৩ হাজার থেকে ২০ হাজার করা হলো স্বাধীন বাংলা দলের ফুটবলারদের ভাতা

সম্মানী ভাতা বাড়ানো হয়েছে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের জীবিত থাকা ফুটবলারদের। ফুটবল খেলে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে বড় অবদান রাখা কিংবদন্তি সব ফুটবলারা এতোদিন নামেমাত্র মাসিক ভাতা পেতেন, ৩ হাজার টাকা দেওয়া হতো জীবিত ফুটবলারদের। ১৭ হাজার বাড়িয়ে ২০ হাজার টাকা করা হয়েছে ভাতা। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) মঙ্গলবার এটা জানিয়েছে।
২২ বছর ধরে ৩ হাজার টাকা করে পেতেন স্বাধীন বাংলা দলের ফুটবলাররা। দীর্ঘদিন পরে এসে তাদের ভাতার নতুন কাঠামো দেওয়া হলো। এনএসসির সচিব আমিনুল ইসলামের স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে বিষয়টি জানানো হয়েছে। জানুয়ারি থেকে নতুন বেতন কাঠামো কার্যকর ধরা হয়েছে।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বড় অবদান ছিল স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের। স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নেওয়া সবাই যখন যুদ্ধ করায় ব্যস্ত, একট দল যুবক তখন ফুটবল দল গড়ে ভারতের মাটিতে ম্যাচ খেলায় ব্যস্ত। তাদের উদ্দেশ্যও ছিল স্বাধীনতা যুদ্ধে অবদান রাখা, আর সেটা ফুটবল খেলেই। সেটা করেও দেখান সাইদুর রহমান প্যাটেল, প্রতাপ শঙ্কর হাজরা, জাকারিয়া পিন্টু, কাজী সালাউদ্দিন, এনায়েতুর রহমান, বীরেন কুমার বীরু, মুজিবর রহমান, বিমল কর, মোহাম্মদ কায়কোবাদ, নওশেরুজ্জামানরা।
স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল নামের দলটির প্রধান উদ্দেশ্য ছিল জনমত গঠন করা, বৈশ্বিক স্বীকৃতি লাভ করা। শুরুর পর এখান থেকে অর্থের যোগানও পেয়ে যায় দলটি। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, উড়িষ্যা হায়দরাবাদ, জয়পুর, মুম্বাইসহ বিভিন্ন প্রদেশে ১৬টি প্রদর্শনী ম্যাচ খেলে অভাবনীয় সাড়া পায় স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল। দেশের পক্ষে জনমত গঠন করার পাশাপাশি ভারতের মানুষের কাছ থেকে পাওয়া অর্থ প্রবাসী সরকারের হাতে তুলে দিতে থাকেন ফুটবল যোদ্ধারা। মুক্তিযোদ্ধাদের ফান্ডে ১৬ লাখ ৩৩ হাজার টাকা জমা দেন তারা।
সময় গড়িয়েছে, দেশ স্বাধীন হয়েছে। দেশে ফিরে মুক্ত হাওয়ায় প্রাণভরে নিশ্বাস নিয়েছেন ১৯৭১ সালের জুলাইয়ের শেষ থেকে ফুটবল দিয়ে দেশকে মুক্ত করার মিশনে নাম লেখানো বাংলাদেশি ফুটবলাররা। এরপর পেরিয়ে গেছে ৫৫ বছর। আজও তৃপ্ত হতে পারেননি স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের খেলোয়াড়রা। চারজন ছাড়া স্বীকৃতি মেলেনি বাকি ফুটবলারদের, পাননি স্বাধীনতা পুরস্কার। আর্থিক অস্বচ্ছলতা দূর করতেও এগিয়ে যাননি কেউ। যে মাসিক ভাতা দেওয়া হতো সেটাও বলার মতো না। অবশেষে তাদের ভাতার পরিমাণ বাড়ানো হলো।