ডলারভিত্তিক ইসলামি বন্ড ইস্যু করবে সৌদি আরামকো
বিশ্বের সবচেয়ে বড় জ্বালানি তেল কোম্পানি সৌদি আরবের আরামকো খুব শিগগিরই মার্কিন ডলারভিত্তিক ইসলামি বন্ড (সুকুক) বাজারে ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। চলতি মাসেই এই প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে বলে এবিষয়ে সরাসরি অবগত দুটি সূত্রকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স। মূলত বিশ্ববাজারে তেলের দাম দুর্বল অবস্থায় থাকায়— কোম্পানিটি এভাবে ঋণ নিয়ে আর্থিক অবস্থান শক্তিশালী করার পরিকল্পনা নিয়েছে।
সূত্র জানায়, আরামকো ৩ থেকে ৪ বিলিয়ন ডলার তুলতে পারে এ সুকুক ইস্যুর মাধ্যমে। সুকুক হলো শরিয়াহভিত্তিক একটি বন্ড। তবে গোপনীয়তার কারণে এবিষয়ে কথা বলার সময় নাম প্রকাশ করেননি আরামকোর ওই দুই কর্মকর্তা।
আরামকো-ও আনুষ্ঠানিকভাবে এবিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
এই উদ্যোগটি এমন সময়ে আসছে, যখন বৈশ্বিক বন্ড বাজারে ইস্যুর প্রবাহ বেড়ে গেছে। বিনিয়োগকারীদের কাছে বন্ডের চাহিদা শক্তিশালী হওয়া এবং বন্ড তহবিলে বিপুল অর্থপ্রবাহ এ বৃদ্ধির মূল চালক।
গত আগস্টে আয়ের প্রতিবেদনে আরামকো জানায়, তারা ধার নেওয়া অব্যাহত রাখবে। কোম্পানির দাবি, তেলশিল্পে তাদের ব্যালান্সশিট গিয়ারিং এখনও সবচেয়ে কম পর্যায়ে রয়েছে।
রয়টার্স এর পূর্ববর্তী প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, সৌদি কর্মকর্তারা তাদের মিত্র এবং বাজার সংশ্লিষ্টদের জানিয়েছেন, তেলের দাম কমলেও তারা ঋণ বাড়িয়ে ও খরচ কমিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে সক্ষম। তবে তখন সৌদি সরকারের যোগাযোগ দপ্তর এ বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানায়।
আরামকো সর্বশেষ বৈশ্বিক বন্ড বাজারে প্রবেশ করে ২০২৫ সালের মে মাসে, যখন তারা বন্ডের মাধ্যমে ৫ বিলিয়ন ডলার সংগ্রহ করে। পরে তারা সুকুক ইস্যুর সম্ভাব্য প্রসপেক্টাস প্রকাশ করে, যা আরও ঋণ নেওয়ার ইঙ্গিত দেয়।
অপরিশোধিত তেলের দাম কমে যাওয়ায় কোম্পানিটি ব্যয় সংকোচন এবং সম্পদ বিক্রির দিকে ঝুঁকছে। গত মাসে আরামকো দ্বিতীয় প্রান্তিকে ২২ শতাংশ মুনাফা হ্রাসের কথা জানায়। একই সময়ে তারা ব্ল্যাকরকের গ্লোবাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার পার্টনার্স (জিআইপি) নেতৃত্বাধীন একটি কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে ১১ বিলিয়ন ডলারের লিজ–লিজব্যাক চুক্তি করে জাফুরাহ গ্যাস প্রসেসিং অবকাঠামোর জন্য, যা অর্থ সংগ্রহের নতুন পথ উন্মুক্ত করে আরামকোর জন্য।
আরামকোর প্রধান অর্থনৈতিক কর্মকর্তা জিয়াদ আল-মুরশেদ বলেন, "আমাদের কৌশল হলো কম রিটার্ন পাওয়া সম্পদ থেকে মূলধন মুক্ত করা এবং তা উচ্চ রিটার্ন-সক্ষম মূল ব্যবসায় পুনঃনিয়োজিত করা।"
চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের আয় প্রতিবেদনে আরামকো ২১.১ বিলিয়ন ডলারের বেস ডিভিডেন্ড বহাল রাখে এবং পুরো বছরের জন্য ৮৫.৪ বিলিয়ন ডলারের পে-আউট গাইডলাইন পুনর্ব্যক্ত করে। এতে স্পষ্ট হয়, জ্বালানি বাজারে চাপ থাকা সত্ত্বেও কোম্পানিটির শেয়ারহোল্ডারদের রিটার্ন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি।
