মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে গুম প্রতিরোধ অধ্যাদেশের চূড়ান্ত অনুমোদন
সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে গুম প্রতিরোধ ও প্রতিকার অধ্যাদেশ-২০২৫ এর চুড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে সরকার।
বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) উপদেষ্টা পরিষদের ৪৭তম মিটিং শেষে এই অনুমোদন দেওয়া হয়।
বিকালে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব মোহাম্মদ শফিকুল আলম।
তিনি বলেন, 'আজ উপদেষ্টা পরিষদের ৪৭তম মিটিং ছিল। আজ গুম প্রতিরোধ ও প্রতিকার অধ্যাদেশ- ২০২৫ এর চূড়ান্ত অনুমোদন হয়েছে।'
তিনি আরও বলেন, 'শেখ হাসিনার সময়ে দেশে হাজার হাজার ছেলে মেয়ে গুম হয়েছে। গুম প্রতিরোধ কমিশনে এই সংক্রান্ত প্রায় ২ হাজার অভিযোগ জমা পড়েছে। গুম কমিশনে যারা সদস্য রয়েছেন, তারা বলেছেন এর সংখ্যা ৪ হাজারের ওপরে হবে।'
প্রেস সচিব বলেন, 'দেশে শত শত আয়নাঘর ছিল। সেখানে গুমের শিকারদের রাখা হতো। অনেকে সেখান থেকে ফিরে এসেছেন। অনেক এখনও ফিরে আসেননি। বিএনপির অনেক কর্মী ফিরে আসেননি।'
তিনি বলেন, 'গুম প্রতিরোধ ও প্রতিকারের জন্য একটি আইন নিয়ে অনেকদিন আলোচনার পর আজ এটা চূড়ান্তভাবে অনুমোদন হয়েছে। এই অধ্যাদেশে গুমকে সংজ্ঞায়নের পাশাপাশি চলমান অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করে মৃত্যুদণ্ডসহ কঠোর শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে।'
অধ্যাদেশের বিষয়ে তিনি আরও বলেন, 'গোপন আটক কক্ষ (আয়না ঘর) স্থাপন ও ব্যবহারকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।'
প্রেস সচিব বলেন, 'জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে গুম সংক্রান্ত অভিযোগ গ্রহণ ও তদন্তের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এই অধ্যাদেশে গুম প্রতিরোধ ও প্রতিকারের লক্ষ্যে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন ও অভিযোগ গঠনের ১২০ দিনের মধ্যে বিচার সম্পন্নের বাধ্যবাধকতা, ভুক্তভোগী, তথ্য প্রদানকারী ও স্বাক্ষীর অধিকার সুরক্ষা, ক্ষতিপূরণ এবং আইনগত সহায়তার নিশ্চয়তা প্রদান সংক্রান্ত বিধান অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।'
তিনি বলেন, 'গুম প্রতিরোধ, প্রতিকার ও সুরক্ষা উদ্দেশে তহবিল গঠন ও তথ্যভান্ডার প্রতিষ্ঠার বিধানও সংযোজিত হয়েছে।'
তিনি আরও বলেন, 'এটি বাংলাদেশের একটি ঐতিহাসিক আইন। এর ফলে আর কোনো ফ্যাসিস্ট সরকার এসে গুমের রাজত্ব চালাতে পারবে না।'
