“লজ্জা করে না?”— বাংলাভাষী বলে পশ্চিমবঙ্গের অধিবাসীকে বাংলাদেশে পুশ-ইন, বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ মমতার

শুধুমাত্র বাংলাভাষী হওয়ার দায়ে, পশ্চিমবঙ্গবাসী ভারতীয় নাগরিককে বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়ার ঘটনায় বিজেপির নেতৃত্বাধীন মহারাষ্ট্র সরকারের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আজ (১৬ জুন) পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় দেওয়া এক ভাষণে মমতা বলেন, "শুধু বাংলায় কথা বলার জন্য ওদের বাংলাদেশি বলা হচ্ছে। বাংলাদেশে পাঠানো হচ্ছে। লজ্জা করে না বিজেপির? নাগরিকত্বের প্রমাণপত্র থাকা সত্ত্বেও মহারাষ্ট্রে বিজেপি সরকার এটা করেছে। আমি এর তীব্র নিন্দা করছি।"
তিনি বলেন, বিজেপির তথাকথিত 'ডাবল ইঞ্জিন' সরকার যেখানে যেখানে আছে, সেখানেই বাংলা ভাষাভাষীদের নিশানা করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, মহারাষ্ট্রে পশ্চিমবঙ্গের তিনজন অভিবাসী শ্রমিককে 'বাংলাদেশি' সন্দেহে মুম্বাই পুলিশ আটক করে এবং যথাযথ যাচাই-বাছাই না করেই তাদের বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।
তবে পশ্চিমবঙ্গ সরকার বিষয়টি জানতে পারার পর রাজ্যের অভিবাসী শ্রমিক কল্যাণ বোর্ডের হস্তক্ষেপে সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) একটি ফ্ল্যাগ মিটিং করে ওই তিনজনকে ফের ভারতে ফিরিয়ে আনে।
পশ্চিমবঙ্গ অভিবাসী শ্রমিক কল্যাণ বোর্ডের চেয়ারম্যান সামিরাউল ইসলাম সামাজিক মাধ্যমে জানান, ফেরত আনা তিনজনই ভারতের নাগরিক—দু'জন মুর্শিদাবাদ এবং একজন পূর্ব বর্ধমান জেলার বাসিন্দা।
তিনি বলেন, ১০ জুন এ বিষয়ে বোর্ডের কাছে তথ্য আসার পরপরই মুম্বাই পুলিশকে প্রাসঙ্গিক পরিচয়পত্র সরবরাহ করা হয়। তা সত্ত্বেও পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে না জানিয়ে এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অবহিত না করেই তাদের বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
উল্লেখযোগ্যভাবে, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ভারত সরকার 'বিদেশি নাগরিক' শনাক্ত ও বহিষ্কারের নামে সন্দেহভাজন 'বাংলাদেশি' তাড়ানোর কার্যক্রম জোরদার করেছে।
এ প্রক্রিয়ায় শত শত মানুষকে কোনো ধরনের প্রমাণ ছাড়া সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়ার (পুশ ইনের) অভিযোগ উঠছে, যা দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা ও কূটনৈতিক টানাপড়েনও বাড়ানোর আশঙ্কা তৈরি করেছে।