দুদক কর্মকর্তাদের সম্পদের হিসাব দিতে হবে; কাজের প্রতিবেদন ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) যেসব কর্মকর্তা দুর্নীতি দমনে সম্পৃক্ত; সেসব কর্মকর্তাদের আলাদা করে সম্পদের হিসাব দিতে হবে। পাশাপাশি দুদকের কাজের প্রতিবেদন এখন থেকে ছয় মাস পরপর ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে।
এমন বিধান রেখে দুর্নীতি দমন কমিশন (সংশোধন) অধ্যাদেশ-২০২৫ এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে তেজগাঁওয়ে তার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এই অধ্যাদেশসহ চারটি অধ্যাদেশের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
এদিন বিকালে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানান প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
প্রেস সচিব বলেন, 'দুর্নীতি কমিয়ে আনতে দুদককে আরও শক্তিশালী করতে সরকার একটি সংস্কার কমিশন গঠন করেছিল। ওই কমিশন বেশ কিছু সুপাশি করেছিল। তার ভিত্তিতে দুদক আইন সংশোধন অধ্যাদেশ অনুমোদন করা হয়েছে।'
তিনি বলেন, 'এখন দুদক কমিশন হবে পাঁচ সদস্যের। এদের মধ্যে একজন তথ্য প্রযুক্তিতে অভিজ্ঞ ব্যক্তি থাকবেন। কারণ দেশ যত ক্যাশলেস হচ্ছে, তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে অপরাধ তত বাড়ছে। এছাড়া একজন নারী সদস্য থাকবেন।'
তবে সংস্কার কমিশনের করা 'বাছাই কমিটি' গঠনের প্রস্তাব বাদ দেওয়া হয়েছে বলে জানান শফিকুল আলম।
যদিও এই কমিটি গঠনের প্রস্তাব খসড়া আইনে রাখা হয়েছিল।
তিনি বলেন, 'এছাড়া উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে মানব পাচার ও অভিবাসী চোরাচালান প্রতিরোধ ও দমন অধ্যাদেশের খসড়া, রাজউক উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ অধ্যাদেশ এবং জাতীয় মানবাধিকার কমিশন (সংশোধন) অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।'
শফিকুল আলম বলেন, 'বাংলাদেশ থেকে মানব পাচার হয়। অনেক মানুষকে বুঝিয়ে টাকা-পয়সা নিয়ে পাচার করা হয়ে থাকে। লিবিয়াতে অনেক পাচার হয়েছে। আবার অঙ্গপ্রতঙ্গ ব্যবসার জন্যও মানুষকে পাচার করা হয়। মহিলা ও শিশু পাচার হয়। অনেক অনলাইন প্লাটফর্ম ব্যবহার করেও মানব পাচার করা হয়।'
তিনি বলেন, 'ঘটনা ধরা পড়ার পরে ভুক্তভোগীকে আপোষ করতে চাপ দেওয়া হয়। আইনের মাধ্যমে এ ধরনের অপরাধ বন্ধ ও ভুক্তভোগীদের বিচার পাওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। রাজউক আইনে খেলার মাঠ বাঁচিয়ে রাখার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।'
প্রেস সচিব বলেন, 'এছাড়া এখন গ্রাম পর্যায়েও চার-পাঁচ তলা বাড়ি নির্মাণ করা হচ্ছে। দেশে ভূমিকম্প হচ্ছে। অগ্নিদুর্ঘটনাও প্রায়ই দেখা যাচ্ছে। এ অবস্থায় প্রধান উপদেষ্টা গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়কে সারা দেশে ইমারত নির্মাণ অনুমোদন দেওয়ার কাজ করবে এমন একটি স্বতন্ত্র সংস্থা স্থাপন করা যায় কি না তা পর্যালোচনা করার নির্দেশনা দিয়েছেন।'
তিনি বলেন, 'পাশাপাশি রাজউকের আওতাধীন এলাকায় কোনো ভবন নির্মাণের অনুমোদন ইউনিয়ন পরিষদ থেকে দিতে পারবে না। বিমান দুর্ঘটনাকবলিত মাইলস্টোন স্কুলের ভবন নির্মাণের অনুমোদন একটি ইউনিয়ন পরিষদ থেকে নেওয়া হয়েছিল। রাজউকের নকশার ব্যতয় করে ভবন নির্মাণ করলে আইনে তার দণ্ড রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে।'
