আ. লীগের লকডাউনে চট্টগ্রাম, সাতক্ষীরা ও রাজশাহীর সড়কে জামায়াত-বিএনপির অবস্থান কর্মর্সূচি
কার্যক্রম নিষিদ্ধ দল আওয়ামী লীগ ঘোষিত 'ঢাকা লকডাউন' কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম ও সাতক্ষীরায় জামায়াতে ইসলামি ও বিএনপির নেতা ও কর্মীরা রাস্তায় অবস্থান নিয়েছেন।
চট্টগ্রামের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে ও গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে তাদের অবস্থান কর্মসূচি পালন করতে দেখা গেছে। কোনো ধরনের সংঘর্ষ বা সহিংসতার ঘটনা ঘটেনি। পুলিশ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অবস্থান করছেন, যানচলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) সহকারী কমিশনার (গণমাধ্যম) আমিনুর রশিদ টিবিএসকে বলেন, কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। পুলিশ সর্বোচ্চ সতর্ক আছে। পর্যাপ্ত ফোর্স মোতায়েন আছে। কোনো গ্রেপ্তার নেই। সবকিছু স্বাভাবিক আছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, নগরীর মুরাদপুর, বহদ্দারহাট, হামজারবাগ, চকবাজার ও দুই নম্বর গেট ও প্রবর্তক মোড় এলাকায় যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) সকাল ১০টা থেকে মুরাদপুর ও বদরহাট এলাকায় অবস্থান নেয় জামায়াতে ইসলামী। এ সময় তারা বক্তব্য দেন, স্লোগান দেন এবং বিপ্লবী গান পরিবেশন করে প্রতিবাদ জানায়। সন্ধ্যা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি চলবে বলে জানিয়েছেন সংগঠনের নেতারা।
চট্টগ্রাম-১০ (খুলশি–পাহাড়তলী–হালিশহর) আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী অধ্যক্ষ শামসুজ্জামান হেলালী বলেন, 'সুষ্ঠু নির্বাচন ও জালিমের বিচার নিশ্চিত করতে আমাদের এই আন্দোলন। ১৯৭১ থেকে আজ পর্যন্ত এই দেশে অনেক রক্ত ও বিচারবহির্ভূত হত্যা হয়েছে। যারা স্বাধীনতার পক্ষে, তারা আজ রাস্তায় নেমেছে, আর যারা নৌকার পক্ষে, তারা স্বাধীনতার বিপক্ষে।'
অন্যদিকে বহদ্দারহাট এলাকায় বিএনপি, স্বেচ্ছাসেবক দল ও তাদের অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।
চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক আবু বকর বলেন, 'দেশের মানুষ নির্বাচনে ভোট দিতে মুখিয়ে আছে। কিন্তু দেশে এখন এক অসহনীয় অবস্থা বিরাজ করছে, যা পরিবর্তনে সবাই রাজপথে নেমেছে। ফ্যাসিবাদী শক্তির যেকোনো ধরনের অপচেষ্টা রুখে দিতে আমরা রাজপথে আছি।'
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কেন্দ্রীয় সভাপতি নির্বাচিত হলেন কফিল উদ্দিন আহমেদ দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, দূরপাল্লার যান চলাচল স্বাভাবিক আছে। যাত্রীর পার্সেন্টেজ কিছুটা কম। তবে কোথাও কোনো বাধা সম্মুখীন হচ্ছে না।
সাতক্ষীরা জেলা বিএনপি আ. লীগের অগ্নিসংযোগ ও অপতৎপরতার প্রতিবাদে র্যালি
সাতক্ষীরা জেলা বিএনপি দেশের বিভিন্ন স্থানে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের আশ্রয়ে সংঘটিত অগ্নিসংযোগ ও অন্যান্য অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে আজ (১৩ নভেম্বর) একটি প্রতিবাদ র্যালি অনুষ্ঠিত করেছে।
র্যালিটি দুপুর ১২টায় সাতক্ষীরা শহরের নিউ মার্কেট চত্বর থেকে শুরু হয়ে খুলনা রোড চত্বরের সমাবেশে শেষ হয়। জেলা বিএনপির যুগ্ম সমন্বয়কারী তাসকিন আহমেদ চিশতী, সদস্য সচিব আবু জাহিদ ডাবুলসহ অন্য নেতারা সমাবেশে বক্তব্য দেন।
বিএনপি নেতারা অভিযোগ করেন যে, আওয়ামী লীগ দেশে আগুন সন্ত্রাসে মেতে উঠেছে। এর ফলে মানুষের জীবন ও সম্পত্তি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং লকডাউনের অজুহাতে দেশ অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করা হচ্ছে। তারা সতর্ক করে বলেন, এ ধরনের কর্মকাণ্ড সহ্য করা হবে না এবং প্রতিরোধ করা হবে।
এদিকে, জেলা জুড়ে আওয়ামী লীগের তথাকথিত লকডাউন কর্মসূচির কোনো দৃশ্যমান প্রভাব লক্ষ্য করা যায়নি; সাধারণ জীবনযাত্রা স্বাভাবিকভাবেই চলছিল।
এর আগে, নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায় ঘোষণার আগে আজ (১৩ নভেম্বর) "ঢাকা লকডাউন" কর্মসূচির ঘোষণা করেছিল। গত বছরের গণঅভ্যুত্থানের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ তিনজনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
রাজশাহী
রাজশাহী জেলায় বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপির নেতারা বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিয়েছিলেন। শহরের মানুষদের মধ্যে উত্তেজনা ও উদ্বেগের পরিবেশ দেখা গিয়েছে, সাধারণ দিনের তুলনায় রাস্তায় মানুষ তুলনামূলকভাবে কম ছিল।
তবুও, যানবাহনের চলাচল স্বাভাবিক ছিল, এবং দোকান, অফিস ও আদালত খোলা ছিল। রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত ডেপুটি কমিশনার গাজীউর রহমান বলেন, 'বিভিন্ন চেকপোস্টে নিয়মিত চেকিং হচ্ছে। এছাড়া শহরের বিভিন্নস্থানে টহল জোরদার করা হয়েছে। তবে শহরের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।'
