‘ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি’ জানিয়ে নতুন আইসক্রিম বাজারে আনার উদ্যোগে বাধা ইউনিলিভারের
আইসক্রিম প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান বেন অ্যান্ড জেরি-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা বেন কোহেন বলেছেন, তাদের মূল প্রতিষ্ঠান ইউনিলিভার 'ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি' জানিয়ে নতুন এক আইসক্রিম বাজারে আনার উদ্যোগে বাধা দিয়েছে। খবর বিবিসি'র।
বেন কোহেন জানিয়েছেন, তিনি নিজে ব্যক্তিগত উদ্যোগে ওই আইসক্রিমটি তৈরি করবেন। এটি হবে এমন একটি সিরিজের অংশ, যেখানে তিনি এমন বিষয়গুলো তুলে ধরবেন যেগুলো নিয়ে বেন অ্যান্ড জেরি প্রকাশ্যে কিছু বলতে পারছে না।
বেন অ্যান্ড জেরি দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক, পরিবেশগত ও মানবিক বিষয়ে সরব। বিশেষ করে ইসরায়েল-গাজা সংঘাত নিয়ে তারা বারবার নিজেদের অবস্থান জানিয়েছে।
বিবিসি জানিয়েছে, ইউনিলিভারের সঙ্গে এই বিষয়ে যোগাযোগ করা হলেও তারা এখনও কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
বেন কোহেনের ঘোষণা বেন অ্যান্ড জেরি এবং ইউনিলিভারের পুরোনো বিরোধকে আরও তীব্র করেছে। ২০০০ সালে অধিগ্রহণের পর থেকে তারা বেন অ্যান্ড জেরির মালিক ইউনিলিভার।
প্রতিষ্ঠানটির দুই সহ-প্রতিষ্ঠাতা অভিযোগ করেছেন, ইউনিলিভার এবং তাদের ব্র্যান্ড ম্যাগনাম অবৈধভাবে তাদের আইসক্রিম কোম্পানিকে সামাজিক বিষয়গুলো নিয়ে নিজস্ব সিদ্ধান্ত নেওয়া থেকে বিরত রেখেছে।
বেন কোহেন মঙ্গলবার ইনস্টাগ্রামে জানিয়েছেন, তিনি নতুন একটি তরমুজ স্বাদের আইসক্রিম তৈরি করছেন। তিনি ফলোয়ারদের কাছে ওই আইসক্রিমের নাম ও উপাদান নিয়ে মতামত চেয়েছেন।
তরমুজকে প্যালেস্টাইনের প্রতি সহানুভূতির প্রতীক হিসেবে দেখা হয়, কারণ এর রঙ প্যালেস্টাইনের পতাকার সঙ্গে মিলে যায়—লাল, সবুজ, কালো ও সাদা।
বেন জানিয়েছেন, ইউনিলিভার তাদের বাধা দেওয়ার পরও তিনি নিজে এই আইসক্রিম তৈরি করছেন। তিনি বলেন, 'আমি এমন আইসক্রিম তৈরি করছি, যা প্যালেস্টাইনে স্থায়ী শান্তির ডাক দেয় এবং সেখানে ক্ষয়ক্ষতি মেরামতের আহ্বান জানায়।'
২০২১ সালে বেন অ্যান্ড জেরি ইসরায়েলের অধিকৃত এলাকায় পণ্য বিক্রি বন্ধ করেছিল। তখন ইউনিলিভার তাদের ইসরায়েল শাখা স্থানীয় লাইসেন্সধারীর কাছে বিক্রি করে, যাতে সেখানে আইসক্রিম বিক্রি চালু থাকে।
বেন কোহেন জানিয়েছেন, এই নতুন আইসক্রিম তার নিজস্ব ব্র্যান্ড 'বেন'স বেস্ট' এর অধীনে তৈরি হবে এবং এটি বেন অ্যান্ড জেরি থেকে আলাদা। 'বেন'স বেস্ট' প্রথম তৈরি হয়েছিল ২০১৬ সালে বার্নি স্যান্ডার্সকে সমর্থন জানাতে।
বেন বলছেন, ভবিষ্যতেও তিনি এমন আইসক্রিম বানাবেন যা সামাজিক ও রাজনৈতিক বিষয়গুলো তুলে ধরবে।
সেপ্টেম্বরে সহ-প্রতিষ্ঠাতা জেরি গ্রিনফিল্ড প্রতিষ্ঠানটি থেকে পদত্যাগ করেছিলেন। তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছিলেন, ইউনিলিভারের কারণে প্রতিষ্ঠানের স্বাধীনতা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
বেন কোহেন বলেন, তিনি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে থেকে কাজ চালিয়ে যেতে চান, যাতে বেন অ্যান্ড জেরি-এর সামাজিক অভিযান ও মূল্যবোধ বজায় থাকে।
