যুক্তরাজ্যে ট্রেনে ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত ৯, দুই সন্দেহভাজন আটক
যুক্তরাজ্যের পূর্বাঞ্চলীয় শহর কেমব্রিজশায়ারের কাছে একটি চলন্ত ট্রেনে ছুরিকাঘাতের ঘটনায় অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে। এদের মধ্যে ৯ জনের অবস্থা গুরুতর। শনিবার এ হামলার ঘটনায় দুই সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার ঘটনাটিকে 'ভয়াবহ হামলা' হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
ব্রিটিশ ট্রান্সপোর্ট পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার পেছনের কারণ ও উদ্দেশ্য উদ্ঘাটনে তারা কাউন্টার টেররিজম পুলিশের সহায়তা নিচ্ছে।
ব্রিটিশ ট্রান্সপোর্ট পুলিশের চিফ সুপারিনটেনডেন্ট ক্রিস কেইসি বলেন, 'আমরা ঘটনাটির পূর্ণাঙ্গ তদন্ত শুরু করেছি। ঘটনার বিস্তারিত জানাতে কিছুটা সময় লাগবে। এখনই এর কারণ নিয়ে অনুমান করা ঠিক হবে না।'
ক্যামব্রিজশায়ার পুলিশ জানায়, শনিবার স্থানীয় সময় রাত ৭টা ৩৯ মিনিটে তারা খবর পায় যে, উত্তর ইংল্যান্ডের ডনকাস্টার থেকে লন্ডনের কিংস ক্রসগামী বিকেল ৬টা ২৫ মিনিটের ট্রেনে একাধিক যাত্রীকে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে।
এরপর ট্রেনটি হান্টিংডনে থামানো হয়। সামাজিকমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, অস্ত্রধারী পুলিশ সদস্যরা ট্রেনে প্রবেশ করছেন। পুলিশ জানায়, সেখানে পৌঁছে দুইজনকে গ্রেপ্তার করে তারা।
এক প্রত্যক্ষদর্শী স্কাই নিউজকে জানান, হামলাকারীদের একজনের হাতে বড় ছুরি ছিল, পরে পুলিশ তাকে টেসার গান দিয়ে আটক করে।
ইস্ট অব ইংল্যান্ড অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস জানায়, হান্টিংডন রেলস্টেশনে তারা ব্যাপক উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করে। এতে বেশ কয়েকটি অ্যাম্বুলেন্স, ক্রিটিক্যাল কেয়ার টিম এবং তিনটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্স অংশ নেয়।
প্রধানমন্ত্রী স্টারমার এক্স (পূর্বের টুইটার)-এ লেখেন, 'ঘটনাটি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। আক্রান্তদের প্রতি আমার সমবেদনা রইল এবং জরুরি সেবায় নিয়োজিত সব কর্মীর প্রতি ধন্যবাদ জানাচ্ছি।'
সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১১ সাল থেকে যুক্তরাজ্যে ছুরি-সংক্রান্ত অপরাধ বা 'নাইফ ক্রাইম'-এর হার ধারাবাহিকভাবে বেড়েই চলেছে। বিষয়টি এখন এতটাই উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে যে প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার একে 'জাতীয় সংকট' হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন।
সরকারের কঠোর অভিযানের অংশ হিসেবে গত এক বছরে পুলিশ প্রায় ৬০ হাজার ছুরি জব্দ করেছে বা নাগরিকদের কাছ থেকে জমা নেওয়া হয়েছে। জনসমক্ষে ছুরি বহনের অপরাধে সর্বোচ্চ চার বছরের কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে।
আজ হান্টিংডনের ট্রেনে ছুরিকাঘাতের ঘটনা এবং গত মাসে ম্যানচেস্টারের এক সিনাগগে হামলায় দুইজন নিহত হওয়ার ঘটনা দেশটির ভেতরে ও বাইরে তীব্র আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
