চুইংগাম থেকে নেওয়া ডিএনএ পরীক্ষায় ৪১ বছর পর ধরা পড়ল হত্যামামলার আসামি

চিবিয়ে ফেলে দেওয়া চুইংগামের সূত্র ধরে হত্যাকাণ্ডের ৪১ বছর পর ধরা পড়েছে অপরাধী। বিচারে তার অপরাধের প্রমাণও মিলেছে। ১৯৮০ সালে বারবারা টাকার নামে এক কলেজ শিক্ষার্থীকে হত্যার ঘটনায় গত সপ্তাহে আদালত তাকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন। তার নাম রবার্ট প্লিমপ্টন (৬০)।
ঘটনাটি যুক্তরাষ্ট্রের অরেগন অঙ্গরাজ্যের। ১৯৮০ সালের ১৫ জানুয়ারি ১৯ বছর বয়সী টাকার অপহরণের শিকার হন। তাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়। পরদিন সকালে অরেগনের গ্রেশাম শহরের একটি কলেজের পাশ থেকে টাকারের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
কিন্তু এ ঘটনায় একের পর এক অভিযান চালিয়েও আসল অপরাধীর হদিস পাচ্ছিল না পুলিশ।
টাকারের ময়নাতদন্তের সময় তার দেহ থেকে সংগৃহীত নমুনা ও পুলিশের দেওয়া সন্দেহভাজন কয়েকজন অপরাধীর নমুনা দিয়ে চিকিৎসকরা একটি ডিএনএ প্রোফাইল তৈরি করেন। এসব ডিএনএ পরীক্ষার পর চিকিৎসকরা পুলিশকে জানান যে যিনি টাকারকে ধর্ষণ ও হত্যা করেছেন, তার মাথার চুল লালরঙা হওয়ার সম্ভাবনা খুবই বেশি।
চিকিৎসকদের কাছ থেকে পাওয়া প্রাথমিক এই সূত্র ধরেই সন্দেহভাজন অপরাধীকে খুঁজতে শুরু করে পুলিশ। একপর্যায়ে ২০২১ সালের মার্চে পুলিশ রবার্টের সন্ধান পান। তখন থেকেই তার গতিবিধি নজরে রাখা শুরু হয়। এরপর একদিন গোয়েন্দা সদস্যরা রবার্টের চিবিয়ে ফেলে দেওয়া একটি চুইংগাম সংগ্রহ করতে সক্ষম হন।
পরে চিকিৎসকরা সেই চুইংগাম থেকে সংগৃহীত নমুনার সঙ্গে টাকারের দেহ থেকে সংগৃহীত নমুনাগুলোর পরীক্ষা করেন। এতে নমুনা মিলে যাওয়ায় ২০২১ সালের ৮ জুন রবার্টকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
পরে সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে এ ঘটনায় রবার্টকে গত সপ্তাহে দোষী সাব্যস্ত করেছেন আদালত।
তবে রবার্ট নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন। তার আইনজীবী স্টিফেন হোজ ও জ্যাকব হোজ জানিয়েছেন, তারা এ বিষয়ে আপিল করবেন।

রবার্টকে গ্রেপ্তারের পর এক বিবৃতিতে তৎকালীন পুলিশ প্রধান ক্লডিও গ্রান্ডজিন বলেছিলেন, 'আমরা ঘটনাটি ভুলে যাইনি। কিংবা ঘটনাটি আমাদের কাছ থেকে হারিয়েও যায়নি।'
টাকারের বোন সুসান পেটার বলেছিলেন, 'এটি সত্যিই খুব ভালো খবর। আমি তো হালই ছেড়ে দিয়েছিলাম।'
রবার্ট এখন মাল্টনোমাহ কাউন্টিতে হেফাজতে রয়েছেন। আগামী জুনে তার সাজা শুনানির দিন ধার্য রয়েছে।
অনুবাদ: রেদওয়ানুল হক