৩০ দিনের মধ্যে আত্মসমর্পণ না করলে আপিলের সুযোগ নেই: চিফ প্রসিকিউটর
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (আইসিটি) প্রধান কৌঁসুলি তাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামাল পলাতক অবস্থায় তাদের সাজা চ্যালেঞ্জ করার কোনো আইনি অধিকার রাখেন না। আপিল করতে হলে তাদের অবশ্যই বাংলাদেশে ফিরে এসে আত্মসমর্পণ করতে হবে।
তিনি বলেন, আসামিরা চাইলে ৩০ দিনের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করতে পারেন। কিন্তু কোনো পলাতক আসামি তা করতে পারে না, কারণ ফেরার অবস্থায় কারো কোনো আইনি অধিকার নেই। আপিল করতে হলে দেশে এসে আত্মসমর্পণ করে কারাগারে যেতে হবে। শুধু তখনই তারা সুপ্রিম কোর্টে রায়ের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ করতে পারবে। আত্মসমর্পণ না করলে আপিলের অধিকার হারাবে।
তিনি আরও বলেন, "পলাতক অবস্থায় আপিল করার সুযোগ বাংলাদেশে শুধু নয়, বিশ্বের কোথাও আছে বলে আমার জানা নেই।"
সোমবার (১৭ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায় ঘোষণার পর সাংবাদিকদের তিনি আরও বলেন, আইন অনুযায়ী আজকের রায় ঘোষণার দিন থেকেই ৩০ দিনের মধ্যে তারা আপিল করতে পারবে। এই সময়ের মধ্যে তারা আত্মসমর্পণ করলে সুপ্রিম কোর্টে আপিল দাখিল করতে পারবে, এবং আদালত ৬০ দিনের মধ্যে তা নিষ্পত্তি করবে।
চিফ প্রসিকিউটর আরও জানান, আইনকে সম্মান জানিয়ে যদি তারা আত্মসমর্পণ করেন, তাহলে সুপ্রিম কোর্টে নিজেদের নির্দোষ প্রমাণে যুক্তি ও প্রমাণ পেশ করার সুযোগ পাবেন। আইন তার নিজস্ব প্রক্রিয়া অনুসরণ করবে।"
গত বছরের জুলাই মাসের 'ইউপ্রাইজিং'-এর সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আইসিটি আজ শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেছে।
মামলার তৃতীয় আসামি, সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী হওয়ায় মৃত্যুদণ্ড থেকে রেহাই পান এবং তাকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
গত বছরের ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা ভারত পালিয়ে যান। তখন থেকে তিনি প্রতিবেশী দেশটিতেই অবস্থান করছেন।
সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালও বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন।
রায় ঘোষণার পর ঢাকা আজ নয়াদিল্লিকে পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালকে দ্রুত হস্তান্তরের আহ্বান জানিয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, "আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আজকের রায়ে পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামাল জুলাই হত্যাকাণ্ডের জন্য অপরাধী সাব্যস্ত হয়েছেন এবং দণ্ডপ্রাপ্ত হয়েছেন। মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত এই ব্যক্তিদের দ্বিতীয় কোনো দেশ আশ্রয় দিলে তা হবে অত্যন্ত অবন্ধুসুলভ আচরণ এবং ন্যায়বিচারের প্রতি অবজ্ঞার শামিল।"
