সাবেক রাষ্ট্রপতি বদরুদ্দোজা চৌধুরী মারা গেছেন

সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী ওরফে বি চৌধুরী মারা গেছেন।
আজ শনিবার (৫ অক্টোবর) ভোররাত সোয়া ৩টার দিকে নিজের প্রতিষ্ঠিত উত্তরা মহিলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯৪ বছর। তিনি স্ত্রী, এক ছেলে, দুই মেয়ে এবং নাতি-নাতনীসহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
এক প্রেস বিবৃতিতে বদরুদ্দোজা চৌধুরীর প্রেস সচিব জাহাঙ্গীর আলম তার মৃত্যুর তথ্য জানান।
প্রেস বিবৃতিতে জানানো হয়, 'ফুসফুসে সংক্রমণ হওয়ায় গত ২ অক্টোবর সকালে বি চৌধুরীকে উত্তরা মহিলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেদিন বি চৌধুরীর মেয়ে ডা. শায়লা চৌধুরী জানান যে, তার বাবা আগে থেকেই স্কিমিক হার্ট ডিজিজেস ভুগছিলেন।'
চিকিৎসক ও প্রবীণ রাজনীতিবিদ বদরুদ্দোজা চৌধুরীর জন্ম ১৯৩০ সালের ১১ অক্টোবর, কুমিল্লা শহরে।
তিনি ১৯৬৪ সালে রাজশাহী মেডিকেল কলেজে মেডিসিনের সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। পরে ১৯৬৪ থেকে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজে মেডিসিনের সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও ১৯৭০ সালে সিলেট মেডিকেল কলেজে মেডিসিনের অধ্যাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের অনুরোধে ১৯৭৮ সালে দলটিতে যোগদানের মাধ্যমে রাজনীতি শুরু করেন বদরুদ্দোজা চৌধুরী। ১৯৭৯ সালে তিনি মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর থেকে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং কেবিনেট মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।
বদরুদ্দোজা চৌধুরী ১৯৭৯ সালের আগস্ট পর্যন্ত কয়েক মাস উপ-প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে ১৯৮২ সাল পর্যন্ত কেবিনেট মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯১ সালে তিনি দ্বিতীয়বার এমপি নির্বাচিত হন এবং সংসদ উপনেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
২০০১ সালে তিনি পুনরায় এমপি নির্বাচিত হন এবং একই বছরের অক্টোবর থেকে নভেম্বর পর্যন্ত বিএনপি সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন।
পরে ২০০১ সালের ১৪ নভেম্বর বদরুদ্দোজা চৌধুরী রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। তবে রাজনৈতিক কারণে ২০০২ সালের ২১ জুন তিনি রাষ্ট্রপতির পদ থেকে ইস্তফা দেন।
পরে বদরুদ্দোজা চৌধুরী বিএনপির ছেড়ে ২০০৪ সালের ৮ মে বিকল্পধারা বাংলাদেশ নামক রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠা করেন।
বদরুদ্দোজা চৌধুরীর বাবা অ্যাডভোকেট কফিল উদ্দিন চৌধুরী কৃষক প্রজা পার্টির সহসভাপতি, যুক্তফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক ও পূর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশিক মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন।
বদরুদ্দোজা চৌধুরী ১৯৪৭ সালে ঢাকার সেন্ট গ্রেগরি স্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন এবং ১৯৪৯ সালে ঢাকা কলেজ থেকে প্রথম আইএসসি পাশ করেন। তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস ডিগ্রি লাভ করেন। তার সহধর্মিণীর নাম হাসিনা ওয়ার্দা চৌধুরী। বদরুদ্দোজা চৌধুরী দুই মেয়ে ও এক ছেলের জনক। তার বড় মেয়ে মুনা চৌধুরী পেশায় একজন ব্যারিস্টার। ছোট মেয়ে শায়লা চৌধুরী পেশায় চিকিৎসক এবং একমাত্র ছেলে মাহী বি চৌধুরী রাজনীতিবিদ ও সাবেক এমপি।