Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Sunday
June 01, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
SUNDAY, JUNE 01, 2025
তারা যেভাবে ‘জলবায়ু আন্দোলন’ ছড়িয়ে দিচ্ছে বাংলাদেশে

ফিচার

শাবনুর আক্তার নীলা
06 May, 2023, 01:15 pm
Last modified: 06 May, 2023, 01:14 pm

Related News

  • বিছারা ‘দখল করে নিচ্ছে’ ব্রাজিলের শহরগুলো, হুল ফোটানো বেড়েছে ২৫০% পর্যন্ত
  • প্রজাপতিবিহীন পৃথিবী: যেভাবে হারিয়ে যাচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ এই প্রজাতি
  • ২০২৪ সালে কার্বন ডাই অক্সাইড নিঃসরণ রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছাবে
  • ১৯৮০-এর দশকের পর থেকে বিশ্বজুড়ে তীব্র খরাপ্রবণ এলাকা বেড়েছে ৩ গুণ: গবেষণা
  • পৃথিবীর উষ্ণতা বাড়ায় নাটকীয় হারে ‘সবুজ’ হচ্ছে অ্যান্টার্কটিকা 

তারা যেভাবে ‘জলবায়ু আন্দোলন’ ছড়িয়ে দিচ্ছে বাংলাদেশে

প্রান্তিক মানুষদের সহজভাবে জলবায়ু পরিবর্তন ও করণীয় কাজ সম্পর্কে ধারণা দিতে গ্রাম ও হাওরের বিভিন্ন অঞ্চলে ছুটে চলেছে একদল স্বেচ্ছাসেবী তরুণ। দেশের বিভিন্ন জেলায় থাকা স্বেচ্ছাসেবকরা কোনরকম আর্থিক সুবিধা ও বেতনভাতা ছাড়াই শুরু থেকে সংস্থাটির হয়ে কাজ করে চলেছেন। তরুণদের নিয়ে গঠিত ‘থ্রি ফিফটি ডট অর্গ বাংলাদেশ’ সংস্থাটির কাজ হচ্ছে, গ্রামের সাধারণ ও নিরক্ষর মানুষকে জলবায়ুর প্রভাব সম্পর্কে সচেতন করে তোলা; সচেতনতার পাশাপাশি বিশ্বব্যাপী জলবায়ু আন্দোলন গড়ে তুলতে সম্মিলিত উদ্যোগ গ্রহণ করা।
শাবনুর আক্তার নীলা
06 May, 2023, 01:15 pm
Last modified: 06 May, 2023, 01:14 pm
ছবি- ‘থ্রি ফিফটি ডট অর্গ বাংলাদেশ’ এর ফেসবুক পেজ থেকে

রহমান আলী কিছুদিন ধরে ঢাকার কার্জন হল সংলগ্ন কুটির শিল্প মার্কেটে কাজ করছেন। গত বছর বন্যার পানিতে তার ঘর ভেসে যাওয়ার পর নিরুপায় হয়ে জীবিকার তাগিতে বাধ্য হয়ে ঢাকায় চলে আসেন। সহায় সম্বল হারানোর পর থেকে তার এই অবস্থার জন্য নিজের ভাগ্য আর খোদাকে দায়ী করে প্রায় সময়i বিলাপ করেন। হাঁটতে হাঁটতে কুটির শিল্পের মার্কেটে সামনে যেতেই রহমান আলীর সাথে দেখা। তিনি অবশ্য একা ছিলেন না, তার দোকানে কয়েকজন ক্রেতাও ছিলো। তাদেরকে মালপত্র দেখাতে দেখাতে রহমান নিজের দুর্ভাগ্যের কথা ছলছল চোখে বলে যাচ্ছিলেন।

ক্রেতাদের একজন বলে উঠলেন, "মানুষের জন্যেই আজ প্রকৃতি আর পৃথিবীটা ধ্বংস হয়ে গেল।" রহমান আলীর দিকে তাকিয়ে বুঝতে পারলাম তিনি কথাটি আমলে নিলেন না। আগের মতোই বারবার ভাগ্যকে দুষে চলেছেন। কারণটা স্পষ্ট। প্রাকৃতিক দুর্যোগের পেছনে মানবসৃষ্ট কারণও যে সমানভাবে দায়ী-এমন চিন্তা তার মতো সরল মানুষের মাথায় আসে না। তার ওই একই কথা, "খোদা আমার কপালে এইগুলাই লেইখা রাখছিলো। নাইলে কি আর ২০ বছরের ভিটা বাড়ি ছাইড়া এইহানে আইতে হয়?"   

ছবি- ‘থ্রি ফিফটি ডট অর্গ বাংলাদেশ’ এর ফেসবুক পেজ থেকে

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বেড়ে চলেছে, এমন কঠিন কথার অর্থ রহমানের মতো প্রান্তিক লোকেরা বোঝেন না। দুর্যোগের সময় তার মতো অনেকেই জীবন বাঁচাতে নিকটস্থ আশ্রয়কেন্দ্রে ছুটে যান ঠিকই, কিন্তু দুর্যোগ মোকাবেলা ও ক্ষয়ক্ষতি কমাতে কী করতে হবে তা সম্পর্কে অনেকের জানা নেই।

প্রান্তিক এই মানুষদের সহজভাবে তাদের মতো করে জলবায়ু পরিবর্তন ও করণীয় কাজ সম্পর্কে ধারণা দিতেই গ্রাম ও হাওরের বিভিন্ন অঞ্চলে ছুটে চলেছে একদল স্বেচ্ছাসেবী তরুণ। তরুণ এই দলের কথাও জানতে পারি রহমান আলীর কাছ থেকে। তিনি এই তরুণদের কাজ সম্পর্কে স্পষ্ট করে বলতে না পারলেও, বন্যার সময় তারা কীভাবে পাশে দাঁড়িয়েছিল সেটি জানান। এই ঘটনার বেশ কিছুদিন পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে 'থ্রি ফিফটি ডট অর্গ বাংলাদেশ' (350.org Bangladesh) ফেসবুক পেজটি সামনে আসায় হঠাৎ ব্যাপারটি মনে পড়ে গেল।  

ছবি- ‘থ্রি ফিফটি ডট অর্গ বাংলাদেশ’ এর ফেসবুক পেজ থেকে

আগ্রহ নিয়ে পেজটি ঘাঁটাঘাঁটি করার সময় লক্ষ্য করলাম, সংস্থাটি বিভিন্ন প্রজেক্ট ও কাজের ছবিসহ সংক্ষিপ্ত বিবরণ লিখে সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে আপলোড করেছে। সংস্থাটি কী ধরনের কাজ করে তা এই সংক্ষিপ্ত বিবরণী দেখে খুব একটা বোঝার উপায় নেই। মানুষ যে এটি সম্পর্কে তেমন অবগত নয়, তা পেজটিতে লাইক ও ফলোয়ার সংখ্যা দেখে বুঝতে পারলাম। প্রচার প্রচারণা যেমনই থাকুক না কেন-জলবায়ু সচেতনতা বৃদ্ধি ও ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে নিয়মিত কাজ করে চলেছে সংস্থাটি।

দেশের বিভিন্ন জেলায় থাকা স্বেচ্ছাসেবকরা কোনরকম আর্থিক সুবিধা ও বেতনভাতা ছাড়াই শুরু থেকে সংস্থাটির হয়ে কাজ করে চলেছেন। মানবতার ফেরিওয়ালা হয়ে ছুটে চলেছেন মানুষের সাহায্যে। তরুণদের নিয়ে গঠিত 'থ্রি ফিফটি ডট অর্গ বাংলাদেশ' সংস্থাটির কাজ হচ্ছে, গ্রামের সাধারণ ও নিরক্ষর মানুষকে জলবায়ুর প্রভাব সম্পর্কে সচেতন করে তোলা। সচেতনতার পাশাপাশি বিশ্বব্যাপী জলবায়ু আন্দোলন গড়ে তুলতে সম্মিলিত উদ্যোগ গ্রহণ করা।

'জলবায়ু আন্দোলন' বিষয়টি আমাদের দেশের জন্য নতুন ঘটনা হলেও সমস্যাটি বহুদিনের পুরোনো। জলবায়ু আন্দোলনের প্রধান শর্ত হচ্ছে, জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমিয়ে পরিবেশ দূষণ মুক্ত করা ও সবুজায়ন করা। লক্ষ্য বাস্তবায়ন ও পুরো বিশ্বে এই ধারণা ছড়িয়ে দিতে ২০০৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রে 'থি ফিফটি ডট অর্গ' সংস্থাটি গড়ে উঠেছিল। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৯ সালে 'থ্রি ফিফটি ডট অর্গ বাংলাদেশ'-এর কার্যক্রম শুরু হয়।

বৈষম্য নয়, চাই পরিবেশগত নিরাপত্তার সাম্য

কাজী নজরুলের 'সাম্যবাদী' কবিতার মতো পরিবেশ রক্ষাকারী সংস্থা 'থ্রি ফিফটি ডট অর্গ' বিশ্বের সকল রাষ্ট্রের জন্যে বৈষম্যহীন পরিবেশ নিশ্চিত করতে চায়। সমাজে ঘটতে থাকা অন্যায়ের প্রতিবাদ জানাতে যেমন করে আন্দোলন করা হয়-তেমনি পরিবেশ ধ্বংস রুখতে ও এর প্রতিবাদ স্বরুপ জলবায়ু আন্দোলন করে চলেছে আন্তর্জাতিক সংস্থাটি। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি পরিবেশগত ন্যায্য অধিকার আদায়ে প্রতিষ্ঠাকাল থেকে ১৫ বছরের মধ্যে ১২০টি দেশে ইতিমধ্যে কার্যক্রম শুরু করেছে। ভৌগলিক অবস্থান অনুযায়ী সমস্যা সমাধানে প্রতিটি দেশ থেকে স্থানীয় প্রতিনিধি নির্বাচন করা হয়। নির্বাচিত প্রতিনিধি ও স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে স্থানীয় বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে সচেতনতামূলক প্রচারণা চালানো হয়। স্বল্প উন্নত ও দুর্যোগ আক্রান্ত দেশগুলোকে এই কাজের আওতায় বিশেষভাবে প্রাধান্য দেওয়া হয়।

ছবি- ‘থ্রি ফিফটি ডট অর্গ বাংলাদেশ’ এর ফেসবুক পেজ থেকে

পরিবেশ দূষণ পুরো বিশ্বজুড়েই একটি বড় সমস্যা, যে ভোগান্তির শিকার হতে হয় বাংলাদেশের মতো স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে। অন্যান্য প্রজেক্টের মতো 'থ্রি ফিফটি ডট অর্গ বাংলাদেশ' 'জলবায়ু আন্দোলন' নামে একটি নীরব প্রতিবাদের আয়োজন করে। অন্যসব আন্দোলনের মতো দলে দলে লোকের পদচারণা, স্লোগান ও মিছিল করতে দেখা যায় না জলবায়ু আন্দোলনকারীদের। নীরবে রাস্তায় পাশে প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে, কখনো আবার বিভিন্ন অঞ্চলের জনগোষ্ঠীর সমস্যার কারণ ও উপযুক্ত সমাধান দিতে দেশের উত্তরাঞ্চল থেকে দক্ষিণাঞ্চলে স্বেচ্ছাসেবকদের ছুটে যাওয়ার মধ্যদিয়ে এগিয়ে চলেছে ভিন্নধর্মী এই আন্দোলন।

ইতোমধ্যে ঢাকা, সুনামগঞ্জ, বরিশাল ও মল্লিকপুরে 'ফ্রাইডেস ফর ফিউচার বাংলাদেশ', যুব কর্মী ও স্বেচ্ছাসেবক দল মিলে জলবায়ু ধর্মঘটের আয়োজন করেছে। যেখানে প্ল্যাকার্ডগুলোয় নানারকম সচেতনমূলক বার্তা লিখে তা ধরে দাঁড়িয়ে ছিল তরুণরা। বিভিন্ন জেলার প্রায় ২০০ জন স্বেচ্ছাসেবক তরুণ এই সংস্থার সাথে মিলিত হয়ে কাজ করে চলেছে। অঞ্চলভেদে প্রাকৃতিক সমস্যাগুলোর ধরন ভিন্নভিন্ন হয়। তাই এলাকাভিত্তিক সমস্যার সমাধান করার জন্যে স্থানীয় লোকদের পরামর্শ নেওয়া হয় এবং তাদের যথাযথ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে থাকে সংস্থাটি।

'থ্রি ফিফটি ডট অর্গ বাংলাদেশ'এর ২জন সহায়ক সমন্বয়ক হচ্ছেন আমানউল্লাহ পরাগ ও ফারজানা ফারুক ঝুমু। আমানুল্লাহ পরাগ বেশ কিছুদিন ধরেই এই সংস্থার সাথে জড়িত আছেন। সমন্বয়ক হিসেবে তার অন্যতম দায়িত্ব হচ্ছে, অন্যান্য দেশের প্রতিধিদের সাথে যোগাযোগ করে বাংলাদেশের পরিবেশগত সমস্যা তুলে ধরা এবং প্রয়োজনীয় ফান্ড জোগাড় করা। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মহল থেকে সংস্থাটি ফান্ড সংগ্রহ করে। বিভিন্ন দাতব্য সংস্থা ও ব্যক্তিদের পাঠানো অর্থে সংস্থাটির কার্যক্রম চলে। পরিবেশ দূষণের সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত আছে বা পরিবেশ ধ্বংসের জন্য দায়ী-এমন প্রতিষ্ঠান থেকে অর্থগ্রহণ করা হয় না বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির বাংলাদেশের সমন্বয়ক।

ছবি- ‘থ্রি ফিফটি ডট অর্গ বাংলাদেশ’ এর ফেসবুক পেজ থেকে

আমানউল্লাহ পরাগ তার সংস্থার উদ্দেশ্য ও কাজ সম্পর্কে টিবিএস কে বলেন, "বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিতে থাকা একটি দেশ। প্রতিবছর একাধিক প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে পরিবেশ ও মানুষের জানমালের প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। কিন্তু দুর্যোগ ও মানুষের দুর্ভোগ ঠেকাতে কী পদক্ষেপ নিতে দেখি আমরা? দুর্যোগের কিছুদিন মানবিক খাতিরে সরকার ও বিভিন্ন ব্যক্তিরা খাদ্য ও অন্যান্য সহায়তা পাঠায়। কিন্তু কোনরকম দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি নেওয়ার উদ্যোগ নেই বলে প্রতিবছর এই মানুষগুলো দুর্ভোগে পড়ছে।"

"'থ্রি ফিফটি ডট অর্গ বাংলাদেশ' সমস্যার সমাধানে দীর্ঘমেয়াদি উদ্যোগ গ্রহণ করে তা স্থানীয়দের মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করে। পরবর্তীতে তারা যেন নিজেরাই সমস্যা মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে পারে এটাই আমাদের লক্ষ্য। আমাদের আরেকটি প্রজেক্ট হচ্ছে 'নয়া সবুজ চুক্তি'," বলেন তিনি।

তিনি আরো বলেন, এই প্রজেক্টের আওতায় বিভিন্ন স্কুলে গিয়ে ছোট থেকে বড় সকল শিক্ষার্থীদের গাছ লাগানোর জন্য উৎসাহী করে তোলা হয়। কীভাবে প্লাস্টিকের ব্যবহার কমিয়ে বিকল্প পদ্ধতি কাজে লাগানো সম্ভব সে ব্যাপারে শিক্ষার্থীদের পরামর্শ দেওয়া হয়। বড় শিক্ষার্থীদের জলবায়ু সম্পর্কিত বিস্তরভাবে জ্ঞান দেওয়া হয়, যেন তারা সমস্যার মূল কারণ জানতে এবং অন্যদের সচেতন করে তুলতে পারে।

"আমাদের পরিকল্পনা হচ্ছে ২০ জেলা থেকে ৬০জন করে তরুণ স্বেচ্ছাসেবকদের ট্রেনিং দেওয়া। প্রশিক্ষণের পর এই তরুণরদের বিভিন্ন ক্ষতিগ্রস্ত ও ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার মানুষের পাশে দাঁড়াতে পাঠিয়ে দেওয়া হবে," বলছিলেন আমানউল্লাহ।

পিটিশন থেকে পরিবর্তন

'থ্রি ফিফটি ডট অর্গ বাংলাদেশ' বিভিন্ন জেলায় ঘুরে ঘুরে পরিবেশ দূষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ গড়ে তুলতে মানুষের স্বাক্ষর গ্রহণ করছে। তাদের উদ্দেশ্য ও কাজ সম্পর্কে অবহিত করার পর লোকেরা স্বেচ্ছায় স্বাক্ষর দিয়ে নিজেদের একাত্মতা জানিয়েছে। প্রায় ১১ হাজার মানুষ এই প্রতিবাদে সামিল হতে পিটিশনে স্বাক্ষর করেছেন। এই স্বাক্ষরগুলো ভবিষ্যতে ঘটতে যাওয়া ব্যাপক পরিবেশ দূষণের হাত থেকে রক্ষায় বড় এক পরিবর্তন এনে দিয়েছে।

ছবি- ‘থ্রি ফিফটি ডট অর্গ বাংলাদেশ’ এর ফেসবুক পেজ থেকে

যার বড় উদাহরণ ছিলো, জাপানের অর্থ সহয়তায় মহেশখালীর মাতারবাড়ীতে গড়ে ওঠা কয়লাভিত্তিক বিদ্যুকেন্দ্র স্থাপন। প্রথম বিদ্যুকেন্দ্রটি স্থাপনের পর একই জায়গায় দ্বিতীয় আরেকটি বিদ্যুকেন্দ্র স্থাপনের কথা ছিল। পরিবেশের ভয়াবহ এই ক্ষতি ঠেকাতে 'থ্রি ফিফটি ডট অর্গ বাংলাদেশ' এর স্বেচ্ছাসেবকরা বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে গিয়ে এতো লোকের স্বাক্ষর করা পিটিশন দেখিয়ে তা স্থগিত করতে সক্ষম হয়। এভাবেই নিরব প্রতিবাদের মাধ্যমে শক্তভাবে পরিবেশ দূষণ রুখতে কাজ করে চলেছে সংস্থাটি।

আমানউল্লাহ পরাগ আরও বলেন, "৩০ বছর ধরে হওয়া পরিবেশ দূষণের ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার কাজটা সহজ হবে না। আমরা দেখেছি প্রাকৃতিক দুর্যোগ কবলিত অঞ্চলে অন্যান্য জায়গার তুলনায় খাদ্য ঘাটতি, নিরাপদ স্বাস্থ্যসেবা ও বাল্যবিবাহের মতো সমস্যার মাত্রা বেশি। তাই আমাদের এই জলবায়ু আন্দোলন কেবল ভৌগলিক দিক থেকে প্রাকৃতিক বিচার নিশ্চিত করবে না, এটি মানুষের সামাজিক সমস্যার সমাধানেও প্রভাব ফেলবে।"

"উন্নত ও বড় দেশগুলো অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারে বিশ্বের বায়ুমণ্ডল উত্তপ্ত করে তুলছে। গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণের ফলে পৃথিবীর তাপমাত্রা বেড়ে দীর্ঘমেয়াদে জলবায়ুর ওপর আঘাত হানছে। যার ভোগান্তি পোহাচ্ছে বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার কম উন্নত দেশগুলো। চাইলেই হঠাৎ করে পরিবেশ দূষণের মাত্রা শূন্যে নেমে আসবে না বা এটা রাতারাতি সম্ভব নয়,"

"আমাদের এই আন্দোলনের আরেকটি কাজ হচ্ছে, বড় ও শক্তিশালী দেশগুলোকে পরিবেশ দূষণের দায়স্বরুপ ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য করা। ঐসব দেশ থেকে উন্নত প্রযুক্তি, অর্থ সহায়তা ও প্রশিক্ষণের সুযোগ করে দিতে হবে পিছিয়ে থাকা দেশগুলোকে। এর ফলে স্বল্পোন্নত দেশগুলোতে জলবায়ু অধিকার নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। এই কাজটি বাস্তবায়িত হলে পরিবেশ দূষণ প্রভাবের অভিশাপ থেকে কিছুটা হলেও রেহাই মিলবে," বলেন তিনি।  

অন্যান্য কার্যকলাপ

সাতক্ষীরা অঞ্চলে 'থ্রি ফিফটি ডট অর্গ বাংলাদেশ' সংস্থার সাথে জড়িত প্রায় ১০০জন স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক রয়েছেন। যারা এলাকাবাসীদের বাঁধ তৈরি করা ও বন্যার সময় কীভাবে পানি বিশুদ্ধ করতে হয় সেই প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। এলাকাবাসীদের একত্রিত করতে স্থানীয় সরকার এবং জান্নাতুল মাওয়া নামের একজন স্থানীয় সমাজসেবকের সহযোগিতায় আলোচনা সভা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কাজটি করা হয়।

ছবি- ‘থ্রি ফিফটি ডট অর্গ বাংলাদেশ’ এর ফেসবুক পেজ থেকে

আমরা জানি পাহাড়ি অঞ্চলে বাস করা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর লোকদের পানি আনতে পাহাড়ের ঢাল বেয়ে নিচে নেমে যেতে হয়। কীভাবে সহজ উপায়ে মাটি থেকে তারা পানি তুলে আনতে পারে-সে পদ্ধতি শেখাতে স্বেচ্ছাসেবক দল স্থানীয় পর্যায়ের এনজিওর সাথে মিলিত হয়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে। স্বেচ্ছাসেবকেরা তাদের এই স্বেচ্ছা শ্রমের বিনিময়ে কোন ধরনের বেতন ও অর্থ নেন না। অন্যদের পাশে দাঁড়াতে স্বপ্রণোদিত হয়ে কাজ করে চলেছেন বলে জানান সংস্থাটির কো-অর্ডিনেটর আমানউল্লাহ আমান।  

ইয়ুথ ক্লাইমেট ক্যাফে

তরুণ-তরুণীদেরকে ক্যাফেতে গিয়ে কফির কাপে চুমুক দিতে দিতে আড্ডা দেওয়ার দৃশ্য হরহামেশাই দেখা যায়। ক্লাইমেট ক্যাফেতেও চলে একঝাঁক তরুণের আড্ডা-আলোচনা। এখানে অন্য কোনো বিষয় নয়, 'থ্রি ফিফটি ডট অর্গ বাংলাদেশ'এর সাথে সম্পৃক্ত স্বেচ্ছাসেবক ও আলোচনায় অংশ নিতে আসা তরুণদের মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সম্পর্কিত আলোচনা চলে। বক্তারা অন্যদের মধ্যে জলবায়ু চিন্তার প্রসার ঘটাতে চেষ্টা করেন।

এছাড়াও বিভিন্ন জেলায় 'ক্লাইমেট আড্ডার' আয়োজন করা হয় সংস্থাটির পক্ষ থেকে। যেখানে সমাজের তরুণরা জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে বিভিন্ন আঙ্গিকে নিজেদের মতামত তুলে ধরেন। কয়েকটি জেলায় 'গ্রিন নিউ ডিল হাব' তৈরি করে অঞ্চলভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবক আহ্বান ও প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ চলমান রয়েছে। প্রশিক্ষণ গ্রহণের পর স্বেচ্ছাসেবীদের দল বিভিন্ন দুর্যোগে মানুষের পাশে দাঁড়াতে মাঠপর্যায়ে গিয়ে কাজ করেন।    

আমানউল্লাহ আমান 'থ্রি ফিফটি ডট অর্গ বাংলাদেশ'এর ভবিষ্যত কার্যপরিকল্পনার কথা জানান। তিনি বলেন, "১১ হাজার স্বাক্ষরকে আমরা ৩০ হাজার মানুষের স্বাক্ষরে রূপান্তরিত করতে চাই। যতবেশি মানুষ আমাদের এই কাজে সামিল হবেন, ততো শক্তভাবে আমাদের এই আন্দোলন গড়ে উঠবে। বড় ও ধনী দেশগুলোর পরিবেশের জন্য অর্থ বরাদ্দের কথা থাকলেও তারা তা মানছে না। যতদিন পর্যন্ত পরিবেশ থেকে জীবাশ্ম জ্বালানীর ব্যবহার কমবে না, ততোদিন আমাদের এই আন্দোলন সফল হবে না। পরিবর্তন একদিনে সম্ভব না, তাই আমাদের লক্ষ্য পূরণে তরুণদের সাথে নিয়ে এই আন্দোলন ও অন্যান্য কার্যক্রম চলতে থাকবে। ক্লাইমেট জাস্টিস নিশ্চিত করতেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।"

 

 

Related Topics

টপ নিউজ

জলবায়ু পরিবর্তন / জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা / জলবায়ু ক্ষতিপূরণ

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • ইতিহাসে এ প্রথম: ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার মামলার শুনানি কাল সরাসরি সম্প্রচার করা হবে বিটিভিতে
  • ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত ব্যাংক আমানতে মিলবে আবগারি শুল্কমুক্ত সুবিধা
  • করমুক্ত আয়সীমার সঙ্গে বাড়তে পারে করের হারও
  • ‘মবের নামে আগুন, ভাঙচুরের সুযোগ নেই’: সারজিসকে সেনা কর্মকর্তা
  • যে বাজারে পা ফেলার জায়গা থাকে না, কিচিরমিচিরে কান পাতা দায়
  • ‘সংস্কারের কলা দেখাচ্ছেন’: ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় দফার আলোচনা প্রসঙ্গে বিএনপির সালাহউদ্দিন

Related News

  • বিছারা ‘দখল করে নিচ্ছে’ ব্রাজিলের শহরগুলো, হুল ফোটানো বেড়েছে ২৫০% পর্যন্ত
  • প্রজাপতিবিহীন পৃথিবী: যেভাবে হারিয়ে যাচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ এই প্রজাতি
  • ২০২৪ সালে কার্বন ডাই অক্সাইড নিঃসরণ রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছাবে
  • ১৯৮০-এর দশকের পর থেকে বিশ্বজুড়ে তীব্র খরাপ্রবণ এলাকা বেড়েছে ৩ গুণ: গবেষণা
  • পৃথিবীর উষ্ণতা বাড়ায় নাটকীয় হারে ‘সবুজ’ হচ্ছে অ্যান্টার্কটিকা 

Most Read

1
বাংলাদেশ

ইতিহাসে এ প্রথম: ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার মামলার শুনানি কাল সরাসরি সম্প্রচার করা হবে বিটিভিতে

2
অর্থনীতি

৩ লাখ টাকা পর্যন্ত ব্যাংক আমানতে মিলবে আবগারি শুল্কমুক্ত সুবিধা

3
অর্থনীতি

করমুক্ত আয়সীমার সঙ্গে বাড়তে পারে করের হারও

4
বাংলাদেশ

‘মবের নামে আগুন, ভাঙচুরের সুযোগ নেই’: সারজিসকে সেনা কর্মকর্তা

5
ফিচার

যে বাজারে পা ফেলার জায়গা থাকে না, কিচিরমিচিরে কান পাতা দায়

6
বাংলাদেশ

‘সংস্কারের কলা দেখাচ্ছেন’: ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় দফার আলোচনা প্রসঙ্গে বিএনপির সালাহউদ্দিন

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net