকারের ওপর ভরসা করতে পারছে না।

এই দিক থেকে দেখলে, ট্রাম্পের 'অপ্রত্যাশিত নীতি'—যা তার ব্যক্তিত্বের বহিঃপ্রকাশ হোক বা সচেতন কৌশল—অন্তত কিছু ক্ষেত্রে যে কার্যকর হয়েছে, তা তো স্পষ্ট বটেই।

Related Topics

টপ নিউজ

ম্যাডম্যান থিওরি / ডোনাল্ড ট্রাম্প / যুক্তরাষ্ট্র / ইরান-যুক্তরাষ্ট্র / ন্যাটো / যুক্তরাষ্ট্র-ইউরোপ / রিচার্ড নিক্সন

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • নদী দখল ও দূষণকারী কারখানা পেল 'গ্রিন ফ্যাক্টরি অ্যাওয়ার্ড'
  • আগামী নির্বাচনে বিএনপি ৩৯%, জামায়াত ২১%, এনসিপি ১৬% ভোট পাবে মনে করে তরুণরা: সানেম জরিপ
  • যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় বাংলাদেশ কেন সফল হয়নি?
  • বাংলাদেশের ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করলেন ট্রাম্প
  • বিশ্বের প্রথম দুই আসনের পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান জে-২০এস আনল চীন
  • রাজধানীর জন্য বৈদ্যুতিক বাস: দুই বছরে ব্যয় হবে ২,৫০০ কোটি টাকা

Related News

  • নতুন শুল্কসহ যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি পণ্যে শুল্ক ৫০% ছাড়াতে পারে
  • বাংলাদেশের প্রধান বিবেচ্য স্বার্থ সংরক্ষণ, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বিদ্যমান বাণিজ্যকে রক্ষা: বাণিজ্যসচিব
  • নওগাঁয় ৪ হাজার কোটি টাকার আম বাণিজ্যের সম্ভাবনা, দিনাজপুরের আম যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে
  • যুক্তরাষ্ট্র সামরিক সরঞ্জাম, এলএনজি, গম, তুলা আমদানি সহজ করার কথা বলেছে: বাণিজ্যসচিব
  • যুক্তরাষ্ট্রের সাথে শুল্ক আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে ঢাকা, ৯ জুলাই ওয়াশিংটনে বৈঠক: প্রেস সচিব

Most Read

1
বাংলাদেশ

নদী দখল ও দূষণকারী কারখানা পেল 'গ্রিন ফ্যাক্টরি অ্যাওয়ার্ড'

2
বাংলাদেশ

আগামী নির্বাচনে বিএনপি ৩৯%, জামায়াত ২১%, এনসিপি ১৬% ভোট পাবে মনে করে তরুণরা: সানেম জরিপ

3
অর্থনীতি

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় বাংলাদেশ কেন সফল হয়নি?

4
বাংলাদেশ

বাংলাদেশের ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করলেন ট্রাম্প

5
আন্তর্জাতিক

বিশ্বের প্রথম দুই আসনের পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান জে-২০এস আনল চীন

6
বাংলাদেশ

রাজধানীর জন্য বৈদ্যুতিক বাস: দুই বছরে ব্যয় হবে ২,৫০০ কোটি টাকা

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net