শরীয়তপুরে ছাত্রদল–এনসিপি সংঘর্ষ, ককটেল বিস্ফোরণ, আহত ৭
শরীয়তপুরে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ছাত্রদল ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় ককটেল বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। সংঘর্ষে ছাত্রদলের সাত নেতা–কর্মী আহত হয়েছেন।
আহতদের মধ্যে একজন চোখে গুরুতর আঘাত পেয়েছেন। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। বাকিদের শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আজ সোমবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে শরীয়তপুর শহরের চৌরঙ্গী এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন— নাঈম বেপারী, সাগর চৌকিদার, আরমান হোসেন, আবিদ খান ও ইসাহাক সরদার। বাকিদের নাম তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদিকে হত্যার প্রতিবাদ ও জড়িতদের বিচার দাবিতে আজ বিকেলে শরীয়তপুর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মানববন্ধন করেন এনসিপির নেতা-কর্মীরা। মানববন্ধন শেষে নেতা–কর্মীরা শহরে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। এ সময় মিছিলের মধ্যে ছাত্রদলের এক কর্মীর সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। পরে তা হাতাহাতিতে রূপ নেয়।
ঘটনার প্রতিবাদে ছাত্রদল শহরে বিক্ষোভ মিছিল বের করলে চৌরঙ্গী এলাকায় উভয়পক্ষ মুখোমুখি হয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে ককটেল বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। সংঘর্ষে ছাত্রদলের সাত নেতা–কর্মী আহত হন।
আহতদের মধ্যে যুবদল নেতা নাঈম বেপারী চোখে গুরুতর আঘাত পাওয়ায় তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। ঘটনার পর শহরে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ইসাহাক সরদার অভিযোগ করে বলেন, কথা কাটাকাটি থেকে এনসিপির নেতা–কর্মীরা ছাত্রদলের এক কর্মীকে মারধর করেন। বিষয়টি মীমাংসার জন্য চৌরঙ্গী এলাকায় গেলে পরিকল্পিতভাবে দেশিয় অস্ত্র নিয়ে তাদের ওপর হামলা হয়।
তার দাবি- হামলায় তিনিসহ সাত-আটজন নেতা–কর্মী আহত হন। এনসিপির কয়েকজন নেতা সামনে থেকে এ হামলায় নেতৃত্ব দেন এবং পেছনে নিষিদ্ধ ঘোষিত একটি সংগঠনের লোকজন জড়িত।
এনসিপির জেলা যুগ্ম সমন্বয়কারী সবুজ তালুকদার বলেন, ওসমান হাদি হত্যা ও খুলনায় আমাদের এক নেতাকে গুলি করা হয়েছে। এরই প্রতিবাদে আমরা মিছিল করছিলাম। আমাদের মিছিলের মধ্যে একটি ছেলে ছুরি নিয়ে ঢুকেছিল। সে কাউকে হত্যা করার চেষ্টা করছিল। সেই ঘটনাই শান্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছিল। এ সময় ছাত্রদল-যুবদল অতর্কিত হামলা করে। আমাদের ওপর ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে। তখন ঘটনাটি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।
আহতদের বিষয়ে জানতে চাইলে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক লিমিয়া সাবিনা জানান, ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় সাত থেকে আটজনকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। তাদের মধ্যে একজনের চোখে মারাত্মক আঘাত থাকায় তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। বাকিদের হাসপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ আলম বলেন, 'মোটরসাইকেল গায়ে লাগাকে কেন্দ্র করে দুইপক্ষের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি থেকে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। উভয়পক্ষ ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় জড়িয়ে পড়ে। পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। একটি বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে।'
তিনি বলেন, 'শুরুতে হতাহতের বিষয়ে নিশ্চিত তথ্য পাওয়া যায়নি। বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।'
ঘটনার পর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
