চীনের কোভিড বাস্তবতা তুলে ধরা সাংবাদিক ঝাং ঝানকে আরও ৪ বছরের কারাদণ্ড

কোভিড-১৯ মহামারির শুরুর দিনগুলোতে চীনের উহান শহর থেকে সেখানকার বাস্তব পরিস্থিতি তুলে ধরার জন্য কারাবন্দি সাংবাদিক ঝাং ঝানকে (৪২) আবারও চার বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম স্বাধীনতা সংগঠন রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স (আরএসএফ) এ তথ্য জানিয়েছে।
শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) ঝাং ঝানকে বিবাদ উসকে দেওয়া ও গোলযোগ সৃষ্টির অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে চার বছরের সাজা দেওয়া হয়। একই অভিযোগে ২০২০ সালের ডিসেম্বরে তিনি প্রথম চার বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছিলেন। সে সময় তিনি উহান শহর থেকে করোনা ছড়িয়ে পড়ার প্রথম দিকের পরিস্থিতির ভিডিও ও প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিলেন।
রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য জানায়নি। সাংবাদিক ঝাং বর্তমানে আইনজীবীর সহায়তা পাচ্ছেন কিনা সেটাও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
আরএসএফের এশিয়া-প্যাসিফিক অ্যাডভোকেসি ম্যানেজার আলেকসান্দ্রা বিয়েলাকোভস্কা বলেন, 'তাকে নায়ক হিসেবে সম্মানিত করা উচিত ছিল, অথচ তিনি কারাগারে বন্দি আছেন। এখনই আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক সম্প্রদায়ের উচিত তার মুক্তির জন্য বেইজিংয়ের ওপর চাপ সৃষ্টি করা।'
মহামারির প্রথম দিকে মানুষের ভিড় করা হাসপাতাল ও ফাঁকা রাস্তাঘাটের চিত্র তুলে ধরেন ঝাং। যা সরকারিভাবে প্রচারিত সংবাদের চেয়েও অনেক বেশি ভয়াবহ পরিস্থিতি তুলে ধরেছিল। ওই সময়কার আইনজীবী রেন কুয়ান্নিউ জানান, ঝাং বিশ্বাস করতেন তিনি কেবল মত প্রকাশের স্বাধীনতা চর্চার জন্যই নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন।
গ্রেপ্তারের পরের মাসেই ঝাং অনশন শুরু করেন। আদালতের নথি অনুযায়ী, পুলিশ তার হাত বেঁধে টিউবের মাধ্যমে জোর করে খাওয়াতো।
আরএসএফ জানায়, ২০২৪ সালের মে মাসে তিনি মুক্তি পান। তবে তিন মাস পর আবার আটক হন এবং পরবর্তীতে সাংহাইয়ের পুডং আটক কেন্দ্রে তাকে পাঠানো হয়।
আরএসএফ জানায়, সাংবাদিকদের জন্য বিশ্বের সবচেয়ে বড় কারাগার এখন চীন, যেখানে অন্তত ১২৪ জন গণমাধ্যমকর্মী বন্দি রয়েছেন। ২০২৫ সালের বিশ্ব সংবাদমাধ্যম স্বাধীনতা সূচকে ১৮০ দেশের মধ্যে চীনের অবস্থান ১৭৮তম।