সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ নিয়ে রুল শুনানি পিছিয়ে ২ জুলাই, রাষ্ট্রপক্ষের অনুপস্থিতিতে ক্ষুব্ধ হাইকোর্ট

বিচারকদের নিয়ন্ত্রণ ও শৃঙ্খলা বিধানে রাষ্ট্রপতির কর্তৃত্ব সংক্রান্ত সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ এবং বিচার বিভাগের জন্য পৃথক সচিবালয় প্রতিষ্ঠা বিষয়ে জারি করা রুলের শুনানি পিছিয়ে আগামী ২ জুলাই ধার্য করেছেন হাইকোর্ট।
বুধবার (২৬ জুন) বিচারপতি আহমেদ সোহেল ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর বেঞ্চে এই শুনানির দিন নির্ধারিত ছিল। রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল আসাদুজ্জামানের যুক্তি তুলে ধরার কথা থাকলেও নির্ধারিত সময় পার হওয়ার পরও আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের কেউ উপস্থিত হননি।
এই অনুপস্থিতিতে বিস্ময় প্রকাশ করে হাইকোর্ট বলেন, 'এই রুল শুনানির জন্য তিনটি কোর্টের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। আমরা সবকিছু বন্ধ রেখে এমন গুরুত্বপূর্ণ শুনানির জন্য বসলাম, আর রাষ্ট্রপক্ষ আসবে না! তা কী করে হয়?'
রাষ্ট্রপক্ষের কাউকে না পেয়ে আদালত শুনানি পিছিয়ে দিয়ে আগামী ২ জুলাই নতুন তারিখ নির্ধারণ করেন।
আদালতে রিটকারীদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। সিনিয়র অ্যাডভোকেট ড. শরীফ ভূঁইয়া অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
গত বছরের ২৫ আগস্ট সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ এবং ২০১৭ সালের জুডিসিয়াল সার্ভিস (শৃঙ্খলা) বিধিমালার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে এবং বিচার বিভাগীয় পৃথক সচিবালয় প্রতিষ্ঠার নির্দেশনা চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের সাতজন আইনজীবী রিট করেন। পরে ২৭ অক্টোবর হাইকোর্ট এ বিষয়ে রুল জারি করেন।
সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, অধস্তন আদালতের বিচারকদের নিয়ন্ত্রণ ও শৃঙ্খলা বিধান (কর্মস্থল নির্ধারণ, পদোন্নতি, ছুটি মঞ্জুর) রাষ্ট্রপতির ওপর ন্যস্ত। রাষ্ট্রপতি সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শ করে এ দায়িত্ব পালন করেন।
রিটকারীদের আইনজীবীর মতে, বাস্তবে এই দায়িত্ব পালনে রাষ্ট্রের নির্বাহী বিভাগের হস্তক্ষেপ লক্ষ্য করা যায়, যা বিচার বিভাগের স্বাধীনতাকে খর্ব করে। ১৯৭২ সালের মূল সংবিধানে এই ক্ষমতা সুপ্রিম কোর্টের হাতে থাকলেও ১৯৭৪ সালের চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে তা রাষ্ট্রপতির হাতে ন্যস্ত করা হয়। পরবর্তীতে বিভিন্ন সংশোধনীর মাধ্যমে কিছু পরিবর্তন আনা হলেও ২০১১ সালের পঞ্চদশ সংশোধনীর পর সংবিধানে বর্তমানে ১১৬ অনুচ্ছেদের বর্তমান বিধানই বহাল রয়েছে।