নকশা ‘চুরির’ বিতর্কের জেরে ৯৩০ ডলারের ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’ কোলাপুরি চপ্পল আনছে প্রাডা
ভারতের ঐতিহ্যবাহী কোলাপুরি চপ্পলের নকশা 'চুরির' অভিযোগে মাস কয়েক আগেই বিতর্কের মুখে পড়েছিল বিখ্যাত ইতালীয় ফ্যাশন ব্র্যান্ড 'প্রাডা'। সেই বিতর্কের জেরে এবার ভারতের স্থানীয় কারিগরদের সঙ্গে নিয়েই কোলাপুরি চপ্পল তৈরির ঘোষণা দিয়েছে বিলাসবহুল ব্র্যান্ডটি।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের মহারাষ্ট্র ও কর্ণাটকের দুটি সরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মিলে সীমিত পরিসরে এই চপ্পল তৈরি করবে প্রাডা। সব মিলিয়ে ২ হাজার জোড়া চপ্পল তৈরি করা হবে।
গত বৃহস্পতিবার 'ইতালি-ইন্ডিয়া বিজনেস ফোরাম ২০২৫'-এ এ-সংক্রান্ত একটি চুক্তি সই হয়। আগামী ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে এই চপ্পল বাজারে পাওয়া যাবে। অনলাইনে এবং বিশ্বজুড়ে প্রাডার ৪০টি শোরুমে এগুলো বিক্রি হবে। প্রতি জোড়া চপ্পলের দাম ধরা হয়েছে ৯৩৯ ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১ লাখ ১০ হাজার টাকার বেশি।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের জুনে প্রাডা এমন এক স্যান্ডাল প্রদর্শন করে, যার নকশা হুবহু কোলাপুরি চপ্পলের সাথে মিলে যায়। প্রাডা সেটিকে 'লেদার ফুটওয়্যার' বা চামড়ার জুতো বলে পরিচয় দিলেও এর ভারতীয় উৎসের কথা উল্লেখ করেনি।
বিষয়টি নিয়ে ভারতে ব্যাপক বিতর্ক শুরু হয়। সমালোচনার মুখে পরে প্রাডা স্বীকার করে নেয় যে নকশাটি ভারতীয় ঐতিহ্য থেকে অনুপ্রাণিত।
শুক্রবার মহারাষ্ট্রের সমাজকল্যাণমন্ত্রী সঞ্জয় শিরসাত জানান, নতুন এই উদ্যোগের নাম দেওয়া হয়েছে 'প্রাডা মেড ইন ইন্ডিয়া—ইনস্পায়ার্ড বাই কোলাপুরি চপ্পল'। তিনি আরও জানান, প্রাডার চাহিদা ও মান বজায় রাখতে স্থানীয় কারিগরদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
এ ছাড়া প্রায় ২০০ জন কোলাপুরি চপ্পল কারিগরকে ইতালিতে নিয়ে তিন বছর ধরে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। আপাতত পাঁচ বছরের জন্য এই চুক্তি হলেও এর মেয়াদ আরও বাড়বে বলে আশাবাদী তিনি।
মহারাষ্ট্রের কোলাপুর জেলার নামানুসারে এই চপ্পলের নামকরণ। দ্বাদশ শতাব্দী থেকে এই চপ্পলের প্রচলন। চামড়ার তৈরি ও প্রাকৃতিকভাবে রং করা হাতে বানানো এই চপ্পল বেশ টেকসই এবং গরম আবহাওয়ার জন্য উপযোগী।
