পাঁচ বছরের সাজাভোগ করতে কারাগারে গেলেন ফ্রান্সের সাবেক প্রেসিডেন্ট নিকোলাস সারকোজি

পাঁচ বছরের সাজাভোগ করতে প্যারিসের একটি কারাগারে পৌঁছেছেন ফ্রান্সের সাবেক প্রেসিডেন্ট নিকোলা সারকোজি। এর মধ্য দিয়ে আধুনিক ফ্রান্সের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কোনো সাবেক রাষ্ট্রপ্রধান কারাগারে গেলেন।
কূটনৈতিক সুবিধার বিনিময়ে লিবিয়া থেকে অর্থ নিয়ে ২০০৭ সালের নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার অভিযোগে গত মাসে সারকোজিকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
আজ সকালে নিজ বাসা থেকে বের হওয়ার সময় সমর্থকদের উদ্দেশে হাত নেড়ে বিদায় জানান সারকোজি। এরপর পুলিশ মোটরসাইকেল ও গাড়ির ঘেরাটোপে থাকা তার বহর দক্ষিণ প্যারিসের 'লা সান্তে' কারাগারের উদ্দেশে রওনা দেয়।
২০১২ সালে ক্ষমতা ছাড়ার পর থেকেই তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন। রায়ের বিরুদ্ধে আপিল প্রক্রিয়া চলাকালে তাকে কারাগারের একক সেলে [কারাকক্ষ] অথবা তথাকথিত 'ভিআইপি উইং'-এ রাখা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সাধারণত, যে সব বন্দিকে সাধারণ কয়েদিদের সঙ্গে রাখা নিরাপদ বলে মনে করা হয় না, তাদেরকে এই উইং-এ রাখা হয়। সিএনএনের সহযোগী প্রতিষ্ঠান বিএফএমটিভি জানিয়েছে, রাজনীতিবিদ, সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা, উগ্র-ডানপন্থী সংগঠনের সদস্য বা ইসলামপন্থী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সঙ্গে জড়িতদের এখানে রাখা হয়।
কারাগারে যাওয়ার পথে 'এক্স'-এ (পূর্বে টুইটার) দেওয়া এক বিবৃতিতে সারকোজি বলেন, 'আমি একজন নির্দোষ মানুষ।'
তিনি লেখেন, 'আমি যখন লা সান্তে কারাগারের চার দেয়ালের ভেতরে প্রবেশের প্রস্তুতি নিচ্ছি, তখন আমার চিন্তা শুধু ফ্রান্সের জনগণকে ঘিরে—যারা ভিন্ন ভিন্ন জীবনধারা ও মতের অনুসারী।'
সাবেক এই প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, 'আজ সকালে কারাগারে প্রবেশ করছে কোনো প্রজাতন্ত্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট নয়, বরং এক নির্দোষ মানুষ।'
তিনি বিচার প্রক্রিয়াকে 'বিচারিক কেলেঙ্কারি' আখ্যা দিয়ে বলেন, 'আমি এই অবিচারের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাব। তবে আমার প্রতি সহানুভূতি দেখানোর প্রয়োজন নেই, কারণ আমার পাশে আছে স্ত্রী, সন্তান ও অসংখ্য বন্ধু।'
মঙ্গলবার সকালে তিনি আরও বলেন, 'আজ আমি ফ্রান্সের জন্য গভীর বেদনা অনুভব করছি—একটি দেশ, যা প্রতিহিংসার এমন এক প্রকাশে অপমানিত হচ্ছে, যা আগে কখনও দেখা যায়নি।'