সিএসসি সম্মেলনে যোগ দিতে দিল্লি যাচ্ছেন নিরাপত্তা উপদেষ্টা, দোভালের সঙ্গে বৈঠকের সম্ভাবনা
অন্তর্বর্তী সরকারের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের সম্মেলনে যোগ দিতে আগামী ১৯ নভেম্বর দিল্লি সফরে যাচ্ছেন। এই সফরে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের সঙ্গে তার বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে।
অজিত দোভালের আমন্ত্রণে দুই দিনের এ সফরকালে তিনি কলম্বো সিকিউরিটি কনক্লেভের (সিএসসি) জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের সপ্তম সম্মেলনে অংশ নেবেন। আগামী ২০ নভেম্বর দিল্লিতে অনুষ্ঠিত হবে এ সম্মেলন।
শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশন সূত্র সফরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
অক্টোবরের দ্বিতীয়ার্ধে খলিলুর রহমানকে দিল্লি সফরের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে আমন্ত্রণ জানান ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল। সেই আমন্ত্রণের প্রেক্ষিতেই তিনি সম্মেলনে যোগ দিতে দিল্লি যাচ্ছেন।
তবে দিল্লিতে অবস্থানকালে খলিলুর রহমান এবং অজিত দোভালের পৃথক বৈঠক হবে কি না- এ বিষয়ে ঢাকা এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করতে পারেনি।
তবে ভারতীয় একটি সূত্র জানিয়েছে, সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে দুই দেশের গুরুত্বপূর্ণ নীতি-নির্ধারকদের মধ্যে সরাসরি কথোপকথনের আগ্রহ রয়েছে। ফলে সম্মেলনের ফাঁকে সংক্ষিপ্ত বৈঠকের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর এটি হতে যাচ্ছে কোনো উপদেষ্টার দ্বিতীয় ভারত সফর।
এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে 'ইন্ডিয়া এনার্জি উইক'- এ অংশ নিতে দিল্লি যান জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান।
গত বছরের আগস্টে সরকার পরিবর্তনের পর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন এবং ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্করের মধ্যে বৈঠক দুই দেশের কূটনৈতিক যোগাযোগে নতুন গতি দেয়। তারই ধারাবাহিকতায় গত ডিসেম্বরে ঢাকায় পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়।
পরবর্তীকালে এপ্রিলে ব্যাংককে বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সৌজন্য সাক্ষাৎ হয়।
এছাড়া, দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মহাপরিচালক পর্যায়ের সম্মেলন, যৌথ নদী কমিশনের কারিগরি বৈঠক এবং কনস্যুলার সংলাপসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ আনুষ্ঠানিক যোগাযোগও হয়েছে।
তবে গত মে ও জুনে কনস্যুলার সংলাপ এবং বাণিজ্যসচিব পর্যায়ের বৈঠকের জন্য বাংলাদেশ প্রস্তাব দিলেও ভারত তাতে সাড়া দেয়নি।
ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের নিরাপত্তা জোরদারে গঠিত কলম্বো সিকিউরিটি কনক্লেভে ভারত, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ, মরিশাস ও বাংলাদেশ পূর্ণ সদস্য হিসেবে যুক্ত রয়েছে।
বাংলাদেশ ২০২৪ সালে এ ফোরামের পূর্ণ সদস্য হয়। গত আগস্টে কলম্বোতে অনুষ্ঠিত বৈঠকে কনক্লেভের সচিবালয় প্রতিষ্ঠার জন্য সনদ ও সমঝোতা স্মারকে সই হয়।
সামুদ্রিক নিরাপত্তা, সন্ত্রাস ও চরমপন্থা প্রতিরোধ, মানবপাচার ও আন্তঃসীমান্ত অপরাধ দমন, সাইবার নিরাপত্তা ও গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো সুরক্ষা, পাশাপাশি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা- এ বিষয়গুলোতে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোই ফোরামের উদ্দেশ্য।
ফোরামের সচিবালয়ের অবস্থান কলম্বোতে হলেও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা পর্যায়ের বৈঠক পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন সদস্য রাষ্ট্রে আয়োজন করা হয়।
