এক নজরে ২০২৫-এর সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক প্রাপ্ত টেনিস তারকারা

টেনিস কোর্টের নতুন দুই রাজা, স্পেনের কার্লোস আলকারাজ ও ইতালির ইয়ানিক সিনার, এখন লড়ছেন কোর্টের বাইরের শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়েও। গত এক বছরে টেনিসের সব বড় শিরোপা নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নেওয়া এই দুই তরুণ তুর্কি খেলোয়াড় আয়ের জগতেও একে অপরের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছেন।
টানা দ্বিতীয়বারের মতো আয়ের শীর্ষে ২২ বছর বয়সী আলকারাজ, যার গত এক বছরের আয় ৪ কোটি ৮৩ লক্ষ ডলার। তবে ২৪ বছর বয়সী সিনারের উত্থান ঈর্ষণীয়! তার আয় প্রায় দ্বিগুণ বেড়ে পৌঁছেছে ৪ কোটি ৭৩ লক্ষ ডলারে। কোর্টের লড়াইয়ে সিনার এগিয়ে থাকলেও, বিজ্ঞাপনের দুনিয়ায় আলকারাজই আসল 'কিং'।
নারী টেনিসের সম্রাজ্ঞী হিসেবে নিজের জায়গা পাকা করেছেন ২১ বছর বয়সী আমেরিকান তারকা কোকো গফ। ৩ কোটি ৭২ লক্ষ ডলার আয় করে তিনি সার্বিক তালিকায় তৃতীয় এবং নারী ক্রীড়াবিদদের মধ্যে প্রথম। এমনকি তিনি পেছনে ফেলেছেন কিংবদন্তি নোভাক জোকোভিচকেও (২ কোটি ৯৬ লক্ষ ডলার)।
এক দশকেরও বেশি সময় পর এই প্রথম আয়ের তালিকার শীর্ষ তিনে নেই কোনো ৩০-ঊর্ধ্ব তারকা। ফেদেরার-নাদালদের যুগের অবসানের পর টেনিস এখন তরুণ তুর্কিদের দখলে, যাদের গড় বয়স মাত্র ২৬। শীর্ষ দশ খেলোয়াড়ের সম্মিলিত আয় গত বছরের চেয়ে ১৬% বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৮ কোটি ৫০ লক্ষ ডলারে, যা এই খেলার উজ্জ্বল ভবিষ্যতেরই ইঙ্গিত দেয়।
ফেদেরারের মতো বিলিয়নেয়ার আইকন হয়তো টেনিস আর পাবে না, কিন্তু আলকারাজ-সিনারদের নতুন প্রজন্ম কোর্টের মতো আর্থিক জগতেও যে নতুন ইতিহাস লিখতে প্রস্তুত, তা হলফ করে বলা যায়।
১. কার্লোস আলকারাজ
আয়: $৪৮.৩ মিলিয়ন

পুরুষদের সিঙ্গেলস র্যাঙ্কিংয়ে ইয়ানিক সিনার এক নম্বরে থাকলেও এটিপি ট্যুরে মুখোমুখি লড়াইয়ে স্পষ্টভাবে এগিয়ে আছেন কার্লোস আলকারাজ। শেষ সাতটি ম্যাচের ছয়টিতেই জিতেছেন এই স্প্যানিশ তারকা। এর মধ্যে রয়েছে জুনে ফ্রেঞ্চ ওপেনে তার স্মরণীয় প্রত্যাবর্তনমূলক জয়, যা ২২ বছর বয়সী আলকারাজকে এনে দেয় পঞ্চম গ্র্যান্ড স্ল্যাম শিরোপা।
কোর্টের সাফল্যের বাইরেও আলকারাজ বিজ্ঞাপনের জগতেও সমান জনপ্রিয়। বিএমডব্লিউ, লুই ভুঁটো এবং রোলেক্সের মতো শীর্ষ ব্র্যান্ডের সঙ্গে তার চুক্তি রয়েছে। বর্তমানে সক্রিয় টেনিস খেলোয়াড়দের মধ্যে তিনিই শীর্ষ বিজ্ঞাপন মুখ। তবে মূল আয় আসে বিভিন্ন প্রদর্শনী ম্যাচ ও বিশেষ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ থেকে। প্রতিটি ইভেন্টের জন্য তিনি ১০ লাখ ডলার এবং একটি প্রদর্শনীতে খেলতে পারিশ্রমিক নেন সর্বোচ্চ ২০ লাখ ডলার পর্যন্ত।
আলকারাজকে ঘিরে তৈরি হয়েছে নেটফ্লিক্সের তিন পর্বের একটি তথ্যচিত্রও, যেখানে তার ২০২৪ সালের মৌসুমের নানা দিক তুলে ধরা হয়েছে। সেই তথ্যচিত্রের মুক্তির তারিখ ঘোষণা করতে তিনি অভিনব পদ্ধতি বেছে নিয়েছিলেন—মার্চে ইন্ডিয়ান ওয়েলস টুর্নামেন্টে নিজের ডান হাতে সাময়িকভাবে লিখেছিলেন "২৩-৪-২৫", অর্থাৎ মুক্তির দিনক্ষণ।
২. ইয়ানিক সিনার
আয়: $৪৭.৩ মিলিয়ন

একটি অনির্দিষ্ট অসুস্থতার কারণে এই মাসে সিনসিনাটি ওপেনের ফাইনালে কার্লোস আলকারাজের বিপক্ষে নামতে পারেননি ইয়ানিক সিনার। একই কারণে ইউএস ওপেনের মিক্সড ডাবলস থেকেও তিনি সরে দাঁড়িয়েছেন। তবু এককে তাকে থামানো যাচ্ছে না। ২৪ বছর বয়সী এই ইতালিয়ান তারকা নিউইয়র্কে শিরোপা ধরে রাখার পাশাপাশি ক্যারিয়ারের পঞ্চম গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের অন্যতম ফেভারিট হিসেবেই কোর্টে নামবেন।
এই একটি জয় তার ঘটনাবহুল বছরকে আরও উজ্জ্বল করে তুলতে পারে। ইতোমধ্যে তিনি অস্ট্রেলিয়ান ওপেন ও উইম্বলডন জিতেছেন। যদিও মার্চ ২০২৪-এ একটি অ্যানাবলিক স্টেরয়েডে পজিটিভ ধরা পড়ে তাকে তিন মাসের জন্য ডোপিং নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে হয়েছিল। পরে আন্তর্জাতিক টেনিস ইন্টিগ্রিটি এজেন্সি তাকে নির্দোষ ঘোষণা করে। সংস্থাটি জানায়, তার শরীরে ক্লোস্টেবল প্রবেশ করেছিল ফিজিওথেরাপিস্টের একটি ম্যাসাজের মাধ্যমে। বিশ্ব অ্যান্টি-ডোপিং এজেন্সি এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করলেও শেষ পর্যন্ত ফেব্রুয়ারিতে সমঝোতায় পৌঁছানো হয়।
বাধা পেরিয়ে সিনারের উত্থান থামেনি। তিনি এখনো পুরুষদের সিঙ্গেলস র্যাঙ্কিংয়ে এক নম্বর। গুচি, লাভাজা কফি থেকে শুরু করে ডি চেকো পাস্তা—প্রায় এক ডজন ব্র্যান্ড তার স্পনসর হিসেবে পাশে রয়েছে। কোর্টেও তার দাপট স্পষ্ট। অক্টোবরে সৌদি আরবে আয়োজিত প্রদর্শনী টুর্নামেন্ট 'সিক্স কিংস স্ল্যাম'-এ তিনি জিতেছেন ৬০ লাখ ডলারের পুরস্কার।
৩. কোকো গফ
আয়: $৩৭.২ মিলিয়ন

এই বছর কোকো গফের টেনিস যাত্রা ছিল উত্থান-পতনে ভরা। ফ্রেঞ্চ ওপেনে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় গ্র্যান্ড স্ল্যাম একক শিরোপা জেতার আনন্দের পরই আসে হতাশা—উইম্বলডনে প্রথম ম্যাচেই বিদায় নিতে হয় তাকে। ইউএস ওপেন শুরুর কয়েকদিন আগে গফ তার কোচ ম্যাথিউ ড্যালিকে বরখাস্ত করে নতুন করে দলে নেন বায়োমেকানিক্স বিশেষজ্ঞ গ্যাভিন ম্যাকমিলানকে।
কোর্টে অস্থিরতা থাকলেও কোর্টের বাইরে দারুণ এগোচ্ছেন ২১ বছর বয়সী এই আমেরিকান তারকা। বোস, নিউ ব্যালেন্স এবং হেয়ার কেয়ার ব্র্যান্ড ক্যারল'স ডটারের মতো নামি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে লাভজনক স্পনসরশিপ চুক্তি রয়েছে তার। শুধু তাই নয়, জানুয়ারিতে গফ বিনিয়োগ করেন তিন-জনের-তিন নারী বাস্কেটবল লিগ 'আনরাইভালড'-এ। এপ্রিলে তিনি আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা দেন—নিজের এজেন্সি টিম৮ ছেড়ে প্রভাবশালী ট্যালেন্ট ফার্ম ডব্লিউএমই-এর সঙ্গে অংশীদারিত্বে গড়ে তুলছেন নিজের ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি।
৪. নোভাক জোকোভিচ
আয়: $২৯.৬ মিলিয়ন

ইউএস ওপেনে রেকর্ড ২৫তম গ্র্যান্ড স্ল্যাম একক শিরোপা জেতার স্বপ্ন পূরণ করতে হলে ৩৮ বছর বয়সী নোভাক জোকোভিচকে অবশ্যই 'মরিচা ঝেড়ে' কোর্টে ফিরতে হবে। চোটের কারণে তিনি টরন্টো মাস্টার্সে খেলেননি, এরপর আবার 'অ-চিকিৎসাগত' কারণ দেখিয়ে এই মাসে সরে দাঁড়ান সিনসিনাটি ওপেন থেকেও। ফলে জুলাইয়ে উইম্বলডন সেমিফাইনালে ইয়ানিক সিনারের কাছে হারের পর থেকে কোনো প্রতিযোগিতামূলক একক ম্যাচ খেলেননি তিনি।
বর্তমানে পুরুষদের র্যাঙ্কিংয়ে নেমে গেছেন সাত নম্বরে। গত দুই মৌসুমে তার একমাত্র এটিপি শিরোপা এসেছে জেনেভা ওপেন থেকে (এর সঙ্গে রয়েছে ২০২৪ প্যারিস অলিম্পিকে স্বর্ণপদক)। তবু নিউইয়র্কে জোকোভিচকে কখনোই হালকাভাবে নেওয়া যায় না। এখানেই তিনি দুই বছর আগে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন, আর ক্যারিয়ারে মোট চারবার ইউএস ওপেন জিতেছেন।
কোর্টের বাইরে জোকোভিচও ব্যস্ত ছিলেন ভিন্ন মঞ্চে। গত এক বছরে তিনি অংশীদারিত্ব করেছেন আমান রিসোর্টস, জো অ্যান্ড দ্য জুস এবং কাতার এয়ারওয়েজের সঙ্গে। মার্চে তার সহ-প্রতিষ্ঠিত প্রফেশনাল টেনিস প্লেয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন এটিপি ও ডব্লিউটিএ ট্যুরের বিরুদ্ধে অ্যান্টিট্রাস্ট মামলা দায়ের করেছে, যা টেনিস অঙ্গনে নতুন বিতর্ক তৈরি করেছে।
৫. আরিনা সাবালেঙ্কা
আয়: $২৭.৪ মিলিয়ন

জুলাই মাসে, সাবালেঙ্কা ২০১৫ সালে সেরেনা উইলিয়ামসের পর প্রথম নারী হিসেবে সিঙ্গেলস র্যাঙ্কিংয়ে ১২,০০০ পয়েন্ট অতিক্রম করেন। কিন্তু তার আধিপত্য সত্ত্বেও, ২৭ বছর বয়সী এই বেলারুশিয়ান তারকা সবসময় ভরা স্টেডিয়ামে খেলতে পারেন না। ফ্রেঞ্চ ওপেনের একটি কোয়ার্টার ফাইনাল সকাল ১১টায় শুরু হওয়ায় এবং স্টেডিয়ামের বেশিরভাগ অংশ খালি থাকায়, সাবালেঙ্কা নারীদের জন্য আরও বেশি রাতের ম্যাচ আয়োজনের আহ্বান জানিয়েছিলেন। তবে বিজ্ঞাপনদাতাদের কাছ থেকে তিনি এখন আরও বেশি মনোযোগ পেতে শুরু করেছেন। এই মাসে তিনি ইলেক্ট্রোলিট স্পোর্টস ড্রিংকসের সাথে একটি অংশীদারিত্ব ঘোষণা করেছেন এবং চেজ ব্যাংক ও রাশিয়ান ইউটিউব চ্যানেল ফার্স্টঅ্যান্ডরেড-এর জন্য কনটেন্ট তৈরি করছেন। সম্প্রতি তিনি ডেভিড বেকহ্যামের সহ-প্রতিষ্ঠিত একটি পুষ্টিকর সম্পূরক ব্র্যান্ড আইএম৮-এ একটি ইক্যুইটি অংশীদারিত্বও অর্জন করেছেন।
৬. কিনওয়েন ঝেং
আয়: $২৬.১ মিলিয়ন

২০২৪ সালের প্যারিস অলিম্পিকে স্বর্ণপদক জয়ের পর, ঝেং নভেম্বরে ডব্লিউটিএ ফাইনালসের শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে পৌঁছে তার উদীয়মান তারকার খ্যাতি আরও দৃঢ় করেন, যেখানে তিনি কোকো গফের কাছে তৃতীয় সেটের টাইব্রেকে হেরে যান। তার নিজ দেশ চীনে ব্র্যান্ডগুলোর কাছে তিনি ইতিমধ্যেই জনপ্রিয়। সম্প্রতি তিনি অডি, বিটস এবং ডিওরের সাথে তার স্পনসর তালিকা প্রসারিত করেছেন। তবে জুলাইয়ে কনুইতে আর্থ্রোস্কোপিক অস্ত্রোপচার হওয়ায় ঝেংকে অন্তত কয়েক সপ্তাহ কোর্টের বাইরে থাকতে হবে।
৭. ইগা শিয়নটেক
আয়: $২৪ মিলিয়ন

ইয়ানিক সিনারের মতোই গত বছর ডোপিং ঝড়ে পড়েছিলেন ইগা শিয়নটেকও। অনিচ্ছাকৃত লঙ্ঘনের কারণে তাকে এক মাসের জন্য নিষিদ্ধ থাকতে হয়েছিল। শিয়নটেক দাবি করেছিলেন, জেট ল্যাগ কমানোর জন্য নেওয়া মেলাটোনিনই এর পেছনে দায়ী। তবে সিনারের মতো তার ক্ষেত্রেও ব্যবসায়িক দিকটিতে এর প্রায় কোনো প্রভাব পড়েনি।
শিয়নটেকের দীর্ঘদিনের সঙ্গী, পোলিশ স্পোর্টস ড্রিংক ব্র্যান্ড ওশি, এই মার্চে স্পনসরশিপ চুক্তি বাড়িয়ে নেয়—এখন ম্যাচ চলাকালীন তার শার্টে তাদের লোগো জ্বলজ্বল করে। আর কোর্টে তিনি আগের মতোই অপ্রতিরোধ্য। জুলাইয়ে উইম্বলডনে শিয়নটেক আরও একবার প্রমাণ করেন আধিপত্য—ফাইনালে আমান্ডা আনিসিমোভাকে ৬-০, ৬-০ গেমে হারিয়ে জেতেন ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ গ্র্যান্ড স্ল্যাম শিরোপা। একই সঙ্গে তিনি হন একমাত্র সক্রিয় নারী খেলোয়াড়, যিনি তিনটি ভিন্ন সারফেসে মেজর শিরোপা জয়ের কৃতিত্ব অর্জন করেছেন।
৮. টেলর ফ্রিটজ
আয়: $১৫.৬ মিলিয়ন

নভেম্বরে এটিপি ফাইনালসের চ্যাম্পিয়নশিপ ম্যাচে উঠেছিলেন টেইলর ফ্রিটজ—২০০৬ সালে জেমস ব্লেকের পর প্রথম আমেরিকান হিসেবে বছরের শেষ টুর্নামেন্টে এমন কৃতিত্ব। গত আট মাসের বেশিরভাগ সময় তিনি কাটিয়েছেন বিশ্বের চার নম্বর খেলোয়াড় হিসেবে। আমেরিকান পুরুষ টেনিসে এটিই সর্বোচ্চ সিঙ্গেলস র্যাঙ্কিং, যা অ্যান্ডি রডিকের পর আর কেউ অর্জন করতে পারেননি ২০০৭ সাল থেকে।
এবারের লক্ষ্য আরও বড়। গত বছরের ইউএস ওপেন ফাইনালের সাফল্য ছাপিয়ে পুরো টুর্নামেন্ট জয়ের লড়াই করবেন ফ্রিটজ। জিততে পারলে তিনিই হবেন ২০০৩ সালে রডিকের পর প্রথম আমেরিকান পুরুষ, যিনি এই আসরের শিরোপা ঘরে তুলবেন।
কোর্টের বাইরে ফ্রিটজের অবস্থানও দারুণ মজবুত। বস, চিপটল আর মটোরোলার মতো ব্র্যান্ড তার সঙ্গী হয়েছে ইতিমধ্যেই।
৯. ফ্রান্সিস টিয়াফো
আয়: $১৫.২ মিলিয়ন

এই মাসে সিনসিনাটি ওপেনে চতুর্থ রাউন্ডের ম্যাচ খেলতে নামার আগেই পিঠের নিচের অংশে চোট পেয়ে সরে দাঁড়াতে হয়েছিল ফ্রান্সিস টিয়াফোকে। এ যেন হতাশাজনক এক মৌসুমে আরও একটি হতাশা যোগ হলো। তবে সামনে থাকা ইউএস ওপেনই হতে পারে ২৭ বছর বয়সী এই আমেরিকানের জন্য নতুন মোড় ঘোরানোর সুযোগ। গ্র্যান্ড স্ল্যামে তার সেরা ফল এসেছে এখানেই—২০২২ ও ২০২৪, দুইবারই সেমিফাইনালে উঠেছিলেন তিনি।
এবারের আসরে টিয়াফো কোর্টে নামবেন একেবারেই নতুন রূপে। জানুয়ারিতে তিনি চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন লুলুলেমনের সঙ্গে—টেনিস পোশাকের বাজারে তুলনামূলক নতুন এই ব্র্যান্ডের সঙ্গে অংশীদারিত্ব করে টিয়াফো যোগ দিলেন সেই অভিজাত খেলোয়াড়দের কাতারে, যারা নাইকি ও অ্যাডিডাসের মতো পুরোনো জায়ান্টদের ছেড়ে নতুন ধারার স্পনসরের ওপর ভরসা করেছেন।
১০. দানিল মেদভেদেভ
আয়: $১৪.৩ মিলিয়ন

ফর্মের ওঠাপড়ার কারণে দানিল মেদভেদেভ ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারির পর প্রথমবারের মতো বিশ্বের শীর্ষ ১০ থেকে নামিয়ে ১৩ নম্বরে নেমে গেছেন। জানুয়ারিতে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের দ্বিতীয় রাউন্ড পর্যন্ত উঠে তিনি ১ লক্ষ ২০ হাজার ডলারের বেশি উপার্জন করেছিলেন, তবে জরিমানার কারণে তার সেই টাকার অর্ধেকেরও বেশি ফেরত দিতে হয়েছে।
কোর্টে উত্তেজনা কখনোই কমেনি। ১৯ বছর বয়সী কোয়ালিফায়ার লার্নারের কাছে পাঁচ সেটের হারে মেদভেদেভ র্যাকেট ছুঁড়ে ফেলেন এবং একটি নেট ক্যামেরা ভেঙে দেন। এরপর বাধ্যতামূলক ম্যাচ-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনও এড়িয়ে যান। তবু কোর্টের বাইরে তার রসিক ও মজার ব্যক্তিত্ব মেদভেদেভকে ভক্তদের কাছে আরও জনপ্রিয় করে তুলেছে।
টেনিসের বাইরে তিনি ব্যবসায়িকভাবেও সক্রিয়। বোভেট ঘড়ি এবং ল্যাকোস্টের মতো ব্র্যান্ডের সঙ্গে চুক্তি রয়েছে তার, পাশাপাশি জনপ্রিয় ভিডিও গেম রেইনবো সিক্স সিজ এক্স-এর অ্যাম্বাসেডর হিসেবেও কাজ করছেন।