অর্থবছরের প্রথম চার মাসে ভারতে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি ৫ শতাংশ কমেছে
প্রতিবেশী দুই দেশের রাজনৈতিক মতানৈক্যের মধ্যেই ভারতে বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাকের রপ্তানি কমছে।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২৫–২৬ অর্থবছরের প্রথম চার মাস—জুলাই থেকে অক্টোবর—বাংলাদেশের ভারতমুখী পোশাক রপ্তানি আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৫.২৬ শতাংশ কমেছে।
এই সময়ে বাংলাদেশ ভারতে রপ্তানি করেছে ২৬.৫৮ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক, যা আগের বছর ছিল ২৭.৯৯ কোটি ডলার।
রপ্তানিকারকরা বলছেন, দুই দেশের মধ্যে চলমান রাজনৈতিক টানাপোড়েনই ভারতে রপ্তানি কমার অন্যতম কারণ।
বাংলাদেশ নিতওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, "ভারতে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি কমার প্রধান কারণ দুই দেশের রাজনৈতিক টানাপোড়েন।"
তিনি আরও বলেন, "গ্লোবাল বাজারও এখন খুব ভালো নেই।"
কেবল ভারত নয়, বাংলাদেশের উদীয়মান বা নন-ট্র্যাডিশনাল হিসেবে পরিচিত ১৬টি দেশ ও অঞ্চলে গত চার মাসে সম্মিলিত রপ্তানি কমেছে প্রায় ২.৭০ শতাংশ।
নন-ট্র্যাডিশনাল বাজারগুলোর মধ্যে অস্ট্রেলিয়া, কোরিয়া, মেক্সিকো, নিউজিল্যান্ড, রাশিয়া ও তুরস্কে রপ্তানি কমেছে।
তবে ব্রাজিল, চীন, জাপান, মালয়েশিয়া, সৌদি আরব, দক্ষিণ আফ্রিকা, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ কয়েকটি দেশে রপ্তানি বেড়েছে।
একক দেশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রপ্তানি বাজার। জুলাই–অক্টোবর সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি বেড়েছে ৫ শতাংশের বেশি। এই সময়ে বাংলাদেশ সেখানে রপ্তানি করেছে ২.৫৯ বিলিয়ন ডলারের পণ্য, যা আগের বছর ছিল ২.৪৬ বিলিয়ন ডলার।
তৈরি পোশাকের দ্বিতীয় বৃহৎ বাজার যুক্তরাজ্যে রপ্তানি বেড়েছে ২.৭২ শতাংশ, আর কানাডায় বৃদ্ধি হয়েছে ১১ শতাংশ।
তবে সবচেয়ে বড় সমষ্টিগত বাজার ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) গত চার মাসে রপ্তানি বেড়েছে মাত্র ০.৪৮ শতাংশ। এর মধ্যে জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালির মতো বড় বাজারে রপ্তানি কমেছে।
জুলাইয়ের পর টানা তিন মাস ধরে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি কমতির দিকে। সব মিলিয়ে গত চার মাসে পণ্য রপ্তানি বেড়েছে ১.৪ শতাংশ।
ইউরোপের বড় বাজারগুলোতে রপ্তানি কমার কারণ ব্যাখ্যা করে মোহাম্মদ হাতেম বলেন, "ভারত ও চীনের তৈরি পোশাকে যুক্তরাষ্ট্রের তুলনামূলক বেশি শুল্ক কার্যকর হওয়ায় তারা ইউরোপে আরও বেশি রপ্তানির চেষ্টা করছে। এতে প্রতিযোগিতা বেড়েছে এবং বাংলাদেশের রপ্তানিতে চাপ তৈরি হয়েছে।"
