গফরগাঁওয়ে বিএনপির মনোনয়নবঞ্চিত নেতার সমর্থকদের রেললাইনে আগুন
ময়মনসিংহ-১০ (গফরগাঁও) আসনে বিএনপির প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে দলের হাইকমান্ডের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে রেললাইনে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। গফরগাঁও রেলওয়ে স্টেশনে ভাঙচুর ও রেললাইনে আগুন দেন দলের মনোনয়নবঞ্চিত নেতা মুশফিকুর রহমান সিদ্দিকীর সমর্থকরা।
এতে বন্ধ হয়ে যায় ট্রেন চলাচল। স্টেশন মাস্টারকে কক্ষ থেকে বের করে দিয়ে তালা লাগিয়ে দেওয়ার ঘটনাও ঘটে।
এই আসনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন মোহাম্মদ আক্তারুজ্জামান বাচ্চু।
আজ শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) বিকেলে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিতপত্রে মোহাম্মদ আক্তারুজ্জামান বাচ্চুর প্রার্থিতা নিশ্চিত হওয়ার খবর এলাকায় পৌঁছালে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। কারণ এ আসনে দীর্ঘদিন ধরে মনোনয়ন প্রত্যাশী ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সিদ্দিকুর রহমান ও তার ভাতিজা দলের সদস্য মুশফিকুর রহমান। তাদের অনুসারীরা এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সড়কে নেমে আসেন।
বিকেল ৪টার দিকে সিদ্দিকুর রহমান ও মুশফিকুর রহমানের শতাধিক অনুসারী গফরগাঁও রেলস্টেশনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। এক পর্যায়ে তারা স্টেশনমাস্টারের কক্ষে ঢুকে তাকে বের করে দিয়ে বাইরে থেকে তালা লাগিয়ে দেন। এরপর রেললাইনের ওপর টায়ার ও কাঠ ফেলে আগুন ধরিয়ে দেন। এর ফলে ঢাকা-ময়মনসিংহ রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়, সাধারণ যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়েন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দ্রুত ঘটনাস্থলে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর একাধিক টিম আসে। বর্তমানে এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, মনোনয়নবঞ্চিত নেতার সমর্থকরা প্রথমে বিক্ষোভ শুরু করে, পরে তারা রেললাইনে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে ট্রেন চলাচল বিঘ্নিত হয়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে জেলা পুলিশ ও রেলওয়ে পুলিশ কাজ করছে।
এ বিষয়ে মনোনয়নপ্রাপ্ত আক্তারুজ্জামান বাচ্চু শীর্ষ গণমাধ্যমকে বলেন, 'গফরগাঁওয়ের মানুষ দীর্ঘ দেড় দশক ভোটাধিকার বঞ্চিত। আমার লক্ষ্য হবে শান্তি ফিরিয়ে আনা এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করা। আমরা প্রতিহিংসার রাজনীতি করব না। সবাইকে নিয়ে বৈষম্যহীন গফরগাঁও গড়ে তুলব।' আপাতত মনোনয়ন ফরম পূরণের কাজে ব্যস্ত রয়েছেন বলে উল্লেখ করেন তিনি।
মনোনয়নবঞ্চিত মুশফিকুর রহমান এপ্রসঙ্গে বলেন, 'যাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে তিনি যোগ্য নন। এ কারণে বিএনপির সব গ্রুপ এক হয়ে মাঠে নেমেছে। রাস্তাঘাট সবকিছু বন্ধ করে দিয়েছে।'
অপর মনোনয়নবঞ্চিত নেতা সিদ্দিকুর রহমান বলেন, 'আমি বর্তমানে ঢাকায় রয়েছি। বিক্ষোভে আমার লোকজন থাকতে পারে বলে জেনেছি। দলের হাইকমান্ডের সিদ্ধান্ত মোটেও ঠিক হয়নি।'
রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর স্থানীয় ইনচার্জ সিরাজুল ইসলাম জানান, রেললাইনের বিভিন্ন জায়গায় আগুন জ্বালানোর কারণে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। পাশাপাশি উপজেলা শহরের সব ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে।
