Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Tuesday
May 13, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
TUESDAY, MAY 13, 2025
‘ঢাকা ফিভার’ নামের অজ্ঞাত অসুখ তা-ই ছিল ডেঙ্গু!

ইজেল

সৈয়দ মূসা রেজা
15 July, 2023, 02:05 pm
Last modified: 15 July, 2023, 02:47 pm

Related News

  • ডেঙ্গু থেকে বাঁচতে সন্ধ্যায় বাসার দরজা-জানালা বন্ধ রাখার পরামর্শ ঢাকা দক্ষিণের প্রশাসকের
  • ডেঙ্গু প্রতিরোধে ব্যাকটেরিয়ার ব্যবহার মূল্যায়নে উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার
  • ডেঙ্গু: প্রাণে বাঁচলেও নীরবে শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন নারীরা
  • এ বছর ডেঙ্গুতে মারা গেছে ৬৪ শিশু; দেরিতে শনাক্ত ও হাসপাতালে ভর্তি মূল কারণ
  • চলতি বছর ডেঙ্গুতে মৃত্যু ৫০০ ছাড়াল

‘ঢাকা ফিভার’ নামের অজ্ঞাত অসুখ তা-ই ছিল ডেঙ্গু!

কল্পবিজ্ঞান চলচ্চিত্র ‘ওয়ার অব দ্য ওয়ার্ল্ড’-এর কথা মনে আছে? প্রচণ্ড দাপুটে মঙ্গলবাসীদের ঠেকাতে পারছিল না পৃথিবীর মানুষ। একের পর এক যুদ্ধে হেরে যাচ্ছিল। গোটা পৃথিবীই বোধহয় মঙ্গলের এই অমঙ্গুলেবাসীদের কবজায় চলে যাবে- সে ভয়ে কাঁপছে গোটা ধরিত্রী। কিন্তু সে সময় দেখা গেল তারা হঠাৎ করে মরছে। রোগব্যাধি মাটির এ পৃথিবীর মানুষের জন্য আটপৌরে পানিভাত।
সৈয়দ মূসা রেজা
15 July, 2023, 02:05 pm
Last modified: 15 July, 2023, 02:47 pm

সংক্রামক রোগের কথা বলা হলে অনেকেই বলে থাকেন, বিত্তবান ও অভিজাতদের এ জাতীয় পচা রোগ হয় না। করোনা অতিমারি বা বিশ্বমারি চলাকালে বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় ধনবান ব্যক্তিত্বদের কেউ কেউ এ রোগের শিকার হয়েছেন। শুধু তা-ই না, দুঃখজনকভাবে প্রাণও হারিয়েছেন। ইতিহাসের দিকে তাকাই। হ্যাঁ, সেখানেও দেখতে পাব সম্রাট বা দিগ্বিজয়ী বীররা বিশ্ব বিজয় করেছেন। কিন্তু অদেখা খুদে অণুজীব সৃষ্ট এমন সব রোগ-বালাই জয় করতে তো পারেননি। এমনকি পারেননি ঠেকাতে বরং বেঘোরে দিয়েছেন প্রাণ।

ফারাও প্রথম রামসেস হয়তো ভুগেছেন কানের সংক্রমণে। কান পাকা রোগ অভিজাত শ্রেণির কারও হতে পারে, হয়তো ভাবতেও পারি না আমরা। পঞ্চম রামসেসের প্রাণ ছিনিয়ে নিয়েছে গুটিবসন্ত। দিগ্বিজয়ী বীর আলেকজান্ডারের প্রাণ হরণ করেছে ফুসফুসের সংক্রমণ। সম্ভবত তার প্রাণঘাতী ব্যাধিটি ছিল নিউমোনিয়ায় কিংবা রাজরোগ হিসেবে পরিচিত যক্ষ্মা বা টিবি। অন্যদিকে আলেকজান্ডারের আগেই রোগে ভুগে মারা যান তার প্রিয় বান্ধব হেফাইস্টিন। মৃত্যুশয্যার উপসর্গ থেকে মনে হয় অসুখটি ছিল টাইফয়েড জ্বর।

১৬৯ খ্রিষ্টাব্দে রোমান সম্রাট মার্কাস অরেলিয়াস অ্যান্টোনিনাস অসহায়ভাবে প্রাণ হারান হাম কিংবা গুটিবসন্তে। একই রোগে ভবলীলা সাঙ্গ করেছে রাজাধিরাজের হাজার হাজার সেনা এবং সাধারণ প্রজার। সে সময়ে এ রোগ বিশ্বমারির রূপ নিয়েই দেখা দিয়েছিল, ধারণা করা হয়। অন্যদিকে ভুলফগাং আমাদেউস মোৎসার্ট বাতজ্বরে প্রাণ হারান। সংক্রামক রোগে ভোগার জের হিসেবে তাকে ভুগতে হয় বাতজ্বরে।

কল্পবিজ্ঞান চলচ্চিত্র 'ওয়ার অব দ্য ওয়ার্ল্ড'-এর কথা মনে আছে? প্রচণ্ড দাপুটে মঙ্গলবাসীদের ঠেকাতে পারছিল না পৃথিবীর মানুষ। একের পর এক যুদ্ধে হেরে যাচ্ছিল। গোটা পৃথিবীই বোধহয় মঙ্গলের এই অমঙ্গুলেবাসীদের কবজায় চলে যাবে- সে ভয়ে কাঁপছে গোটা ধরিত্রী। কিন্তু সে সময় দেখা গেল তারা হঠাৎ করে মরছে। রোগব্যাধি মাটির এ পৃথিবীর মানুষের জন্য আটপৌরে পানিভাত। মানুষের দেহ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা আধি-ব্যাধির মোকাবেলা করার কলাকৌশল জানে। কিন্তু মঙ্গলে এমন প্রাণঘাতী ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া নেই। মঙ্গলবাসীদের দেহ তাই রোগ প্রতিরোধের বিদ্যা বা কৌশল জানে না। পার্থিব ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার শিকার হয়ে শেষ পর্যন্ত নিকেশ হলো আগ্রাসী মঙ্গলবাসীরা। মানুষ বাঁচল হাঁপ ছেড়ে।

অর্থাৎ এখানে একধরনের জীবাণু-যুদ্ধই হয়ে গেল। এমনই জীবাণু-যুদ্ধ সত্যিই ঘটেছিল। আমেরিকা মহাদেশ 'কথিত আবিষ্কারের' পর সেখানে দলে দলে ইউরোপীয়রা যেতে থাকে। তাদের শরীরে ভর করে সেই নতুন পৃথিবীতে যায় ইনফ্লুয়েঞ্জা, টাইফয়েড, হাম ও গুটিবসন্ত।  আর এসব রোগে দলে দলে প্রাণ হারায় হতভাগ্য ভূমিমানুষ। এভাবে ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ ভূমিপুত্র বেঘোরে মারা পড়ে। বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাদের নেতৃস্থানীয় জনগোষ্ঠী। এই কিছুদিন আগেও তাদের ডাকা হতো রেড ইন্ডিয়ান নামে। ইউরোপীয়রা জেনে-বুঝে আমেরিকার ভূমিমানুষদের বিরুদ্ধে জীবাণু-যুদ্ধ চালিয়েছিল, সে কথা বলা যাবে না।  ইউরোপীয়দের শরীরে যে সব ব্যাধি ছিল, ওসব রোগ-বালাইয়ের অস্তিত্ব ছিল না আমেরিকা নামের ভূখণ্ডে। ইউরোপীয়রাই রোগগুলোকে সেখানে বয়ে নেওয়ার 'মহান' কাজটি নিজেদের অগোচরেই করেছে। তারই নির্মম বলি হয়েছে স্থানীয় ভূমিমানুষেরা।

এ সময়ে ভীতি ছড়ানো ডেঙ্গু জ্বরও ভাইরাস। ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটার কারণেই এই রোগ। আর বিজ্ঞানীদের কাছে ভাইরাস এখনো রহস্য হয়েই আছে। জীবিত এবং জড়বস্তুর মধ্যে সীমান্ত টানা হয়েছে যেখানে সেই সীমান্তের বাসিন্দাই ভাইরাস। কোনো জীবিত প্রাণীর দেহকোষে ঢোকার পরই ভাইরাস জীবিত সত্তার মতো আচরণ করে। কিন্তু জীবিত কোষ থেকে বাইরে বের হয়ে এলেই এর মধ্যে আর জীবনের কোনো ছোঁয়া পাওয়া যায় না। জড় বনে যায়। ভাইরাসের গঠনও খুবই সরল। ভাইরাস যেকোনো জীবিত প্রাণীর কোষে ঢুকতে পারলে, বেঁচে থাকার জন্য সেই কোষের ওপরই পুরোপুরি নির্ভর করে। প্রাণিকোষের যাবতীয় কলকবজাকে আগ্রাসী ভাইরাস নিজের বংশবিস্তার এবং টিকে থাকার কাজে লাগায়। তাই নিজে আর কষ্ট করে ওসব কলকবজা বয়ে বেড়ায় না। তবে সব ভাইরাসই একই পদের বা ধরনের নয়। সাধারণ কিছু গুণ সব ভাইরাসেই থাকে। সেসব গুণ দেখে চেনা যায় ভাইরাস বংশের সন্তানকে। একই বংশের সব সন্তান একই রকম হয় না। এভাবেই ভাইরাসের মধ্যেও নানা পার্থক্য থাকে। মানুষ বা প্রাণী কেবল নয়, ভাইরাস হামলা করতে পারে ব্যাকটেরিয়াকেও। এ জাতীয় ভাইরাসকে ব্যাকটেরিয়াফেগাজ বলা হয়। গ্রিক ফেগিন শব্দ থেকে ফেগাজ শব্দ তৈরি করা হয়েছে। গ্রিক এই শব্দটি মানে হলো খাওয়া বা গিলে ফেলা। ফেগাসসহ অন্যান্য ভাইরাসে অন্যতম উৎস হলো সাগরের পানি। সামুদ্রিক ব্যাকটেরিয়ার সর্বোচ্চ ৭০ শতাংশ ব্যাকটেরিয়াফেগাসের দ্বারা সংক্রামিত হতে পারে।  

ডেঙ্গু জ্বরের কথায় আসি এবারে। কুষ্ঠ, পোলিও বা প্লেগের মতো রোগগুলো 'কুলীন'। সুপ্রাচীনকাল থেকেই এসব রোগ মানুষকে ঘায়েল করছে। তুলনামূলকভাবে ডেঙ্গু জ্বরের সে রকম 'কুলীনত্ব' নেই। ২৬৫ খ্রিষ্টাব্দের শুরুর দিকে চৈনিক চিকিৎসাশাস্ত্র-বিষয়ক লেখালেখিতে ডেঙ্গুজাতীয় জ্বরের উল্লেখ আছে বলা হয়। ডেডলি ডিজিজ অ্যান্ড এপিডেমিকস পুস্তকে তীর্থ চক্রবর্তী বলেছেন, এসব প্রতিবেদনের সত্যতা যাচাইয়ের প্রয়োজন রয়েছে। তিনি আরও লিখেছেন, ১৬৩৫ খ্রিষ্টাব্দে ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের মার্টিনিক এবং গুয়াদেলুপে  সন্দেহজনক ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দিয়েছিল। ডেঙ্গু জ্বরের প্রথম নিশ্চিত ঘটনা অষ্টাদশ শতাব্দীর আগে ঘটেনি।

ইন্দোনেশিয়ার বাটাভিয়া এবং মিসরের রাজধানী কায়রোতে যথার্থ ডেঙ্গু জ্বরের রোগীর পাওয়া যায় ১৭৭৯ খ্রিষ্টাব্দে। সে সময় ব্যবসা-বাণিজ্যের রাস্তা দ্রুত খুলছিল। মনে করা হয়, এভাবেই আমেরিকার ফিলাডেলফিয়াতে ১৭৮০ খ্রিষ্টাব্দে ডেঙ্গু দেখা দেয়। রোগীদের একজনের মুখে জ্বরের উপসর্গের বর্ণনা শুনে তৎকালীন খ্যাতনামা চিকিৎসক ডা. বেঞ্জামিন রাশ এ রোগকে 'হাড়ভাঙ্গা জ্বর' বা 'ব্রেকবোন ফিভার' নাম দেন। আমাদের দেশের রূপকথায় 'হাড় মরমরানি' বা 'হাড় মর্মর' রোগের নাম শোনা যায়। এ রোগের ভান করে রাজাকে বাধ্য করতেন সুয়োরানি অনেক অপকর্ম করতে! আচ্ছা, প্রকারান্তরে এখানে কি এই ডেঙ্গুর কথা বলা হয়েছিল! একইভাবে কাজলরেখা উপাখ্যান শুনে মনে হয়, প্রাচীনকালে এ দেশে সুই চিকিৎসা, আকুপাংচারের চল ছিল!

এদিকে প্রথম ডেঙ্গু বিশ্বমারি দেখা দেয় ১৮১৮ খ্রিষ্টাব্দে। তাতে ৫০ হাজার রোগ আক্রান্ত হওয়ার কথা তালিকাভুক্ত করা হয়। ১৮২৭ খ্রিষ্টাব্দে ক্যারিবীয় উপসাগরীয় আটলান্টিক অঞ্চলের ভার্জিন দ্বীপপুঞ্জে ডেঙ্গু দেখা দেয়; যা ছড়িয়ে পড়ে কিউবা, জ্যামাইকা, ভেনিজুয়েলা এবং মার্কিন বন্দরনগরী পেসাকোলা, ফ্লোরিডা, চালর্সটন, সাউথ ক্যারোলিনা, সাভানা, জর্জিয়া এবং নিউ অরলেন্স ও লুজিয়ানাতে। এ রোগ সে সময় বিশ্বের জন্য উদ্বেগ হয়ে দেখা দেয়। মেক্সিকোর ভারকুজেও এ রোগ হানা দিয়েছিল।

ডেঙ্গু চিকিৎসায় উল্লেখযোগ্য সাফল্য ঘটে ১৯৪৪ খ্রিষ্টাব্দে। সে সময় ডা. আলবার্ট সাবিন প্রথম ডেঙ্গু ভাইরাসকে পৃথক এবং চিহ্নিত করতে পারেন। এরপরই চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা বের করেন যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কযুক্ত কিন্তু প্রকৃতিগত দিক থেকে পৃথক চার ধরনের ডেঙ্গু ভাইরাস রয়েছে। তারা এগুলোকে ডেন-১, ডেন-২, ডেন-৩ এবং ডেন-৪ নাম দেন।

ডেঙ্গু নিয়ে কথা হয় বাংলাদেশের অন্যতম বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সিলেট উইমেনস মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. ইসমাইল পাটোয়ারীর সঙ্গে। এর আগে তিনি সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক ও মেডিসিন বিভাগের প্রধানের দায়িত্বে ছিলেন। সরকারি চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার পর তিনি সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজের প্রিন্সিপাল এবং মেডিসিন বিভাগের প্রধান হিসেবেও দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেন। বাংলাদেশ সোসাইটি অব ইনফেকসাস অ্যান্ড ট্রপিক্যাল ডিজিজের সভাপতি ডা. পাটোয়ারী জানান, মশাবাহিত এ রোগ অনেক আগে থেকেই বর্তমান বাংলাদেশ নামের ভূখণ্ডে ছিল। ১৯৬৪ খ্রিষ্টাব্দে মহামারি হয়ে দেখা দিয়েছিল ঢাকা জ্বর বা ঢাকা ফিভার নামের অজ্ঞাত এক অসুখ। পরবর্তী সময়ে সিরোটাইপিং হিসেবে পরিচিত পরীক্ষা করে নিশ্চিত হওয়া যায় যে ঢাকা জ্বর আসলে ছিল ডেঙ্গুই।   

বর্তমানে চার ধরনের ডেঙ্গুরই প্রকোপ বাংলাদেশে রয়েছে। তিনি জানান, বাংলাদেশে মহামারি আকারে ডেঙ্গুর বিস্তার ঘটে ২০০০ খ্রিষ্টাব্দের পরই। তিনি বলেন, আগে ডেন-৩ বেশি পাওয়া যেত। ২০১৩ এবং ২০১৪ সালে এসে ডেন-১ এবং ডেন-২ পাওয়া যেতে লাগল। কিন্তু ২০১৭-এর পরে আবার ফিরে আসে ডেন-৩। এখন বাংলাদেশে ডেন-৩ এবং ডেন-৪ ধরনের ডেঙ্গুই বেশি হচ্ছে উল্লেখ করে ডা. পাটোয়ারী বলেন, ডেন-১ এবং ডেন-২ বেশি পাওয়া যাচ্ছে না। ২০২০-এ ডেঙ্গুতে সর্বাধিক আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা ঘটে। সে সময় ১৬৪ জন ডেঙ্গুতে প্রাণ হারান আর আক্রান্তের সংখ্যা ১০ লাখের বেশি বলে জানান। অন্যদিকে গত বছর মৃত্যুর সংখ্যা আরও বেশি ছিল। গত বছর ডেঙ্গুতে ২৬৬ জনের মৃত্যুর কথা উল্লেখ করে তিনি একে হিমবাহের চূড়া হতে পারে বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, মৃত্যুর হার আরও বেশিও হতে পারে। বর্তমানে দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে বলেও উল্লেখ করেন। বর্ষা মৌসুম এবং বর্ষা-উত্তর ও পরবর্তী মৌসুমেই ডেঙ্গুর প্রকোপ সবচেয়ে বেশি ঘটে।

সাধারণভাবে একধরনের ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলে পরবর্তী সময়ে সেই নির্দিষ্ট ধরনের বিরুদ্ধে দেহ স্বাভাবিকভাবে প্রতিরক্ষা গড়ে তোলে। কিন্তু অন্য ধরনের ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলে তখন ডেঙ্গুর ভয়াবহতা বাড়ে। তখনই রোগীর মধ্যে ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার বা ডেঙ্গুজনিত রক্তক্ষয় সংক্ষেপে ডিএইচএফের মতো ঘটনা ঘটে। প্ল্যাটিলেট বা অণুচক্রিকা প্রতি ডেসিলিটার রক্তে দেড় থেকে প্রায় পাঁচ লাখ থাকে। কিন্তু এ সংখ্যা ২০ হাজারের নিচে নেমে এলেই রক্তপাত শুরু হয়। দুর্ভাগ্যক্রমে ডিএইচএসের রোগীদের কারও কারও মধ্যে ডেঙ্গু শক সিনড্রোম বা ডিএসএসও দেখা দিতে পারে। এ জন্য ডেঙ্গুর রোগীকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা একান্তভাবেই দরকার।

এ রোগের উপসর্গ হিসেবে আগেই হাড়ে হাড়ে দুঃসহ ব্যথার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এর পাশাপাশি চোখের পেছনে অসহ্য ব্যথা, পেশিতে পেশিতে ব্যথা, বমি বমি ভাব এবং ক্লান্তিতে শরীর ভেঙে পড়া বা ম্যালাইসের মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে। এমনকি রোগমুক্তির পরও ক্লান্তির হাত থেকে রোগী রেহাই পান না। সেরে ওঠারও পরও অনেক দিন ধরে উপসর্গটি চলতে পারে।

ডেঙ্গুর বেলায় একনাগাড়ে পাঁচ দিন জ্বর চলার পর যখন তা কমতে শুরু করে, তখনই শরীরের চাকা চাকা ভাব র‍্যাশ দেখা দিতে পারে। শরীরের তরল পদার্থ নির্গমন শুরু হলেই রোগীর নাড়ির গতি বাড়তে থাকে। রক্তচাপ কমাসহ অন্যান্য উপসর্গ দেখা দেয়। এ জটিল সময়ে দেহে তরল পদার্থের মাত্রা ঠিকমতো বজায় রাখা গেলেই রোগী ফিরে আসেন। রোগীর চিকিৎসায় এ সময়ে স্যালাইন দেওয়া হতে পারে। এ ছাড়া ব্যথা কমানোর জন্য প্যারাসিটামল ছাড়া অন্য ওষুধ দেওয়া ঠিক নয়। প্রথম তিন থেকে পাঁচ দিনের মধ্যে বিশেষ পরীক্ষা করে ডেঙ্গু সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়। ছয়-সাত দিনের মাথায় অন্য আরেক পরীক্ষাও করা যায়। তবে এসব পরীক্ষার কোনোটাই খরুচে বা দামি নয়। ভাইরাস পৃথক করে ডেঙ্গু সম্পর্কে পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া যায়। কিন্তু এ সুযোগ বাংলাদেশের সব জায়গায় নেই।  

ডেঙ্গু জ্বরের বাহক হলো এডিস মশা- এ কথা এখন সবাই জানেন। তুলনামূলকভাবে অন্যান্য মশার থেকে এ মশা আকারে ছোট। গায়ে ফুটকি আছে। সাধারণত মশা দুই থেকে তিন দিন বাঁচে বলে অনেকেই মনে করেন। কিন্তু নিরাপদ অবস্থা পেলে একটা মশা কয়েক মাসের আয়ু পেতে পারে। মাদি প্রজাতির এডিসই ডেঙ্গু ছড়ায়। পুরুষ এডিস ফল-ফুলের রস খেয়ে জীবন কাটায়। মানুষ বা প্রাণীর রক্তের প্রতি তার কোনো টান নেই। এডিস ইজেপ্টি ঢাকাসহ শহরাঞ্চলে দাপটের সঙ্গে রোগ ছড়ায়। অন্য মশার মতো তীব্র ভনভনটি করে না এ প্রজাতির মশা। এর আওয়াজ অনেক কম। আর গ্রামাঞ্চলে এ রোগের বাহন হলো এডিস আলবোপিকটাস। এডিসের অন্যান্য প্রজাতিও কমবেশি কার্যকরভাবে ডেঙ্গু ছড়াতে পারে। ডেঙ্গুর লার্ভা বা শূককীট শুকনো অবস্থায় এক বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে।

ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর রক্ত খেয়ে এডিস মশা এ রোগের বাহক হয়। রোগীকে কামড়ানোর পরপর বা আট থেকে ১২ দিনের মধ্যে কামড়ালেও সুস্থ মানুষের শরীরে ডেঙ্গুর ভাইরাস ঢুকে যেতে পারে। ভাইরাস শরীরে ঢোকার ২৪ থেকে ৩৬ ঘণ্টার মধ্যেই মানুষের মধ্যে ডেঙ্গুর উপসর্গ দেখা দিতে পারে। মানুষ ছাড়াও নিম্নবর্গের প্রাইমেটরা এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে।

ডেঙ্গুর চিকিৎসা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন ডা. ইসমাইল পাটোয়ারী। সে আলোচনা বিশদভাবে দেওয়ার দরকার নেই। জ্বর হলেই সর্তক হতে হবে। চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ বজায় রাখতে হবে। এ নিয়ম মানতে হবে। এ ছাড়া প্যারাসিটামল বা এসিওমেনোফেন ছাড়া এবং তাপনাশক অন্য কোনো ওষুধ রোগীকে দেওয়া যাবে না। না হলে হিতে বিপরীত হতে পারে। হতে পারে রক্তক্ষরণের মতো মারাত্মক পরিণতি। চিকিৎসকের অনুমতি ছাড়া ওষুধ খাওয়া মোটেও নিরাপদ নয়। এটাও রোগীকে বা তার স্বজনদের মানতে হবে।

ডেঙ্গুর বাহক মশা। এ বাহককে রোখা গেলে ডেঙ্গু ছড়াবে না। ডেঙ্গুর বাহককে রোখার জন্য মশা নিয়ন্ত্রণ তৎপরতাকে কার্যকর করতে হবে। কেবল মশার ওষুধ ছিটালেই চলবে না। বরং ডেঙ্গু মশার আঁতুরঘর, খোলা জায়গায় জমে থাকা টলটলে পানি যেন না থাকে, তার ব্যবস্থা নিতে হবে। বিশেষ করে ঢাকাসহ বড় বড় শহরগুলোতে নির্মাণকাজের সময় সতর্ক হতে হবে। এ ক্ষেত্রে আইনের হাতকে আরও শক্তিশালী করতে হবে।  কাউকে খাতির করা যাবে না। 'মুখ দেখে মুগের ডাল' দেওয়ার ঝোঁক থেকে বের হয়ে আসতে হবে। পাশাপাশি  সতর্ক হতে হবে ছাদবাগানকারীদেরও।

ডেঙ্গুবাহী মশারা সাধারণত সকালে এবং সন্ধ্যায় আহারের খোঁজে বের হয়। সে সময় শরীর ঢাকা কাপড়চোপড় পরলে মশার জন্য কামড় বসানো সহজ হয় না। অন্যদিকে রাতে মশারি বাঁধাও জরুরি। এসব কথা জানেন না, এমন লোক হয়তো একজনও নেই। কিন্তু জানা আর মানা এক নয়। এক নয় আইন থাকা ও প্রয়োগ করা।   

ডেঙ্গু এবং চিকুনগুনিয়া হলো বর্তমানে বাংলাদেশের প্রধান হেমোরেজিক ফিভার। সাধারণত ভাইরাসজনিত কারণেই হেমোরেজিক ফিভার সৃষ্টি হয়। ব্যাকটেরিয়া থেকে এমন রোগ হয়ই না বলা যায়। জাপানিজ এনকোফ্লাইটিস এবং ম্যালেরিয়া থেকে কখনো কখনো ঘটতে পারে হেমোরেজ বা রক্তক্ষরণের মতো ঘটনা। অন্যদিকে ইয়েলো ফিভার, লাসা ফিভার, ইবোলা ভাইরাস আমাদের দেশে দেখা যায় না। কিংবা জুনিন এবং ম্যাকোপো ভাইরাস থেকে ঘটতে পারে আর্জেন্টাইন এবং বলিভিয়ান হোমোরেজিক ফিভার। এসব ভাইরাস এখনো আমাদের দেশে নেই। এ প্রসঙ্গে ডা. পাটোয়ারী বলেন, এখন দুনিয়া বিশ্বগ্রাম বা গ্লোবাল ভিলেজে রূপ নিয়েছে। আমাদের দেশের মানুষ পৃথিবীর নানা প্রান্তে কাজ করছেন। কঙ্গোসহ অনেক দেশেই রয়েছে আমাদের সেনাবাহিনী। জাতিসংঘের শান্তি বাহিনীর দায়িত্ব পালন করছে। কাজেই এসব রোগবহুল অঞ্চল থেকে নতুন ভাইরাস আসার আশঙ্কা হয়তো থাকতে পারে। সেদিকে আমাদের নজর রাখতে হবে।

প্রত্ননিদর্শন বা লিপি থেকে প্রমাণ মেলে, সুপেয় পানি এবং বর্জ্য নিষ্কাশনকে গুরুত্ব দিয়েছে অতীতের সব জনগোষ্ঠী। ইতালির ইস্ত্রুসকান থেকে পেরুর ইনকা পর্যন্ত সব গোষ্ঠীই পরিষ্কার-পরিছন্নতাকে গুরুত্ব দিয়েছে। এর পেছনে হয়তো ধর্মবোধও কাজ করেছে। প্রাচীন জনগোষ্ঠী মনে করত, পরিষ্কার-পরিছন্ন থাকলে দেবতারা তুষ্ট হন। দেবতারা তুষ্ট থাকলে রোগ-ব্যাধি পাঠানো থেকে বিরত থাকবেন তারা। ইসলামেও পবিত্রতাকে ইমানের অংশ বলে ঘোষণা করা হয়েছে।

উন্নয়নের পথ বেয়ে মানবজাতি হাজার হাজার বছর পাড়ি দেওয়ার পরও আজ ঢাকাবাসী এই ক্ষেত্রেই ভোগান্তিতে পড়েছেন। নগর কর্তৃপক্ষ যে পানি বিতরণ করে, তা সুপেয় নয়। আর বর্জ্য অপসারণ নিয়ে অভিযোগ শুনতেই হচ্ছে।

হাবিবুল্লাহ বাহার ঢাকাকে মশামুক্ত করেছিলেন। এখন কী সে রকম কোনো জাদুকর বংশীবাদক এগিয়ে আসতে পারেন না, যার প্রতিজ্ঞা হবে ঢাকার আকাশকে মশকমুক্ত রাখা! রাজধানীকেন্দ্রিক দেশটিতে ঢাকা মশকমুক্ত হলেই দেশও হবে মশকমুক্ত। নিয়ন্ত্রণে থাকবে ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়াসহ অনেক অনেক রোগ। বেঁচে যাবে অনেক মানুষ। মান বাড়বে জীবনযাপনের। অন্যদিকে মশার কয়েল, স্প্রেসহ নানা বাড়তি খরচের হাতে থেকে রেহাই পাবে নাগরিকেরা।

 

Related Topics

টপ নিউজ

ডেঙ্গু / এডিস মশা / ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ / ডেঙ্গুর চিকিৎসা

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • মধ্যরাতে অধ্যাদেশ জারি করে বিলুপ্ত এনবিআর, ক্ষুব্ধ কাস্টমস ও ট্যাক্স কর্মকর্তারা
  • ব্যবসার ওপর আরও চাপ আসছে, সরকারের ন্যূনতম কর প্রায় দ্বিগুণ করার পরিকল্পনা
  • লোকসান কাটিয়ে উঠতে ৯০০ কোটি টাকার সরকারি সহায়তা চাইছে ইন্টারকন্টিনেন্টাল
  • লোডশেডিং কমাতে আরও তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র সচল করবে সরকার: জ্বালানি উপদেষ্টা
  • সন্ত্রাসবিরোধী আইনে নিষিদ্ধ আ.লীগের বিরুদ্ধে সরকার যেসব ব্যবস্থা নিতে পারবে
  • হুন্ডির প্রভাব কমে যাওয়ায় ১০ মাসেই ২৫ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্সের রেকর্ড

Related News

  • ডেঙ্গু থেকে বাঁচতে সন্ধ্যায় বাসার দরজা-জানালা বন্ধ রাখার পরামর্শ ঢাকা দক্ষিণের প্রশাসকের
  • ডেঙ্গু প্রতিরোধে ব্যাকটেরিয়ার ব্যবহার মূল্যায়নে উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার
  • ডেঙ্গু: প্রাণে বাঁচলেও নীরবে শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন নারীরা
  • এ বছর ডেঙ্গুতে মারা গেছে ৬৪ শিশু; দেরিতে শনাক্ত ও হাসপাতালে ভর্তি মূল কারণ
  • চলতি বছর ডেঙ্গুতে মৃত্যু ৫০০ ছাড়াল

Most Read

1
বাংলাদেশ

মধ্যরাতে অধ্যাদেশ জারি করে বিলুপ্ত এনবিআর, ক্ষুব্ধ কাস্টমস ও ট্যাক্স কর্মকর্তারা

2
অর্থনীতি

ব্যবসার ওপর আরও চাপ আসছে, সরকারের ন্যূনতম কর প্রায় দ্বিগুণ করার পরিকল্পনা

3
বাংলাদেশ

লোকসান কাটিয়ে উঠতে ৯০০ কোটি টাকার সরকারি সহায়তা চাইছে ইন্টারকন্টিনেন্টাল

4
বাংলাদেশ

লোডশেডিং কমাতে আরও তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র সচল করবে সরকার: জ্বালানি উপদেষ্টা

5
বাংলাদেশ

সন্ত্রাসবিরোধী আইনে নিষিদ্ধ আ.লীগের বিরুদ্ধে সরকার যেসব ব্যবস্থা নিতে পারবে

6
অর্থনীতি

হুন্ডির প্রভাব কমে যাওয়ায় ১০ মাসেই ২৫ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্সের রেকর্ড

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net