নিজ খরচে বিদেশ সফর, সরকারি অর্থে নয়: লন্ডন থেকে চসিক মেয়রের বিবৃতি
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন লন্ডন সফরে গেছেন। তার অনুপস্থিতিতে সংস্থাটির প্রশাসনিক কার্যক্রমের তদারকির দায়িত্ব পালন করবেন সচিব ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আশরাফুল আমিন।
রোববার (৯ নভেম্বর) লন্ডন থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।
বিবৃতিতে মেয়র জানান, লন্ডন সফরের সম্পূর্ণ খরচ তিনি ব্যক্তিগতভাবে বহন করছেন। এর আগে কানাডার টরন্টো সফরের খরচও ব্যক্তিগতভাবে বহন করেছেন তিনি। সরকার, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন, কোনো ঠিকাদার বা তৃতীয় পক্ষ এ সফরের অর্থায়ন করছে না বলেও উল্লেখ করেন মেয়র।
মেয়র শাহাদাত হোসেন আরও জানান, তিনি শুক্রবার ও শনিবার, সাপ্তাহিক ছুটির দিনেও চসিকের বিভিন্ন দাপ্তরিক দায়িত্ব পালন করেন, তবে এসব দিনে করপোরেশনের গাড়ি বা জ্বালানি ব্যবহার করেন না। ব্যক্তিগত গাড়ি ও জ্বালানি ব্যবহার করেন তিনি। এ বিষয়ে কোনো বিভ্রান্তি বা গুজবে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানান মেয়র।
চসিকের তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করেন মেয়র। শনিবার সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে কাতার এয়ারওয়েজের বিমানে ঢাকা থেকে দোহা হয়ে লন্ডনের উদ্দেশে রওনা দেন তিনি। মেয়রের দেশে ফেরার কথা রয়েছে আগামী ২১ নভেম্বর।
বিমানবন্দরে মেয়রকে বিদায় জানান চসিক সচিব মো. আশরাফুল আমিন, প্রধান প্রকৌশলী আনিসুর রহমান, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ইমাম হোসেন রানা, মেয়রের একান্ত সহকারী মারুফুল হক চৌধুরী মারুফ ও জিয়াউর রহমান জিয়া।
এদিকে, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে বর্তমানে নির্বাচিত কাউন্সিলার ও প্যানেল মেয়র না থাকায় মেয়র শাহাদাত হোসেনের অনুপস্থিতিতে প্রশাসনিক কার্যক্রমের তদারকির দায়িত্ব পেয়েছেন সংস্থাটির সচিব ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আশরাফুল আমিন।
চসিক মেয়র গণমাধ্যমকে জানান, স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন, ২০০৯ অনুযায়ী মেয়রের অনুপস্থিতিতে প্যানেল মেয়র দায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু বর্তমানে করপোরেশনে প্যানেল মেয়র না থাকায় সচিবকেই ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী হিসেবে প্রশাসনিক দায়িত্বে রাখা হয়েছে।
চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলামকে দুর্নীতির অভিযোগে কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ দেওয়া হয়েছে। তিনি সন্তোষজনক জবাব না দেওয়া পর্যন্ত সচিব মো. আশরাফুল আমিন ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করবেন বলেও মেয়র জানান।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম উচ্চতর প্রশিক্ষণ শেষে গত ২২ অক্টোবর যোগদানের আবেদন করলেও মেয়র তার যোগদানপত্র গ্রহণ করেননি। বরং ওইদিনই মেয়র এক অফিস আদেশে নির্দেশ দেন, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা যোগদান না করা পর্যন্ত সব নথি সচিবের মাধ্যমে অনুমোদনের জন্য মেয়রের কাছে পাঠাতে হবে।
এরপর ২৭ অক্টোবর মেয়র শাহাদাত হোসেন শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলামকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন। অভিযোগে বলা হয়, ২০২৩ সালের মে মাসে বার্ষিক মূল্যায়নে ঘষামাজা করে দুটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পৌরকর কমানোয় চসিক বিপুল রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হয়েছে। প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় তিনি বিষয়টি তদন্তে উদাসীন ছিলেন এবং দোষীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেননি। এতে তাঁর দায়িত্বে অবহেলা প্রমাণিত হয়েছে। তাঁকে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে কারণ দর্শাতে বলা হয়।
এ ঘটনায় চসিক রাজস্ব বিভাগের দুই কর্মকর্তা সাময়িক বরখাস্ত এবং তিনজন হিসাব সহকারীকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে সচিবালয় বিভাগে সংযুক্ত করা হয়েছে।
