২০২৪ সালে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশিদের আশ্রয় আবেদনে রেকর্ড, ৯৬ শতাংশই বাতিল

ইউরোপের বিভিন্ন দেশে আশ্রয়ের জন্য গত বছর রেকর্ড সংখ্যক বাংলাদেশি আবেদন করেছেন। তবে এসব আবেদনের মধ্যে ৯৬ শতাংশই বাতিল করা হয়েছে।
আজ সোমবার (৩ মার্চ) ইউরোপীয় ইউনিয়ন এজেন্সি ফর অ্যাসাইলাম (ইইউএএ) প্রকাশিত এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সালে প্রায় ৪৩ হাজার ২৩৬ জন বাংলাদেশি 'ইইই প্লাস' হিসেবে পরিচিত দেশগুলোতে আশ্রয় আবেদন করেন। এটি এ পর্যন্ত বাংলাদেশিদের সর্বোচ্চ আবেদনের রেকর্ড। এছাড়াও এ অঞ্চলে আশ্রয়ের জন্য সবচেয়ে বেশি আবেদন করা দেশগুলোর তালিকায় ষষ্ঠ বাংলাদেশ।
গত বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ২৩ হাজার তিনজন বাংলাদেশি আশ্রয় আবেদন করেন। আর জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে আবেদন করেছেন ২০ হাজার ২৩৩ জন।
এর আগে ২০২৩ সালে আবেদন করেছিলেন ৪০ হাজার ৩৩২ বাংলাদেশি। সে হিসাবে গত বছর বাংলাদেশিদের আশ্রয় আবেদন ৭.২ শতাংশ বেড়েছে।
ইইউএএ-এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ১০ বছরের মধ্যে ২০২৪ সালে সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশি ইইউ প্লাসে আশ্রয় চেয়ে আবেদন করেন। বাংলাদেশিদের আশ্রয় আবেদনের প্রধান গন্তব্য ছিল ইতালি। দেশটিতে আশ্রয়ের জন্য ৩৩ হাজার ৪৫৫ জন বাংলাদেশি আবেদন করেছেন। যা মোট আবেদনের ৭৭ শতাংশ। এরপর সবচেয়ে বেশি আশ্রয় আবেদন জমা পড়েছে ফ্রান্স ও আয়ারল্যান্ডে।
বাংলাদেশিদের মোট আশ্রয় আবেদনের ১৫ শতাংশ জমা পড়েছে ফ্রান্সে। দেশটিতে আশ্রয়ের জন্য ৬ হাজার ৪২৯ বাংলাদেশি আবেদন করেছেন। আয়ারল্যান্ডে আবেদন জমা পড়েছে ১ হাজার ছয়টি।
ইইউএএ-এর তথ্যমতে, ২০২৪ সালে বাংলাদেশিদের ৪৭ হাজার ৭৭৮টি আবেদন নিষ্পত্তির জন্য প্রক্রিয়াধীন ছিল। এছাড়াও ১ হাজার ৯৮৯ জন বাংলাদেশি তাদের আবেদন প্রত্যাহার করেছেন। আর আবেদন গৃহীত হওয়ার হার মাত্র ৩.৯ শতাংশ।
এদিকে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আবেদন করেছেন আফগানরা। প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৮৭ হাজার ৩৮২ জন আফগান আশ্রয় চেয়ে আবেদন করেছেন। এরপরেই রয়েছে বাংলাদেশ। তৃতীয় স্থানে রয়েছে পাকিস্তান। দেশটি থেকে আবেদন জমা পড়েছে ২৩ হাজার ২৪০টি।
২০২৪ সালে ইইউ প্লাসে টানা তৃতীয়বারের মতো প্রায় ১০ লাখ আশ্রয় আবেদন জমা পড়ে। তবে ২০২৩ সালের তুলনায় সংখ্যাটি সামান্য কম।
ইইউএএ-এর প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে মোট আবেদনের প্রায় অর্ধেক (৪৮ শতাংশ) এমন কিছু দেশের নাগরিকেরা করেছেন, যাদের আবেদন গৃহীত হওয়ার হার তুলনামূলক কম। এর মধ্যে রয়েছেন বাংলাদেশি, মরক্কীয় ও তিউনিশিয়ানরা।
উল্লেখ্য, 'ইইউ প্লাস' বলতে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত ২৭টি রাষ্ট্রসহ নরওয়ে ও সুইজারল্যান্ডকে বোঝায়।