শরীয়তপুর–ঢাকা রুটে বাস বন্ধ; এক্সপ্রেসওয়েতে পুলিশ ভ্যানে হাতবোমা নিক্ষেপ, ট্রাকে আগুন, আটক ৩
কার্যক্রম নিষিদ্ধ দল আওয়ামী লীগ ঘোষিত 'ঢাকা লকডাউন' কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে শরীয়তপুর-ঢাকা রুটে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। সকাল ছয়টা থেকে ৯টা পর্যন্ত পদ্মা সেতুর সামনের ঢাকা-ভাঙা এক্সপ্রেসওয়ে অবরোধ করে আন্দোলনকারীরা।
শরীয়তপুরের জাজিরার নাওডোবা এলাকায় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা ওই অবরোধ করেছেন। পদ্মা সেতু ভাঙ্গা ৩১ কিলোমিটার এক্সপ্রেসওয়ের অন্তত ৫টি স্থানে গাছের গুড়ি ফেলে অবরোধ করে আন্দোলনকারীরা।
এ সময় পুলিশ ভ্যানে হামলা, ভাঙচুর করে ও হাতবোমা নিক্ষেপ করে বিক্ষোভকারীরা। এছাড়া নাওডোব তস্তারকান্দি এলাকায় একটি ট্রাকে আগুন দেওয়া হয়। এ সময় তারা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ও টায়ার জ্বালিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছেন। সড়কে বিচ্ছিন্নভাবে মিছিল করে আন্দোলনকারীরা। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।
জাজিরার পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানা ও স্থানীয় সূত্র জানায়, কার্যক্রম নিষিদ্ধ দল আওয়ামী লীগের ডাকা লকডাউন কর্মসূচির অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার শরীয়তপুর জেলা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মীরা পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তের ঢাকা-ভাঙা এক্সপ্রেসওয়ে অবরোধ করেন। সড়কটির নাওডোবা এলাকার বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেন আন্দোলনকারীরা।
সকাল ৭টার দিকে তস্তারকান্দি এলাকায় একটি ট্রাকে আগুন দেওয়া হয়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। এসময় দুটি যাত্রীবাহী বাস ভাঙচুর করা হয়। আতঙ্ক সৃষ্টি করতে আন্দোলনকারীরা তস্তারকান্দি এলাকায় সড়কে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে মিছিল করেন। ওই সময় বেশ কিছু ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।
এক্সপ্রেসওয়ে অবরোধের কারণে জাজিরার জমাদ্দার মোড় এলাকায় অন্তত আধা কিলোমিটার দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়েছে। পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানার পুলিশ ও স্থানীয়রা ওই যানবাহনগুলোর নিরাপত্তা দেন।
মাহমুদা নামে যাত্রী বলেন, 'পরিবারের সদস্য নিয়ে জরুরি কাজে ঢাকা যাচ্ছিলাম, এসে দেখি বাস বন্ধ। এখন আতঙ্ক ও ভয় নিয়ে ভেঙে ভেঙে যাচ্ছি। আমরা সাধারণ যাত্রী, আমাদেরকে সবসময়ই টার্গেট করা হয়। এরকম ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই।'
আলমগীর নামে আরেক যাত্রী ঢাকা যাওয়ার জন্য এসেছেন কিন্তু বাস বন্ধ থাকায় বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। তিনি জানান, '২ ঘণ্টা বসে ছিলাম বাসের জন্য আর চারিদিকে আতঙ্কের খবর শুনে বাড়ি ফিরে যাচ্ছি।'
শরীয়তপুর বাস মালিক সমিতির সভাপতি ফারুক আহম্মেদ তালুকদার বলেন, 'গতকাল ঢাকার ধোলাইপাড় এলাকায় শরীয়তপুরের দুটি বাসে আগুন দেওয়া হয়েছে। আজকে পদ্মা সেতু এলাকায় অবরোধ চলছে। আতঙ্কে বাস মালিক ও শ্রমিকরা সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ রেখেছেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আমরা বাস চলাচল শুরু করব।'
জাজিরার পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম রসুল বলেন, 'সকাল থেকে পদ্মা সেতুর এক কিলোমিটার পশ্চিমে সড়কে অবস্থান নেয় আন্দোলনকারীরা। পুলিশ তাদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় দুর্বৃত্তরা একটি পুলিশ ভ্যানে হাত বোমা নিক্ষেপ করে ও একটি ট্রাকে আগুন দিয়েছে।
তিনি আরও জানান, ফায়ার সার্ভিসের কর্মী ও স্থানীয়রা ওই আগুন নিভিয়েছে। পদ্মা সেতুর দক্ষিণ থানার পুলিশ থানার আশপাশে আটকে পড়া যানবাহন পদ্মা সেতু পারাপারে সহায়তা করেছে। এই মুহূর্তে আন্দোলনকারীরা সড়কের কোথাও নেই, পদ্মা সেতু দিয়ে সব ধরনের যান চলাচল স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে।
