বাংলাদেশের পুনর্গঠনে সর্বোচ্চ সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিলেন কাতারের প্রধানমন্ত্রী

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস চারদিনের কাতার সফরের শেষদিনে আজ বৃহস্পতিবার সেদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আব্দুল রহমান বিন জসিম আল থানির সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ এক দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেছেন।
দোহায় কাতারের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে কাতারের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে বলেন, "বাংলাদেশ পুনর্গঠনের লক্ষ্যে আমরা সর্বোচ্চ সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত।"তিনি জানান, বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে তার একজন ঘনিষ্ঠ সহযোগীকে দায়িত্ব দেবেন।
শেখ মোহাম্মদ প্রধান উপদেষ্টাকে বলেন, "আপনার নেতৃত্বের ওপর আমাদের আস্থা রয়েছে।" তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, বাংলাদেশ এই সংস্কার ও পুনর্গঠনের প্রক্রিয়া শেষে আগের চেয়ে আরও শক্তিশালী হয়ে উঠবে।
অধ্যাপক ইউনূস 'নতুন বাংলাদেশ' গড়ে তোলার লক্ষ্যে কূটনৈতিক, আর্থিক ও বিনিয়োগ সহায়তা চেয়ে বলেন, "আমাদের তরুণ প্রজন্মের স্বপ্নের দেশ গড়তে আপনাদের সহযোগিতা দরকার।"
বৈঠকে কাতারের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশকে একটি টেকনিক্যাল টিম পাঠাতে অনুরোধ করেন, যাতে ভবিষ্যতে দু'দেশের মধ্যে নানা খাতে সহযোগিতার পথ প্রশস্ত হয়।
রোহিঙ্গা সংকটে কাতারের সক্রিয় সহায়তা চাওয়া হয়েছে
বৈঠকে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আলোচনাও গুরুত্ব পায়। প্রধান উপদেষ্টা রোহিঙ্গাদের "মর্যাদার সঙ্গে নিজ দেশে ফেরার জন্য" সব ধরনের সহায়তা চেয়ে কাতারের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি 'আর্থনা সম্মেলনের' ফাঁকে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে উচ্চপর্যায়ের সংলাপ আয়োজনের জন্য কাতারকে ধন্যবাদ জানান।
এ সময় শেখ মোহাম্মদ বাংলাদেশের মানবিক ভূমিকার প্রশংসা করেন এবং রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধানে আন্তর্জাতিক সহায়তা জোরদার করার আহ্বান জানান। তিনি আশ্বাস দেন, রোহিঙ্গা সংকটে কাতার বাংলাদেশের পাশে থাকবে।
গাজা সংকটে বাংলাদেশের অবস্থানকে স্বাগত জানাল কাতার
বৈঠকে গাজা পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়। অধ্যাপক ইউনূস বলেন, "গাজাবাসীদের দুর্দশার বিষয়ে বিশ্বের নীরবতা দুঃখজনক।" কাতারের প্রধানমন্ত্রী এই বিষয়ে বাংলাদেশের অবস্থানকে স্বাগত জানান।
অধ্যাপক ইউনূস গাজা সংকট নিয়ে আল জাজিরার সাহসী রিপোর্টিংয়ের জন্য কৃতজ্ঞতা জানান, গতকাল তিনি আল জাজিরার সদর দপ্তর পরিদর্শন করেছিলেন।
নারী ক্রীড়াবিদদের জন্য সহায়তা
প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশের নারী ক্রীড়াবিদদের জন্য প্রশিক্ষণ ও অবকাঠামোগত সহায়তা চান চেয়ে কাতারের কাছে।
এছাড়া তিনি কাতারের প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান, যা শেখ মোহাম্মদ সাদরে গ্রহণ করেন।
শীর্ষ এ বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন, জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান, এবং এসডিজি বিষয়ক সমন্বয়কারী লামিয়া মোরশেদ।