অবৈধ অনুপ্রবেশ: ভারতীয় নাগরিক সখিনার জামিন, কারামুক্তিতে বাধা নেই
পাসপোর্ট ও ভিসা ছাড়া অবৈধভাবে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের অভিযোগে রাজধানীর ভাষানটেক থেকে আটক ভারতীয় নাগরিক সখিনা বেগমের জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত। একইসঙ্গে আদালত সখিনাকে তার বাংলাদেশি আশ্রয়দাতাদের জিম্মায় দেওয়ার আদেশ দিয়েছেন।
রোববার (২৩ নভেম্বর) শুনানি শেষে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসাইনের আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন। জামিন আদেশের পাশাপাশি ভাষানটেক থানার পরিদর্শককে প্রতি এক সপ্তাহ পর পর সখিনার বিষয়ে আদালতকে অবহিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আসামিপক্ষের আইনজীবী রহমাতুল্যাহ সিদ্দিক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, রোববার জামিন শুনানির জন্য সখিনাকে আদালতে হাজির করা হয় এবং আইনজীবীর মাধ্যমে জামিনের আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে আদালত তার আশ্রয়দাতা জাকিয়া ও ক্লান্তি আক্তারের জিম্মায় জামিন মঞ্জুর করেন। তবে শর্ত অনুযায়ী, এক সপ্তাহ পর পর ভাষানটেক থানার পরিদর্শক সখিনার বর্তমান অবস্থার বিষয়ে আদালতকে জানাবেন।
আইনজীবী রহমাতুল্যাহ আরও বলেন, 'সখিনার বিরুদ্ধে আর কোনো মামলা না থাকায় তার কারামুক্তিতে আইনগত কোনো বাধা নেই। আশা করছি, আগামীকাল সকালের মধ্যেই তিনি কারাগার থেকে মুক্তি পাবেন।'
এর আগে, গত ২৫ সেপ্টেম্বর আটকের পর 'দ্য কন্ট্রোল অব এন্ট্রি অ্যাক্ট, ১৯৫২' আইনে অবৈধভাবে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের অপরাধে ওই নারীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে ভাষানটেক থানা পুলিশ। পরদিন তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। দীর্ঘ ৫৭ দিন কারাভোগের পর অবশেষে এই মামলায় তার জামিন মিলল।
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর ভাষানটেক থানার টিনশেড টেকপাড়া গলির মাথায় ওই নারীকে পাওয়া যায়। ঘটনাস্থলে উপস্থিত লোকজনের জিজ্ঞাসাবাদে ওই নারী তার বাড়ি ভারতের আসামে বলে জানান। তিনি ভাঙা ভাঙা বাংলা ও আসামের আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলতে পারেন। সে সময় তার কাছে পাসপোর্ট ও ভিসা চাইলে তিনি তা দেখাতে ব্যর্থ হন।
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, সখিনা বেগম কীভাবে পাসপোর্ট ও ভিসা ছাড়া বাংলাদেশে প্রবেশ করেছেন এবং কীভাবে ভাষানটেকে এসেছেন, সে সংক্রান্ত কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য দিতে পারেননি। আসামের নাগরিক হওয়া সত্ত্বেও বৈধ কাগজপত্র ছাড়া বাংলাদেশে প্রবেশের অপরাধে তার বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করা হয়।
উল্লেখ্য, সখিনা বেগমকে কয়েক মাস আগে আসামের নিজ বাড়ি থেকে আটক করে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) বাংলাদেশে ঠেলে দেয় বলে অভিযোগ রয়েছে। গত সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে সখিনা বেগমকে ঢাকার মিরপুরে খুঁজে পায় বিবিসি। গণমাধ্যমটিতে এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশের পর তাকে আটক করে পুলিশ।
