Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Thursday
June 05, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
THURSDAY, JUNE 05, 2025
পড়তে ‘ভুলে গেছে’ মার্কিন এলিট কলেজের শিক্ষার্থীরা!

আন্তর্জাতিক

রোজ হরোউইচ; দি আটলান্টিক
24 November, 2024, 10:30 am
Last modified: 24 November, 2024, 10:31 am

Related News

  • ‘স্ক্রিন এন্ড কালচার’ থেকে ‘কারেন্ট বুক হাউজ’: চট্টগ্রামে টিকে থাকা সবচেয়ে পুরোনো বইয়ের দোকান
  • বিশ্বের সবচেয়ে শিক্ষিত দেশ যেগুলো
  • ‘সুইডেনে আসবেন না’—আন্তর্জাতিক পিএইচডি শিক্ষার্থীদের সতর্কতা
  • ভারতের উচ্চশিক্ষা: গবেষণা ও প্রকাশনায় জালিয়াতি চরমে
  • ‘যুক্তরাজ্যে আসবেন না’; চাকরি না পেয়ে আমার ৯০% সহপাঠী ফিরে গেছেন: যুক্তরাজ্যপ্রবাসী নারী

পড়তে ‘ভুলে গেছে’ মার্কিন এলিট কলেজের শিক্ষার্থীরা!

রোজ হরোউইচ; দি আটলান্টিক
24 November, 2024, 10:30 am
Last modified: 24 November, 2024, 10:31 am
প্রতীকী ছবি: সংগৃহীত

নিকোলাস ডেমস ১৯৯৮ সাল থেকে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে 'লিটারেচার হিউম্যানিটিজ' (লিট হিউম) পড়াচ্ছেন। এ কাজ তিনি ভালোবাসেন। কিন্তু গত কয়েক বছরে তার কাজের পরিবেশ অনেকটাই বদলে গেছে। গত এক দশক ধরে পাঠ্যসূচির বইগুলো পড়ে শেষ করতে হিমশিম খাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। কলেজ শিক্ষার্থীরা যে সবসময় তাদের পাঠ্যসূচির সব বই পড়ে শেষ করতেন, এমনটা না। কিন্তু এখন সেই না পড়ার ধরন সম্পূর্ণ বদলে গেছে। ডেমসের শিক্ষার্থীরা এখন মনে করেন, এক সেমিস্টারে কয়েকটি বই পড়ে শেষ করা কার্যত অসম্ভব। 

ডেমসের সহকর্মীরাও একই সমস্যা লক্ষ করেছেন। বহু শিক্ষার্থী বই পড়ার অভ্যাস ও প্রস্তুতি নিয়ে কলেজে আসে না। অত্যন্ত নামীদামি এলিট কলেজেও এমনটা দেখা গেছে।

এই পরিবর্তনটা ডেমসকে রীতিমতো বিহ্বল করে দিয়েছিল। তবে ২০২২ সালের ফল সেমিস্টারে এক শিক্ষার্থীর কথা শুনে তার কাছে বিষয়টি কিছুটা পরিষ্কার হয়। ওই শিক্ষার্থী তার অফিসে এসে জানান, শুরুর দিকে পাঠ্যসূচির বইগুলো তার কাছে ভীষণ কঠিন মনে হয়েছে। লিট হিউম কোর্সে প্রায়ই শিক্ষার্থীদের এক-দুই সপ্তাহে একটি বই পড়তে হয়। মাঝেমধ্যে এসব বই অনেক বড় ও জটিল হয়। কিন্তু ওই শিক্ষার্থী জানান, স্কুলে তাকে কখনও পুরো একটি বই পড়তে দেওয়া হয়নি। তাকে শুধু বইয়ের নির্দিষ্ট কিছু অংশ, কবিতা ও সংবাদ নিবন্ধ পড়তে দেওয়া হতো—কিন্তু গোটা একটি বই কখনও পড়তে বলা হয়নি।

এ কথা শুনে বিস্ময়ে ডেমসের 'চোয়াল ঝুলে পড়ে'। এই ঘটনাই তাকে শিক্ষার্থীদের আচরণে পরিবর্তনের কারণ জানিয়ে দেয়। শিক্ষার্থীদের পড়ার ইচ্ছা নেই, এমন নয়। আসলে কীভাবে পড়তে হবে, তা-ই জানে না তারা। কারণ, যুক্তরাষ্ট্রের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলো শিক্ষার্থীদের বই পড়তে দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে।

উপন্যাসের ইতিহাস নিয়ে গবেষণা করা ডেমস অবশ্য স্বীকার করেন, এই সমস্যা নতুন নয়। তবু তিনি মনে করেন, 'আমরা এমন একটি পরিবর্তন দেখছি, যা উপেক্ষা করা উচিত নয়।' 

দুই দশক আগে ডেমসের ক্লাসের শিক্ষার্থীরা অনায়াসে এক সপ্তাহে 'প্রাইড অ্যান্ড প্রেজুডিস', পরের সপ্তাহে 'ক্রাইম অ্যান্ড পানিশমেন্ট' নিয়ে গভীর আলোচনা করতে পারতেন। এখন শিক্ষার্থীরা প্রথমেই বলে দেন, এত বিশাল বিশাল বই পড়া তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। শুধু যে সময়ে অভাব, তা নয়—শিক্ষার্থীরা গল্পের ছোট ছোট বিষয় বুঝতে এবং প্লট হৃদয়ঙ্গম করতেও হিমশিম খাচ্ছেন।

এই সমস্যা নিয়ে বিশদ তথ্য নেই। তবে এই প্রতিবেদনের লেখক যে ৩৩ জন অধ্যাপকের সঙ্গে কথা বলেছেন, তাদের বেশিরভাগ একই অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন। প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসবিদ অ্যান্থনি গ্রাফটন বলেন, এখন তার ক্লাসে যেসব শিক্ষার্থী নতুন আসেন, তাদের শব্দভান্ডার থাকে সীমিত, ভাষা বোঝার দক্ষতা কম। কিছু শিক্ষার্থী অবশ্য যারা দক্ষভাবে পড়তে ও সুন্দরভাবে লিখতে পারে—কিন্তু তারা এখন ব্যতিক্রম। ভার্জিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের চীনা সাহিত্যের অধ্যাপক জ্যাক চেন লক্ষ করেছেন, শিক্ষার্থীরা জটিল কোনো বিষয় বুঝতে না পারলে একরকম 'শাটডাউন' হয়ে যায়। তারা আগের শিক্ষার্থীদের মতো দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হয়ে চ্যালেঞ্জিং টেক্সট পড়তে পারে না। জর্জটাউনের ইংরেজি বিভাগের চেয়ারপারসন ড্যানিয়েল শোর বলেন, তার শিক্ষার্থীরা একটি ১৪ লাইনের সনেটেও বেশিক্ষণ মনোযোগ ধরে রাখতে পারে না।

এই প্রবণতার কারণ হতে পারে স্মার্টফোনের প্রভাব। টিনেজারর সারাক্ষণই ডিভাইসে মশগুল থাকে। এই অভ্যাসের প্রভাব পড়ে তাদের কলেজ জীবনে। কলেজে গিয়ে পড়তে গেলে বারবার তাদের মনোযোগ ছুটে যায়। মনোবিজ্ঞানী ড্যানিয়েল উইলিংহ্যাম বলেন, 'কোন বিষয় মনোযোগ পাওয়ার যোগ্য, সে সম্পর্কে মানুষের ধারণা বদলে দিয়েছে এটি।' 

আনন্দের জন্য বই পড়াও টিকটক, ইনস্টাগ্রাম, ইউটিউবের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় কুলিয়ে উঠতে পারছে না। ১৯৭৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ৪০ শতাংশ উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষার্থী বলেছিল, তারা আগের বছরে অবসর কাটাতে অন্তত ছয়টি বই পড়েছে—আর কোনো বই-ই পড়েনি ১১.৫ শতাংশ। ২০২২ সালে এসে এই হার উল্টে গেছে।

তবে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলে শ্রেণিকক্ষেও শিক্ষার্থীদের বই পড়া ক্রমশই কমছে। গত দুই দশকের বেশি সময় ধরে 'নো চাইল্ড লেফট বিহাইন্ড' ও 'কমন কোর'-এর মতো নতুন শিক্ষা-উদ্যোগগুলো তথ্যভিত্তিক পাঠ ও স্ট্যান্ডার্ডাইজড পরীক্ষার ওপর জোর দিয়েছে। এর ফলে অনেক স্কুলে শিক্ষকরা বইয়ের বদলে ছোট ছোট তথ্যভিত্তিক অনানুষ্ঠানিক অনুচ্ছেদ পড়ানোর ওপর জোর দিচ্ছেন। এসব অনুচ্ছেদে লেখকের মূল ভাবনা নিয়ে নানা প্রশ্ন থাকে।

স্ট্যানফোর্ডের শিক্ষাবিদ অন্তেরো গার্সিয়া বলেন, নতুন নির্দেশনাগুলো শিক্ষার্থীদের যুক্তি তৈরি ও তথ্য বিশ্লেষণের দক্ষতা বাড়াতে সহায়ক। কিন্তু 'তা করতে গিয়ে আমরা শিক্ষার্থীদের বড় আকারের লেখায় দাঁত ফোটানোর ক্ষমতাকে বিসর্জন দিয়েছি'—বলেন তিনি।

প্রায় দুই দশক বোস্টন ও নিউইয়র্কের বিভিন্ন স্কুলে শিক্ষকতা ও প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করেছেন মাইক স্কলকা। তিনি বলেন, গ্রেড পর্যায়ে বইয়ের জায়গা নিয়েছে বইয়ের অংশবিশেষ।  

দেশজুড়ে পাঠ্যক্রম প্রস্তুতে শিক্ষকদের সহায়তা করেন ক্যারল জ্যাগো। তিনি জানান, অনেক শিক্ষকই তাকে বলেছেন যে তারা এখন আর 'মাই আন্তোনিয়া' ও 'গ্রেট এক্সপেক্টেশনস'-এর মতো উপন্যাস পড়ান না। করোনা মহামারির সময় সিলেবাস ওলটপালট হয়ে যায়, পাঠদান শুরু হয় অনলাইনে। সে সময় এই প্রবণতা আরও জোরালো হয়েছে।

এডউইক রিসার্চ সেন্টার -এর এক সাম্প্রতিক জরিপে অংশ নেওয়া তৃতীয় থেকে অষ্টম গ্রেডের প্রায় ৩০০ জন শিক্ষকের মধ্যে মাত্র ১৭ শতাংশ বলেছেন, তারা ক্লাসে পুরো বই পড়ান। ৪৯ শতাংশ শিক্ষক জানিয়েছেন, তারা বইয়ের সঙ্গে সংকলন ও অংশবিশেষ মিলিয়ে পড়ান। তবে প্রায় এক-চতুর্থাংশ শিক্ষকই বলেছেন, বই এখন আর তাদের পাঠ্যক্রমের কেন্দ্রবিন্দু নয়।

ইলিনয়ের একটি সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক এই প্রতিবেদককে বলেন, তিনি আগে তার ক্লাস নেওয়ার পরিকল্পনা সাজাতেন  বইকে কেন্দ্র করে। এখন তিনি শিক্ষার্থীদের দক্ষতা উন্নয়নে মনোযোগ দেন, যেমন কী করে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হয়। উদাহরণস্বরূপ, নেতৃত্ব-সংক্রান্ত একটি অধ্যায়ে শিক্ষার্থীরা হোমারের 'অডিসি'-র কিছু অংশ পড়ে এবং এর সঙ্গে গান, নিবন্ধ ও টেড টক যোগ করে। তিনি অবশ্য আশ্বস্ত করেছেন যে, তার শিক্ষার্থীরা প্রতি সেমিস্টারে অন্তত দুটি সম্পূর্ণ বই পড়ে।

আটলান্টার এক অ্যাডভান্সড প্লেসমেন্ট ইংলিশ লিটারেচার শিক্ষক জানান, আগে তাদের ক্লাসে বছরে ১৪টি বই পড়ানো হতো। এখন তা কমে ৬ বা ৭টিতে নেমে এসেছে।

বেসরকারি স্কুলগুলোতে—যেগুলো থেকে অভিজাত কলেজে বেশি শিক্ষার্থী সুযোগ পায়—গোটা বই পড়ানোর চর্চা একটু ধীরগতিতে কমছে। তবে এই স্কুলগুলোও ধীরে ধীরে গোটা বই পড়ানো বাদ দিচ্ছে। এই প্রতিবেদনের লেখক নিজে যে প্রিপারেটরি স্কুলে পড়েছেন, সেখানে শেষ বর্ষে তিনি জেন অস্টেনের ওপর একটি কোর্স নিয়েছিলেন। ওই কোর্সে তিনি জেন অস্টেনের শুধু একটি উপন্যাসই পড়েছিলেন।

ডেমস ও অন্য অধ্যাপকদের মতে, এই সমস্যাটি একটু আলাদা। কমিউনিটি কলেজ বা কম প্রতিযোগিতামূলক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অনেকসময়ই ভাষাজ্ঞান ও বোধগম্যতায় একটু ঘাটতি নিয়ে ভর্তি হন। কলম্বিয়ার মতো নামী প্রতিষ্ঠানের ভালো ফল করা শিক্ষার্থীরা শব্দ ও বাক্যের অর্থ বুঝতে পারে। কিন্তু তারা দীর্ঘ লেখা মনোযোগ দিয়ে পড়ার ধৈর্য বা আগ্রহ ধরে রাখতে হিমশিম খান। 

এই পরিস্থিতিতে অনেক অধ্যাপক কম বই পড়াতে বাধ্য হচ্ছেন। ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বার্কলে)-এর অধ্যাপক ভিক্টোরিয়া কান ১৯৯৭ সাল থেকে সাহিত্য পড়াচ্ছেন। আগে তিনি শিক্ষার্থীদের প্রতি সপ্তাহে ২০০ পৃষ্ঠা পড়তে দিতেন। এখন এর অর্ধেকেরও কম পড়তে দেন। তিনি বলেন, 'আমি "ইলিয়াড" পুরোটা পড়াই না। এর বাছাই করা কিছু অংশ পড়াই।' শিক্ষার্থীদের তিন সপ্তাহ সময় দিলেও তারা গোটা 'ইলিয়াড' পড়বেন না বলে মন্তব্য করেন তিনি।

কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘদিনের আমেরিকান স্টাডিজের ওপর অধ্যাপনা করছেন অ্যান্ড্রু ডেলবাঙ্কো। তিনি এখন আর বিস্তৃত পরিসরে সাহিত্য পড়ান না, ছোট ছোট আমেরিকান গদ্য পড়ান। আগে যেখানে তিনি 'মবি-ডিক' পড়াতেন, এখন তার শিক্ষার্থীরা পড়ছেন 'বিলি বাড', 'বেনিতো সেরেনো' ও 'বার্টলবি, দ্য স্ক্রিভনার'-এর মতো ছোট আকারের লেখা। এর অবশ্য কিছু সুবিধা আছে—ছোট লেখায় ভাষার কারুকাজ ও সূক্ষ্মতা বোঝার জন্য বেশি সময় দেওয়া যায়। ডেলবাঙ্কো এই পরিবর্তন মেনে নিয়েছেন। তিনি বলেন, 'সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হয়।'

কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের লিট হিউমের পাঠ্যক্রম প্রস্তুতকারী চলতি শিক্ষাবর্ষে পড়ার তালিকা সংক্ষিপ্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। গত কয়েক বছর ধরে তালিকায় নতুন নতুন বই যোগ হলেও শিক্ষার্থীরা হিমশিম খাচ্ছিলেন। 

তবে ডেলবাঙ্কোর মতো কিছু শিক্ষক মনে করেন, কম বই পড়ানোর সুবিধাও রয়েছে। অতীতে সেরা প্রস্তুতি নেওয়া শিক্ষার্থীও হয়তো পাঠ্যক্রমের চাপে লিট হিউমের কিছু অ্যাসাইনমেন্ট বাদ দিয়ে গেছেন। কলম্বিয়ার লিট হিউম প্রোগ্রামের প্রধান জোসেফ হাওলি বলেন, তিনি চান শিক্ষার্থীরা কিছু ক্লাসিক পড়া বাদ দিলেও—যেমন 'ক্রাইম অ্যান্ড পানিশমেন্ট' বা দেওয়া হয়েছে—বাকি বইগুলো আরও গভীর মনোযোগ দিয়ে পড়ুক। আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, এর ফলে শিক্ষার্থীদের সঠিকভাবে পড়ার কৌশল শেখাতে বেশি সময় পাবেন শিক্ষকরা।

তবে পাঠ্যক্রম সংক্ষিপ্ত করলেই শিক্ষার্থীদের মধ্যে বই পড়ার প্রতি আগ্রহ বাড়বে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। অনেক বিশেষজ্ঞের মতে, দক্ষতা কমে যাওয়ার কারণে বই পড়া কমেনি; কমেছে মূলত মানসিকতা বদলে যাওয়ায়। তাদের দাবি, শিক্ষার্থীরা এখনও বই পড়তে পারে, কিন্তু তারা স্রেফ সেই আগ্রহ বা প্রয়োজন অনুভব করে না। এখনকার শিক্ষার্থীরা আগের তুলনায় তাদের কর্মজীবন নিয়ে অনেক বেশি চিন্তিত। প্রতি বছরই শিক্ষার্থীরা হাওলিকে বলেন, লিট হিউমের ক্লাসের পড়াশোনা তারা উপভোগ করলেও, কর্মজীবনে বেশি কাজে লাগবে এমন কোনো বিষয়ে ডিগ্রি নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের।

যে কারণগুলো মানবিক বিষয়ে শিক্ষার্থীদের সংখ্যা কমিয়েছে, সেই কারণগুলোই সম্ভবত তাদের নেওয়া কোর্সে বই পড়ার সময়ও কমিয়ে দিয়েছে। ২০২৩ সালে হার্ভার্ডের চূড়ান্ত বর্ষের শিক্ষার্থীদের এক জরিপে দেখা গেছে, তারা পড়াশোনার পাশাপাশি চাকরি ও সহশিক্ষামূলক কার্যক্রমেও সমান সময় ব্যয় করেন। এছাড়া গ্রেড বাড়ার কারণে (এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, হার্ভার্ডের ৭৯ শতাংশ শিক্ষার্থী 'এ' গ্রেড পায়) সব কাজ পুরোপুরি শেষ না করলেও শিক্ষার্থীদের চলে যাচ্ছে।

এসবের ফলে আগের তুলনায় বর্তমান প্রজন্মের শিক্ষার্থীরা বই পড়ায় কম সময় দিচ্ছে। বয়স বাড়ার পর হয়তো তারা বই পড়া বাড়াতে পারেন—প্রবীণদের মধ্যে বই পড়ার প্রবণতা বেশি—কিন্তু পরিসংখ্যান বলছে, তথ্য-উপাত্ত খুব একটা আশাব্যঞ্জক নয়। আমেরিকান টাইম ইউজ সার্ভে-র তথ্যে দেখা গেছে, গত দুই দশকে বিনোদনের জন্য বই পড়ার মানুষের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে।

কয়েকজন শিক্ষক জানান, তাদের শিক্ষার্থীরা বই পড়াকে এখন অতীতের স্মৃতির মতো মনে করেন। তারা মনে করেন, বই পড়া অনেকটা ভিনাইল রেকর্ড শোনার মতো—একটি ছোট গোষ্ঠী হয়তো এখনও কাজটি উপভোগ করে, কিন্তু এটি মূলত অতীতের স্মৃতিচিহ্ন।

প্রকাশনা শিল্পের অর্থনৈতিকভাবে টিকে থাকা নির্ভর করে এমন পাঠকগোষ্ঠীর উপর, যারা বড় লেখার সঙ্গে সময় কাটাতে আগ্রহী ও সক্ষম। তবে সাহিত্যপত্রিকার পাঠকরা বুঝবেন, এখানে শুধু একটি ঐতিহ্যবাহী শিল্পের ভবিষ্যৎই নয়, আরও অনেক কিছুই ঝুঁকির মুখে। বই মানুষের মন বড় করে, মানুষের মধ্যে সহমর্মিতা গড়ে তোলে। 

বার্কলি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ভিক্টোরিয়া কান বলেন, 'সহমর্মিতার বর্তমান ধারণাগুলো প্রায়ই পরিচয় বা পরিচয় রাজনীতির ওপর নির্ভরশীল। তবে বই পড়া এর চেয়ে অনেক জটিল বিষয়, তাই এটি অনুভূতির পরিধি আরও বড় করে।'

তবে এই উপকার পেতে হলে পাঠককে কোনো চরিত্রের পুরো যাত্রার সঙ্গে থাকতে হয়। সংক্ষিপ্ত ৫ বা ৩০ পৃষ্ঠার অংশবিশেষ পড়ে এর গভীরতা উপলব্ধি সম্ভব নয়। স্নায়ুবিজ্ঞানী মেরিয়েন উলফের মতে, যাকে 'গভীর পাঠ' বলা হয়—একটি লেখার মধ্যে সম্পূর্ণ ডুবে যাওয়া—তা সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা ও আত্ম-পর্যালোচনার মতো মূল্যবান মানসিক দক্ষতা বাড়ায়। ভাসা ভাসা বা টুকরো টুকরো পড়ায় এসব দক্ষতা অর্জিত হয় না।

এই লেখক যেসব অধ্যাপকদের সঙ্গে কথা বলেছেন, তারা তরুণদের পাঠাভ্যাস নিয়ে হতাশাজনক চিত্র এঁকেছেন। তবে ইতিহাসবিদ অ্যাড্রিয়ান জনস কিছুটা ভিন্নমত পোষণ করেছেন। তিনি বলেন, 'আমার অভিজ্ঞতা একটু ব্যতিক্রম। কারণ, শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয় যেন সেই শেষ দুর্গ, যেখানে মানুষ এখনও গভীরভাবে পড়াশোনা করে।'

অধ্যাপক ডেমস দীর্ঘদিন ধরে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের কাছে জানতে চান, তাদের প্রিয় বই কী। আগে শিক্ষার্থীরা 'উদারিং হাইটস' বা 'জেন আয়ার'-এর মতো বইয়ের নাম বলত। কিন্তু এখন প্রায় অর্ধেক শিক্ষার্থীই ইয়াং-অ্যাডাল্ট ঘরানার বইয়ের নাম বলে। বিশেষ রিক রাইঅর্ড্যানের 'পার্সি জ্যাকসন' সিরিজ বেশ জনপ্রিয়।

অবশ্য লিট হিউমের মতো ক্লাসের প্রস্তুতির জন্য এটি হয়তো খুব একটা খারাপ নয়। রাইঅর্ডায়নের সিরিজে উত্তেজনাপূর্ণ অ্যাকশন এবং কখনও কখনও কিশোরসুলভ হাস্যরস থাকলেও, এ সিরিজে প্রাচীন সাহিত্যিক চর্চাকে নতুনভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। তবে এ সিরিজের জনপ্রিয়তার কারণও আছে—হাজার বছরের পরিবর্তন সত্ত্বেও আমরা মূল গল্পগুলো ভুলিনি। মানবজীবনের গভীরতা বুঝতে এবং মানুষের সেরা অর্জনগুলো উপলব্ধি করতে 'ইলিয়াড' পুরোটা পড়ার বিকল্প নেই।

Related Topics

টপ নিউজ

বই পড়া / বই / শিক্ষা / উচ্চশিক্ষা / বই পড়ার অভ্যাস

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক: নির্বাচন নিয়ে বাদানুবাদে জড়ায় বিএনপি ও এনসিপি
  • বীর মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞায় পরিবর্তন এনে অধ্যাদেশ জারি; আহতদের সেবাদানকারী চিকিৎসক, নার্সরাও পেলেন স্বীকৃতি
  • সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য সুখবর: ১০–১৫ শতাংশ বিশেষ সুবিধা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি, কার্যকর ১ জুলাই
  • ‘একটি ফুলকে বাঁচাব বলে’ গানের শিল্পী আপেল মাহমুদ প্রমাণ দিলেন তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধা
  • ১৮ মাসের প্রস্তুতি, রাশিয়ায় ড্রোন পাচার: যেভাবে রুশ বিমানঘাঁটিতে ইউক্রেনের দুঃসাহসিক হামলা

Related News

  • ‘স্ক্রিন এন্ড কালচার’ থেকে ‘কারেন্ট বুক হাউজ’: চট্টগ্রামে টিকে থাকা সবচেয়ে পুরোনো বইয়ের দোকান
  • বিশ্বের সবচেয়ে শিক্ষিত দেশ যেগুলো
  • ‘সুইডেনে আসবেন না’—আন্তর্জাতিক পিএইচডি শিক্ষার্থীদের সতর্কতা
  • ভারতের উচ্চশিক্ষা: গবেষণা ও প্রকাশনায় জালিয়াতি চরমে
  • ‘যুক্তরাজ্যে আসবেন না’; চাকরি না পেয়ে আমার ৯০% সহপাঠী ফিরে গেছেন: যুক্তরাজ্যপ্রবাসী নারী

Most Read

1
বাংলাদেশ

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক: নির্বাচন নিয়ে বাদানুবাদে জড়ায় বিএনপি ও এনসিপি

2
বাংলাদেশ

বীর মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞায় পরিবর্তন এনে অধ্যাদেশ জারি; আহতদের সেবাদানকারী চিকিৎসক, নার্সরাও পেলেন স্বীকৃতি

3
বাংলাদেশ

সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য সুখবর: ১০–১৫ শতাংশ বিশেষ সুবিধা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি, কার্যকর ১ জুলাই

4
বাংলাদেশ

‘একটি ফুলকে বাঁচাব বলে’ গানের শিল্পী আপেল মাহমুদ প্রমাণ দিলেন তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধা

5
আন্তর্জাতিক

১৮ মাসের প্রস্তুতি, রাশিয়ায় ড্রোন পাচার: যেভাবে রুশ বিমানঘাঁটিতে ইউক্রেনের দুঃসাহসিক হামলা

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net