ফুলঝুরি সিস্টার্স: সরোদ হাতে দুই বোনের আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন

কলিংবেল চাপতেই দরজা খুললেন দুই বোন। একগাল হাসি দিয়ে সাদরে নিয়ে ড্রয়িংরুমে বসালেন। ড্রয়িংরুমে সাধারণত সোফা থাকলেও তাদের এ রুমে সোফা নেই। মেঝেতে পাতা দুটি বিছানা। ঘরজুড়ে নানা বাদ্যযন্ত্র। সরোদ, তবলা, একতারা, দোতারা, গিটার, এসরাজ, হারমোনিয়াম- সবমিলিয়ে যেন ছোটোখাটো একটা স্টুডিও রুম।
বড় বোন ইলহাম ফুলঝুরি খান, ছোট বোন ইসরা ফুলঝুরি খান। হালের সোশ্যাল মিডিয়ায় তারা জনপ্রিয় ফুলঝুরি সিস্টার্স নামে। দুই বোনই উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের চর্চা করছেন। উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের অন্যতম অনুষঙ্গ সরোদ বাজান তারা। ছোটবেলা থেকেই সরোদ শিখেছেন দুজনই। বাবা ওস্তাদ মো. ইলিয়াস খান দেশের বিখ্যাত তবলাবাদক। আর মা সুপ্রিয়া আক্তার সঙ্গীতশিল্পী।
ছয় প্রজন্ম ধরে তাদের পরিবার সঙ্গীত চর্চা করে আসছে। দুই বোনের নামে ফুলঝুরি শব্দটি যোগ হয়েছে তাদের দাদা ওস্তাদ ফুলঝুরি খানের নাম থেকে। ওস্তাদ ফুলঝুরি খান দেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ এসরাজ শিল্পী ছিলেন। ১৯৭৯ সালে স্বাধীনতা পদক পেয়েছিলেন তিনি।
ইলহাম আর ইসরার সুরের জগতে আপনাদের স্বাগতম।
যেন মায়ের পেট থেকেই যাত্রা শুরু
'ইসরার বয়স যখন দেড় থেকে দুই বছর, তখন আমরা আবিষ্কার করলাম সকালবেলা ঘুম থেকে ওঠার পর ও আর বিছানায় থাকছে না। হামাগুড়ি দিয়ে বিছানা থেকে নেমে খাটের পাশে রাখা ছোট হারমোনিয়ামটার সামনে যেয়ে দাঁড়াত ও। জলচৌকি ঠেলে নিয়ে সেটার ওপর বসে হারমোনিয়ামের কী চাপাচাপি করত। তখনই আমরা বুঝতে পেরেছিলাম ওর আগ্রহ আছে সঙ্গীতের প্রতি', বলছিলেন বড় বোন ইলহাম ফুলঝুরি খান।

ইলহাম আর ইসরা দুজনেরই সঙ্গীতের জগতে আসা বাবা-মায়ের হাত ধরে। তিন বছর বয়স থেকেই বাবার কাছে তবলা শেখা শুরু করেন ইলহাম। আর মায়ের কাছে গান শিখেছেন দু'জনই। ইলহামের বয়স যখন সাত বছর, তখন চাচা ওস্তাদ ইউসুফ খানের কাছে সরোদের হাতেখড়ি হয় তার। ওস্তাদ ইউসুফ খান দেশের বিখ্যাত সরোদবাদক। যদিও চাচার কাছে বেশিদিন সরোদ শেখা হয়নি ইলহামের।
তখন ২০১৫ সাল। ইলহামের বয়স সাত বছর, আর ইসরার পাঁচ বছর। বেঙ্গল ফাউন্ডেশন ঢাকার শিল্পকলায় একটি কর্মশালা আয়োজন করেছিল। সেখানে ভারতের বিভিন্ন পণ্ডিত এসেছিলেন। ইলহাম আর ইসরার মা কী মনে করে দুই বোনকে ভর্তি করে দেন সেদিনের কর্মশালার সরোদ ক্লাসে! এত কম বয়সে কীভাবে দুই বোন বিশ্বখ্যাত পণ্ডিতের কাছে সরোদ শিখবে- তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ে যান তাদের বাবা ওস্তাদ ইলিয়াস খান।
নিজের দুই মেয়ে যেন ভালোভাবে শিখতে পারে, তাই তিনি নিজেও ভর্তি হয়ে যান সরোদ কর্মশালায়। সেই থেকে ফুলঝুরি পরিবারের যাত্রা শুরু বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের সাথে। ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে বেঙ্গল পরম্পরা সঙ্গীতালয়ের সরোদ ক্লাসে ভর্তি হন ইলহাম আর ইসরা।
ভারতের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সরোদবাদক, পদ্মশ্রী পদকপ্রাপ্ত পণ্ডিত তেজেন্দ্রনারায়ণ মজুমদার ইলহাম আর ইসরার গুরু। প্রতি মাসে কয়েকদিনের জন্য দেশে আসতেন পণ্ডিত তেজেন্দ্রনারায়ণ মজুমদার। তখন টানা ক্লাস হতো। করোনার আগ পর্যন্ত নিয়মিত ক্লাস হয়েছে। কিন্তু এরপরে পণ্ডিতেরা আর আসেননি। এখন অনলাইনে পণ্ডিতের কাছে মাঝে মাঝে ক্লাস করেন দুই বোন।
বেঙ্গল পরম্পরা সঙ্গীতালয়ের সিনিয়র স্কলার হিসেবে আছেন এখন দুই বোনই। ইলহাম আর ইসরার সঙ্গীতের জগতে আসাটা অনেকটা নিশ্চিতই ছিল। বাবা-মা দুজনই সঙ্গীতের মানুষ। দাদা ওস্তাদ ফুলঝুরি খান ভারতীয় উপমহাদেশের প্রখ্যাত উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতসাধক ছিলেন। ওস্তাদ ফুলঝুরি খানের নানা ছিলেন ফকির আফতাব উদ্দিন খান। তবলা ও বেহালাবাদক ছিলেন তিনি। বিখ্যাত মলয়া সঙ্গীতের অন্যতম প্রবর্তক ছিলেন ফকির আফতাব উদ্দিন খান।
ফকির আফতাব উদ্দিন খানের দুই ভাই ওস্তাদ আয়েত আলী খান ও ওস্তাদ আলাউদ্দিন খান। ওস্তাদ আলাউদ্দিন খানের জগদ্বিখ্যাত শিষ্য ছিলেন পণ্ডিত রবিশঙ্কর। ওস্তাদ আয়েত আলী খানকে ১৯৮৪ সালে মরণোত্তর স্বাধীনতা পদক দিয়ে সম্মানিত করা হয়েছিল।
ইলহাম আর ইসরার আগের ছয় প্রজন্ম উপমহাদেশের উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতে অবদান রেখেছে। সরোদ বাদ্যযন্ত্রটির আধুনিকায়নই করেছে ফকির আফতাব উদ্দিন খানের বংশধরেরা।

অ্যাকাডেমিক বনাম কারিকুলার
ইলহাম ঢাকা সিটি কলেজ থেকে এবার এইচএসসি পরীক্ষা দেবেন। আর ইসরা মতিঝিল সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণিতে পড়েন। অন্যান্য বাচ্চারা স্কুলে পড়ালেখার পাশাপাশি বিভিন্ন কারিকুলার কাজ, যেমন- গান শেখা, কবিতা আবৃত্তি, বিতর্ক করা, ছবি আঁকা বা খেলাধুলা করে। তবে মূল মনোযোগ থাকে পড়াশোনার দিকেই।
কিন্তু ইলহাম আর ইসরা এদিক দিয়ে আলাদা। শৈশব থেকেই উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের চর্চায় ঢুকে পড়েন দুই বোন। বেঙ্গল পরম্পরা সঙ্গীতালয়ের ক্লাস হতো খিলক্ষেতে। আর তাদের বাসা রামপুরায়। প্রতিদিন এই দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে দুই মেয়েকে সরোদ ক্লাসে নিয়ে যেতেন মা সুপ্রিয়া আক্তার। সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত টানা ক্লাস হতো। দুপুরের খাবারের জন্য মাঝে থাকতো বিরতি। তারপর আবার ক্লাস। প্রতি মাসেই কিছুদিনের জন্য ভারত থেকে এসে বেঙ্গল পরম্পরা সঙ্গীতালয়ে ক্লাস নিতেন পণ্ডিত তেজেন্দ্রনারায়ণ মজুমদার।
ইলহাম বলেন, 'আমাদের স্কুল বা কলেজ জীবন বলতে কিছু নেই। সেই ছোটবেলা থেকেই বেঙ্গল ফাউন্ডেশনই আমাদের ঘরবাড়ি আর স্কুল-কলেজ। সন্ধ্যা ৬টায় ক্লাস শেষ হতো। কিন্তু মাঝে মাঝে পণ্ডিত জির সঙ্গীতের ঝোঁক উঠলে রাত ৮টা-৯টা পর্যন্তও ক্লাস নিতেন। তারপর খিলক্ষেত থেকে বাসায় ফিরতে ফিরতে অনেক রাত হয়ে যেত। পরদিন সকালে আবার যেতাম ক্লাসে। অ্যাকাডেমিক জীবনে অনেক ক্লাস মিস গিয়েছে আমাদের।'
স্কুল-কলেজ কর্তৃপক্ষ সবসময়ই ইলহাম আর ইসরার সঙ্গীতের চর্চাকে সমর্থন করেছে। অনিয়মিত ক্লাসে আসা নিয়ে কখনো ঝামেলা পোহাতে হয়নি তাদের। পড়ালেখার দিক দিয়েও শিক্ষক আর বন্ধুরা সহযোগিতা করেছেন সবসময়। সরোদ ক্লাস শেষ করে আসার পরেও বাসায় দীর্ঘ সময় ধরে তা রেওয়াজ করতে হতো দুই বোনেরই। পড়ালেখার জন্য স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক কম সময় দিতে পেরেছেন তারা। তবুও দু'জনেরই রেজাল্ট ভালো।

ইলহাম বা ইসরা, কেউই কখনো সঙ্গীত বিষয়ক কোনো প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেনি। তাদের মতে প্রতিটি মানুষই অনন্য। তার গুণাবলীও অনন্য। প্রতিযোগিতা করে প্রথম বা শেষ স্থান অর্জন করা দিয়ে মানুষের যোগ্যতা বিচার করা সম্ভব না।
তবে গত বছর ইসরার এক বন্ধু জোর করে জাতীয় শিশু প্রতিযোগিতায় তার নাম দিয়ে দেন। পরে অনেকটা বাধ্য হয়েই সেই প্রতিযোগিতায় অংশ নেন ইসরা। অসুস্থতা সত্ত্বেও প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে স্বর্ণপদক জয় করেন ইসরা।
মঞ্চের দারুণ অভিজ্ঞতা
২০১৬ সালে আর্মি স্টেডিয়ামে হওয়া বেঙ্গল ক্লাসিক্যাল ফেস্টিভাল ছিল দুই বোনের প্রথম মঞ্চে ওঠা। ভারতীয় উপমহাদেশের অনেক বিখ্যাত উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত শিল্পী সেই অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন। বিদুষী গীর্জা দেবী, ওস্তাদ আশীষ খান, পণ্ডিত বিক্রম ঘোষ, পণ্ডিত সঞ্জীব অভয়ঙ্কর, পণ্ডিত হরিপ্রসাদ চৌরাশিয়া, পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তীসহ আরো অনেক বিশ্বব্যাপী সমাদৃত শিল্পী অংশ নেন এ আয়োজনে।
তখন ইলহামের বয়স আট বছর, আর ইসরার ছয়। দুই বোন সরোদ হাতে অংশ নেন বেঙ্গল ক্লাসিক্যাল ফেস্টিভালে। এ অনুষ্ঠানে ৮৬ বছর বয়সি বিদুষী গীর্জা দেবী ছিলেন সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ শিল্পী। আর ইসরা ফুলঝুরি খান ছিলেন সবচেয়ে কনিষ্ঠ শিল্পী। এনিয়ে গণমাধ্যম দুই বোনের প্রশংসায়ই পঞ্চমুখ হয়েছিল।
পরের বছরের বেঙ্গল ক্লাসিক্যাল ফেস্টিভালেও অংশ নেন দুই বোন। এরপর থেকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাদের। নিয়মিত বিভিন্ন অনুষ্ঠান, কনসার্টে অংশ নিয়েছেন তারা। সাথে চলেছে সরোদ শিক্ষা। ঢাকার যেকোনো উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের অনুষ্ঠানে দুই বোন এখন পরিচিত মুখ।

ছায়ানটের শুদ্ধ সঙ্গীত উৎসব, ঢাকা লিট ফেস্ট, জয় বাংলা কনসার্ট, ঢাকা মেকার্স- এ অনুষ্ঠানগুলোয় বাজিয়েছেন ইলহাম ও ইসরা। যুক্তরাজ্য, সুইজারল্যান্ড ও তুরস্কের দূতাবাসের আমন্ত্রণে গিয়ে কূটনৈতিক আয়োজনে সরোদ বাজানোর অভিজ্ঞতাও হয়েছে দুই বোনের। এছাড়াও বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলের অনুষ্ঠানে তারা নিয়মিত অংশ নেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সরোদ বাজিয়েছেন ইলহাম ও ইসরা। চিরকুট ব্যান্ডের ২০ বছর পূর্তি উপলক্ষে তাদের সাথে বাজিয়েছেন তারা। এরপর থেকে চিরকুটের বিভিন্ন কনসার্টে অংশগ্রহণ করেছেন। এ বছরের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে রবীন্দ্র সরোবরে সরোদ বাজিয়েছেন দুই বোন।
ঢাকার বাইরের বিভিন্ন জেলায় সরোদ নিয়ে গিয়েছেন তারা। সব জায়গাতেই দারুণ অভিজ্ঞতা হয়েছে। একদম গ্রাম অঞ্চলেও বাজিয়েছেন ইলহাম ও ইসরা। যেখানে দর্শকদের উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত নিয়ে কোনো ধারণাই নেই। তবুও সেখানে দর্শকদের থেকে চমৎকার প্রতিক্রিয়া পেয়েছেন।
দেশের সব বিখ্যাত স্টুডিওতে ইতোমধ্যেই রেকর্ডিং করার অভিজ্ঞতা হয়েছে ইলহাম আর ইসরার। অর্ণবের কলরব স্টুডিওর মধ্যে অন্যতম। বিভিন্ন নাটক, সিনেমা ও বিজ্ঞাপনে সরোদ বাজিয়েছেন তারা।

প্রতিকূলতার মাঝেও স্বপ্ন দেখা
উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের চর্চা করা বেশ ব্যয়বহুল। ইলহাম আর ইসরা যে সরোদ বাজান, তার একেকটির দাম প্রায় সাড়ে তিন থেকে চার লাখ টাকা। এগুলো কেনা, রক্ষণাবেক্ষণ করা সময়সাধ্য। সরোদে ২৩ থেকে ২৬টি তার থাকে। এগুলো তার আমাদের দেশে কিনতেও পাওয়া যায় না। সব ভারত থেকে আনতে হয়। তাই সরোদের তার ছিঁড়ে গেলে বেশ ঝক্কি পোহাতে হয়।
সরোদ যে কাঠ দিয়ে বানানো হয়, তা আবহাওয়ার প্রতি অনেক সংবেদনশীল। তাপমাত্রা বেশি বা কম হলেই কাঠের আকৃতি কিঞ্চিৎ পরিবর্তিত হয়, আর বদলে যায় সরোদের সুর। রেওয়াজের সময় বা অনুষ্ঠানের আগে দীর্ঘ সময় ধরে টিউন করা লাগে প্রতিটি সরোদ।
ইলহাম বা ইসরা- কারোরই এখন পর্যন্ত কোনো অনুষ্ঠানে কোনো ধরনের প্রতিকূল বা বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়নি। তবে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আয়োজকদের যান্ত্রিক জটিলতার কারণে মাঝেমধ্যে ঝামেলা পোহাতে হয়েছে তাদের।
ইলহাম আর ইসরা মনে করেন, এখনো আমাদের দেশে উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতশিল্পীরা যথাযথ সম্মান পান না। পান না ন্যায্য সম্মানীও। শৈশব থেকেই যে কঠোর পরিশ্রমের মধ্যে দিয়ে দুই বোন বর্তমান পর্যায়ে এসেছেন- তার যথাযথ মূল্যায়ন করা হয় না।
'আপনি খেয়াল করে দেখেন, আমাদের দেশের টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে বিভিন্ন গানের অনুষ্ঠান হয়। কোনো চ্যানেলে কি দেখেছেন উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের অনুষ্ঠান হতে? এখন আর দেখা যায় না। অনেক আগে বিটিভি আর চ্যানেল আইয়ে উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের অনুষ্ঠান হতো। সেসব অনুষ্ঠানে আমার বাবা-চাচা নিয়মিত অংশ নিতেন। কিন্তু এখন আর এসব অনুষ্ঠান হয় না', বলছিলেন ইলহাম।
ইসরা স্বপ্ন দেখেন দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে সঙ্গীত বিভাগ থাকবে। যেখানে শুধু গান নয়, উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র নিয়েও স্নাতক থেকে স্নাতোকত্তর পর্যায়ে পড়ানো হবে। নিজেও সঙ্গীত নিয়ে উচ্চশিক্ষার জন্য দেশের বাইরে যেতে চান। পড়ালেখা শেষে আবার দেশে ফিরতে চান।

গানের ভাষা হয়, অর্থ লাগে। কিন্তু উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের কোনো ভাষা নেই। আমাদের উপমহাদেশের উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত বিশ্বব্যাপী এজন্যই জনপ্রিয়তা পেয়েছে। কিন্তু আমাদের দেশে এখনো সর্বস্তরের মানুষ উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত গ্রহণ করতে পারে না। অবশ্য উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের রসবোধ করা চাট্টিখানি কথাও নয়।
তবুও ইলহাম আর ইসরা চান সঙ্গীতের স্কুল খুলবেন। সেই স্কুল নিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে বেড়াবেন আর কর্মশালা করাবেন। যেসব শিশুরা ছোট থেকে আগ্রহী হয় সঙ্গীতের প্রতি, শিল্পের প্রতি- তাদের নিয়েই কাজ করার স্বপ্ন দেখেন ফুলঝুরি সিস্টার্স।
ছবি: সৌজন্যেপ্রাপ্ত