সারাদেশে বজ্রপাতে ১০ জনের মৃত্যু

কুমিল্লা, কিশোরগঞ্জসহ সারাদেশে বজ্রপাতে অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছেন। আজ সোমবার (২৮ এপ্রিল) এ দুর্ঘটনার খবর জানা যায়।
নিহতদের মধ্যে কুমিল্লায় ৪জন, কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রামে ২ জন ও মিঠামইনে একজন, সুনামগঞ্জের শাল্লায় একজন, নেত্রকোনার কলমাকান্দায় একজন ও মদনে একজন রয়েছেন।
কুমিল্লা
কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার খোশবাস ইউনিয়নের পয়ালগাছা গ্রামে বজ্রপাতে দুই স্কুলছাত্র নিহত হয়। তারা উভয়েই বড়হরিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র। নিহতরা হলেন—পয়ালগাছা গ্রামের প্রয়াত খোকন মিয়ার ছেলে ফাহাদ হোসেন (১৩) এবং আব্দুল বারেক মিয়ার নাতি সায়মন হোসেন (১৩)।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুরে হালকা মেঘ থাকা সত্ত্বেও শিশুরা মাঠে ঘুড়ি ওড়াতে ব্যস্ত ছিল। হঠাৎ বজ্রপাতে তারা মারাত্মকভাবে আহত হয়। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
বরুড়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা নু এমং মারমা মং বজ্রপাতে মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
অপরদিকে, মুরাদনগরে কৃষি জমিতে কাজ করার সময় বজ্রপাতে দুই কৃষক নিহত হয়েছেন। নিহতরা হলেন—বাঙ্গরা বাজার থানাধীন কোরবানপুর গ্রামের বীরচরণ দেবনাথের ছেলে নিখিল চন্দ্র দেবনাথ এবং আন্দিকুট ইউনিয়নের দেওড়া গ্রামের জসিম উদ্দিন ভূঁইয়ার ছেলে জুয়েল ভূঁইয়া।
এ সময় বজ্রাঘাতে আরও তিনজন আহত হন, যাদের শ্রবণশক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানা গেছে।
মুরাদনগর উপজেলার পূর্বধইর পূর্ব ইউনিয়নের কোরবানপুর পূর্বপাড়া কবরস্থানের কাছে বেলা সাড়ে ১১টায় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নিখিল চন্দ্র দেবনাথ ও জুয়েল ভূঁইয়া সোমবার সকালে জমিতে ধান কাটার কাজে গিয়েছিলেন। হঠাৎ আবহাওয়া খারাপ হলে বজ্রপাত শুরু হয় এবং তারা বজ্রাঘাতের শিকার হন।
বাঙ্গরা বাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজুর রহমান জানান, "কৃষিকাজ করতে গিয়ে কোরবানপুর গ্রামে বজ্রপাতে দুইজন মারা যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। তাদের মৃতদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।"
কিশোরগঞ্জ
হাওর উপজেলা মিঠামইন ও অষ্টগ্রামে বজ্রপাতের পৃথক ঘটনায় এক নারীসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে অষ্টগ্রামে ইন্দ্রজিত দাস (৩০) ও স্বাধীন মিয়া (১৪) নামে দুইজন এবং মিঠামইনে ফুলেছা বেগম (৬০) নামে একজন নারী নিহত হয়েছেন।
অষ্টগ্রামে হাওরে বোরো ধান কাটার সময় বজ্রপাতে ইন্দ্রজিত দাস ও স্বাধীন মিয়া নিহত হন। অন্যদিকে মিঠামইনে বাড়ির পাশে কাজ করার সময় ফুলেছা বেগম নিহত হন। সোমবার সকালে বজ্রপাতে এসব প্রাণহানির ঘটনাটি ঘটে।
সুনামগঞ্জ
সুনামগঞ্জের শাল্লায় হাওরে বজ্রপাতে রিমন তালুকদার (২০) নামের এক কলেজ ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার সকালে উপজেলার আটগাঁও গ্রামের বুড়িজাঙ্গাল হাওরে এ ঘটনা ঘটে। রিমন তালুকদার আটগাও ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের জাহেদ মিয়ার ছেলে। তিনি শাল্লা কলেজের ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।
নেত্রকোনা
নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলায় বজ্রপাতে দিদারুল হক নামে এক মাদ্রাসা শিক্ষকের মৃত্যু হয়েছে। রোববার রাত সাড়ে ১০টায় উপজেলার খারনৈ ইউনিয়নের হাফসা (রা:) মহিলা মাদ্রাসা ও আন নূর ইসলামী একাডেমির সামনে এ ঘটনা ঘটে।
এছাড়া, একই জেলার মদন উপজেলায় আরাফাত (১০) নামের এক মাদ্রাসার ছাত্র বজ্রপাতে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি উপজেলার তিয়শ্রী গ্রামের মো. আব্দুস ছালাম মিয়ার ছেলে। আজ ফজরের নামাজের পর মাদ্রাসায় যাওয়ার পথে বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।