পাকিস্তানের যুদ্ধবিমানের ধাওয়ায় পিছু হটেছে ভারতের রাফাল: পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম

ভারত অধিকৃত কাশ্মীরের আকাশসীমায় টহল দিচ্ছিল ভারতের কয়েকটি রাফাল যুদ্ধবিমান, এসময় পাকিস্তান বিমান বাহিনী (পিএএফ) সঙ্গেসঙ্গেই তাদের কিছু যুদ্ধবিমান স্ক্র্যাম্বল (উড্ডয়ন ও ধাওয়া) করে। এতে ভারতীয় জেটগুলো পিছু হটতে বাধ্য হয় বলে দাবি করেছে পাকিস্তানের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম।
সাম্প্রতিক পহেলগাম হামলার প্রেক্ষাপটে, ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে থাকায় এই ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ তৈরি করেছে। ভারত এই হামলার পেছনে পাকিস্তান জড়িত বলে দাবি করছে। অন্যদিকে, পাকিস্তানের রাজনৈতিক ও সামরিক নেতৃত্ব তা দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করেছে এবং দেশটির প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ একটি নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন।
পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম পিটিভি ও রেডিও পাকিস্তান জানায়, ভারতীয় বিমান বাহিনীর (আইএএফ) চারটি রাফাল যুদ্ধবিমান দখলীকৃত কাশ্মীরে রাতভর টহল চালায়, তবে তারা নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলওসি) অতিক্রম করেনি।
রেডিও পাকিস্তান জানায়, "পিএএফের জেটগুলো দ্রুত এই ভারতীয় যুদ্ধবিমানগুলোর উপস্থিতি শনাক্ত করে।"
পিটিভি বলেছে, "পাকিস্তান বিমান বাহিনীর তাৎক্ষণিক এবং সতর্ক প্রতিক্রিয়ায় ভারতীয় রাফালে জেটগুলো সন্ত্রস্ত হয়ে ফিরে যায়।"
ফ্রান্সের তৈরি ৩৬টি রাফায়েল যুদ্ধবিমান রয়েছে ভারতের হাতে। পাকিস্তানের সঙ্গে উত্তেজনার মধ্যে সোমবার এক বিবৃতিতে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা আরও ২৬টি রাফায়েল যুদ্ধবিমান কেনার চুক্তি করেছে।
পাকিস্তানের সরকার বা সামরিক বাহিনী এখনো এই ঘটনা নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বিস্তারিত কিছু জানায়নি।
এর আগেই পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার জানান, পাকিস্তানের কাছে "বিশ্বস্ত গোয়েন্দা তথ্য" রয়েছে যে, আগামী ২৪ থেকে ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান চালাতে পারে। গতকাল গভীর রাতে দেওয়া এক টিভি বিবৃতিতে তিনি বলেন, "পেহেলগাম হামলার মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগের অজুহাতে ভারত এমন পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে।"
গত ২২ এপ্রিলের ওই হামলায় ২৬ জন নিহত হয়, যাদের বেশিরভাগই ছিলেন পর্যটক। এটি ২০০০ সালের পর কাশ্মীরে অন্যতম ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা।
'কাশ্মীর রেজিস্ট্যান্স' বা 'দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট' প্রথমে দায় স্বীকার করলেও পরে সেটিকে "ভুল বোঝাবুঝি" বলে দায় অস্বীকার করে।
পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার গণমাধ্যমকে বলেন, "ভারত নিজেই নিজেকে বিচারক, জুরি ও শাস্তিদাতা হিসেবে দাবি করছে—যা সম্পূর্ণ দায়িত্বজ্ঞানহীন।" তিনি বলেন, পাকিস্তান নিজেও সন্ত্রাসবাদের শিকার এবং এ ধরনের হুমকিকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখে।
তিনি জানান, পাকিস্তান নিরপেক্ষ বিশেষজ্ঞদের দ্বারা পরিচালিত একটি বিশ্বাসযোগ্য, স্বচ্ছ ও স্বাধীন তদন্তের প্রস্তাব দিয়েছে, কিন্তু ভারত তা এড়িয়ে যাচ্ছে।
তারার বলেন, "ভারতের পক্ষ থেকে এই উত্তেজনা বাড়ানোর দায় ও তার পরিণতির সম্পূর্ণ দায়ভার তাদেরই নিতে হবে।" তিনি পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষায় "নির্ভয়ে ও কঠোরভাবে প্রতিরোধ" করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।
এরই মধ্যে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ইসহাক দার দেশটির পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ সিনেটে বলেন, "পাকিস্তান প্রথমে আঘাত হানবে না, তবে প্রতিশোধের অধিকার সংরক্ষণ করে।"
ভারতীয় ড্রোন ভূপাতিত
এর একদিন আগে পাকিস্তান সেনাবাহিনী দাবি করেছে, আজাদ জম্মু ও কাশ্মীরের (পাকিস্তান-শাসিত) দুটি অঞ্চলে ভারতের দুটি কোয়াডকপ্টার পাকিস্তানি আকাশসীমা লঙ্ঘন করলে সেগুলো ভূপাতিত করা হয়।
প্রথম ড্রোনটি ভূপাতিত হয় ভিম্বার জেলার মানাওয়ার সেক্টরে, এবং দ্বিতীয়টি পুঞ্চ বিভাগের সাটওয়াল সেক্টরে।