৬ দফা দাবিতে ঢাকা মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সামনে শিক্ষার্থীদের সমাবেশ

ক্রাফট ইন্সট্রাকটরদের প্রমোশন বাতিলসহ ছয় দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে ঢাকা মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সামনে মহাসমাবেশ করেছেন দেশের বিভিন্ন পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা।
আজ রোববার সকাল ১১টার দিকে এই মহাসমাবেশ শুরু হয়। এতে রাজধানীর প্রায় ২০টি সরকারি ও বেসরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে বিভিন্ন স্লোগানে তারা তাদের দাবির পক্ষে অবস্থান জানান।
শিক্ষার্থীরা জানান, তারা সড়কে নেমে জনদুর্ভোগ তৈরি করতে চান না। তবে সরকার কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ায় বাধ্য হয়েই তারা রাস্তায় নেমেছেন। দ্রুত দাবি পূরণ না হলে আরও কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারিও দেন তারা।
ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী ও কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের সহ-সমন্বয়ক মাহিয়ান ইসলাম বলেন, আমাদের এই আন্দোলন নতুন নয়, বিগত আট মাস ধরে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করে আসছি। সরকার আমাদের ডেকেছে, আমরা গিয়েছি। কিন্তু আমাদের দাবিকে গুরুত্ব না দিয়ে শুধু বৈঠকের নাটক সাজিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, গত সেপ্টেম্বর থেকে ছয় দফা দাবিতে আমরা আন্দোলন করছি। সরকারের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক হলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। তাই দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
ঢাকা ছাড়াও দেশের অন্যান্য জেলা শহরের পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সামনেও একই সময়ে সমাবেশের আয়োজন করা হবে বলে গতকাল এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায় সংগঠনটি।

উল্লেখ্য, গত শনিবার সারাদেশে 'রাইজ ইন রেড' কর্মসূচি পালন করেন তারা। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকা সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন করতে দেখা যায় তাদের।
এর আগে শুক্রবার দুপুরে ঢাকায় কাফনের কাপড় পরে ছয় দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। জুমার নামাজের পর রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট জামে মসজিদ থেকে শুরু হয় তাদের মিছিল।
আন্দোলনকারীদের দাবির মধ্যে রয়েছে—জুনিয়র ইন্সট্রাকটর পদে ক্রাফট ইন্সট্রাকটরদের প্রমোশনের হাইকোর্টের রায় বাতিল, পদবি পরিবর্তন, মামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে স্থায়ীভাবে চাকরিচ্যুত করা, ২০২১ সালের বিতর্কিত নিয়োগবিধি বাতিল, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে নিয়োগ বাতিল এবং মামলার সঙ্গে যুক্ত ক্রাফট ইন্সট্রাকটরদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া।
একইসঙ্গে তারা ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্স চার বছর মেয়াদী রাখার দাবি জানান এবং আধুনিক বিশ্বের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ মানসম্মত সিলেবাস ও কারিকুলাম প্রণয়নের আহ্বান জানান।
এর আগে সচিবালয়ে কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব রেহানা ইয়াসমিনের সঙ্গে আলোচনার পর শিক্ষার্থীরা জানান, তাদের দাবি নিয়ে কোনো লিখিত আশ্বাস কিংবা দৃশ্যমান অগ্রগতি মেলেনি। আলোচনা ফলপ্রসূ হয়নি বলেও জানান তারা।
আগের দিনও বুধবার (১৬ এপ্রিল) শিক্ষার্থীরা সারাদেশে সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করে, যার ফলে সাধারণ যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েন।
ওইদিনই আন্দোলনের মুখে ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ মো. মোস্তাফিজুর রহমান খানকে পদ থেকে সরিয়ে তাকে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরে সংযুক্ত করা হয়।