৬ ঘণ্টা পর বঙ্গবাজারের আগুন নিয়ন্ত্রণে
সাড়ে ছয় ঘণ্টা পর বেলা ১২টা ৩৬ মিনিটে রাজধানীর বঙ্গবাজার মার্কেটের আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে।
ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স হেডকোয়ার্টার্সের সিনিয়র স্টেশন অফিসার শাহজাহান সিকদার দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) ভোর ৬টার দিকে আগুনের সূত্রপাত ঘটে এবং তা দ্রুতই ছড়িয়ে পড়ে। এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
বেলা বাড়ার সাথে সাথে আগুন পার্শ্ববর্তী এনেক্সকো টাওয়ার ও পুলিশ সদর দপ্তরসহ পাশের ভবনগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে।
ভয়াবহ এ আগুন নিভাতে ফায়ার সার্ভিসের ৪৮টি ইউনিট কাজ করে। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এবং র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নও (র্যাব) আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে।
তাৎক্ষণিকভাবে আগুন লাগার কারণ জানা যায়নি বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

ঢাকায় নিয়োজিত ফায়ার সার্ভিসের সকল ইউনিটকে ঘটনাস্থলে আসতে বলা হয়।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স জানায়, ভোর ৬টা ১২ মিনিটে ফায়ার সার্ভিসের প্রথম ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে।

এদিকে, আইএসপিআর-এর বরাত দিয়ে ইউএনবি জানায়, সেনাবাহিনীর একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নেভানোর চেষ্টা করে।

সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের পানি সরবরাহ শেষ হয়ে যাওয়ার পর শহীদুল্লাহ হল থেকে পানি সরবরাহ করা হচ্ছিল।
আগুন নেভাতে হাতিরঝিল থেকে বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টারে করে এনে ঘটনাস্থলে পানি দেওয়া হয়। বঙ্গবাজার মার্কেটের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর একটি দলও যোগ দেয়।
একজন দমকলকর্মী বলেন, "আমরা আগুনের কাছাকাছি যেতে পারছি না। পুরো এলাকাতে তাপ ও ধোঁয়ায় দম বন্ধ করা অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এখানের বাতাসে এ মুহূর্তে অক্সিজেনের অভাব থাকায় আমাদের কিছু দমকলকর্মীর শ্বাসকষ্ট হচ্ছে।"

আগুন লাগার পরপরই দোকান মালিকরা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। তাদের কেউ কেউ দোকান থেকে পণ্যদ্রব্য বের করে আনতে সক্ষম হন।

বঙ্গবাজার মার্কেটের দোকানদারদের একজন শাহ আলম বলেন, "ভোর ৬টায় আগুনের সূত্রপাত হয়। পুরো জায়গাটার অবস্থা এখন জাহান্নামের মতো। মার্কেটের পরিস্থিতি ভয়াবহ। পুলিশ সদর দপ্তরের কিছু অংশও ঝুঁকিতে রয়েছে।"
আগুনে অন্তত ২০০ দোকান পুড়ে গেছে।

তবে বঙ্গবাজার দোকান মালিক সমিতির দপ্তর সম্পাদক ডিএম হাবিবের দাবি, আগুনে প্রায় ৩৫০০ দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। "আমার দুটি দোকানও আছে, শত শত কোটি টাকার আরএমজি পণ্য পুড়ে এখন ছাই," বলেন তিনি।

এ মার্কেটের এক কাপড়ের দোকানের মালিক শাফায়েতের ছোট ভাই মো. রফিকুল ইসলাম দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে জানান, আগুন লাগার পর থেকেই তার ভাই নিখোঁজ আছেন।
মার্কেটের ২য় তলায় শাফায়েতের মালিকানাধীন হাসান গার্মেন্টস আগুনে পুড়ে গেছে।

"আমার ভাই ঈদ সামনে রেখে রেডিমেড গার্মেন্টস পণ্যে ২ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন, এখন তার খোঁজ মিলছে না," বলেন তিনি।
আগুনের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের দিক থেকে আসা যানবাহন হানিফ ফ্লাইওভারে প্রবেশ করতে পারছে না।
