Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Friday
June 20, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
FRIDAY, JUNE 20, 2025
'৪৩ বাংলার দুর্ভিক্ষের সাক্ষী শেষ জীবিতদের সন্ধানে

আন্তর্জাতিক

কবিতা পুরী; বিবিসি
23 February, 2024, 08:10 pm
Last modified: 26 February, 2024, 07:31 pm

Related News

  • আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনে ভারতীয় নীতিনির্ধারকেরা ষড়যন্ত্র করছে: রিজভী
  • ভারতে গাছের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় বাংলাদেশি তরুণের মরদেহ উদ্ধার
  • বন্দুকের মুখে মুসলিম নাগরিকদের অবৈধভাবে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাচ্ছে ভারত, দাবি মানবাধিকার সংগঠনগুলোর
  • ভারতে কারাভোগ শেষে দেশে ফিরেছেন ১৪ বাংলাদেশি
  • “লজ্জা করে না?”— বাংলাভাষী বলে পশ্চিমবঙ্গের অধিবাসীকে বাংলাদেশে পুশ-ইন, বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ মমতার

'৪৩ বাংলার দুর্ভিক্ষের সাক্ষী শেষ জীবিতদের সন্ধানে

এই দুর্ভিক্ষে নিহতদের স্মরণে পৃথিবীর কোথাও কোনো স্মৃতিসৌধ, জাদুঘর এমনকি একটি ফলকও নেই। তবে এখনও এই ভয়াবহ বিপর্যয় থেকে বেঁচে যাওয়া কয়েকজন মানুষ জীবিত আছেন।
কবিতা পুরী; বিবিসি
23 February, 2024, 08:10 pm
Last modified: 26 February, 2024, 07:31 pm
দুর্ভিক্ষের কারণে শ্রীপতিচরণ সামন্ত তার নিজের গ্রাম ছেড়ে শহরে আসতে বাধ্য হয়েছিলেন। ছবি: শৈলেন সরকার/বিবিসি

১৯৪৩ সালের বাংলার দুর্ভিক্ষ বা পঞ্চাশের মন্বন্তরে পূর্ব ভারতের ৩০ লাখেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারায়।

এটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মিত্র পক্ষের বেসামরিক প্রাণহানির সবচেয়ে করুণ ঘটনাগুলোর একটি।

এই দুর্ভিক্ষে নিহতদের স্মরণে পৃথিবীর কোথাও কোনো স্মৃতিসৌধ, জাদুঘর এমনকি একটি ফলকও নেই। তবে এখনও এই ভয়াবহ বিপর্যয় থেকে বেঁচে যাওয়া কয়েকজন মানুষ জীবিত আছেন।

এদের একজন বিজয়কৃষ্ণ ত্রিপাঠী। তিনি আমাদের সঙ্গে তার জীবনের সেই কঠিন সময়ের কিছু গল্প তুলে ধরেছেন।

'ক্ষুধা আমাদের তাড়া করে বেড়াত'

তিনি বলেন, 'সেসময় অনেকে সামান্য ভাতের জন্য তাদের ছেলে-মেয়েদের বিক্রি করে দিয়েছে। অনেকের স্ত্রী ও যুবতী নারীরা পরিচিত বা অপরিচিত পুরুষের হাত ধরে পালিয়ে গেছে।'

এভাবেই বাংলার দুর্ভিক্ষের সময় খাবারের সন্ধানে মানুষ যে-সব মরিয়া পদক্ষেপ নিয়েছে তার কিছু বর্ণনা দিয়েছেন বিজয়কৃষ্ণ ত্রিপাঠী।

ভয়াবহ সেই দুর্ভিক্ষের স্মৃতি মনে থাকা শেষ মানুষদের মধ্যে বিজয়কৃষ্ণ অন্যতম। তিনি তার সঠিক বয়স জানেন না। তবে ভোটার কার্ড বলছে তার বয়স ১১২ বছর।

বিজয়কৃষ্ণ ত্রিপাঠী ও শৈলেন সরকার।

ক্ষীণ কণ্ঠে ধীরে ধীরে তিনি বলতে থাকেন পশ্চিম বাংলার মেদিনীপুর জেলায় তার বেড়ে ওঠার কথা। ভাত ছিল এখানকার মানুষের প্রধান খাদ্য।

তার মনে আছে, ১৯৪২ সালের গ্রীষ্মে চালের দাম কীভাবে 'লাফিয়ে লাফিয়ে' বেড়েছিল।

এরপর আসে অক্টোবর মাসের সেই প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়। যে ঝড়ে তাদের বাড়ির ছাদ উড়ে যায় এবং ধানের ফলন নষ্ট হয়ে যায়। তার পরিবারের মানুষদেরও চাল কেনার সামর্থ্য ছিল না।

বিজয়কৃষ্ণ বলেন, 'সবসময় ক্ষুধা আমাদের তাড়া করে বেড়াত। ক্ষুধা ও মহামারি। একে একে সব মানুষ মরতে শুরু করে।'

তার কিছু খাদ্য ত্রাণ সহায়তা পাওয়ার কথাও মনে আছে।

তিনি জানান, কিন্তু প্রয়োজন অনুযায়ী ত্রাণ সহায়তার পরিমাণ ছিল অপ্রতুল।

বিজয়কৃষ্ণ বলেন, 'যারা বেঁচেছে, সবাইকে আধপেটা খেয়েই বাঁচতে হয়েছে। খাবার অভাবে গ্রামের বহু মানুষ মারা গেল। খাবারের সন্ধানে মানুষ একসময় লুটপাট শুরু করল।'

বারান্দায় দাঁড়িয়ে তার কথা শুনছিলেন তার পরিবারের চার প্রজন্ম।

এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন শৈলেন সরকার, যিনি গত কয়েক বছর ধরে বাংলার গ্রামাঞ্চলে ঘুরে ঘুরে সেই দুর্ভিক্ষ থেকে বেঁচে যাওয়া মানুষদের কাছ থেকে প্রত্যক্ষ বিবরণ সংগ্রহ করছেন।

৭২ বছর বয়সী শৈলেন সরকার প্রাণবন্ত, তারুণ্যদীপ্ত স্বভাবের এবং তার মুখে সবসময় হাসি লেগে থাকে। বুঝতেই পারছেন কেন বিজয়কৃষ্ণের মতো মানুষ তার সামনে স্মৃতির ঝাঁপি মেলে ধরেছেন।

আবহাওয়া যেমনই থাকুক না কেন, শৈলেন স্যান্ডেল পায়ে তার ব্যাকপ্যাক আর রোল-আপ সিগারেট তৈরির (হাতে বানানো সিগারেট) সরঞ্জাম নিয়ে গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে ঘুরে বেড়ান।

তিনি এখনও সনাতন পদ্ধতিতে কাগজ ও কলম ব্যবহার করে তার সংগৃহীত বিচিত্র সব অভিজ্ঞতা লিখে রাখেন।

শৈলেন জানান, একটি পারিবারিক ছবির অ্যালবামের কারণে তিনি প্রথমে বাংলার দুর্ভিক্ষের ব্যাপারে 'আগ্রহী' হয়ে ওঠেন। 

ছোটবেলায় তিনি কলকাতার অসহায় মানুষদের এসব ছবির দিকে তাকিয়ে থাকতেন। ছবিগুলো তুলেছিলেন তার বাবা। তিনি একটি স্থানীয় ভারতীয় দাতব্য সংস্থার সঙ্গে জড়িত ছিলেন, যারা দুর্ভিক্ষের সময় ত্রাণ দিয়েছিলেন।

শৈলেন জানান, তার বাবাও একজন দরিদ্র মানুষ ছিলেন।

তিনি বলেন, 'আমার শৈশবে আমি তার (বাবার) চোখে ক্ষুধার আতঙ্ক দেখেছি।'

তবে ২০১৩ সাল থেকে শৈলেন পুরোদমে এই অনুসন্ধান শুরু করে। সেবছর বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক শৈলেনের সঙ্গে মেদিনীপুরে ৮৬ বছরের এক বৃদ্ধের দুর্ভিক্ষ নিয়ে আলোচনা হয়।

শ্রীপতিচরণ সামন্ত নামের সেই বৃদ্ধেরও প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়ের স্মৃতি মনে আছে।

তিনি জানান, ততদিনে জীবন কঠিন হয়ে উঠেছিল, চালের দামও ক্রমশ বাড়ছিল। ১৯৪২ সালের অক্টোবর থেকে তারা দিনে এক বেলা ভাত খেতে পেতেন। এরপরই আঘাত হানে ঝড়।

শ্রীপতিচরণের মনে আছে, ঘূর্ণিঝড়ের পর কীভাবে চালের দাম আকাশচুম্বী হলো। আর যা-ও কিছু অবশিষ্ট ছিল, ব্যবসায়ীরা সব কিনে নিল।

১৯৪৩ সালের বাংলার দুর্ভিক্ষে লাখ লাখ মানুষ মারা যায়।

তিনি শৈলেনকে বলেন, 'কিছুদিন পর আমাদের গ্রামে চাল ফুরিয়ে গেল। লোকজন কিছুদিন ধরে জমানো খাবার খেয়ে বেঁচে থাকল। এরপরই শুরু হলো খাওয়ার জন্য নিজেদের জমি বিক্রি করার হিড়িক।'

ঝড়ের পর তার পরিবারের মজুদ চালে অল্প কিছুদিন চলে, তারপর শুরু হয় খাবার কষ্ট। আরও হাজার হাজার মানুষের মতোই শ্রীপতিচরণও ত্রাণের আশায় গ্রাম ছেড়ে শহরে পাড়ি জমান। তবে তার কলকাতায় আসাটা সার্থক হয়েছিল।

তিনি ভাগ্যবান ছিলেন, কারণ তার সঙ্গে পরিবারের একজন সদস্য ছিলেন এবং শেষপর্যন্ত তিনি বেঁচে যান।

কিন্তু অনেকের ভাগ্য তার মতো সুপ্রসন্ন ছিল না। রাস্তার ধারে, ডাস্টবিনের আশেপাশে তারা পড়ে থাকতেন এবং অপরিচিত এই শহরের ফুটপাতেই মারা যেতেন। তারা আশা নিয়ে আসতেন, এই শহরের মানুষেরা তাদের সাহায্য করবে।

৩০ লাখ মানুষের মৃত্যু

প্রথমবারের মতো প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনায় উঠে আসে ব্রিটিশ ভারতে ১৯৪৩ সালের বাংলার দুর্ভিক্ষের এই করুণ কাহিনি, যাতে কমপক্ষে ত্রিশ লাখ মানুষ প্রাণ হারিয়েছিল।

বিস্মৃত ইতিহাস

দুর্ভিক্ষের কারণ বহু এবং সেগুলো জটিল। এগুলো নিয়ে যুগে যুগে ব্যাপক বিতর্কও হয়েছে।

১৯৪২ সালে বাংলার চাল সরবরাহে প্রচণ্ড চাপ পড়ে। ওই বছরের প্রথম দিকে জাপান বাংলার সীমান্তবর্তী বার্মা (বর্তমান মিয়ানমার) আক্রমণ করে এবং সেখান থেকে হঠাৎ চাল আমদানি বন্ধ হয়ে যায়।

বাংলা তখন বিপর্যয়ের দ্বারপ্রান্তে এবং কলকাতা তখন মিত্রপক্ষের কয়েক হাজার সেনা ও যুদ্ধে নিয়োজিত কর্মীদের খাদ্য জোগান দিচ্ছে, যার ফলে চালের চাহিদা বৃদ্ধি পায়।

সর্বত্র যুদ্ধকালীন মূল্যস্ফীতির ঢেউ ছড়িয়ে পড়েছিল এবং চালের দাম আগে থেকেই কায়-ক্লেশে চলা লাখ লাখ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যায়।

অন্যদিকে, ব্রিটিশরা আশঙ্কা করছিল জাপানিরা পূর্ব ভারত আক্রমণের চেষ্টা করবে। আর তাই বাংলা ব-দ্বীপের সব শহর ও গ্রাম থেকে উদ্বৃত্ত চাল ও নৌকা বাজেয়াপ্ত করা হয়।

উদ্দেশ্য ছিল, আক্রমণকারী শক্তিকে খাদ্য সরবরাহ ও পরিবহন সঙ্কটে ফেলা।

এর ফলে আগে থেকেই ভঙ্গুর স্থানীয় অর্থনীতি ভেঙে পড়ে এবং চালের দাম আকাশচুম্বী হয়ে যায়।

১৯৪২ সালের অক্টোবরের প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়ে বহু ক্ষেতের ধান নষ্ট হয়ে যায়। আর বাকি যা ছিল, তারও অধিকাংশই ফসলের রোগে নষ্ট হয়ে যায়।

এই মানবিক বিপর্যয়ের দায় কার এবং বিশেষত ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিল এই সংকট নিরসন এবং ভারতীয়দের সহায়তা করার জন্য যথেষ্ট ভূমিকা রেখেছেন কিনা তা নিয়ে জোর বিতর্ক রয়েছে।

১৯৪৩ সালের শেষের দিকে নতুন ভাইসরয় ফিল্ড মার্শাল লর্ড ওয়াভেল আসার পর ত্রাণ প্রচেষ্টা শুরু হয়। কিন্তু ততদিনে বহু মানুষ মারা গেছেন।

'একটি জীবন্ত আর্কাইভ'

কারণ কী কী এবং কার দোষ ছিল তা নিয়ে করা বিতর্ক, বেঁচে যাওয়া মানুষদের গল্পগুলোকে ছাপিয়ে গেছে।

শৈলেন ৬০ জনেরও বেশি প্রত্যক্ষদর্শীর বিবরণ সংগ্রহ করেছেন।

বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তিনি যাদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন, তারা ছিলেন অশিক্ষিত এবং দুর্ভিক্ষ সম্পর্কে তারা এমনকি নিজেদের পরিবারের মানুষের কাছেও খুব কমই আলোচনা করেছেন।

বেঁচে যাওয়া এসব মানুষের সাক্ষাৎকার সংগ্রহের জন্য বিশেষ কোনো সংরক্ষণাগারও নেই।

শৈলেন মনে করেন, এসব মানুষের গল্পগুলো উপেক্ষিত, কারণ তারা ছিল সমাজের সবচেয়ে দরিদ্র ও দুর্বল অংশ।

তিনি বলেন, 'যেন সবাই (বেঁচে যাওয়া মানুষেরা) অপেক্ষা করছিলেন, কেউ যদি তাদের কথা শুনত!'

নিরতন বেওয়া

শৈলেনের সঙ্গে যখন তার দেখা হয় তখন নিরতন বেওয়ার বয়স ছিল ১০০ বছর।

তিনি সন্তানদের ভরণপোষণের সংগ্রাম করা মায়েদের যন্ত্রণার বর্ণনা দিয়েছেন।

নিরতন বেওয়া বলেন, 'মায়েদের বুকের দুধ ছিল না। তাদের শরীর হাড্ডিসার হয়ে গিয়েছিল, মাংস ছিল না। অনেক শিশু জন্মের সময় মারা গেছে, অনেক প্রসূতিও মারা গেছে। এমনকি যারা সুস্থভাবে জন্মগ্রহণ করেছে তারাও ক্ষুধার কারণে অল্প বয়সে মারা যায়। সে সময় অনেক নারী আত্মহত্যাও করেছেন।'

তিনি শৈলেনকে আরও বলেন, 'স্বামীরা তাদের ভাত না দিতে পারায় অনেক স্ত্রী অন্য পুরুষের সঙ্গে পালিয়ে যায়।'

তিনি বলেন, 'সে সময় কলঙ্ক নিয়ে মানুষের এত ভাবা সম্ভব ছিল না। পেটে যখন ভাত না থাকে, আর খাওয়াতে পারে এমন কেউ না থাকে, তখন তুমি কি করছ না করছ, কে তার বিচার করবে?' 

শৈলেন দুর্ভিক্ষের কারণে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়া মানুষদের সঙ্গেও কথা বলেছেন।

একজন স্বীকার করেছেন, তিনি 'চাল ও ডাল বা সামান্য অর্থের বিনিময়ে' অনেক জমি কিনেছেন।

তিনি শৈলেনকে আরও বলেন, কোনো উত্তরাধিকার না রেখেই একটি পরিবারের সব মানুষ মারা গিয়েছিল, তাই তিনি জমিটি নিজের করে নিয়েছিলেন।

বেঁচে যাওয়া কয়েকজনের সাক্ষাৎকার নেওয়ার সময় বাঙালি-আমেরিকান লেখক কুষাণভ চৌধুরী শৈলেনের সঙ্গে ছিলেন।

তিনি বলেন, 'আমাদের তাদের খুঁজতে হয়নি, কারণ তারা কেউ লুকিয়ে ছিলেন না। তারা সবাই পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের গ্রামগুলোতে বাস করেন, তারা বিশ্বের বৃহত্তম আর্কাইভ হিসেবে সেখানে নিভৃতে রয়ে গেছেন।'

তিনি আরও বলেন, 'এতদিনেও কেউ তাদের সঙ্গে কথা বলার প্রয়োজন মনে করেনি! এ নিয়ে আমার প্রচণ্ড লজ্জা লাগছিল।'

কুষাণভ বলেন, শুধু এই দুর্ভিক্ষের স্মৃতি রয়ে গেছে আইকনিক বিভিন্ন ভারতীয় চলচ্চিত্র এবং সেই সময়ের ফটোগ্রাফ ও স্কেচগুলোতে।

তিনি বলেন, তবে ক্ষতিগ্রস্ত বা বেঁচে যাওয়া মানুষদের মুখ থেকে এসব ইতিহাস খুব কমই শোনা হয়েছে। এসব নিয়ে যারা গল্প লিখেছেন, তাদের অধিকাংশেরই নিজেদের জীবনে এর কঠিন বাস্তবতার প্রভাব পড়েনি।

তিনি আরও বলেন, কার গল্প, আর কে বাস্তবতা নির্মাণ করে, এ এক অদ্ভুত ঘটনা!

কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শ্রুতি কপিলা বলছেন, দুর্ভিক্ষে ক্ষতিগ্রস্তদের ইতিহাস চাপা পড়ে গেছে। কারণ ১৯৪০-এর দশক ছিল ভারতের জন্য 'মৃত্যুর দশক'।

তিনি বলেন, ১৯৪৬ সালে কলকাতা বিশাল সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সাক্ষী হয়, যাতে হাজার হাজার লোক মারা গিয়েছিল। এর এক বছর পর ব্রিটিশরা চলে যায় এবং দেশকে হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ ভারত ও মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ পাকিস্তানে বিভক্ত করে। স্বাধীনতার আনন্দ ছিল, কিন্তু দেশভাগ ছিল রক্তাক্ত ও বেদনাদায়ক। ধর্ম নিয়ে সংঘাতে এক মিলিয়নেরও বেশি মানুষ মারা গিয়েছিল। প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ দেশ ছেড়ে অন্য দেশে পাড়ি জমাতে বাধ্য হয়েছিল। বাংলা নিজেই ভারত ও পূর্ব পাকিস্তানের মধ্যে বিভক্ত ছিল, যা পরে বাংলাদেশ হয়ে ওঠে।

অধ্যাপক কপিলা এই সময়কাল সম্পর্কে বলেছেন, 'গণমৃত্যুর ধারাবাহিক ঘটনাগুলোর মধ্যে খুব কম বিরামচিহ্ন রয়েছে। আর সে কারণেই আমি মনে করি বাংলার দুর্ভিক্ষ এক অর্থে সেই আখ্যানে নিজের জায়গা খুঁজে পেতে সংগ্রাম করছে।'

তিনি বলেন, তবে ভুক্তভোগীদের কথা ব্যাপকভাবে শোনা না গেলেও, দুর্ভিক্ষ ও ক্ষুধাকে অনেক ভারতীয়ই সাম্রাজ্যবাদের অন্যতম স্থায়ী উত্তরাধিকার হিসেবে মনে করেন।

অনঙ্গমোহন দাস। ছবি: শৈলেন সরকার

এই দুর্ভিক্ষের আশি বছর পরেও হাতেগোনা কয়েকজন মানুষ বেঁচে আছেন।

শৈলেনের মনে আছে, অনঙ্গমোহন দাস নামে একজনের সঙ্গে কথা বলতে গিয়েছিলেন তিনি। তার বয়স তখন ৯১।

শৈলেন তার কাছে কেন এসেছেন শুনে লোকটা কিছুক্ষণ চুপ করে রইলেন। তার ডেবে যাওয়া গাল বেয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়ল।

তিনি বললেন, 'এত দেরি করে আসলেন কেন?'  

শৈলেন যে কয়েক ডজন মানুষের সাক্ষাৎকার সংগ্রহ করেছেন, তা লাখ লাখ মানুষের প্রাণ হারানো এবং আরও লাখ লাখ মানুষের জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়ার মতো বিশাল ঘটনার একটি ছোট প্রমাণ মাত্র।

তিনি বলেন, 'যদি আপনার ইতিহাসকে ভুলে যেতে চান, তার মানে আপনি নিজের অস্তিত্বকেই ভুলে যেতে চান। আমি মনে করি, এটি কারোরই কাম্য হওয়া উচিত নয়।'

 

 

ভাবানুবাদ: তাবাসসুম সুইটি

Related Topics

টপ নিউজ

দুর্ভিক্ষ / ভারত / বাংলা / দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • যুক্তরাষ্ট্রকে ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধে না জড়ানোর অনুরোধ পাকিস্তান সেনাপ্রধানের
  • সরকারি সেবায় ঘুষবাণিজ্য: শীর্ষে বিআরটিএ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দ্বিতীয়—বিবিএসের জরিপ
  • যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েলের খামেনিকে হত্যার সম্ভাবনা নিয়ে কথাই বলতে চান না পুতিন
  • ইসরায়েলিদের ‘সামরিক ও গোয়েন্দা এলাকা’ এড়িয়ে চলার আহ্বান ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
  • এনবিআরের নীতির হঠাৎ পরিবর্তনের কবলে শিপিং খাত, ৩৫০ কোটি ডলারের বিনিয়োগ ঝুঁকিতে
  • ৫ আগস্ট সরকারি ছুটি, ঘোষণা রবিবার: উপদেষ্টা ফারুকী

Related News

  • আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনে ভারতীয় নীতিনির্ধারকেরা ষড়যন্ত্র করছে: রিজভী
  • ভারতে গাছের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় বাংলাদেশি তরুণের মরদেহ উদ্ধার
  • বন্দুকের মুখে মুসলিম নাগরিকদের অবৈধভাবে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাচ্ছে ভারত, দাবি মানবাধিকার সংগঠনগুলোর
  • ভারতে কারাভোগ শেষে দেশে ফিরেছেন ১৪ বাংলাদেশি
  • “লজ্জা করে না?”— বাংলাভাষী বলে পশ্চিমবঙ্গের অধিবাসীকে বাংলাদেশে পুশ-ইন, বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ মমতার

Most Read

1
আন্তর্জাতিক

যুক্তরাষ্ট্রকে ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধে না জড়ানোর অনুরোধ পাকিস্তান সেনাপ্রধানের

2
বাংলাদেশ

সরকারি সেবায় ঘুষবাণিজ্য: শীর্ষে বিআরটিএ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দ্বিতীয়—বিবিএসের জরিপ

3
আন্তর্জাতিক

যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েলের খামেনিকে হত্যার সম্ভাবনা নিয়ে কথাই বলতে চান না পুতিন

4
আন্তর্জাতিক

ইসরায়েলিদের ‘সামরিক ও গোয়েন্দা এলাকা’ এড়িয়ে চলার আহ্বান ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর

5
অর্থনীতি

এনবিআরের নীতির হঠাৎ পরিবর্তনের কবলে শিপিং খাত, ৩৫০ কোটি ডলারের বিনিয়োগ ঝুঁকিতে

6
বাংলাদেশ

৫ আগস্ট সরকারি ছুটি, ঘোষণা রবিবার: উপদেষ্টা ফারুকী

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net