গাজায় মৃত্যু ৭০ হাজার ছাড়াল, যুদ্ধবিরতির মধ্যেও হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল
গাজায় ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলের চলমান সামরিক হামলায় নিহতের সংখ্যা ৭০ হাজার ছাড়িয়েছে বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
শনিবার প্রকাশিত তথ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলের গণহত্যামূলক যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত গাজায় অন্তত ৭০ হাজার ১০০ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ১ লাখ ৭০ হাজার ৯০০ জনের বেশি মানুষ।
এদিকে, গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় হামাসের সঙ্গে যে যুদ্ধবিরতি হয়েছে, তা উপেক্ষা করেই গাজায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। এ অবস্থায় ভয়াবহ এই যুদ্ধে নিহতের সংখ্যা নতুন মাইলফলকে পৌঁছাল।
শনিবার সকালে চিকিৎসকরা জানান, গাজা উপত্যকার দক্ষিণের খান ইউনুসের পূর্বাঞ্চল বানি সুওহেলায় ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় দুই ফিলিস্তিনি শিশু নিহত হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা আল জাজিরাকে বলেন, শনিবার সকালে আল-ফারাবি স্কুলের কাছে একদল বেসামরিক মানুষের ওপর ড্রোন থেকে বোমা ফেলা হলে দুই ভাই—জুমা ও ফাদি তামের আবু আ'সি—নিহত হয়।
দুই শিশুকে গুরুতর আহত অবস্থায় খান ইউনুসের নাসের মেডিকেল কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়েছিল। পরে তারা সেখানে মৃত্যুবরণ করে বলে চিকিৎসা সূত্রে জানা গেছে।
আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু করা এলাকাটি যুদ্ধবিরতি চুক্তির অধীনে ইসরায়েলি বাহিনীর পুনর্গঠন–সীমা নির্দেশিত কথিত 'ইয়েলো লাইন'-এর বাইরে অবস্থিত বলে জানায় সূত্র।
শনিবার গাজার বিভিন্ন এলাকায় স্থল, নৌ ও বিমান—তিন দিক থেকেই হামলা চালায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।
চিকিৎসা সূত্র আরও জানিয়েছে, খান ইউনিসের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আল-কারারায় ইসরায়েলি বিমান ও স্থল আর্টিলারি হামলায় তিন ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন।
শনিবার সকালে গাজা সিটির পূর্বাঞ্চলের তুফাহ্ এলাকায়ও ইসরায়েলি বিমান হামলা চালানো হয়।
এ ছাড়া দক্ষিণ গাজার রাফাহ শহরের পূর্বাঞ্চলেও হামলার ঘটনা ঘটেছে।
এর আগের দিন বানী সুহেইলায় ইয়েলো লাইনের বাইরে ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় এক ফিলিস্তিনি নিহত হওয়ার বিষয়টি নাসের মেডিকেল কমপ্লেক্স নিশ্চিত করেছিল।
গাজার সরকারি মিডিয়া অফিসের পরিচালক ইসমাইল আল-থাওয়াবতা শুক্রবার জানান, যুদ্ধবিরতি শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত ইসরায়েলের ৫৩৫টি লঙ্ঘন নথিভুক্ত করা হয়েছে।
এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, "গাজায় মানবিক পরিস্থিতি নজিরবিহীনভাবে অবনতির দিকে যাচ্ছে। ইসরায়েলি আগ্রাসনে অবকাঠামো ও জরুরি সেবাগুলো মারাত্মকভাবে ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে।"
