হাসিনাকে নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট: সাড়ে ৫ মাস আগের মামলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার কারাগারে
রাজধানীর শাহবাগ থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে করা মামলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ডেপুটি রেজিস্ট্রার মুহাম্মদ লাভলু মোল্লাহকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাসুম মিয়া'র আদালত এই আদেশ দেন।
এর আগে, আসামিকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহবাগ থানার উপ-পরিদর্শক আলামিন।
আবেদনে বলা হয়, আসামি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সাবেক ভিসি আক্তারুজ্জামানের পিএস হিসেবে কর্মরত ছিলেন। শাহবাগ থানা এলাকায় কার্যক্রম নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল এবং ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানোর জন্য অর্থ দিয়ে সহায়তা করে আসছে মর্মে যথেষ্ট সাক্ষ্যপ্রমাণ পাওয়া গেছে। মামলাটি তদন্তাধীন। এমতাবস্থায় মামলাটির সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তদন্তকার্য সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত তাকে জেল হাজতে আটক রাখা একান্ত প্রয়োজন।
মামলার ঘটনার সঙ্গে জড়িত আসামিদের নাম-ঠিকানা সংগ্রহপূর্বক গ্রেপ্তার অভিযান পরিচালনার নিমিত্তে আসামিকে পুলিশ রিমান্ডে পাওয়া আবেদন প্রক্রিয়াধীন।
এদিকে, আসামি পক্ষের আতাউর রহমান খান ও জিএম কাউসার উল ইসলাম সোহেল তার জামিন চেয়ে শুনানি করেন।
শুনানিতে আইনজীবীরা বলেন, সাড়ে পাঁচ মাস আগে আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীদের মিছিল করার ঘটনায় এই মামলা হয়।
গতকাল শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায়ের পর তার পক্ষে অবস্থান নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফটোকার্ড বানিয়ে পোস্ট করায় তাকে বাসা থেকে আটক করে শাহবাগ থানায় দেয় ঢাবির শিক্ষার্থীরা।
শাহবাগ থানা পুলিশ সাড়ে পাঁচ মাস আগের মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছেন। এই মামলার সঙ্গে আসামির কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। মতপ্রকাশের কারণে তাকে মিথ্যা মামলায় জড়ানো হয়েছে।
শুনানি শেষে আদালত তার জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
জানা গেছে, লাভলু মোল্লাহ শিশির তার ফেসবুক আইডিতে শেখ হাসিনার ছবি সংবলিত একটি ফটোকার্ড শেয়ার করেন। যেখানে লেখা ছিল, 'আই ডোন্ট কেয়ার'।
ওপরে ক্যাপশনে তিনি লেখেন, জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু।
এরপর লাভলু ফেসবুকে একটি ভিডিও পোস্ট করেন।
পোস্টে তিনি বলেন, আমাকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। ঘণ্টা দুই ধরে মব করার জন্য কিছু লোক আমার বাসার সামনে এসেছে। পুলিশ এসেছে। আপনাদের কাছে আমি বললাম। আপনারা একটু দেখবেন। কারণ আমি তো কোনো অন্যায় করিনি। শেখ হাসিনা আসবে, বাংলাদেশ হাসবে। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত ৩১ মে সাড়ে ৬টার দিকে শাহবাগ থানাধীন কাঁটাবন মোড় এলাকায় আওয়ামী ও তার অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা স্লোগান দেয়। পাঁচ মিনিট পর পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা পালিয়ে যায়।
এ ঘটনায় পরের দিন ৯ জনকে এজাহারনামীয় ৪০ থেকে ৫০ জনকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় আসামি করে শাহবাগ থানার উপ-পরিদর্শক কামাল উদ্দিন মিয়া মামলা করেন।
