বঙ্গোপসাগর হয়ে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন বিকল্প রুটে নৌযান চলাচল শুরু

মিয়ানমার সীমান্ত থেকে সেন্টমার্টিন দ্বীপে যাতায়াতকারী নৌযান লক্ষ্য করে মিয়ানমার থেকে গুলিবর্ষণের কারণে সাতদিন বন্ধ থাকার পর বিজিবি ও কোস্টগার্ডের নিরাপত্তায় শুরু হয়েছে ট্রলার চলাচল; তবে বৃহস্পতিবার পণ্যবাহী কোন ট্রলার সেন্টমার্টিনের উদ্দেশ্যে ছাড়েনি বলে জানা গেছে জেলা প্রশাসন সূত্রে।
আজ বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) বিকেল সাড়ে ৩টায় মেরিন ড্রাইভ সড়ক-সংলগ্ন টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের মুন্ডারডেইল এলাকার সাগর উপকূলের পয়েন্ট দিয়ে সেন্টমার্টিন থেকে ট্রলারযোগে কিছু যাত্রী এসেছেন বলে জানান, টেকনাফের ইউএনও মো. আদনান চৌধুরী।
আদনান চৌধুরী বলেন, 'দুপুর ১টার দিকে সেন্টমার্টিন দ্বীপের জেটি ঘাট থেকে ৩টি ট্রলার যোগে বিজিবি ও কোস্টগার্ড সদস্যদের নিরাপত্তায় অন্তত তিন শতাধিক মানুষ টেকনাফের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। বিকাল ৩টার দিকে ট্রলারগুলো টেকনাফের মুন্ডারডেইল সাগর উপকূলে পৌঁছে। কিন্তু সাগরের প্রতিকূল পরিস্থিতির কারণে এসব ট্রলার থেকে লোকজনকে সরাসরি তীরে ওঠানো সম্ভব হচ্ছিল না। পরে কূল থেকে কয়েকটি ডিঙ্গি নৌকা উপকূলের কিছুদূরে সাগরে অবস্থানকারী ট্রলারগুলোর কাছে পাঠানো হয়। পরবর্তীতে বড় ট্রলার থেকে এসব মানুষকে ডিঙ্গি নৌকায় তুলে তীরে নিয়ে আসা হয়েছে।' "
সেন্টমার্টিন ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম জানিয়েছেন, 'গত ৭ দিন দ্বীপে আসা-যাওয়া বন্ধ থাকায় দ্বীপে খাদ্যপণ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। এখন বিকল্পভাবে ট্রলার চলাচল শুরু হওয়ায় স্বস্তি মিলছে। যে ট্রলারগুলো গেছে ওই সব ট্রলার নিয়ে টেকনাফে থাকা মানুষজন (নিত্যপণ্য কেনাকাটা ও অন্যান্য কাজ সেরে) আবার ফিরে আসবে।'
এর আগে বুধবার সন্ধ্যায় কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের এক জরুরী সভায় বৃহস্পতিবার থেকে সেন্টমার্টিনে যাত্রী আসা-যাওয়া এবং পণ্যবাহী ট্রলার চলাচল শুরুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এনিয়ে ইউএনও আদনান জানান, 'আজ টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটের সাগরের বিকল্পপথে যাত্রী পারাপার শুরু হলেও– পণ্যবাহী কোন ট্রলার সেন্টমার্টিনের উদ্দেশ্যে টেকনাফ ছাড়েনি।'
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইয়ামিন হোসেন বলেন,'মূলত কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া ঘাট থেকে বড় জাহাজযোগে ব্যবসায়ীরা পণ্য নিয়ে যাবেন। এটা ব্যবসায়ী এবং জাহাজ মালিকরা মিলে করবেন। প্রশাসন নিরাপত্তার বিষয়টি দেখবেন। এ ছাড়া, বঙ্গোপসাগর হয়ে এখন ট্রলারে যেসব যাত্রী আসা-যাওয়া করছে, তাদেরও ওখানে কিছু পণ্য নিয়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ফলে খাদ্য সংকট হবে না।'
এদিকে, টেকনাফের নাফনদীর সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের উপকূলের কাছে টানা ২দিন ধরে দেখা যাচ্ছে বড় একটি যুদ্ধজাহাজ। এই জাহাজ থেকে মিয়ানমারের স্থলেভাগে অবস্থানকারী বিদ্রোহীদের সাথে বুধবার দিবাগত রাত থেকে বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত চলছে গোলাগুলি। বিস্ফোরণের বিকট শব্দ ভেসে আসছে টেকনাফের সীমান্তবর্তী এলাকায়।