ভুল ইমেইল পাঠিয়ে কর্মী ছাঁটাই: ক্ষমা চাইল অস্ট্রেলিয়ার ব্যাংক, মানসিক ধাক্কা কাটাতে দেবে কাউন্সেলিং

অস্ট্রেলিয়ার ব্যাংক এএনজেড ভুলবশত এক ইমেইলের মাধ্যমে একশোর বেশি সিনিয়র ব্যাংকারকে চাকরিচ্যুতির খবর জানিয়ে ফেলায় ক্ষমা চেয়েছে এবং তাদের জন্য মানসিক পরামর্শ (সাইকোলজিক্যাল কাউন্সেলিং) সুবিধা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। খবর রয়টার্স-এর।
বুধবার (২৭ আগস্ট) নির্ধারিত সময়ের আগে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পাঠানো ওই ইমেইলে কর্মীদের কম্পিউটার ফেরত দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়। পরে একই দিন এক অনলাইন কলের মাধ্যমে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করে যে সংশ্লিষ্ট কর্মীদের চাকরি হারাতে হবে।
এএনজেডের রিটেইল ব্যাংকিং বিভাগের ভারপ্রাপ্ত প্রধান ব্রুস রাশ কর্মীদের উদ্দেশে পাঠানো এক ইমেইলে লিখেছেন, 'দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা সহকর্মীদের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করার আগেই ইমেইলে কিছু সহকর্মীর চাকরি ছাড়ার তারিখ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে যে মানসিক চাপ সৃষ্টি হয়েছে তার জন্য আমি গভীরভাবে দুঃখিত।'
এএনজেডের নতুন প্রধান নির্বাহী ও সাবেক এইচএসবিসি নির্বাহী নুনো মাতোস চলতি বছরের মে মাসে দায়িত্ব নেওয়ার পর ব্যাংকের বড় ধরনের কাঠামোগত পরিবর্তন শুরু করেছেন। আগামী অক্টোবরেই তিনি কৌশলগত পুনর্গঠনের ঘোষণা দেবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এএনজেডের শেয়ার ইতোমধ্যে এ বছরে ১৮ শতাংশ বেড়ে ৩৩.৬৯ অস্ট্রেলিয়ান ডলারে পৌঁছেছে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ব্যাংকটি বেশ কিছু কেলেঙ্কারির মুখোমুখি হয়েছে। এর মধ্যে ছিল বন্ডের দামের কারসাজি এবং ট্রেডিং ফ্লোরে অনিয়মের অভিযোগে তদন্ত।
ব্যাংকটির পরিকল্পনা ছিল আগামী সপ্তাহে কর্মীদের কাছে চাকরিচ্যুতির ঘোষণা দেওয়া। কিন্তু ভুল ইমেইল পাঠানোর পরপরই ব্যাংক এক মুখপাত্রের মাধ্যমে জানায়, তারা সংশ্লিষ্ট কর্মীদের কাছে নিঃশর্তভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করেছে।
ফিনান্সিয়াল সেক্টর ইউনিয়ন (এফএসইউ) বলেছে, এ ঘটনায় কর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক ও মানসিক চাপ সৃষ্টি হয়েছে।
ইউনিয়নের জাতীয় সভাপতি ওয়েন্ডি স্ট্রিটস বলেন, 'চাকরিচ্যুতির মতো সংবেদনশীল খবর জানাতে ভুল ইমেইল ব্যবহার করা জঘন্য ও অসম্মানজনক।'
তিনি আরও বলেন, 'এসব ভুলই প্রমাণ করে যে এএনজেডের নতুন সিইও-এর চাপিয়ে দেওয়া অগোছালো পরিবর্তন কর্মীদের জন্য ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি করছে।'
এ মাসের শুরুর দিকে এএনজেডের বড় প্রতিদ্বন্দ্বী কমনওয়েলথ ব্যাংক অফ অস্ট্রেলিয়া ৪৫ জন কল সেন্টার কর্মীকে ছাঁটাই করে তাদের জায়গায় এআই চ্যাটবট বসানোর পরিকল্পনা করেছিল।
তবে বাড়তি কল সামলাতে না পেরে পরিকল্পনা বাতিল করতে হয়। পরে ব্যাংকটি কর্মীদের কাছে ক্ষমা চেয়ে তাদেরকে ফিরিয়ে আনার প্রস্তাব দেয়।
এ ঘটনায় ফিনান্সিয়াল সেক্টর ইউনিয়ন ফেয়ার ওয়ার্ক কমিশন, অস্ট্রেলিয়ার কর্মসংস্থান ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়ের করে।