মানবতাবিরোধী অপরাধ: আ. লীগের সাবেক এমপি সাইফুল ইসলামসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ
গত বছরের ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পর আশুলিয়ায় ছয়জনের মরদেহ পোড়ানোর ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি সাইফুল ইসলামসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন মামলার ২০তম সাক্ষী এসআই মো. আশরাফুল হাসান।
বুধবার (২৯ অক্টোবর) বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন।
এদিন বেলা সোয়া ১১টার পর সাক্ষীর ডায়াসে ওঠেন আশুলিয়া থানায় কর্মরত এসআই আশরাফুল। শপথ পড়ে জব্দতালিকার সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দেন তিনি।
জবানবন্দিতে আশরাফুল বলেন, 'বেতার বার্তার মাধ্যমে আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানান যে থানা ভবনের পশ্চিম পাশে মনির ও লতিফ মণ্ডলের পুরাতন টিনশেড বাড়ির সীমানা প্রাচীরের মধ্যে গুলি পড়ে রয়েছে।'
তিনি বলেন, 'এর পরিপ্রেক্ষিতে ঘটনাস্থলে পৌঁছে সাক্ষীদের উপস্থিতিতে একটি চার্জারসহ ছয়টি রাইফেলের গুলি উদ্ধার করি। প্রতিটি গুলির পেছনে ইংরেজিতে ৭.৬২ ও অন্যান্য লেখা ছিল। পরিত্যক্ত অবস্থায় এসব গুলি জব্দ করি। উপস্থিত তিনজন সাক্ষীসহ আমি নিজেও জব্দতালিকায় সই করি।'
তিনি আরও বলেন, 'জব্দতালিকায় সাক্ষী হিসেবে কনস্টেবল মো. মামুনুর রশিদ সই করেন। আলামতগুলো থানায় জমা দেওয়া হয়। পরবর্তীতে ওসির নির্দেশে আমি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে এসব আলামত পাঠাই।'
সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আশরাফুল হাসানকে জেরা করেন আসামিপক্ষের আইনজীবী।
জেরায় আইনজীবী বলেন, 'তিনি (এসআই আশরাফুল হাসান) ও আশুলিয়া থানার ওসি আলামত সংগ্রহের নাটক তৈরি করেছেন।'
জবাবে আশরাফুল হাসান বলেন, 'এ কথা সত্য নয়।'
এখন পর্যন্ত এ মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন ২০ জন। ২১তম সাক্ষীর জাবনিবন্দি নেওয়ার জন্য বৃহস্পতিবার দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল।
এ মামলায় গ্রেপ্তাররা হলেন- ঢাকা জেলার সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. আব্দুল্লাহিল কাফী, ঢাকা জেলা পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত সুপার (সাভার সার্কেল) মো. শাহিদুল ইসলাম, পরিদর্শক আরাফাত হোসেন, এসআই মালেক, এসআই আরাফাত উদ্দিন, এএসআই কামরুল হাসান, আবজাল ও কনস্টেবল মুকুল।
আজ সকালেও কারাগার থেকে তাদের ট্রাইব্যুনালে হাজির করে পুলিশ। তবে সাবেক এমপি সাইফুলসহ আটজন এখনও পলাতক রয়েছেন।
গত বছরের ৫ আগস্ট সাভারের আশুলিয়ায় পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারান ছয় তরুণ। এরপর পুলিশ ভ্যানে তাদের লাশ তুলে আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
নৃশংস এ ঘটনার সময় একজন জীবিত ছিলেন। কিন্তু তাকেও বাঁচতে দেননি তারা। পেট্রোল ঢেলে জীবন্ত মানুষকেই পুড়িয়ে মারা হয়।
এ ঘটনায় গত বছরের ১১ সেপ্টেম্বর মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ এনে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা করা হয়।
