Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Thursday
June 05, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
THURSDAY, JUNE 05, 2025
মূল্যহীন ডিগ্রী ভারতে চাকরিতে নিয়োগ অযোগ্য এক প্রজন্ম তৈরি করছে…

আন্তর্জাতিক

টিবিএস ডেস্ক
18 April, 2023, 10:25 pm
Last modified: 18 April, 2023, 10:43 pm

Related News

  • আইপিএলে বেঙ্গালুরুর শিরোপা জয়ের উৎসবে পদদলিত হয়ে নিহত ৬
  • পঞ্চগড় সীমান্ত দিয়ে আরও ২৬ জনকে পুশ-ইন করেছে বিএসএফ
  • ২৪ দিনে ১ হাজার ১৪৩ জনকে বাংলাদেশে পুশইন করেছে বিএসএফ
  • ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মন্তব্য ‘অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ’: জামায়াত
  • জানুয়ারি থেকে ১,০০০-এর বেশি ভারতীয়কে ফেরত পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র

মূল্যহীন ডিগ্রী ভারতে চাকরিতে নিয়োগ অযোগ্য এক প্রজন্ম তৈরি করছে…

ভারতে শিক্ষা ব্যবসা ১১৭ কোটি ডলারের বিপুল এক বাজার। তারপরও বিপুল সংখ্যক ভারতীয় তরুণ ন্যূনতম অথবা কোনোপ্রকার দক্ষতা অর্জন না করেই স্নাতক পাস করছেন। ফলে কাঙ্ক্ষিতভাবে অর্থনীতিতে যুক্ত হতে পারছেন না তারা।
টিবিএস ডেস্ক
18 April, 2023, 10:25 pm
Last modified: 18 April, 2023, 10:43 pm
বেসরকারি খাতের বহু ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের রমরমা উপস্থিতি ভুপালের মতো ভারতের বর্ধিষ্ণু অনেক শহরেই। ছবি: অনিন্দিত মুখার্জি/ ব্লুমবার্গ

জনসংখ্যায় বিশ্বের বৃহত্তম চীনকেও ছাড়িয়ে গেছে ভারত। নতুন প্রজন্মের হাত ধরেই এ জনস্ফীতি। তাই বাড়ছে শিক্ষারও চাহিদা, যা পূরণে রাতারাতি নিত্যনতুন কলেজ গড়ে উঠছে দেশটিতে। এককথায়, শিক্ষা শিল্পের রমরমা এক অবস্থা।

ভারতে শিক্ষা ব্যবসা ১১৭ কোটি ডলারের বিপুল এক বাজার। তারপরও বিপুল সংখ্যক ভারতীয় তরুণ ন্যূনতম অথবা কোনোপ্রকার দক্ষতা অর্জন না করেই স্নাতক পাস করছেন। ফলে কাঙ্ক্ষিতভাবে অর্থনীতিতে যুক্ত হতে পারছেন না তারা। ভারতীয় অর্থনীতি যখন বিকাশের মোড় পরিবর্তনকারী এক মুহূর্তে দাঁড়িয়ে, ঠিক তার মধ্যেই এই ঘটনা তরুণদের অংশগ্রহণকে ব্যাহত করছে।

চাকরির বাজারে প্রতিযোগিতা তুঙ্গে, এই অবস্থায় অন্যদের থেকে এগিয়ে থাকার চেষ্টা তরুণ প্রজন্মের মধ্যে আছে। এতে প্রাণাতিপাত করতেও তাদের দ্বিধা নেই। কেউ কেউ তো চাকরি পেতে সুবিধে হবে ভেবে একইসাথে দুই-তিনটি ডিগ্রী নিচ্ছেন। ছোট ছোট অ্যাপার্টমেন্ট ভবন, বা মার্কেটের ভেতরে কয়েকটি দোকান নিয়ে গড়ে ওঠা নানান ভুঁইফোড় কলেজের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছেন এসব শিক্ষার্থীরা। নতুন ছাত্র আকৃষ্ট করতে পথেঘাটের বিলবোর্ডে তথাকথিত বিদ্যা নিকেতনগুলোর বাহারি বিজ্ঞাপনের ছড়াছড়ি। বিজ্ঞাপনে তারা দাবি করছে, তাদের ডিগ্রী নিলে চাকরিও প্রায় নিশ্চিত।  

শিক্ষা নিয়ে ভাঁওতাবাজির ব্যবসা উন্নয়নশীল দেশে নতুন নয়, তবে ভারতের ক্ষেত্রে এ সত্যিই এক আজব গোলকধাঁধাঁ। কারণ, সেদেশের শীর্ষ প্রযুক্তি ও বিজনেস স্কুলগুলো সত্য নাদেলা, সুন্দর পিচাইয়ের মতো প্রখ্যাত সিইওদের তৈরি করেছে। তবে সবাই তো আর মান নিয়ে চিন্তিত নয়, তাদের চাই সহজে অর্থ উপার্জন। আর ব্যাগ্র তরুণ প্রজন্মকে কম বিনিয়োগেই 'টুপি পড়ানো গেলে' তাতে মন্দ কী!- এমন চিন্তা থেকে গজিয়ে উঠেছে হাজার হাজার বেসরকারি কলেজ। এসব কলেজে নিয়মিত ক্লাস তো হয়ই না, তার সঙ্গে এমন শিক্ষক রয়েছেন– যাদের শিক্ষাদানের প্রশিক্ষণ রয়েছে নামমাত্রই। পাঠদানে অনুসরণ হচ্ছে পুরোনো কারিকুলাম, মোদ্দা কথা, এসব প্রতিষ্ঠানে এমন কোনো ব্যবহারিক শিক্ষাও দেওয়া হয় না– যার সুবাদে চাকরি জোটানো সম্ভব।        

ভুক্তভোগী দুই ডজনের বেশি শিক্ষার্থী ও শিক্ষা বিশেষজ্ঞদের সাথে কথা বলে এমন চিত্রই তুলে ধরেছে মার্কিন গণমাধ্যম ব্লুমবার্গ।

শিক্ষা ব্যয় নিয়ে সমস্যা অবশ্য প্রায় সর্বত্র। এক্ষেত্রে ডিগ্রী অর্জনের ব্যয়ের তুলনায় তার মাধ্যমে কতোটা আর্থিক সুফল মিলবে- এই সমীকরণ বিশ্বব্যাপী তরুণ প্রজন্ম আর তাদের অভিভাবকদের ভাবিয়ে চলেছে। উন্নত বিশ্বে উচ্চ শিক্ষার বিপুল ব্যয় নিয়ে আছে দীর্ঘদিনের সমালোচনা; কোনো প্রকার বৃত্তি না থাকলে বিশেষত যুক্তরাষ্ট্রে এই ব্যয় খুবই বেশি। তবে দেশটির সরকারি উচ্চতর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে বেসরকারি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মানের ব্যবধান সামান্যই।

সে তুলনায় ভারতের মতো উন্নয়নশীল দেশের পরিস্থিতি আরো জটিল।  

কিছু হিসাব অনুসারে, বিশ্বের সবচেয়ে বেশি জনসংখ্যা এখন ভারতের। পৃথিবীর অন্য যেকোন দেশের তুলনায় তরুণদের সংখ্যাধিক্য থাকার সুবিধে নিয়ে সরকারও নানান সময় ইতিবাচক কথাবার্তা বলে। কিন্তু, যুবশক্তি নিয়ে কর্তাদের কথাই সার। কাজের বেলায় দেখা যাচ্ছে, তাদের সঠিক নজরদারির অভাব। হয়তো একারণেই ভুঁইফোড় প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা নিয়েছে বিপুল সংখ্যক তরুণ। মেধা যাচাইকারী ফার্ম হুয়িবক্সের এক গবেষণা মতে, ত্রুটিপূর্ণ শিক্ষাগ্রহণের কারণে ভারতের প্রায় অর্ধেক গ্রাজুয়েট ভবিষ্যতে চাকরি পাওয়ার অযোগ্য।

ভুপালের এক ব্যস্তসমস্ত বাজার এলাকায় নানান ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ছবি: অনিন্দিত মুখার্জি/ ব্লুমবার্গ

স্থানীয় অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে, মিশ্র মানের শিক্ষার কারণে তাদের পক্ষে উপযুক্ত কর্মী খুঁজে পাওয়াই কষ্টকর। দেশটির বেকারত্বের হারও তাই ৭ শতাংশের বেশি, অথচ ভারত বিশ্বের অন্যতম দ্রুত বর্ধনশীল একটি প্রধান অর্থনীতি। সেখানে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টিও হলেও –- উচ্চ ও মধ্যম মানের চাকরির বিপরীতে উপযুক্ত সংখ্যক ভালো মানের গ্রাজুয়েটের অভাব দেখা দিয়েছে।

পশ্চিমারা কোম্পানিগুলো চীনে ব্যবসা গুটিয়ে নিয়ে বিশ্বের অন্যত্র উৎপাদন কেন্দ্র সরিয়ে নিচ্ছে। এই বিপুল বিনিয়োগ আকর্ষণ করে ভারতকে চীনের বিকল্প উৎপাদন কেন্দ্রে পরিণত করতে চান দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কিন্তু, বিদেশি নিয়োগদাতারা চান মানসম্মত কর্মী। শিক্ষার এই সমস্যা তাই মোদির জন্য মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর আগে নির্বাচনী প্রচারণায় তিনি কোটি কোটি যুবকের নতুন কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। অথচ হচ্ছে না সে তুলনায় নিয়োগ। এই সমস্যা আসছে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের অন্যতম প্রধান বিতর্কের ইস্যু হবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।  

ভারতের এমজি মোটর কোম্পানির মানবসম্পদ বিভাগের পরিচালক যশোবিন্দর পাতিয়াল বলেন, 'আমাদের শিল্পে যেসব দক্ষতা থাকা দরকার, ঠিক তেমন কর্মী পেতে আমরা চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়ি। বর্তমান চাকরির বাজারে এ ধরনের কর্মী সহজে পাওয়া যায় না'।  

চাকরির বাজারে এই যখন হাল, তখন দেখা আসা যাক ভারতের বর্ধিষ্ণু শহরগুলোয় শিক্ষা ব্যবসার হালহকিকত। ভারতের মধ্যপ্রদেশের রাজধানী শহর ভুপালে গেলেই চোখে পড়বে এর দৃষ্টান্ত। ২৬ লাখ জনসংখ্যার এই ব্যস্ততম শহরে বিশাল বিশাল সব বিলবোর্ড টাঙ্গিয়ে বেসরকারি কলেজগুলো বিজ্ঞাপন দিয়েছে। ভালো শিক্ষা ও মানসম্মত চাকরির প্রতিশ্রুতি দেওয়া এমন এক বিজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, 'নিয়মিত ক্লাস ও চাকরির সুবিধা: আরও কিছু বলার দরকার কি আছে?' ।  

ভারতে কর্মসংস্থান বাজারের বর্তমান দশায় চাকরি জোটানো যে ভোগান্তির– তাতে এ ধরনের বিজ্ঞাপনের প্রলোভনে সহজেই ধরা দেয় লাখ লাখ বেকার নারীপুরুষ। উচ্চ শিক্ষার সুবিধা এককালে ভারতের শুধু উচ্চবিত্ত শ্রেণিরই আয়ত্তে ছিল। তাই উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের বিশেষ সমাদর আছে ভারতের স্বল্প আয়ের ও মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোর কাছে। তারাও চান সন্তানরা উচ্চতর ডিগ্রী নিক, ভালো চাকরি নিয়ে প্রতিষ্ঠা পাক সমাজে।

ব্লুমবার্গকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শিক্ষার পেছনে আরো বেশি ব্যয় করার বিভিন্ন কারণ তুলে ধরেছেন শিক্ষার্থীরা। এরমধ্যে সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধি, ভালো বিয়ের সুযোগ থেকে শুরু করে সরকারি চাকরিতে আবেদন করার সম্ভাবনার মতো নানান বিষয় উল্লেখ করেন তারা।

সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং - এ স্নাতক ডিগ্রী লাভে ৪ হাজার মার্কিন ডলার খরচ করেছেন ভুপালের বাসিন্দা ২৫ বছরের যুবক তন্ময় মণ্ডল। তিনি নিশ্চিত ছিলেন এক ডিগ্রী তার ভালো চাকরি ও উন্নত জীবনযাত্রার পাথেয় হবে।  ফলে শিক্ষা খরচ তার পরিবারের সামর্থ্যের জন্য উচ্চ হলেও তাতে দমেননি তন্ময়। তাই পরিবারের মাসিক আয় মাত্র ৪২০ ডলার হওয়ার পরও তিনি সুদিনের স্বপ্ন দেখেছিলেন। কিন্তু, কার্যক্ষেত্রে দেখা গেল ভুঁইফোড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষকদের থেকে তিনি ভবন নির্মাণ বিষয়ে কোনো জ্ঞানই লাভ করেননি। এক সময় শিক্ষকদের অযোগ্যতাও প্রমাণ হয়ে যায়। কিন্তু ততদিনে অনেক দেরি হয়ে যায়।

মণ্ডল জানান, ওই কলেজে কী শিখেছেন তা তিনি নিজেও বুঝতে পারেন না। চাকরির পরীক্ষায় গিয়ে কোনো প্রশ্নের উত্তরই দিতে পারেন না। ফলে পাস করে বের হয়ে বেকার রয়েছেন গত তিন বছর ধরে।    

তন্ময় মণ্ডল। ছবি: অনিন্দিত মুখার্জি/ ব্লুমবার্গ

আক্ষেপ করে বলেন, 'এখন মনে হয়, কেন কোনো ভালো কলেজে পড়াশোনা করলাম না। আমার সহপাঠী অনেক বন্ধুরাও চাকরি জোটাতে না পেরে বেকার দিন কাটাচ্ছে'।

তবে একেবারে হাল ছাড়ার পাত্র নন তন্ময়। তাই আরেকটি বেসরকারি কলেজে মাস্টার্সে ভর্তি হয়েছেন। কারণ তিনি মনে করেন, একাধিক ডিগ্রী চাকরির সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে তুলবে। তা নাহলেও অন্তত বাড়াবে তার সামাজিক মর্যাদা।   

ভুপাল শহরের কেন্দ্রে এক ব্যস্ততম মার্কেটে বেসরকারি এমন অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছড়াছড়ি। কেউ বলছে শেখাব ইঞ্জিনিয়ারিং, কেউ বলছে শেখাবে সেরা মানের বিপনণ ও ম্যানেজমেন্ট। এসব প্রতিষ্ঠানে নিজেদের দক্ষতা ও ক্যারিয়ারের সম্ভাবনা বাড়াতে যেসব শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছিলেন, এখন তাদের অভিযোগ এসব ডিগ্রী তাদের কাঙ্ক্ষিত চাকরি পাইয়ে দিতে পারেনি।

একবাক্যে বলা যায়, প্রতিষ্ঠানগুলো 'মুখে মারিতং জগৎ' নীতিতে চলে। সাম্প্রতিক সময়ে ভুপালের এমনই এক প্রতিষ্ঠানকে নিয়ে দেশব্যাপী তীব্র সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়। এই ঘটনা গড়ায় ভারতের সর্বোচ্চ আদালত পর্যন্ত।

ঘটনা হলো এই যে, আরকেডিএফ মেডিকেল কলেজ ও হসপিটাল দুই বছরের জন্য নতুন কোনো শিক্ষার্থী ভর্তি করতে পারবে না বলে ২০১৯ সালে রায় দেন ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। নেপথ্য কারণ, মেডিকেল কলেজ হিসেবে লাইসেন্স ধরে রাখতে ভুয়ো রোগী ভর্তি করতো তারা। অর্থাৎ, সুস্থ মানুষকেই অসুস্থ সাজিয়ে রোগী হিসেবে দেখানো হতো। কেন আসল রোগী ভর্তি করতো না? তার অনুসন্ধানে আদালত দেখলেন, পাঠদানকারীদেরই ডাক্তারি যোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ। এবারই বুঝুন মেডিকেল কলেজটি কতোটা উন্নত!!

কলেজ কর্তৃপক্ষ অবশ্য প্রথমে আদালতে দাবি করেছিল, যে আসল রোগীই তারা ভর্তি করতো। কিন্তু, পরে এক তদন্ত প্যানেল যখন সাজানো রোগীর সন্ধান পায় তখন কর্তৃপক্ষ ক্ষমা প্রার্থণা করে।

আদালত তার রায়ে বলেন, 'ছাত্র ভর্তি করার উদ্দেশ্যে কিছু মেডিকেল কলেজ ভুয়া ফ্যাকাল্টি ও রোগী প্রদর্শনের মতো ঘটনায় জড়িত, যা রীতিমতো উদ্বেগজনক'। ব্লুমবার্গ এবিষয়ে মন্তব্যের জন্য উক্ত মেডিকেল কলেজের সাথে যোগাযোগ করলে, তারা কোনো জবান দেয়নি।

মধ্যভারতে সুপরিচিত আরকেডিএফ গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান এই মেডিকেল কলেজ। এই গ্রুপের অধীনে বিভিন্ন স্থানে ইঞ্জিনিয়ারিং থেকে শুরু করে চিকিৎসা ও ব্যবস্থাপনা শিক্ষার কলেজ রয়েছে।  গত বছর আরেক বিতর্কের জন্ম দেয় এই গ্রুপ। দক্ষিণের শহর হায়দেরাবাদে তাদের সারভেপল্লি রাধাকৃষণান বিশ্ববিদ্যালয় (এসআরকে ইউনিভার্সিটি) রয়েছে। ওই বছরের মে মাসে ভুয়া ডিগ্রী দেওয়ার অভিযোগে, বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য ও তার পূর্বসূরীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

এরপরও ভুপালে আরকেডিএফ গ্রুপের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীর ভিড় লক্ষ করা গেছে। একটি শাখা আবার আরেক কাঠি সরেস, সেখান থেকে পাস করে চাকরি পাওয়া শিক্ষার্থীদের ছবি পোস্টারে দেখাচ্ছে।
 
মন্তব্যের জন্য এসআরকে ইউনিভার্সিটি ও আরকেডিএফ গ্রুপের সঙ্গে ব্লুমবার্গ একাধিকবার যোগাযোগ করলেও তারা সাড়া দেয়নি। তবে নিজস্ব ওয়েবসাইটে গ্রুপটি দাবি করেছে, শিক্ষাদানের সাথে সাথে ব্যবহারিক দক্ষতা প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তারা মানসম্মত শিক্ষা সেবা সরবরাহ করে। একইসঙ্গে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মানসম্মত ও জোরালো অবকাঠামোসহ অন্যান্য সুযোগসুবিধা নিশ্চিতের চেষ্টা করে।  

ছবি: অনিন্দিত মুখার্জি/ ব্লুমবার্গ

ভুপালের আরেক জায়গায় ছোট্ট আবাসিক ভবনে একটি কলেজ দেখা যায়। ওই কলেজে পড়েছেন এমন এক শিক্ষার্থী জানান, সেখানে ভর্তি হওয়া জলের মতোন সহজ। আর ক্লাস না করেই ডিগ্রী পাওয়া যায়।

২০২০ সাল নাগাদ ভারতে শিক্ষা ব্যবসা ১১৭ বিলিয়ন ডলারের ছিল, যা ২০২৫ সাল নাগাদ ২২৫ বিলিয়ন ডলারের হবে বলে প্রক্ষেপণ রয়েছে ইন্ডিয়া ব্র্যান্ড ইক্যুইটি ফাউন্ডেশন নামক একটি সরকারি ট্রাস্টের।  এই ঘটনা শিক্ষা খাতে ভারতের নিম্ন ব্যয়েরও উদাহরণ। শিক্ষা খাতে সরকারি বরাদ্দ জিডিপির ২ দশমিক ৯ শতাংশে আটকে আছে দীর্ঘদিন, অথচ সরকারের নতুন শিক্ষানীতির অধীনে এটা ৬ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।

বেসরকা্রি কলেজগুলোর বিভিন্ন সমস্যা প্রায়ই আলোচনায় আসছে, সরকারের বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে এদের বিষয়ে সমালোচনাও করা হয়েছে। এমনকী ভারতের কিছু এলাকায় শিক্ষার্থীরা এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক সংকট ও শিক্ষা-সম্পর্কিত বিভিন্ন সুযোগসুবিধার অভাব নিয়ে অনশন ঘর্মঘটও পালন করেছে।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে হিমাচল প্রদেশের মানব ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে ভুয়া ডিগ্রী বিক্রির অভিযোগে মামলা করা হয়।  আইনি প্রক্রিয়ার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি বিশ্ববিদ্যায়টি কর্তৃপক্ষ।

অনেক প্রতিষ্ঠান ক্যাম্পাসেই শিক্ষার্থীদের চাকরির ব্যবস্থা করে দেওয়ার প্রচারণা চালালেও, তাদের অধিকাংশই এই প্রতিশ্রুতি পালন করে না। ২০১৭ সালে উড়িষ্যা রাজ্যের একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এ ধরনের প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পর তা পূরণ না করায় ছাত্ররা বিক্ষোভ করে।

ভারতের একজন সাবেক শিক্ষা সচিব অনিল স্বরূপ ২০১৮ সালের এক নিবন্ধে হিসাবে দিয়েছিলেন যে, অন্তত ১৬ হাজার কলেজ শিক্ষক হিসেবে নিয়োগের জন্য স্মাতক ডিগ্রীর যোগ্যতা চাইলেও, এদের বড় অংশই নামকাওয়াস্তের ডিগ্রীধারী।  

দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সাবেক ডিন অনিল সাদগোপাল মন্তব্য করেন, 'এই ধরনের তথাকথিত ডিগ্রীকে মুল্যহীন বললেও আসলে কম বলা হয়'। কেন্দ্রীয় শিক্ষা পরামর্শক গ্রুপের সাবেক এই সদস্য বলেন, 'প্রতিবছর এভাবে লাখ লাখ শিক্ষার্থীকে চাকরির অযোগ্য করে তোলার মাধ্যমে পুরো সমাজকেই অস্থিতিশীল করে তোলা হচ্ছে'।

বড় বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও  শিল্পগুলো তার ফলে যোগ্য কর্মীর খরায় ভুগছে। বাধাগ্রস্ত হচ্ছে তাদের ব্যবসা সম্প্রসারণ থেকে পরিচালনা সর্বক্ষেত্র। মানবসম্পদ বিষয়ক ফার্ম এসএইচএল এর এক গবেষণায় দেখা গেছে, স্টার্ট আপে সফটওয়্যার সংক্রান্ত চাকরিরত মাত্র ৩.৮ শতাংশ ইঞ্জিনিয়ারের দরকারি দক্ষতা রয়েছে।

ভারতের সুবৃহৎ তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবসা ইনফোসিস লিমিটেডের সাবেক প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা মোহনদাস পাই বলেন, 'গ্রাজুয়েট কর্মীদের নতুন করে প্রশিক্ষণ দিতে হয়– এটাই আইটি খাতের প্রায় সব প্রতিষ্ঠানের অভিজ্ঞতা। তিনি মানিপল এডুকেশন অ্যান্ড মেডিকেল গ্রুপের-ও বোর্ড সদস্য। এই বোর্ড ব্যাংকিং খাতের জন্য অনেক নতুন কর্মীকে প্রশিক্ষণ দেয়। মোহনদাসের মতে, 'তারা চাকরির জন্য প্রস্তুত হয়নি, সেজন্য আগে প্রশিক্ষণ দিতে হয়'।

সরকারি প্রচেষ্টা ও বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণের ফলে ভারতে অনেক ধরনের খাতে চাকরির সুযোগ তৈরি হয়েছে। নিয়োগদাতারা বৈদ্যুতিক গাড়ি উৎপাদন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই), হিউম্যান মেশিন ইন্টারফেস-সহ অনেক নতুন খাতে লোক নিয়োগ করতে চায়। অথচ ভারতের ছোট বেসরকারি কলেজগুলো যেসব মান্ধাতার আমলের পাঠ্যক্রম অনুসরণ করছে, তাতে এসব উচ্চ মানের কর্মী তৈরি হওয়াও সম্ভব নয়।

যশোবিন্দর পাতিয়াল বলেন, 'শিল্পগুলো যে ধরনের যোগ্যতার কর্মী চায়, তার সাথে কলেজগুলো যে পাঠদান করছে তার বিস্তর ব্যবধান আছে'।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোওর তদারকির জন্য ভারতের বেশ কয়েকটি পেশাদার নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ আছে। তবে সবগুলোকে একত্র করে একটি একক কর্তৃপক্ষ গঠনের ঘোষণা দিয়েছে সরকার, তবে এটা এখনও পরিকল্পনা পর্যায়েই রয়েছে। এবিষয়ে ব্লুমবার্গের কাছে কোনো মন্তব্য করতে চায়নি দেশটির শিক্ষা বিভাগ।  

 

Related Topics

টপ নিউজ

ভারত / শিক্ষা ব্যবস্থা / মূল্যহীন ডিগ্রী / কর্মসংস্থান বাজার

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক: নির্বাচন নিয়ে বাদানুবাদে জড়ায় বিএনপি ও এনসিপি
  • বীর মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞায় পরিবর্তন এনে অধ্যাদেশ জারি; আহতদের সেবাদানকারী চিকিৎসক, নার্সরাও পেলেন স্বীকৃতি
  • সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য সুখবর: ১০–১৫ শতাংশ বিশেষ সুবিধা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি, কার্যকর ১ জুলাই
  • ‘একটি ফুলকে বাঁচাব বলে’ গানের শিল্পী আপেল মাহমুদ প্রমাণ দিলেন তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধা
  • ১৮ মাসের প্রস্তুতি, রাশিয়ায় ড্রোন পাচার: যেভাবে রুশ বিমানঘাঁটিতে ইউক্রেনের দুঃসাহসিক হামলা

Related News

  • আইপিএলে বেঙ্গালুরুর শিরোপা জয়ের উৎসবে পদদলিত হয়ে নিহত ৬
  • পঞ্চগড় সীমান্ত দিয়ে আরও ২৬ জনকে পুশ-ইন করেছে বিএসএফ
  • ২৪ দিনে ১ হাজার ১৪৩ জনকে বাংলাদেশে পুশইন করেছে বিএসএফ
  • ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মন্তব্য ‘অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ’: জামায়াত
  • জানুয়ারি থেকে ১,০০০-এর বেশি ভারতীয়কে ফেরত পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র

Most Read

1
বাংলাদেশ

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক: নির্বাচন নিয়ে বাদানুবাদে জড়ায় বিএনপি ও এনসিপি

2
বাংলাদেশ

বীর মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞায় পরিবর্তন এনে অধ্যাদেশ জারি; আহতদের সেবাদানকারী চিকিৎসক, নার্সরাও পেলেন স্বীকৃতি

3
বাংলাদেশ

সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য সুখবর: ১০–১৫ শতাংশ বিশেষ সুবিধা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি, কার্যকর ১ জুলাই

4
বাংলাদেশ

‘একটি ফুলকে বাঁচাব বলে’ গানের শিল্পী আপেল মাহমুদ প্রমাণ দিলেন তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধা

5
আন্তর্জাতিক

১৮ মাসের প্রস্তুতি, রাশিয়ায় ড্রোন পাচার: যেভাবে রুশ বিমানঘাঁটিতে ইউক্রেনের দুঃসাহসিক হামলা

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net