জাপানে মরণঘাতী ‘মাংসখেকো’ ব্যাকটেরিয়া

করোনার পর এবার অন্য এক ভাইরাসের শঙ্কায় গোটা বিশ্ব। সম্প্রতি জাপানে বেশ দ্রুত ছড়াচ্ছে ভয়াবহ এক ব্যাকটেরিয়া। এটি সাধারণ ভাষায় 'মাংসখেকো' ব্যাকটেরিয়া রোগ নামে পরিচিত। যাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় বলা হচ্ছে স্ট্রেপ্টোকোকাল টক্সিক শক সিনড্রোম।
ব্লুমবার্গের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই ভয়ানক রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে যন্ত্রণাদায়ক মৃত্যুতে ঢলে পড়ছেন। জাপানের ন্যাচারাল ইনস্টিটিউট অফ ইনফেকশন ডিজিজেসের প্রকাশিত সরকারি তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জুন মাস পর্যন্ত এখনও পর্যন্ত দেশটিতে ৯৭৭টি কেস নথিভুক্ত হয়েছে।
গত বছরে তুলনায় এই বছর সংখ্যাটি ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে। চিকিৎসকেরা অনুমান করছেন, ভবিষ্যতে জাপানে প্রতি বছর ২৫০০ জন মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। মৃত্যুর হার পৌঁছে যেতে পারে ৩০ শতাংশে।
মূলত 'গ্রুপ এ' স্ট্রেপ্টোকক্কাস ব্যাকটেরিয়া দ্বারা এই রোগ হয়। এটি শিশু ও বয়স্কদের জন্য ভীষণভাবে বিপজ্জনক। এই রোগ ইতোমধ্যেই ইউরোপের প্রায় ৫০টি দেশের মধ্যে ছড়িয়েছে। ভাইরাসটি আয়ারল্যান্ড, নেদারল্যান্ড, ব্রিটেন, ফ্রান্স ও সুইডেনেও শনাক্ত করা হয়েছে।
ব্লুমবার্গের মতে, এই ব্যাকটেরিয়ার ফলে তৈরি হওয়া সংক্রমণে আক্রান্তের গলা ব্যথা বা গলা ফোলা ভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। পরবর্তী সময়ে এই গলা ব্যথা জ্বর, নিম্ন রক্তচাপ, অর্গান ফেলিওর এবং শেষ পর্যন্ত মৃত্যুতে পরিণত হচ্ছে।
চিকিৎসকদের মতে, হঠাৎ জ্বর বা অন্য কোনও সমস্যা হলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত। কোনও লক্ষণকেই এখন ফেলে রাখা যাবে না।
রোগটি মোকাবিলায় বাজারে জেবি নামক একটি ভ্যাকসিন পাওয়া যায়। যা শরীরে অ্যান্টিবায়োটিক তৈরি করে। সব থেকে বড় কথা এই রোগটি এক ব্যক্তি থেকে অন্য ব্যক্তিতে খুব তাড়াতাড়ি ছড়িয়ে যায়।
খুব সামান্য কিছু নিয়ম মেনে চললে এই ভাইরাস থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। সামাজিক দূরত্ব বিধি বজায় রাখা, বারবার হাত ধোওয়া, শরীরের কোথাও কেটে গেলে তা পরিষ্কার করে ঢেকে রাখা প্রয়োজন। এই পদক্ষেপগুলি আপনাকে ভাইরাসের হাত থেকে মুক্তি দিতে পারবে।
২০২২ সালের শেষ থেকে ইউরোপীয় দেশগুলিতে এই ভাইরাস ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানা গেছে। মনে করা হচ্ছে, মহামারি পরবর্তী সময়ে বিধি-নিষেধ শিথিল করার পর থেকেই এই ভাইরাস দ্রুত ছড়িয়েছে।