ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা: হল ছাড়তে শুরু করেছেন শিক্ষার্থীরা
জরুরি পরিস্থিতিতে দুই সপ্তাহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা এবং হল ত্যাগের নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে রবিবার (২৩ নভেম্বর) সকাল থেকেই আবাসিক হল ছাড়তে শুরু করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা।
দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হল, শামসুন্নাহার হল ও হল পাড়া এলাকা ঘুরে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে বিভিন্ন হলের শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাস ছাড়ার চিত্র চোখে পরে।
এর আগে, পরপর দুইদিন ভূমিকম্প হওয়ার পর গত রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলের ঝুঁকিপূর্ণ ভবন সংস্কার ও নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য আজ রবিবার থেকে দুই সপ্তাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
একইসঙ্গে বিকাল ৫টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের আবাসিক হল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সুফিয়া কামাল হলের আবাসিক শিক্ষার্থী স্বর্ণা দাশ হল ছেড়ে আজ সকালেই তার বাড়ি ঝালকাঠি জেলার উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন।
তিনি মুঠোফোনে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে (টিবিএস)- বলেন, 'আমার টিউশন আছে। হুট করে বন্ধের সিদ্ধান্তে বিপাকে পড়েছি। যেহেতু থাকার কোনো উপায় নেই, তাই বাধ্য হয়ে বাড়ি যেতে হচ্ছে।'
স্যার এ এফ রহমান হলের শিক্ষার্থী শরিফ আহমেদ সোহান টিবিএসকে বলেন, 'আমাদের তৃতীয় সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিল ১ ডিসেম্বর থেকে। কিন্তু এখন ১৫ দিনের বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তাই বাসায় চলে যাচ্ছি।'
এদিকে টিউশন, চাকরি, প্রি শিডিউলের কারণে হল বন্ধের নোটিশে বিপাকে পড়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির অনেক শিক্ষার্থী।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুন্নাহার হলের আবাসিক শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস টিবিএসকে বলেন, 'আমার ইন্টার্নশিপের জন্য চাকরি করতে হচ্ছে। এর মধ্যে হঠাৎই ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ে হল ছাড়তে বলল প্রশাসন। হল থেকে বেরিয়ে ঢাকায় আমার যাওয়ার জায়গাও নেই। এদিকে অফিস থেকেও ছুটি নেই। কোনো উপায় না পেয়ে এক বান্ধবীর বাসায় থাকতে হচ্ছে।'
অন্যদিকে, রবিবার (২৩ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভোস্ট স্ট্যান্ডিং কমিটির সভায়ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দুই সপ্তাহ ছুটি ঘোষণা এবং এদিন বিকাল ৫টার মধ্যে সব হল খালি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
প্রভোস্ট কমিটির সভায় যেসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়:
১. গতকাল শনিবার জরুরি সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব আবাসিক হলের শিক্ষার্থীদের রবিবার বিকাল ৫টার মধ্যে হল খালি করার বিষয়ে নিজ নিজ হলের প্রভোস্টদের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
২. হল ছেড়ে যাওয়ার সময় শিক্ষার্থীরা তাদের মূল্যবান জিনিসপত্র সঙ্গে নিয়ে বের হবে এবং কক্ষের চাবি হল প্রশাসনের কাছে জমা দিয়ে যাবে।
৩. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি হলের ডাইনিং ও ক্যান্টিন বন্ধ থাকবে।
